বসন্তের সনেট
অহেতুক বসন্তের রোদ—অসময়ে ঝড়
বিরক্ত শিশুর কান্না... এরকম টুকরো-টাকরা
শীত-মিশ্রিত সময়ের প্রবচন!
তোমার চুলের ভাঁজে
এক তোড়া সনেট গুঁজে দাও
মরা নদী ভাষা ফিরে পাবে।
ফাল্গুনের রোদে
সকালে মিস্টি রোদের দিন—
কুম্ভ-সূর্য জাগে আদিবাভঙ্গিতে
বাড়ি ফিরে— নিস্তরঙ্গ তারা
ইশারাভাষায় ডাকে মাতৃভাষাবনে।
আচ্ছাদন পেরিয়ে যেতে চাই
দ্রুত!
চোখ বুজে শুনি— ডাকছে আকাশ
ছোট হচ্ছে আলো।
ফাল্গুনের বিকেলবেলায়
গতকালের বাতাশ— আজ খুব এলোমেলো।
মানতে চাই না তবু, কৈবল্য আঁকড়ে
ধরে হাত! স্বপ্নে চিৎকার করে উঠি
দেখেছি অবাক-পরিখা। এইমাত্র ডাকে
সাড়া দিলো যে— বলি, ব্যাগ গুছিয়ে দাও
দেরি হয়ে যাচ্ছে!
হালকা রোদের দুপুর ৯
যৌনতা, তাহলে ফিরে এলে গতিহীন সাইকেলে! কেমন দেখলে জীবন, কেমন ছেলেমেয়ে, যুবক-যুবতী! বসন্তের দিকে তাকিয়ে ওরা অহেতুক হাসিত্যাগ করে। নিশ্চুপ ধ্যানবিন্দু ভেদ করে পৌঁছনো যায় না সরোবরে? মিথ্যা আকাশের প্রতি টান ছিলো। বুঝিনি তীব্র ঝড়ের সংকেত। নকল নদীর প্রতি টান ছিলো। ‘ঝাউগাছ কই পাই?’ বলে ওঠে টনটনে রোদ। কিছুটা পেরিয়ে যায় নিশ্চুপ বালুর দুপুর। নকল নদীর পাশে আসল ঝাউ-য়ের বন— চিত্রকল্প ভাবো দামোদর, ব্যক্তিগত চিত্রকল্প ভাবো।
হালকা রোদের দুপুর ২৪
বসন্তের কোকিলটা গেল কই? সময়ের প্রতি সে ব্যাপক শ্রদ্ধাশীল। পিরিয়ড ফুরাইলে তার যথাতথা ডাকাডাকি নাই। অদেখা বাগানের কোলঘেঁষে, আমি বিরক্ত বহুৎ, দেখি এপ্রিলের ঝড়! আগুনের সামান্য পুঁজি, অথচ অনেক সিগারেট। —চলে যাও শৌখিন শিকারীর সাথে, যদি কিছু বন্দোবস্ত হয় মৎস্যশিকারের। অথবা বাদ্যযন্ত্র আনো। সে-ও খানিক কাজ। ঝুমঝুমিয়ে আনন্দযজ্ঞ করো। একদিকে মন্দিরার কাম, অন্যদিকে ভীষণ উচ্ছাস। দমকা হাওয়া নেই। অনুশোচনায় ডুবে যাচ্ছে কোকিলের গান।
হালকা রোদের দুপুর ২৫
একলা ছিলো নরম রোদের দিন। কোত্থেকে তার বন্ধু হলো গাছ, বন্ধ হলো ঘুম! অনেক উপদ্রব ছিলো বিকেলের ছোটবোন, বসন্তের ঐপারে। শহরের কোলে পাথরকুচি এক, নিতান্তই অবহেলায় ঝরে। অবাক আমার বিব্রত এই চোখে, উজ্জল হাঁস পালক ভেজায় সুখে। বাচ্চাগুলো খরগোশছানা হয়ে এদিক-ওদিক বরফ ছুঁড়ে মারে, বৃষ্টিরাগে জানলা খোলা মোজার্টের ঐপারে। আস্তে— ওই রূপ আসে ব্যাপক সুন্দর, বিপুল কান্না হয়ে। আনন্দের শয্যাপাশে গেঁথে রাখে যীশুর ক্রন্দন।
বসন্তের সনেট ও অন্যান্য কবিতা
সাম্য রাইয়ান
সাম্য রাইয়ান
মন্তব্য