রোদ পড়ে যাওয়া হলদে বিকেলের পথ ধরে
হেঁটে গেছি একা, চাইনি কেউ পিছু ডাকুক।
বুকের মধ্যে সুপ্ত ইচ্ছে ছিল -
বিকেলটা দীর্ঘ হোক।
সময় শোনেনা কার মনে কী ইচ্ছে ,
আমার বেলাতেও শোনেনি সে।
কমলা রঙা আকাশটার কাছে
আমি পৌঁছুনোর আগেই
শৈশবের স্মৃতির মতো ফিকে
হয়ে যায় আমার একলা বিকেল।
অথচ আমার বড্ড ইচ্ছে ছিল
আগুন লাগা কৃষ্ণচূড়ার সাথে
আরো কিছুক্ষণ কাটুক।
কিছুটা সময় নাহয় আরো কেটে যাক -
নিমফুল, জামরুল আর কামরাঙার বিকেলে,
উড়ে যাওয়া পাখিদের ডানায়
পড়ন্ত বেলার স্বর্ণাভ ছটা লাগুক।
ঘরে ফেরার কোনো তাড়া ছিলনা আমার।
শেষ বিকেলের চিঠির খামে
নীড়ে ফেরা ক্লান্ত পাখিদের সুরে অসময়ের
এক করুণ কোকিল আমাকে অবাক করেছিল।
বড় প্রেমজাগানিয়া–
সে আবীরমাখা কৃষ্ণচূড়া
আর প্রেমিক কোকিলের বিদায়ী সুর।
হোক সে অবেলায়, বিরহ বিধুর।
সন্ধ্যে নামার আগেই আমাকে
ফিরে আসতে হয়েছিল।
আহা! আমার নিমফুল, জামরুল,
কামরাঙা আর নীলকণ্ঠ বিকেল !
ইচ্ছে ছিল না জানাই
তোমাকে বিদায় সম্ভাষণ,
তবুও আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছিল,
ভালো থেকো, আমার শান্ত হলদে বিকেল।
অবেলার কৃষ্ণচূড়া বা
প্রেমিক কোকিলের আকুলতা -
কিছুই ঠেকাতে পারেনি সময়।
ঠেকাতে পারেনি আঁধার নামা,
এমনকি আমাদের অনিচ্ছের বিচ্ছেদ!
আমার একলা ডুবে থাকা,
গোলাপি - হলুদ - সাদা
বুনো সবুজ ঘাসফুলে নিমগ্ন বিকেল,
তুমি বারবার এসো ফিরে।
আবার আমি হেঁটে হেঁটে -
ছুঁতে যাব নরম রোদেলা আকাশ ,
তোমার সোনারঙ গায়ে মেখে।
আমাদের আবার দেখা হবেই হবে -
কোনো এক অবেলায়, এমনি বিকেলে -
হয়েছিল ঠিক আজ এখানে যেভাবে।
বসন্ত বিলাপ ৮
ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী
ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী
মন্তব্য