এক
পিছিয়ে এসেছি যত, ততটাই তোমার রোদ্দুর
যত দীর্ঘকাল যাই ততই শকুন…
আমি কি বুঝি না তার বাঁশি, তার লিপি ও ফসিল
দেখি অবলোকিতেশ্বরের দোঁহার জগত
বসন্ত কালের মতো বৃষ্টি পড়ে সেখানেও
বেঁচে উঠতে চাইছে সামুদ্রিক প্রাণি
আর আমি তখন বিশ্বাস করি মমির বিদ্বেষ…
দুই
তোমাকে মিথুন বলে ডেকেছিল
ব্রহ্মোৎসব
তোমাকে শৈশব জ্ঞানে তোমাকে স্বগত জ্ঞানে
ভালবাসে শহরের লোক
তোমাকে ঈর্ষার মতো… চিলের মতন…
তোমাকে ভাবে মোহনার বাঘ
গৃহস্থের ছেলে
ওর খোকা হোক…
তিন
যদিও দেহটি শরীরের মতো নয়
দ্রবণ দ্রবণ যুগ পার…
নদী ডাকতে এখনও পার না
তুমি কি গো!
বস্তুত শরনার্থী প্রবাহ!
চার
বাষ্পের ভূমিকা বুঝি
কিভাবে জটিল হয় তার শ্রেণি!
বুঝি কি তার দক্ষতা? অরিগ্যামি!
একটি রোদ হয়ে গেছিল আরেক রোদ
একটি প্রপঞ্চ হয়ে যাচ্ছিল
ভূমধ্য-দুপুর
আমি তার কোকিলখানি শুনি
কেবল বাগার্থ ঘটে এমন ফাল্গুন…
আমার কোথাও বেড়ে গেল সন্তান বিরহ?
এসব সময়ে খুব সর্প বিষ হয়
গুল্মের কুকুর কাঁদে বাড়ির ছায়ায়
পাঁচ
বলার কিছুই নেই
ফুল ফোটে…শীত ঘটে
বিষণ্ন হয়েছে ফুলের কসম
এসব বিভ্রম নয়
তুমি ক্ষেতে ক্ষেতে পটল বুনেছ
পটলের ওপরে ওস
তাতে তৃতীয় দুনিয়া…
ছয়
মনে হচ্ছে, তুমি দ্বিমুখী হরিণ
দৌড়ে পার হচ্ছ সন্ন্যাস-গ্রহণ, কিসসা, রামায়ণ
তোমার দু’চোখে অবশ্যম্ভাবী
সিউডো ধারণা…
সাত
প্রতিদিন অবিশ্বাস্য মাঠের ভেতর
রেখে আসি সাদামাটা, সংলগ্ন মাঠ
অতঃপর ব্রতকথা পেরিয়ে পেরিয়ে
কিছুটা পাহাড়ি ছাঁদে আমার মরণ
সেভাবে কি বলা যায়— কেন যে মরেছি!
ওভাবে রেণুর কাছে কেন যে গিয়েছি!
পূণর্ভবায় বুঝিনি আমি তোমার হলুদ
বুঝিনি তোমার মতো ওড়ার কারণ
এখন ফসল বড় সহজে ঘটেছে
আমিও প্রগতি চিনি সেসব আদলে
কেবল বুঝি না কেন আমাদের চোখ
কিছুটা কুয়াশা আর কিছুটা তক্ষক!
আট
সরল কুয়াশাবতী গ্রাম
তুমি তার সফল মাতাটি
ধান ফুটে উঠছে অবিরত
সন্ধ্যা আসে প্রতীয়মানোৎপ্রেক্ষায়
যেভাবে ডাকনি তবু…
কাছে আর যাব না কখনও
সেভাবে তুমিও আর রবে না উপমা
অচেনা স্টেশনে বৃষ্টি আসার মতন…
ভাষা থাকে শুধু আর
তুমি তার নৈরঞ্জনা
অন্ধকার এলে শিকার করেছ…
নয়
অসিতবরণ তুমি
সর্বাংশে ভাষার গড়ন
গড়নে গড়নে ত্রাস-স্বেদ-হর্ষ-কম্প…
হবিষ্যান্ন হবিষ্যান্ন হয় মাঠের বিকাশ…
দশ
সহজে ভেসেছে নৌকো
আবার জলের প্রয়োজনে
ভেসেছে বাতাসে নুন,
গৃহস্থের যৌন আবেদন…
বিবিধ স্তরের হাতে ক্রয় ক্ষমতা ঘটে,
শস্য মোছে নারী—
তুমিও তাদের মতো বহুবর্ণধারী…
এগারো
এত শেয়ালের ডাক!
এত ছদ্মভূমি!
শুনিনি কখনও কোনও দেবতার কাছে
ঘটেনি কারওর গ্রহে
কারও মনোলগে বা প্রাচীনগ্রন্থে
তবে কী অবর্ণনীয় ঘাসে
আমি হাড় কটি পুঁতে চলে যাব?
তুমি দেখবে অবিন্যস্ত ভূমি
ফুটেছে জগৎ…
বারো
যেভাবে গিয়েছে নদী সকাল অবধি
যেভাবে তুমিও মাঠ তুমিও জোনাকি
আমার মধ্য পথে সব নিলে
গান মুছে বসে থাকি
অবাক শেয়াল আসে
কুকুর যায় মোহনার দিকে
এবং জনকল্লোল
ছুটে আসে
তার আগুনের ভেতরে ভেতরে
আমাকে ছোটায়
ছুটে যাই গ্রহ গ্রাম গ্রামাঞ্চল
পত্তনের পর পত্তনে
খোলা হোক খাবার দোকান
তুমি কি সরল প্রাণ!
তুলে নিলে আমার ছবিটি
যেন আমি কাঙাল করেছি
ঘটনাকে
তের
যেটুকু আউলিয়া
তাকে বলি মাত্রাবৃত্ত
তাকে বলি, আখ্যানের মতো
তুমিও জলের দিকে যেও
ধুয়ে নিও চোখ,
অনর্থক ফল
নিও ছায়া গাছ, জগন্ময় দিন
তবু এসবের কোথাও থেক না
তুমি
দেখ
বেশি রাতে কে কোথায় ভেঙেছে প্রতিমা!
অংশভাগ
সব্যসাচী মজুমদার
সব্যসাচী মজুমদার
খুব ভালো লাগলো প্রতিটি কবিতা।
উত্তরমুছুন