.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

সন্দীপ দত্তর শেষ সাক্ষাৎকার

কলকাতার আঠারোর এম টেমার লেন, ঠিকানাটা আজ বহু মানুষের চেনা। কেননা এ যে সন্দীপ দত্ত’র আস্তানা; লিটল ম্যাগাজিনের সংরক্ষণাগার৷  যতদূর জানা গেছে, এটিই তাঁর দেওয়া শেষ সাক্ষাৎকার। এরপর আর উনি কারো সাথে দেখা করার অবস্থায় ছিলেন না। তাই বড় অমূল্য সম্পদ এই সাক্ষাৎকারখানি।

কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরিতে প্রতিষ্ঠাতা সন্দীপ দত্ত মহাশয়ের মুখোমুখি ‘মিতালী সাহিত্য পরিবার’-এর প্রধান সম্পাদক কৃতিকণা চিনি

প্রশ্ন : কবে কীভাবে এই অভিনব লাইব্রেরি ভাবনায় এলো?

সন্দীপ দত্ত : আসলে সবকিছুরই একটা প্রস্তুতি থাকে, সলতে পাকানোর ইতিহাস থাকে, সেটার পঞ্চাশ বছর হল প্রায়। সে অর্থে লাইব্রেরি আরও পরে হয়েছে। ১৯৭২ সাল, আমি তখন পার্ট-টু পরীক্ষা দেবো, বাংলায় অনার্স, স্কটিশ-এ পড়ি। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে নিয়মিত যেতাম, একদিন দেখলাম প্রচুর লিটল ম্যাগাজিন দড়ি দিয়ে বাঁধা আছে। স্বাভাবিকভাবেই আমি কৌতুহলী হয়ে কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করলাম, এগুলি এভাবে কেন রেখেছেন? বলল, এগুলো রাখা হবে না। আমি বললাম, কেন? বলল, এগুলো নিয়মিত বেরোয় না আর বাঁধাই-এ অসুবিধা ইত্যাদি। তখন রীতিমতো চোখমুখ লাল হয়ে গেল, অপমানিত বোধ করলাম, কারণ আমিও একটা পত্রিকা শুরু করেছি তখন 'পত্রপুট' নামে। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে আর যাব না ঠিক করলাম। পার্ট-টু পরীক্ষা দেওয়ার পর যে অবসর মুহূর্ত পেলাম, মনে হল ন্যাশনাল লাইব্রেরির ওই ঘটনার প্রতিবাদে একটা কিছু করা দরকার। আমার বয়স তখন কুড়ি একুশ। প্রতিবাদস্বরূপ ১৯৭২ সালে ২৩ থেকে ২৭শে সেপ্টেম্বর সাড়ে সাতশো পত্রিকা সংগ্রহ করে আমাদের বাড়ির এই ড্রয়িংরুম থেকে ওই সদর দরজা পর্যন্ত একটি লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনী করি। তখনও এই লাইব্রেরি গড়ে ওঠেনি। তারপর মনে হল একটা কিছু করা দরকার। ছ'বছর পরে ১৯৭৮ সালে ২৩শে জুন এই লাইব্রেরির ভাবনায় এলাম।

প্রশ্ন: শুরুর সে দিনটা কেমন ছিল?

সন্দীপ দত্ত : লাইব্রেরি আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করিনি, শুধু আমার ডায়েরির পাতায় লিখে রেখেছিলাম যে, আজ থেকে শুরু করলাম। তখন নামটা অবশ্য এটা ছিল না, নাম ছিল 'বাংলা সাময়িক পত্র পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র'। ছ'টা চেয়ার, একটা টেবিল, একটা পত্রিকা রাখার র‍্যাক দড়ি দিয়ে ঝোলানো থাকতো, দেড় হাজার পত্রিকা দিয়ে শুরু, শুধু এই ঘরটাই। সোস্যাল মিডিয়া এখন বড় প্রচারের কাজ করে, কিন্তু তখন তো হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকের যুগ নয়, ফলত কাউকে জানাতে পারছিলাম না যে এমন একটা কাজ করছি। পাতিরাম বইয়ের দোকানে গিয়ে বলতাম, “আসুন না, একটা ছোট্ট লাইব্রেরি করেছি।” সকাল-বিকেল খোলা রাখতাম।

প্রশ্ন : লাইব্রেরির খরচাপাতি চলতো কীভাবে?

সন্দীপ দত্ত : আমি তখন স্টুডেন্ট, সদ্য এম এ পাশ করেছি। লাইব্রেরি করার পিছনে তখন চারটে পুঁজি। পুঁজিগুলো এইরকম— একনম্বর, সিগারেট খাওয়া ছাড়লাম, ওই পয়সায় পত্রিকা কিনবো বলে... এটা আমার মেসেজ ছিল। দুই, খড়্গাপুর লাইনে রাধামোহনপুর হাইস্কুলে আমি পার্টটাইম জয়েন করলাম, একশো টাকা বেতন। তিন, খবরের কাগজের অফিসে রাত একটা অবধি নাইট ডিউটি করতাম, ৫০ টাকার ট্রেনি। আর চারনম্বর হল একটা লক্ষ্মীর ভাঁড়, যাকে নাম দিলাম ‘থ্রী-পেনি অপেরা’, ব্রেখট্-এর নাটকের নামে। ওটাতে খুচরো পয়সা ফেলতাম। এই পুঁজি দিয়ে পত্রিকা কেনা-টেনা চলতে লাগলো।

প্রশ্ন : কীভাবে মানুষ জানলো এই লাইব্রেরির কথা?

সন্দীপ দত্ত : সকাল-বিকেল লোকজন খুবই কম আসতো। তখন ভাবলাম একটা বিবলিওগ্রাফির কাজ করি এখানে কি কি পত্রিকা আর প্রবন্ধ আছে তার একটা সূচি। রবীন্দ্রনাথ দিয়ে শুরু করলাম। সেটা সুনীল গাঙ্গুলীর হাতে পড়ল। ‘রবীন্দ্রনাথ ও আমি’ বলে ওঁর একটা লেখা ছিল, যে লেখাটা উনি কবি শ্যামলকান্তি দাশকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন নিয়ে আসার জন্য। শ্যামলকান্তি আবার অশোক মুখোপাধ্যায় বলে এক ব্যাঙ্ক কর্মচারীকে এখানে পাঠালেন। তখন জেরক্সের যুগ এতটা হয়নি। জেরক্স এসেছে, হ্যান্ডজেরক্স। লেখাটা ছোটই ছিল, ভদ্রলোক হাতে লিখে নিলেন এবং তার ভালোলাগা থেকে কতগুলো প্রশ্ন করলেন। আর সেটাই, এই প্রথম, ১৬ই জুন ১৯৮১, প্রথম আনন্দ বাজারের কলকাতা কড়চায় বেরোলো। লোকজন আসতে শুরু করলো। এইভাবেই ধীরে ধীরে লাইব্রেরি চিহ্নিত হল। পাঠক আসা বাড়তে লাগলো। তখন চাঁদা সিস্টেম ছিল না। যে কেউ আসতে পারে, পড়াশোনা করতে পারে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন কাগজে লেখালেখি আরম্ভ হয়েছে, এমনকি বিদেশি পত্র-পত্রিকাতেও ... হংকং থেকে বেরোতো ‘এশিয়া উইক’, এখানের ‘টেলিগ্রাফ’, ‘স্টেটসম্যান’ ইত্যাদি। মিডিয়া তো সবসময়ই খোঁজে নতুন কি কাজ হচ্ছে। আমি কিন্তু শুধু এই চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলাম না, বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনীও করতে লাগলাম। বিবলিওগ্রাফির কাজের পাশাপাশি একটা বই করলাম, ‘জীবনানন্দ প্রাসঙ্গিকী’, লিটল ম্যাগাজিন থেকে জীবনানন্দের উপর ১৯টা প্রবন্ধের কালেকশন। বইমেলায় তো আমি ’৭৯ সাল থেকে বসছি। ফলে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যত ইউনিভার্সিটিতে বাংলা পড়ানো হয়, তারা এবার গবেষণার কাজে আসতে লাগলো। শুধু বাংলা নয়, এখানে ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান ইত্যাদি নানা বিষয়ে.... জওহরলাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সহ আমেরিকা ইংল্যান্ড বিভিন্ন জায়গার গবেষকরা এখানে কাজ করতে এলো। এখানে উইলিয়াম রাভিচেক, এন্টার মিসিলির মতো বিখ্যাত মানুষেরাও এসেছেন।

প্রশ্ন : এই কাজ করতে গিয়ে কতটা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন?

সন্দীপ দত্ত : ১৯৮৩ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে গেলাম লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে। ওরা ব্যাপারটা ফুৎকারে উড়িয়ে দিল। বলল, এসব শিশুসুলভ ভাবনাচিন্তা... করা যাবে না। আমিও নাছোড়বান্দা। তখন বলল, ঠিক আছে, দশটা লেখা লিখে নিয়ে এসো। আমিও বিভিন্ন লাইব্রেরি খুঁজে নিজের মতো করে লিখলাম। দেখে বলল, না না, এসব হয়নি। তখন আমি বললাম, স্যার আমায় সিনপসিসটা দিন, আমি এখানে একটা সেমিনার আর প্রদর্শনী করবো, আপনি হবেন সভাপতি। সেমিনারে শঙ্খ ঘোষ, পবিত্র সরকার, উজ্জ্বল কুমার মজুমদার, শুদ্ধসত্ত্ব বসু, শৈলেশ্বর ঘোষ এঁরা ছিলেন বক্তা হিসেবে। আর ড. প্রণব রঞ্জন ঘোষ, যিনি বলেছিলেন লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে গবেষণা হয় না, তাঁকে করলাম সভাপতি। আশ্চর্যভাবে তিনি বলেছিলেন, কোনদিন শুনবো সন্দীপ বা অন্য কেউ লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে গবেষণা করছে। এই যে অ্যান্টি-এসটাব্লিশমেন্ট অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাটা শুরু হয়েছিল ন্যাশনাল লাইব্রেরির বিরুদ্ধে, এবার সেটাই শুরু হল তাবৎ ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে। এই বিরোধিতার মধ্য দিয়ে। তাচ্ছিল্য, উপেক্ষা আর অপমানের ভ্রূণে জন্ম নিল এই লাইব্রেরি।

প্রশ্ন : নাম পরিবর্তন করলেন কবে এবং কেন?

সন্দীপ দত্ত : সাময়িক পত্র বলতে একটা বিশাল জগৎ বোঝায়, কিন্তু যেহেতু আমার কাজটা মূলত লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে, তাই ১৯৮৬ সালে নামকরণ হল ‘লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র’। ১৯৯৬ সালে লাইব্রেরি রেজিস্টার্ড হল। তখন লাইব্রেরির নামের সাথে স্থানিক পরিচিতি হিসাবে ‘কলিকাতা’ শব্দটা যুক্ত হল। এইবারে চাঁদার ব্যাপার এল। বার্ষিক ২০ টাকা এবং লাইফটাইম ১০০০ টাকা দিয়ে শুরু যেটা এখন বার্ষিক ১২০০ টাকা আর লাইফটাইম ৫০০০ টাকা।

প্রশ্ন : উল্লেখযোগ্য কোনো স্মৃতি যা আপনাকে আজও তাড়িয়ে বেড়ায়…

সন্দীপ দত্ত : ’৯৩ সালে একটা ঘটনা ঘটে। ধর্মতলা দিয়ে আসছিলাম, একটা বিরাট ফেস্টুন চোখে পড়ল। তাতে লেখা, ‘অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস’। আমি ওটা পড়লাম ‘অল ইন্ডিয়া লিটল ম্যাগাজিন কনফারেন্স’। স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম এরকম যদি করা যায়। পরের দিনই সকলকে জানালাম যে, এরকম একটা করতে চাই। সবাই বলল, না না, অত বড় দরকার নেই, ইস্টার্ন জোন করাই ভালো। আসাম, উড়িষ্যা, বাংলা -এর মধ্যে। আমি বললাম, না, স্বপ্নটা বড় দেখব, পুরো ইন্ডিয়া থাকবে। এটার উদ্দেশ্য ছিল, আমরা যখন বাংলা ভাষায় লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে কাজ করছি, তখন অন্য ভাষায় কি অবস্থা রয়েছে ... তাদের সাথে একটা মিলনের জায়গা তৈরি করা। নভেম্বরে এটা চারদিন ধরে হয়েছিল, অমিয়ভূষণ মজুমদার এটার উদ্বোধন করেছিলেন। কাশ্মীর আসাম উড়িষ্যা মধ্যপ্রদেশ থেকেও বহু প্রতিনিধি এসেছিলেন। কিন্তু এটা যদি কন্টিনিউ করা যেত ভালো হতো। আসলে আমার ইচ্ছে ছিল বিভিন্ন প্রদেশে এটা হোক। উড়িষ্যা থেকে এক প্রতিনিধি বলেছিলেন, আমরা এটা এবার পুণেতে করবো। কিন্তু তিনি অদ্ভুতভাবে আমাকে এড়িয়ে নিজে এটা করতে লাগলেন। বাংলাতে আর কেউ এগিয়ে এলো না, আমার স্বপ্ন নষ্ট হল।

প্রশ্ন : সব কষ্টকে ছাপিয়েও তো কিছু পাওয়ার আনন্দ থাকেই, যা আপনার চলার পথে আলো ধরে…

সন্দীপ দত্ত : নিশ্চয়ই। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, লেখকরা নিজেদের কোনও পুরোনো লেখা যখন হারিয়ে ফেলেন, সেগুলোর খোঁজেও এখানে আসেন। যেমন, মহাশ্বেতা দেবী একবার বললেন, সন্দীপ ডুবেছি, আমায় উদ্ধার কর। ওঁর ১৫টা গল্প উদ্ধার করে দিলাম বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা থেকে। এরকম জয় গোস্বামী, চিন্ময় গুহ, অমল মিত্র, অতীন বন্দোপাধ্যায় – এমন অনেক লেখকের লেখা উদ্ধার করেছি। জয় তো এখানে অনেক লেখা পেয়েছে। ও নিজেই আসতো, এসে কাজ করতো। এখন ইন্টারনেট আর্কাইভও আমরা করেছি, কিছু পত্রিকার ডিজিটাইজেশন হয়েছে, যদিও তুলনায় কম। ৯০ হাজার পত্রিকা, সেখানে ১৪০০টা মাত্র ডিজিটাইজ্ হয়েছে। ব্যাঙ্গালোরের আই এফ এ সংস্থার থেকে ৫ লক্ষ মঞ্জুরী পেয়েছিলাম।

প্রশ্ন : লাইব্রেরি সম্বন্ধে বিশেষ কিছু তথ্য যদি পাঠকের উদ্দেশ্যে জানান…

সন্দীপ দত্ত : আমাদের লাইব্রেরির অনুষ্ঠান হয় মূলত তিনটে।
১) প্রতিষ্ঠা দিবস ২৩শে জুন যেটাতে পুরস্কার ঘোষণা হয়। ১৩টা পুরস্কার আছে লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার তিনটে, গবেষক সম্মাননা এখানে যারা কাজ করে তাদের মধ্যে থেকে বেছে, সারস্বত সম্মাননা নানা বিষয়ে কাজ করছেন যারা, ছোট গল্পকার সম্মাননা, আর প্রাবন্ধিক সম্মাননা। আরেকটা নতুন শুরু হয়েছে তিন বছর হল বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সম্মাননা। এঁরা সাহিত্যের সাথেই থাকবেন, এমন কোনো ব্যাপার নেই। যাঁরা সেবামূলক কিছু কাজ করছে, আমরা তাঁদেরকেও খুঁজি। এবার যাঁকে দিলাম, তাঁর নাম মাইনুদ্দিন শেখ, লালগোলার মানুষ। কলকাতা পুলিশ যেসব পাগল আর ভবঘুরেদের লালগোলা এক্সপ্রেসে উঠিয়ে দেয়, উনি তাদের নামিয়ে আশ্রয় দেন, খাওয়ান এবং ঠিকানা খুঁজে খুঁজে বাড়ি পৌঁছে দেন। একটা মানবিক মুখ।
২) নভেম্বর বা ডিসেম্বরে হয় সমাবর্তন যেটাতে পুরস্কার বিতরণ হয়, তোমরা এসেছিলে যেটাতে।
৩) বার্ষিক পিকনিক।

আর মাঝে মধ্যে প্রদর্শনী করি।

এখন আমাদের জায়গার অভাব রয়েছে, বই যত বাড়ছে, জায়গা তত কমছে। আপাতত তিনটে ঘর, পাঁচজনের বেশি রিডারদের জায়গা দিতে পারি না, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে তারা কাজ করে। মানুষ যাতে সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা করতে পারে তার জন্য জায়গা প্রয়োজন।

প্রশ্ন : সরকার কিছু করে না?

সন্দীপ দত্ত : সরকার সত্যি কিছু করতে পারে না। সরকারের কাছে তুলে ধরলে তারা বিষয়টা বোঝেই না, মূর্খ গাড়ল একটা জায়গা। আমরা ফেসবুকে একটা পোস্ট কয়েকবার করেছিলাম, কিন্তু সরকার থেকে নীরব। সরকার থেকে একটা প্রস্তাব ছিল যে, দুজনকে চাকরি দেবে অথবা সমস্তটা স্টেট লাইব্রেরিতে দিয়ে দিতে। স্বাভাবিকভাবেই রাজি হইনি, কারণ তাতে লাইব্রেরির সার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়। আমরা স্পেস চাই। কিন্তু স্পেসের ব্যাপারে নীরব। এখানে ব্রাত্য বসু, জয় গোস্বামীও পড়াশোনা করেছেন। আমি মনে করি এটা বাঙালির দায়, কোনো ব্যক্তিগত দায় নয়। ফলত এটা লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছে। আমি ২৭ বছর বয়সে শুরু করেছিলাম, এখন ৭২... অন্ততঃ আমি তো আমৃত্যু করে যাবই। সারকথা হল ধৈর্য-বিশ্বাস- ধারাবাহিকতা।

পাশাপাশি এর একটা রেজিস্টার্ড সোসাইটি আছে, তারা অনেক কাজ করে দেয়। নানান ধরনের কাজে তারা সহযোগিতা করে। এইভাবেই লাইব্রেরি চলছে। তবে হ্যাঁ, অদূর ভবিষ্যতে আমরা একটা কবিতার লাইব্রেরি করবো, শুধু কবিতার বই সেখানে থাকবে। তাহলে অন্তত এখানে দু-তিনটে র্যাক খালি হবে।

প্রশ্ন : আপনি সারা ভারত জুড়ে লিটল ম্যাগাজিন কনফারেন্সের যে স্বপ্নটা দেখেছিলেন, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে সেটা কি আর নতুন করে শুরু করা যায় না?

সন্দীপ দত্ত : কে করবে? আবার বলি, সেটা করা উচিত, করা দরকার। কিন্তু এই প্রয়োজনীয়তার কথা কাকে বলবো? কারা করবে? বললেই বলে, আপনি করুন, আমরা আছি। এইটাই আমি উল্টে দিতে চাই যে, তোমরা করো, আমি আছি। আমি তো একটা কাজ করে দেখালাম, হয়... হতে পারে। লড়াইটা থাকবেই। লড়াই না হলে কিচ্ছু হয় না। ঘাম-কষ্ট-যন্ত্রণা-পরিকল্পনা ছাড়া আর যাই হোক, লিটল ম্যাগাজিন হয় না।

মন্তব্য

নাম

অনুবাদ,32,আত্মজীবনী,26,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,319,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,15,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,56,ছড়া,1,ছোটগল্প,12,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,15,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,152,প্রিন্ট সংখ্যা,4,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভাষা-সিরিজ,5,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,37,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: সন্দীপ দত্তর শেষ সাক্ষাৎকার
সন্দীপ দত্তর শেষ সাক্ষাৎকার
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjagSHdZm47-HfYz2EP2sq53A2UIC7H4UIhq15vcmTpUYfjS-SNxM7bJsg9tdlX5IkTo0-D52QeND5aefLEsFH5iM6K8D2-PrgNMiAqpv9qaAkgPQjdRpntU4wUuHO8B0Ys1vW1NTu266ZmJ_CPpLJKYtXUk9J-KhDlQtGJPyX3aCXG3h_sZZuUwX3QGoY/s16000/sandip-datta-bindu-littlemag-cover.png
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjagSHdZm47-HfYz2EP2sq53A2UIC7H4UIhq15vcmTpUYfjS-SNxM7bJsg9tdlX5IkTo0-D52QeND5aefLEsFH5iM6K8D2-PrgNMiAqpv9qaAkgPQjdRpntU4wUuHO8B0Ys1vW1NTu266ZmJ_CPpLJKYtXUk9J-KhDlQtGJPyX3aCXG3h_sZZuUwX3QGoY/s72-c/sandip-datta-bindu-littlemag-cover.png
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2023/12/interview-with-sandip-datta.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2023/12/interview-with-sandip-datta.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy