সৈয়দ রিয়াজুর রশীদের কিছু গল্প
রুদ্ধশ্বাস এক সাঁতারে অতিক্রমের পর-
মিনি এক সিন্ধুর খোঁজ দেবার জন্যে যে বিন্দুর ব্যাখ্যা নিতে উদ্যত হই, তা ওপর ওপর অবলোকনে মসৃন বৃত্তাকার মনে হয় প্রথমে ;নিরীক্ষা নিমিত্তে ডুব দিয়ে দেখা গেলো আরো অযুত রেখার ভাঙচুর –রেখাগুলি মানুষ অথবা সভ্যতার মুখের। নীলজল সীমা মধ্যে কখনো পঙ্কনাচ ও বিবিধ মৎসক্রীড়া, কখনো শ্যাওলার পিছলে ফাঁস ও জলাকার গৃহে অসহায় মুহূর্ত সকলের ফেনা, কখনো রোদহীনতায় মজে ওঠা ফাঙ্গাস দিন ও মন্ত্রচাকুতে গলাকাটা রাতের আরো আরো অসমাপ্ত ব্যবচ্ছেদ, কখনো বোলাতে বোলাতে কামড়াতে কামড়াতে এগিয়ে যাওয়া নখ-দাঁতের এক্সাইটেড কম্বিনেশন ও সুরসুরিতে হঠাৎ কালো কামের উন্মোচন।
তার ছোট গল্পের কোনো ডাল গেছে সমাহিত সুরের দিকে
কোনোটা আনন্দপোষাকাচ্ছাদিত শোকের
কোনোটা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগে ভুগে হার্নিয়া আক্রান্ত
কোনোটা অগ্নি গিলে যাওয়া আর অগ্নি হেগে ফেলা
কোনোটা কবিতার আঙ্গিকে সংক্ষিপ্ত কষ্টের আপদমস্তক ভ্রমণ
কোনোটা ভাষার কেরদানিতে ভরপুর অথচ মাথা ধরে যায় না।
কোনোটা সিকি মানুষ আধুলি মানুষ বারো আনা মানুষ ষোল আনা অমানুষ
……এই সবের
যেরকম কনস্ট্রাকটিভ (?) আলোচনা করলে কাজের কাজ কিছুই হয় না, শব্দের কচকচানিতে বিশেষণের ভারে পর্যবেক্ষণটি ডিস্ট্রাকটিভ হয় অর্থাৎ গল্পের ১২ টা বাজে আসুন সে রকম কিছু শোনা যাক–
রাত্রি হয় ঘুমের অথবা সন্তান জন্মদানের অথবা ভক্তিমূলক স্নানের, আকাশ ভেদ করে ঈশ্বরের পদচুম্বনের, ঘরে ঘরে হেরা পর্বত গুহা চিত্র; যীশুর ক্রুশ এবং অগ্নির ;বোধিবৃক্ষ বড় হয় প্রতিরাতে প্রতি ইঞ্চি অথবা চোর-ডাকাত-খুনী-নিশাচরের, পাহারাদার হুইসেলের অথবা নির্ঘুম ক্লান্তির সাবান ফেনাময় অথবা শুধু পতিতার, সুলভ ও দুর্লভ মাংস, বীর্যপ্রবাহ– লালা সর্দি, ক্ষার-রসঘাম, পিচ্ছিল শরীর ডানাহীন, তথাপি উড়ন্ত গন্তব্য অপরূপ নিখাঁদ স্বর্গের অথবা কালোর সঙ্গে নীল মিশিয়ে ষড়যন্ত্রের নকশা তৈরির অথবা ডাকিনী যোগিনীর লাল জিহ্বা সাপের লেজের মতো চাবুক উঁচায় যোনিজ শিশুকে–দীর্ঘ নীল সব চুল উড়িয়ে ঝাপট মারে খটখটে হাতের অস্থি -আঙ্গুল -পাখার নিচে আশটে গন্ধে দম আটকে মরে জনপ্রাণী–হিহিহিহিহি-খি খি খি খি–হাস্য নিনাদে হৃৎপিণ্ডের সুতো ছিন্ন-ফকিরের তাবিজে লাশের আটি গর্ভবান–প্রেতিনী সন্তান ছাড়ে পৃথিবীতে–সক্ষমবীজ। অথবা স্বপ্ন দর্শনের; স্বপ্নে হাওয়াই যানে উড়োযাত্রী চলন্ত পথে মেঘের ধোঁয়া উপভোগ করতে করতে আকস্মিক তলা খুলে নেমে আসে নিচে- অথৈ নীল ১ সমুদ্রে পানসী নৌকা ১ মাত্র -১টা রূপালি মাছ সোনার ডিম উপহার দেয় আর একমাত্র অর্ধনারী -সে এসে চুম্বন করে মুখে, অঝোরে -যুবতী মাছের যোনি নেই, বহুদিন পর ঈশ্বরীত প্রেম। রঙ-বেরঙের মাছ সাঁতার কাটে আর জাপানী গান শোনায়, ১টা ভাওয়াইয়া- সখি মাছের দল নাচে -সূর্য আলোক সজ্জা করে -বাতাস কর্পূর ঠাণ্ডা-সহসা নৌকাডুবি নীল সমুদ্রে একজন এমন সব মনোজ্ঞ রাতের যে, সে পুরুষ বলেই সমুদ্র তাকে নেয় না তাই নিঃসঙ্গ এবং চেনা সহজ হয়- সেই নুরুল এসলাম –যার বউ অথবা কামসঙ্গী বদলে যায় বাসের জানালা দিয়ে দেখা অজস্র দৃশ্যের মতো, দ্রুত, পরপর। বিলকিস, নাসিমা, রানী, তারানা-রা বউ পোষাকে অথবা কাম চালানোর জন্যেই কম বয়েসি কাজের মেয়ে রেখে দেয়া তার জন্য নিঃশ্বাসের মতো জরুরি হয়ে পড়ে। এক দুপুরে পুলিশের অভিযোগ ছিন্ন-ভিন্ন করে মানসিকভাবে। গণরোষ থেকে বাঁচতে সে জেলখানাকেই নিরাপদ ভাবতে থাকে। তার চারিদিকে এগিয়ে আসে কাঁটাময় দেয়াল। শূন্যতার দিকে ধাবিত হয় মহাজীবন। সবল পেশী খুড়ে চলে গহ্বর --গহ্বর বৃত্তে ছায়া নিরিবিলি ছায়ায় জীবন থেকে মৃত্যু অথবা মৃত্যু থেকে জীবনে প্রত্যাবর্তন করে। নূরুল এসলামের ইন্তেকাল গল্পে ভোগ সর্বস্ব এক পুরুষের গেটলক মাংসজ ভ্রমণ দেখে শিউরে উঠি, হাততালি দেই, থুথু ছেটাই আপন মনে আর তখনো ইথারে ভাসে এক অব্যর্থ কামবাণী-একজনের বুকে পিশাচ বাজনা, অন্যজনের বুকে নদী।
স্বামীকে খুজঁতে শহরে এসে জিন্দাপীরের মাজারে আশ্রয় নেয়া পদে পদে আশাবাদী সালেহা নির্বিঘ্নে জটাধারী পাগলের নিচে শুয়ে তার অনেক দিনের উপোষে মরা শরীরে একাধারে স্বাদ যেমন নেয় তেমনি পীরবাবাকে খুশি করা আর 'ছোট একটা পুটলি' যার ভেতর কি আছে সেও জানে না–এই ত্রিমাত্রিক আবহে অলৌকিক ইশারার সন্ধান লাভ করে সিরিয়াস পাঠক। 'অলৌকিক সংবাদ' এ সালেহা চরিত্রটি আমাদের কুসংস্কার পীড়িত জনপদে ক্রম বীর্যবান পুরুষতান্ত্রিকতার স্বরূপগুলো দিনের আলোর মতো খোলাখুলি করে দেয়।
একটি পুরু মুখোশ আছে ত্বকের সঙ্গে অদ্ভুত মিশে যেতে সক্ষম: শুধু এটে নিতেই ম্যাজিক। মুখোশটি ধারণ করা মাত্রই বেমালুম অন্যরকম মানুষ: যে করতে পারে না এহেন কাজই বড় কম। মুখোশ আনে গুণগত অদলবদল, বড় দরকারী এই মুখোশ। মুখোশ ঢেকে রাখে নিজেকে, তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয় প্রতিদিনই ভেতরের আমিটাকে। মুখোশের রুটিন দশটা বাজার পাঁচ মিনিট আগে হতে শুরু করে পাঁচ মনিট পর পাঁচটা পর্যন্ত স্থির। ধীরে, ক্রমাগত ব্যবহারে মুখোশই হয়ে ওঠে আসল চেহারা; মুখোশ ক্রমে শ্বাস টিপে মেরে ফেলবে প্রকৃত নিজেকে, মুখোশই হবে পরাক্রমশালী। মুখোশের সাফল্য তুঙ্গ স্পর্শ করে। মুখোশ কুশলী করে তোলে নিজেকে। মুখোশ পরিত্যাগের পর পুনরায় সেই অমোঘ তীব্র একাকীত্বের ধারালো আক্রমণ অনিবার্য এক নিয়তি যেন। মৃত্যু পতিত মানুষটি সেজেগুজে পরিপাটি হয়ে নিখুঁতভাবে ধোপ দুরস্ত হয়ে ফের অফিসে যায়, শরীর হতে ভাঁপিয়ে ওঠা লাশ পঁচা বিকট গন্ধ, ফরাসী এসেন্সের জোড়ালো গন্ধে ডুবিয়ে আড়াল করে রাখে। মুখ আবার পূর্বাপর মুখোশে ঢাকা।
মুখোশ গল্পে এমত মনে হয় যে, মুখোশ পোষাকের মতোই জরুরি আর এর ব্যবহার প্রক্রিয়া কাউকে আকাশে তোলে অথবা পাতালে পুতে রাখে।
নিম্নোক্ত স্যাটায়ারগুলো বিচ্ছিন্নভাবে আছে 'বস্ত্রহীন প্রতিবিম্ব' গল্পে। অনুচ্ছেদ থেকে চেছে তোলা এই বাক্যগুচ্ছ পূর্ণরস প্রদানে অপারগ, তবু, হিট অংশগুলো ফোকাস করা যাক–
১. সেনাপতি মশাই দিব্য চোখে দেখলেন কল্পনায়, রাজা-রানী ঢেউ তুলে খেলছেন 'আরেকবার' ' আরেকটু 'করতে করতে রাত কাবার। 'শেষদান, খেলা' হতেই সূর্যোদয়।
২. এত তাকাতাকি কেন বাথরুমে বসে--অ্যাঁ। দেখেশুনে রাজার 'বাকরুদ্ধ-মলত্যাগও বন্ধ'।
৩. পাঞ্চ করে গরম বের করে দিতে না পারলে তিনি নিজেই ফেটে যাবেন।
৪. এসময়ে মশগুল হয়ে মাথা নাড়েন, যেমন কুকুরের লেজ।
৫. হায় গণতন্ত্র, নাই গণতন্ত্র, চাই গণতন্ত্র।
৬. 'নিতম্বের মত নরম' গদি আটা বিছানায় রাজা-রানী পাশাপাশি। পোষাক খোলামেলা।
৭. বিদেশে চলে যাও। টেস্টটিউব বেবী হবে।
৮. দরকার নেই। কোন্ লোকের না কোন লোকের জীন (Gene) বহন করতে হবে, শেষে দেখা যাবে বড় হয়ে বিগড়ে গেলো। তখন দেখা যাবে তোমার অবস্থা সম্রাট শাজাহানের মত। আওরঙ্গজেবের হাতে।
৯. মঞ্চের বাইরে উপবিষ্ট প্রধান মন্ত্রীর চোখে পড়লো রাজা মশাইয়ের শিশ্নটি ডান পন্থী।
১০. তাঁর স্বামীর 'ইয়ে' টা বিশাল দেহের তুলনায় 'এতটুকু'।
১১. একটি মুসলিম দেশের রাজা তাকিয়ে দেখলেন– পিউবিক হেয়ারের ঝোঁপজঙ্গল শরীরে। তিনি বিড়বিড় করে' নাউযুবিল্লাহ' দশবার।
১২. হৈ হৈ রাজা আপনের কাপড় কই? আপনি ন্যাংটা।
গল্পটিতে রূপক রাজার মাধ্যমে তার নিজের যে বিকচ্ছ রূপ, যাবতীয় স্বেচ্ছাচারিতা, একাকীত্ব, মহাবোকামি, মন্ত্রীপরিষদের অলসতা, গ্রাম পোড়ানোর ভয়ংকর সুন্দর ইচ্ছা, আটকুড়েমি ঢাকার অপচেষ্টা এবং রতন পাগলা সৃষ্ট হ্যালুসিনেশনে ডুবে যাওয়া এক বিশাল ভাঁড়ের খোঁজ পাঠ সমাপনে পাওয়া যায়। আগেই বলেছি গল্পটির পায়ে পায়ে ছড়ানো বিভিন্ন মাত্রার স্যাটায়ার। এগুলো ফ্যান্টাসিপ্রবন ফলে ফ্যান্টাস্টিক স্যাটায়ারও বলা যেতে পারে। হাসতে হাসতে হঠাৎ করুণ ইঙ্গিতময় ভাষ্যের দিকে নিয়ে চলে। হাসতে হাসতে কাপড় তুলে ঘা দেখানো যাকে বলে।
পূর্বদিন চরমপত্র পেয়ে সাময়িক বরখাস্ত আব্দুল আলিম পাটোয়ারীর পরবর্তী সকালের ধারাবাহিক চিত্রাবলী--'সুপ্রভাত' গল্পটি। ঘুম থেকে জেগে 'হাই' দিতে দিতে 'হাওয়া হাওয়া এ হাওয়া খুশবু লুটা—— ইয়ার মিলা দে, দিলদার মিলা দে'। পিচুটি সাফ করে গতরাতে হয়ে যাওয়া স্বপ্নদোষের কারণে লুঙ্গির গায়ে মানচিত্র–বিছানা হতে নেমে মেঝেতে পা রেখে লুঙ্গির গায়ে শুকনো সেই খরখরে মানচিত্রটিকে পায়ের গোড়ালির দিকে চালান করে দেয় তড়িৎ। কেসে সিগারেট না পেয়ে-পাকু বন্ধ, বাথরুমে অর্ধদিবস হরতাল। দৈনিক পত্রিকা পৌঁছেনি ভেবে সে বলে 'নাটকার পোলার দেরীতে পেপার দেয়া ছোটামু।' আবার ভাবে ঝি অনুপস্থিত হয়তো। ইদানিং কাজের ঝি-রা হচ্ছে বাড়ির আদরের বিবিজান। আব্দুল আলিম এমনই যে তার জন্যই পাশের ফ্লাটের কুত্তার বাচ্চা আহমদ সাহেব বউ নিয়ে চম্পট মেরেছিল। কর্মচ্যুত আব্দুল আলিমের মনে হয় একমাত্র মানুষরা খাওয়া দাওয়া শুরু করলেই ইঁদুরের উৎপাত হ্রাস পেতে পারে, যেমন ব্যাংঙের সংখ্যা কমে গেছে। মশাদের নিয়েও এমন ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব। হঠাৎ করে সে একটি ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। তাকে ক্ষণিক শান্ত করে। কর্মচ্যুত করতে হলে পেপারঅলা এবং –কাজের মাতারীকে কোনো নোটিশ না দিয়েই তাড়াবে। এসব ভেবে বগলের গন্ধ শুঁকে শুঁকে উদাস হলে কাকের 'গু' তার মাথা বরাবর একদলা প্রাকৃতিক উপহাস ছুড়ে দেয়। বিপর্যস্ত মানুষের পোড়া সময়ের খণ্ডিত ইতিহাস এই গল্প।
রঞ্জন নামের মানুষ যখন হাসিবে রূপান্তরিত হয়, বন্যার পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে ওঠা অপরাজেয় বৃক্ষ স্বভাবের মতন তখন শুধু স্মৃতি মাথা উঁচু করে বাঁচে, বেঁচে থাকতে প্রবল আগ্রহী হয়ে ওঠে অথৈ বর্তমান স্রোত মধ্যে। একদিন যে রঞ্জন মূর্তি গড়তে পারতো, সেই তারই হাত মসজিদে মোনাজাতরত—কিন্তু কর্তব্যের পর্দা ঠেলে আত্মার ঘরে ঢুকে পড়ে নৌকোয় চড়ে কুমোর--পৈতা ঝুলিয়ে, দুর্গা দশ হাতে দশ ভূজা, সিংহবাহন, কলাবউ, অর্জুন, গণেশ আর কৃষ্ণ অসূর এবং মণ্ডপে উপাসনারত পুরুত জপে মগ্ন 'যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তি রূপেন সংস্থিতা নমোস্তস্যৈ নমোস্তস্যৈ নমো নমঃ।" যাকে ভালবেসে এই ধর্ম পরিবর্তন চোখের আওতায় আর সেই সপ্রাণ রানি ধরা পড়ে না। কাম থিতিয়ে এলে বিবাহ পূর্বদিনরাত্রি উজ্জ্বলতর হয়। আক্রন্দন হৃৎ-যাত্রা গল্পে হাসিবের মৃত্যু কেন্দ্রিক স্বপ্ন তাকে যুগপৎ নিজের বিলয় প্রাপ্তি ও পুনরুত্থান ঘটায়। ধর্মান্তরিত হওয়ায় সামাজিক প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি মনোগত যে ব্যাপক ভাংচুর হয়, আমূল পাল্টে যেতে থাকে ব্যক্তিসত্তা, তা পাঠকের মনোভূমিতে চাপ চাপ দুঃখানুভূতি সৃষ্টিতে সক্ষম।
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদের গল্প আসলে আমাদের সমস্ত খাপছাড়া, হৃদয়হীন, দুঃশ্চরিত্র, নষ্ট, গলিত গলি ঘুপচিতে এনে আক্রোশে ফেটে পড়া শব্দে ডুবিয়ে চুবিয়ে অসহনীয় স্নানে অভ্যস্ত করে তোলে। তাঁর যৌন চেতনা উত্তেজিত করতে করতে খপ করে ধরে ফেলে উত্থিত লিঙ্গের গ্রীবা। যৌন বিকারগুলো সংস্কার ভেঙ্গে নতুন সংস্কার আর রুচির জন্ম নেবে। তিনি শক্তিশালী হাতে জঙ্গল কেটে কেটে পথ বানাচ্ছেন। একাই। অন্যরকম শব্দ তরবারি দ্বারা।।
বিবেকবানের উত্থিত কালো লিঙ্গ>> মন্থর বীর্যপাত>> সর্বগ্রাসী জন্ম
মজনু শাহ
মজনু শাহ
মন্তব্য