১৪১২-এ যখন প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়, তখন (এখনকার মতো) এতসব চিন্তা ছিল না— শিল্প-প্রতিশিল্প— প্রতিষ্ঠানবিরোধীতা— লিটলম্যাগাজিন— কিচ্ছু না; শুধু একটাই চিন্তা— আমাদের লেখা প্রকাশের কোন জায়গা নেই— কুড়িগ্রাম থেকে কোন সাহিত্যপত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে না— অতএব— আমাদেরই করতে হবে— ক্ষুদ্র উদ্যোগ— বিন্দু; কুড়িগ্রামকেন্দ্রিক। এই চিন্তা থেকেই মূলত প্রকাশিত হয় প্রথম সংখ্যা।
অনেক আজেবাজে লেখা, অশিক্ষিত-বোকাচোদা লেখক, গু-গোবর ছেপেটেপে ক্রমান্বয়ে ১২টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে প্রথম ছয় বছরে। এর মধ্যে আমরা বিবর্তিত হয়েছি— বিকশিত হয়েছি; যুক্ত হয়েছেন নতুন ভাবুকেরা-আপষহীন যোদ্ধারা— ছিটকে গেছে অনেকে।
পরিবর্তনের প্রথম ছাপ পাওয়া যায় শ্রাবণ ১৪১৬-এ প্রকাশিত দশম সংখ্যায়। যা প্রকাশের পর হৈ-চৈ শুরু হয়ে যায় মোল্লামহলে। সাহিত্যগুণ্ডারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। এরপর, ধকল সামলে উঠতে সময় লাগে। বৈশাখ ১৪১৮-এ প্রকাশিত হয় গুরুত্বপূর্ণ এগারতম সংখ্যা; বিবর্তিত চিন্তার একটি প্রচ্ছদবার্তা নিয়ে হাজির হয় এই সংখ্যাটি: এবং ওরা শিল্প-সাহিত্য নিয়ে ব্যবসা করে, পণ্য করে, ন্যাংটা করে, রক্তাক্ত করে, ট্রাকে তুলে আলু-পটলের মতো রপ্তানি করে; গুটিকতক অর্টিস্টিক শিল্পিকে আলু-পটলের ছাল খাইয়ে ভিখিরির মতো বাঁচিয়ে রেখে নিজেদের স্বার্থে মুনাফা উপার্জন করেই যায়; ইহাই প্রচলিত-পুরনো প্রতিষ্ঠান।
— এই কাজ এরা অতীতে করেছে; ভবিষ্যতেও...?
— না
এদের প্রথম লক্ষ্য মুনাফা, দ্বিতীয় লক্ষ্য মুনাফা, এমনকি তৃতীয় লক্ষ্যও মুনাফা। এরা শিল্প-সাহিত্যের বিচার করে মুনাফার অঙ্কে। মূলত এরা শিল্প ব্যাপারটাই বোঝে না; শিল্প নির্বাচন এদের কাছে কমোডের কালার চয়েসের মতো ব্যাপার। তাই অনিবার্যভাবেই শিল্পি এদের কাছে হাস্যকর বস্তুতে পরিণত হয় শেষপর্যন্ত।
আধুনিক প্রচারমাধ্যমগুলো অসংখ্য শুয়োরবৎস্যকে মহামানবরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে
বিন্দু ঐসব শুয়োরবৎস্যের প্রজননকেন্দ্র নয়, ফলে বিরাগভাজন হতে হয়েছে সুযোগসন্ধানীদের। গ্রাম্যসমাজকাঠামোর ক্ষমতাস্তরে কোন সময়ই যখন বিন্দু আপোষ করেনি, তখন নেমে এসেছে সাহিত্যমোল্লাদের খড়গকৃপাণ। শুধুমাত্র প্রচার-প্রপাগাণ্ডার মধ্য দিয়েই যখন ভণ্ডরা জনগনের সামনে হাজির হচ্ছে মহামানবরূপে, তখন বিন্দু হাজির করেছে এক ঝাঁক প্রকৃতশিল্পী।
শৃঙ্খলপ্রিয় সিংহের থেকে স্বাধীন গাধা উত্তম
দশম সংখ্যার বিন্দুস্বর থেকেই জানা যাবে স্বাধীনতা প্রশ্নে বিন্দুর অবস্থান: আমাদের কোন ঈশ্বর নেই, তাই সীমাবদ্ধতাও নেই। আমরা যে কোন সময় পরীক্ষামূলকভাবে গন্দম ফল (জ্ঞানবৃক্ষের ফল; আদম-হাওয়া যখন তাহা ভক্ষণ করিল তখন তাহাদের জ্ঞান হইল) খেয়ে দেখতে পারি। সাহিত্যের ছোটকাগজ হিসেবে প্রয়োজনমতো আমরা নিতে চাই অবাধ স্বাধীনতা এবং যে কোন পাঠকের যে কোন মত প্রকাশের জন্যও দিতে চাই অবাধ স্বাধীনতা (যেহেতু আমরা বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী)।
যারা বিন্দু করতে জানে তারা সিন্ধুও গড়তে জানে। আর যারা বিন্দু গড়তে জানে না— আল্লার দিকে তাকিয়ে ‘কামনা’ করা ছাড়া তাদের আর কিছুই করার নেই।
পা ঠ ক, জা না আ ছে তো—
প্রাক্তন বিদ্রোহীদের কবরে
যখন স্মৃতিসৌধ মাথা তোলে, নতুন
বিদ্রোহীরা তখন কারাগারে ঢোকে ফাঁসিকাঠে ঝোলে
কৃতজ্ঞতা: হুমায়ুন আজাদ
রচনাকাল: ১৩ জানুয়ারি ২০১২ খ্রি. (ঈষৎ সংক্ষেপিত)
........................................
আরও পড়ুন:
➤ প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার প্রথম পাঠ
➤ বিন্দুর কপিরাইট নীতিমালা
➤ মন্তব্যের নীতিমালা
➤ লেখা পাঠানোর পদ্ধতি
........................................
আরও পড়ুন:
➤ প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার প্রথম পাঠ
➤ বিন্দুর কপিরাইট নীতিমালা
➤ মন্তব্যের নীতিমালা
➤ লেখা পাঠানোর পদ্ধতি