আমার মৃত্যু ঘটেছিলো বাড়ি ফেরার পথে, একটা সাধাসিধে সড়ক দুর্ঘটনায়। জগত-সংসারে ক্রমাগত ঘটে যাওয়া নৃশংসতার পাল্লায় মাপলে এই মৃত্যুটাকে ফেলতে হয় একদম বৈশিষ্ট্যহীন, স্মরণাতীত মৃত্যুগুলোর কাতারে।
হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণাহীন এক মৃত্যু; এবং মৃত্যুর ঠিক পরেই তার সাথে আমার দেখা।
প্রথমে আমার কোনোকিছুই মনে পড়ছিলো না। ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল হয়ে ক্রমাগত বিড়বিড় করছিলাম। তখনই উদাসীন নির্লিপ্ত কণ্ঠে সে আমাকে আমার পরিণতি জানালো।
— তুমি মারা গেছো।
আমি প্রাণপণে সবকিছু মনে করার চেষ্টা করছিলাম। একটা হলুদ ট্রাকের কথা আবছাভাবে স্মৃতিতে ধরা দেয়। এরপর আর কিছুই মনে নেই।
— আমি মারা গেছি?
— হ্যাঁ। কিন্তু এই নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নেই। সবারই তো মরে যেতে হয়।
তার ভাবলেশহীন উত্তরে আমার বিস্ময় কাটে না। আমি চারিদিকে তাকিয়ে অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করি। কিন্তু কোথাও কিছুই নেই। শূন্যের মাঝে আমরা দুজন ভাসছি।
— আমি এখন কোথায় তাহলে!
— মৃত্যুর পর যেখানে আসতে হয়!
— আপনি কি ঈশ্বর?
— হ্যাঁ, তা বলতে পারো।
আমি নির্বোধের মতো চেয়ে থাকি। মৃত্যুর কথা শুনে আমার স্বাতীর কথা মনে পড়ে। আমাদের চার বছর বয়সী ছোট ছেলেটার মুখ এক নিমেষে চোখের সামনে ভেসে ওঠে। কেমন আছে তারা! নিজেকে ঈশ্বর বলে পরিচয় দেওয়া সত্তাটিকে জিজ্ঞেস করি আমি। আমার প্রশ্নে তার মাঝে একটা কৌতূহলী হাসির আভাস ছড়িয়ে পড়ে।
— পৃথিবীতে যারা তোমার কাছের ছিলো, মৃত্যুর পরেও তোমার প্রধান উদ্বেগ তাদের নিয়েই। আমি এটাই দেখতে চেয়েছিলাম; শাশ্বত-সুন্দর ভালোবাসা।
তার হেয়ালিপূর্ণ উত্তর উপেক্ষা করে আমি এবার প্রথমবারের মতো তার চেহারার দিকে মনোযোগী হই। শান্ত-সুস্থির একটা অবয়ব, যাকে দেখতে কোনোভাবেই আসলে ঈশ্বর মনে হচ্ছে না। সে ছেলে নাকি মেয়ে তাও বুঝতে পারছি না। তবে তার অস্তিত্বে চমক লাগার মতো কিছুই নেই। ঈশ্বর কি এরকমই দেখতে হয়? নাকি আমি যাতে অস্বস্তিতে না পড়ি তাই সে এভাবে আমার সামনে এসেছে?
— চিন্তা করো না। তোমার স্ত্রী, সন্তান ভালোই থাকবে। তোমার ছোট ছেলেটার স্মৃতিতে তুমি আদর্শ বাবা হয়ে থেকে যাবে। তোমার প্রতি রাগ, ক্ষোভ জন্মানোর মতো সময় তো সে পেলো না।
— আর স্বাতী?
— তোমার স্ত্রী অনেক কান্না করছে। কিন্তু সেইসাথে তোমার থেকে মুক্তি পেয়ে ও খানিকটা স্বস্তিও পাচ্ছে।
— মানে?
— তোমাদের দাম্পত্য জীবন তো এমনিও ভাঙনের পথেই ছিলো। মন খারাপ করো না। নিজের এই অনুভূতির জন্যে ও প্রচণ্ড অনুতপ্ত।
এবার একরাশ শূন্যতা চেপে বসে আমাকে। স্বাতীর মুখটা মনে পড়ে। এভাবেই সব শেষ তাহলে? এখন কি আমি স্বর্গে যাবো? সেরকম কোনো খারাপ কাজ কখনো করেছি বলে তো মনে আসছে না। নিজেকে ঈশ্বর বলে পরিচয় দেওয়া সত্তাটিকে আর কিছু জিজ্ঞেস করতেও ইচ্ছা করছে না। এতোক্ষণ তার বলা কথাগুলো আমাকে বেশ চমকে দিয়েছে। কে জানে এরপর কী বলবে, হয়তো নরকেই যাচ্ছি আমি। জীবন কতোটা অপ্রত্যাশিত! কালও কি আমি ভেবেছিলাম একবারও পার্থিব চিন্তার ভিড়ে যেই আধ্যাত্মিক ভাবনাগুলোকে বরাবর উপেক্ষা করে এসেছি, আজই সেগুলোর মুখোমুখি হতে হবে? আমার দিশেহারা চোখের দিকে তাকিয়ে সে অভয় দিলো আমাকে।
— তুমি বেশি দুশ্চিন্তা করছো। এতো ভয় পেয়ো না। এসো, আমার সাথে কিছুক্ষণ হাঁটো, ভালো লাগবে।
অসীম শূন্যতার মাঝে উদ্দেশ্যহীনভাবে আমি তার সাথে হাঁটতে থাকি। মানুষ তার জীবদ্দশায় অসংখ্যবার নিজের অস্তিত্বের রহস্য সমাধানের চেষ্টা করে। আমি তাহলে এখন সেই চরম মুহূর্তে পৌঁছেছি যখন মানবজীবনের সকল প্রশ্নের অবসান ঘটে।
— আমার পরবর্তী গন্তব্য কোথায়?
— পৃথিবীতেই। মৃত্যুর পর তুমি বারবার পৃথিবীতেই জন্ম নেবে।
— পুনর্জন্ম?
— হ্যাঁ।
— কিন্তু কেন!
— কারণ এমনটাই হয়ে আসছে সবসময়।
— তবে তাতে আমার লাভটা কী?
— তোমার তো মৃত্যুই হয়েছে। এখনো কীরকম লাভের আশা রাখছো তুমি?
আমি তার কথায় লজ্জিত হই। দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে গুছিয়ে বলার চেষ্টা করি আরেকটু।
— আমি জানতে চাচ্ছি, জীবনের কী তাহলে কোনোই অর্থ নেই? আমার যতোবার পুর্নজন্ম হচ্ছে আমি তো সব ভুলে যাচ্ছি। আমার গত জীবনের এতোসব অভিজ্ঞতা, তার তো কোনো মূল্যই থাকছে না।
— সেরকমটা নয় আসলে। তুমি তোমার পূর্বের সকল জন্মে যে জ্ঞান অর্জন করেছো সবকিছুই তোমার অস্তিত্বে মিশে গিয়েছে। এই মুহূর্তে তোমার অনেককিছুই মনে নেই। একটু সময় দাও, তুমি আবার নিজেকে চিনতে পারবে।
তার সকল কথা আমি পুরোপুরি বুঝতে পারছি এমনটা নয়। কিন্তু সেই কণ্ঠস্বরে কোথায় যেন গভীর এক আশ্বাস লুকিয়ে আছে। শুনতে শুনতে শান্ত হয়ে যাই আমি, আমার চিন্তাগুলোও গুছিয়ে আসে। সামনে যেদিকে দেখা যায় সেদিকেই অসীম শূন্যতা। সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখ ধাঁধিয়ে যায় আমার। পরম শূন্যের মাঝে দিয়ে ঈশ্বরের পাশাপাশি হাঁটছি আমি, আর সে ধীর কণ্ঠে আমার সামনে উন্মোচন করতে থাকে আত্মার স্বরূপ।
— আত্মা বহু প্রাচীন। পুনঃপুনঃবার পৃথিবীর শোক ও উল্লাস উপভোগ করে সে এখন অনন্ত স্মৃতির আধার। কিন্তু নশ্বর মস্তিষ্ক সেই অসীমতাকে কল্পনা করতে পারে না। তাই যখন তোমার জন্ম হচ্ছে, তোমার পূর্বের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান তোমারই মনে থাকছে না। কিন্তু তাই বলে তা তুমি হারিয়ে ফেলছো এমনও নয়। তুমি যা দেখেছো, শিখেছো তোমার মাঝেই তা লুকায়িত থাকবে।
— তার মানে আমি আমার পূর্বজন্মের কথাও জানি। কিন্তু যখন জন্ম নিচ্ছি আমার সেগুলো মনে থাকছে না?
— হ্যাঁ, ঠিক ধরেছো। মানুষের পক্ষে কখনোই নিজেকে পুরোপুরি চেনা সম্ভব নয়। পৃথিবীতে থাকতে এই বিশালতার খুব ছোট একটা অংশকেই তুমি নিজের স্বরূপ বলে চিনেছিলে। কিন্তু এখন তুমি তোমার শরীর ত্যাগ করেছো। মৃত্যুর সাথে সাথে তোমার সেই পার্থিব বন্ধন ছিন্ন হয়েছে। নিজেকে চেনার পথে তোমার আর কোনো বাধা নেই। অনন্তকাল ধরে যতোবার তোমার জন্ম হয়েছে, সব এখন একে একে মনে পড়বে তোমার।
— কই আমার তো কিছুই মনে আসছে না।
— একটু সময় দাও। তুমি গত আটচল্লিশ বছর ধরে একটা শরীর বন্দি ছিলে। কিছুক্ষণ হলো খাঁচা থেকে মুক্ত হয়েছে, আকাশটা চিনতে সময় লাগবে না?
— তাহলে এভাবে এখন পর্যন্ত কতোবার জন্ম হয়েছে আমার?
— অসংখ্যবার। সংখ্যায় বলতে গেলে তোমার কাছে তা অসীম মনে হবে। যেমন, এবার তুমি জন্ম নেবে চীনে, ৫০০ খ্রিষ্টাব্দে। তোমার গত জীবন থেকে এই জীবন কিন্তু বেশ আলাদা হবে। এবার তুমি হবে এক ছা-পোষা গ্রামীণ নারী, ক্ষেতে কাজ করেই কেটে যাবে তোমার জীবনের বেশিরভাগটা।
— সব বুঝলাম কিন্তু ৫০০ খ্রিস্টাব্দে কীভাবে!
সময়ের পিছনে গিয়েও জন্ম নেওয়া সম্ভব কীভাবে? আমি বড়সড়ো একটা ধাক্কা খাই। সে উত্তর দেয় আমার প্রশ্নের।
— চাইলেই আমি যে কোনো সময়ে গিয়ে তোমার পুনর্জন্ম ঘটাতে পারি। সময় তো শুধু তোমাদের জন্য। আমি যেখানে থাকি সেখানে সময় নিরন্তর নয়।
— আপনি কোথায় থাকেন?
— আমি ভিন্ন আরেকটা জায়গা থেকে এসেছি, তোমাদের বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বাইরে সেই জগৎ। সেখানে আমার মতো আরো অনেকে আছে।
— আর এখন তাহলে কোথায় আমরা?
— এই জায়গাটাকে আমাদের দুটি জগতের মেলবন্ধন বলতে পারো।
আমি পুরো ব্যাপারটা বুঝতে কিছুটা সময় নিই। চুপচাপ হাঁটতে থেকি। তবে হুট করেই অনেকগুলো নিরবিচ্ছিন্ন স্মৃতি আর পরস্পরবিরোধী আবেগের মাঝে হারিয়ে যেতে থাকি আমি। এমন কিছু অনুভূতি আমাকে চেপে ধরে যা আমি কখনোই অনুভব করিনি। কখনোবা নৃসংশভাবে হত্যা করার অদ্ভুত পরিতৃপ্তির স্বাদ পাই আবার পরক্ষণেই সবকিছু হারিয়ে ফেলার তীব্র হাহাকার। হয়তো একটু একটু করে আবার চিনতে পারছি আমি নিজেকে। মাথার মাঝে যন্ত্রণা হতে থাকে আমার, কতো প্রাচীন আমার এই অস্তিত্ব! এই জ্ঞানের ভার আমার আর সহ্য হচ্ছে না। কিন্তু আমি থামতে চাই না, যেন এক প্রাচীন জ্ঞানপিপাসু সত্তাও জেগে উঠেছে আমার মাঝে। যেন বহু পুরনো এক দার্শনিক আমার মাঝে লুকিয়ে বসে ছিলো এতোদিন। ঈশ্বরকে পাশে পেয়ে সে আবার জেগে উঠেছে, তার সর্বগ্রাসী জ্ঞানের ক্ষুধা নিয়ে জানতে চাইছে জগতের অন্তিম রহস্য।
— আপনি তাহলে বলতে চাইছেন, আমার অসংখ্যবার পুনর্জন্ম হয়েছে। কিন্তু তা কোনো ধারাবাহিকতা মেনে হয়নি? এলোমেলোভাবে বিভিন্ন কালে গিয়ে আমি জন্ম নিয়েছি?
— হ্যাঁ, তোমার সময়রেখার সাপেক্ষে তো এলোমেলোই বলতে হয়!
— কিন্তু তাহলে আমার নিজের সাথে নিজেরই দেখা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় না? যদি চীনে জন্ম না হয়ে এবারও আমার জন্ম হতো বাংলাদেশে আর সময়টাও এবারের আশেপাশেই, ধরে নেই এরশাদ আমলেই। তাহলেই তো বিশাল একটা সম্ভাবনা থেকে যায় যে পূর্বজন্মের নিজের সাথে এই জন্মেও আমার দেখা হয়ে যাবে!
— হ্যাঁ। এরকমটা তো সবসময়ই হয়। কিন্তু জন্মের পর আগের কোনো কথা তোমার আর মনে থাকে না। তাই নিজের সাথে দেখা হলেও চিনতে পারো না। বললাম না, মানুষের পক্ষে নিজেকে চেনা অসম্ভব।
— তাহলে সৃষ্টির উদ্দেশ্যটা কী?
— তুমি সত্যিই তা জানতে চাও?
সে এবার আমার সোজাসুজি দাঁড়িয়ে যায়, গভীরভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। সেই দৃষ্টি যেন আমার শরীর ভেদ করে চলে গেছে বহুদূরে, এবার প্রথমবারের মতো শিউরে উঠে আমি।
— তুমিই আমার সৃষ্টির একমাত্র উদ্দেশ্য। এসব কিছুই আমি সৃষ্টি করেছি তোমার জন্য।
— মানে, আপনি বলতে চাচ্ছেন সমগ্র মানবজাতির জন্য? অথবা সমস্ত প্রাণিকুলের জন্য?
— না, শুধুমাত্র তোমার জন্য। পৃথিবীতে যাপিত জীবনের মধ্য দিয়ে যাতে তোমার আত্মা আরো বিকশিত হয় সেজন্য।
— সেটা শুধু আমার জন্য কীভাবে হয়! পৃথিবীতে আমি ছাড়াও তো আরো প্রাণি আছে!
— না, আর কেউ নেই। এই জগতে শুধুমাত্র তুমিই আছো। তুমিই বারবার মৃত্যুবরণ করেছো আর পুনরায় জন্ম নিয়েছো। অন্য যাদেরই তুমি দেখছো, তারা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন সময়রেখায় জন্ম নেওয়া তুমি।
— আশ্চর্য! এভাবে কতোদিন ধরে আমার জন্ম হচ্ছে?
— শুরু থেকেই। তুমি সেই মহাবিস্ফোরণের সময় থেকে আছো। আর তুমিই এসব কিছুর ধ্বংস দেখে যাবে।
— তাহলে আমি বেঁচে থাকতে যাদেরকে দেখেছি সকলেই আমি?
— হ্যাঁ।
— আমার স্ত্রী, আমার ছেলে, আমার মা; তারাও আমিই ছিলাম?
— হ্যাঁ। আজ পর্যন্ত যারাই জন্ম নিয়েছে আর ভবিষ্যতে যারাই আসবে সকলেই তুমি।
— আমিই তাহলে মহাত্মা গান্ধী?
— হ্যাঁ, আর তুমিই আব্রাহাম লিংকন।
— আমিই তাহলে ছিলাম হিটলার?
— হ্যাঁ। আবার তুমিই হলোকাস্টে নৃশংস মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া লক্ষ লক্ষ ইহুদি।
— এরকমটাও সম্ভব!
— এরকমটাই হয়ে আসছে। এখানে তুমি ছাড়া আর কেউ নেই। তুমিই ছিলে বুদ্ধ, তুমিই যিশুখ্রিষ্ট, আবার তাদের অনুসারীরাও তুমি।
— আমার এতোগুলো জন্ম তাহলে ছিলো শুধুই নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়া!
— হ্যাঁ। যখনই তুমি কারো সাথে প্রতারণা করেছো, তুমি তা করেছো নিজের সাথেই। যতোবার তুমি কাউকে গভীর আবেগে ভালোবেসেছো, তুমি আসলে ভালোবেসেছো নিজেকেই। এই পৃথিবীতে যতো আনন্দ আর শোকের আখ্যান, সবকিছু তোমারই জীবনের গল্প। এ সংসারে যা কিছু ঘটে যায়, সবকিছু তোমারই অভিজ্ঞতা।
“কিন্তু শুধু আমার জন্য এতো আয়োজন কেন?” আমি বিহ্বল হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি।
— কারণ এভাবেই একদিন তুমি আমার মতো হয়ে যাবে। তুমি আমাদেরই একজন। তুমি আমার সন্তান।
— আপনাদের মতো মানে? আমিও ঈশ্বর!
— না, এখনো তুমি ঈশ্বর হয়ে ওঠোনি। তুমি শুধু একটা ভ্রুণ। এই মহাবিশ্বকে বিশাল একটা ডিম ভেবে নাও, যেখানে তুমি ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছো। সকল ধরনের জীবনের স্বাদ পাওয়া হয়ে গেলে তুমি পূর্ণতা পাবে, শিশু থেকে সাবালক হয়ে উঠবে। তখন আর তোমার জন্ম হবে না, এ জগতে তোমার যাত্রা সেখানেই শেষ। তখন তুমি হয়ে যাবে আমাদের মতো একজন।
আমি আর কোনো প্রশ্ন করি না। অনন্ত ভাবনার সাগরে ডুবে যাচ্ছিলাম বারবার। কিন্তু জানি, আর বেশি সময় নেই। দূর থেকে নরম আলো এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমাদের। চারিদিকে ঝাপসা দেখতে থাকি আমি। সে এবার আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে ওঠে, “চলো, তোমার নতুনভাবে জন্ম নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে।’’
[গল্পটি Andy Weir এর ছোটগল্প The Egg এর ভাবানুবাদ। মূল গল্পের কাহিনি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে । কিন্তু অনুবাদের সময় গল্প বলার ধরনে পরিবর্তন আনা হয়েছে।]
মন্তব্য