এক
এক প্রভঞ্জন সকালে কীটের পাখার শব্দে জেগে উঠেছি
মুকুলিত আশায়; ক্ষনিক আবেশ ঝড়ে পড়ে উন্মত্ত মর্মে।
অনুভব করি তোমার কালকূট, মিলনের করুণ স্বর;
অকল্পিত পথের উন্মীলনে জ্বে’লে রাখি অবিরল কুয়াশা।
তবু দর্পনে প্রতিফলিত হয় আলেখ্য, বহু বিস্তৃত করবী;
কত প্রাণ বিপন্ন চারিপাশে, চাকা ঘূর্ণনের মতো ভৈরবী।
আশ্চর্য সংশয় অনুমান করি; হায় দেবদারু, হায় আর্তি
ছদ্মবেশে ব্যর্থ এ-কাল, নক্ষত্রময় নিবিড়তা। যত তৃপ্তি
বৈকুণ্ঠ জাগায় আচম্বিতে; যেন সুখের অন্ত নেই ললাটে।
এতো আলো আসে ক্রুরহৃদয়ে, ক্রমশ জ্যোৎস্নাকামী বেদনা—
কেন এতোদিন স্বেচ্ছাচার হই নি; বিশুদ্ধ ভয় হয়— তবু
সকল সন্ধান, প্রলাপ, আশ্রয় নিমিত্তমাত্র সান্ত্বনা; আর
মদ্য-সিক্ত পুষ্প, দৃপ্ত আঘাতে এ-জীবনের জয় অনিবার্য।
দুই
আর কিছু-ই গোপন নেই, অনেক ভাষা রপ্ত করেছি; সেই
সকল আলো ব্যর্থতা নির্বর্তিত; শুধু অনুভব আছে স্থির।
হয়তো মানুষ নয়, তারও অধিক কিছু ভালোবেসে, কিছু
ব্যথা, স্বভাব, স্মৃতি পেয়েছি— আর কিছু অভিজ্ঞতা।
বহু দর্শন, অসুস্থতার পর সজীব, প্রাণবন্ত হয়েছি।
সমস্ত পঙক্তি খুঁজে জীবন পাওয়া গেল বলে মনে হয়।
পথ চিরদিন মুগ্ধ ক’রে নিজ রূপে? সারাক্ষণ টের পাই,
সৃষ্টি করি বিন্দুবিসর্গ, একলা চলার কণাপথ; বিশ্বাস
তবু রয়ে গেছে আত্মরতি, পরিণয়ে; ধারণা করি অন্তরে
কার্পণ্য নেই— নীল ভবিষ্যৎ হারিয়ে যায় কবিতায়; আর
প্রকৃতপ্রস্তাবে সুপ্রাচীন স্মৃতিচিহ্ন ফোটে সংবিৎ, শব্দে।
দুইটি কবিতা
শামসুদ্দিন শিপন
শামসুদ্দিন শিপন
মন্তব্য