জন্মান্তর
পেটের খিদে গেছে সবার আগে
দেহের কোষেরা ধীরে ধীরে উপবাসে অভ্যস্থ হল
সংযমী অথচ দৃঢ়চেতা মানুষ তুমি
বিত্তবাসনা পুড়েছে সদ্য, দু’চোখে
প্রয়োজনেরা দলছুট হয়ে ফিরে যায় আর ফেরে না
বানপ্রস্থের মোহনায় তুমি মানুষ একা
খিদের অন্তঃস্থলে যে বীজ আছে
সেটা মরে গেল এখন এই লেখার মধ্যে দিয়ে
তোমাকে দেখেছি লোকগাঁথার বীজতলায়
প্রকৃত জন্মের মত তুমি আবার জন্মাও
ফুরিয়ে যায় সীমারেখা
সমস্ত কাজ থেকে
প্রয়োজনীয়তা হারাচ্ছি দিন দিন
বিস্তৃত অহেতুক সমারোহ
অবিন্যস্ত অপ্রয়োজনেরা
অবাঞ্ছিত উদাসীনতা একঘেয়ে হয় সারাবেলা
সমস্ত সময়গুলোতে
চুরমার হয়ে যাচ্ছে আর খাবি খাচ্ছে
অতলান্তিক চাহিদার বিশালাকার নাগপাশ
আমাদের দিবসকাল
পিঁপড়ের ডানার মত হালকা হয়
মাদারী
ভারসাম্য করেছ বিষয়ে
আর ভাগ করেছ
আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাস
হয়ত বা অনুষ্টুপ ধারা!
মাদারী খেলায় পোকামাকড়ে ভরে গেছে
তবে তোমার হাঁটাচলায়
চতুরঙ্গ ছাপ আছে
ঠিক যেমন
জমির আল দিয়ে হাঁটলে
জীবনের ভারসাম্যও তৈরি হয়ে যায়
যাত্রাপথে অগস্তের মৃত্যু
বাড়ি ফিরতে ভয় পাই এখন
সেই চাতক মুখ ধেয়ে আসে
অপমান আর সন্দেহ ধারালো হয়
বিশ্বাসের করাত শানে আগলে রাখা চিন্তা
অহেতুক ভেবেছি সেসব
এখন বুঝি আকাশ কত কালো হয়
অন্ধকারের ভেতরেও থাকে কত আবর্জনা
এভাবেই কি আমরা পলাতক ভীত
ভয় পেতে পেতে হয়ে যাই ভয়হীন ভবঘুরে
বাড়ি ফেরার রাস্তা যখন
অগস্ত যাত্রার মত সীমাহীন বাধা
সামার অফ্ সিক্সটি নাইন
দিন বদলের গান ভেসে যায় ধীরে ধীরে
ঝরা পাতা আর মুঠো মুঠো ছায়ার সাথে
লালমাটির বনান্তর জুড়ে শুধু পড়ে থাকে
বিবশ বসন্ত বিহার আমাদের প্রতিপদে
জন্মান্তর ছেড়ে এসে দাঁড়িয়েছ সময়ের আগে
যেখানে নিয়ত শুধু সবুজের চির পরাজয়
পরাজিত নই আমি। তুমি কি এমন করে ভাব
যেভাবে ঝড়ের মুখে তোমাকে বিদায় জানাব
জড়িয়ে থেকেও যেন ছুঁয়ে থাকা নীরবতা
পলাশের পরে যেভাবে আসে দহন রুক্ষতা
যাত্রাপথে অগস্তের মৃত্যু ও অন্যান্য কবিতা
দেবাশিস সাহা
দেবাশিস সাহা
মন্তব্য