ক্যারিয়ার সর্বস্ব জমানার প্রতিষ্ঠানবিমুখ লেখক সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ। তাঁকে নিয়ে প্রকাশ হচ্ছে বিন্দু’র বিশেষ অনলাইন সংখ্যা।
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ আশির দশকে বিকল্পধারার অন্যতম গল্পকার। তাঁর গল্পের ভাষা ও বিষয়বস্তু প্রক্ষেপণ সমাজবাস্তবতাকে অন্য এক নন্দনতত্ত্বের মাপকাঠিতে নিয়ে আসে। বাঙলা গল্পের একটি নিজস্ব ও মৌলিক বিন্যাস তাঁর লেখায় উপস্থিত।মূলত মানুষের অস্তিত্বের বিপন্নতা ও বিচিত্র নানাবিধ অনুষঙ্গ চিত্রিত হয়েছে তাঁর কথাসাহিত্যে। তাঁর লেখায় এক প্রকার চিত্রকল্পধর্মীতার পরিচয় পাওয়া যায়, এ কারণে একজন চিত্রকরের জন্যও তাঁর ভাষার নানান উপাদান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ এর জন্ম ১৯৬২ সালের ৪ঠা অক্টোবর সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে। পিতা: সৈয়দ হারুনার রশীদ, প্রয়াত; মাতা: জাহানারা রশীদ এবং বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ফরিদা হাফিজের সাথে।
উত্তরবঙ্গের মানুষ হলেও তাঁর শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কেটেছে ঢাকা শহরে। লেখাপড়া টিএন্ডটি স্কুল, নটরডেম কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রবার্ট গর্ডন ইউনির্ভাসিটি, স্কটল্যান্ড।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ থেকে ঔষধবিজ্ঞানে সম্মান ও স্নাতক ডিগ্রী ছাড়াও অন্যান্য বিষয়: সাংবাদিকতা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন অধ্যয়ন ও জেনোসাইড স্টাডিজে তিনি উচ্চতর সনদলাভ করেন। শিক্ষাত্তোর জীবনে বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন পরিদপ্তরে চাকুরী করেন ও স্বেচ্ছাবসর নিয়ে বর্তমানে যুক্ত রয়েছেন লেখাপড়া ও গবেষণা কেন্দ্রিক জীবনযাপনে।
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ লিটলম্যাগ আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব; ১৯৯৩ সালে লিটল ম্যাগাজিন সম্পর্কিত প্রবন্ধ রচনার মধ্য দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বর্তমানে তিনি ছোটগল্প সৃষ্টির সঙ্গে প্রবন্ধ রচনা ও উপন্যাসে নিজেকে ব্যাপিত রেখেছেন।
মানুষের সঙ্গে মানুষের মানবিক সম্পর্ক নির্ণয়, অবক্ষয়ের উন্মোচন ও বণিকপ্রবর-ধনপতি কর্তৃক অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক-সামাজিক ও যৌথঅস্তিত্বের ক্রন্দন তার সমগ্র রচনাজুড়ে প্রতিফলিত হয়েছে।
মূলত গল্পকার হলেও প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে প্রবন্ধ, উপন্যাসও।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক আবহ, সামাজিক নানা অসঙ্গতি তিনি কখনও তীর্যকভাবে কখনও সহজে কিন্তু শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে প্রকাশ করেছেন। নিজস্ব ভাষা তৈরি করে সাহসের সাথে তিনি তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তাঁর সকল রচনায় ভাষা নিয়ে কঠিন নিরীক্ষার প্রবণতা দেখা যায়। প্রাত্যহিকতায় মলিন, অতিচেনা বিশেষ্য বিশেষণ ক্রিয়াপদের পুরানো চেহারাকে নিজস্ব কায়দায় দুমড়ে মুচড়ে, সচেতন প্রয়াসে দিয়েছেন ঝকঝকে টাটকা অন্য এক আদল।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭টি।
উপন্যাস
- আমীমাংসিত আলো-আঁধারি/ পিতৃপুরুষগণ অথবা ইতিহাসের মানুষজন (২০১২)
- বিস্তারিত অথবা বিস্মৃতি (২০১৩)
- জ্যোৎস্নায় এক প্রাচীন নৌকা (২০১৬)
- হাতিয়ারওয়ালা (২০১৭)
- কুসুম কথা অমৃত (২০১৭)
- ইতি তোমার মুজিব (২০২০)
ছোটগল্প
- আগুনের বিপদ-আপদ (১৯৯৪)
- শাদা কাহিনী (১৯৯৬)
- লাশ নাই (১৯৯৯)
- গল্প অন্যান্য ও ছবিলেখা (২০০৬)
প্রবন্ধ
- রক্ত অনুষঙ্গ (২০০৬)
- তামাদিপাতা ও ভাষার আঙ্গিক (২০০৮)
- সৈয়দ শামসুল হক: আমাদের আধুনিকতার কয়েকটি দিক (২০১৭)
ছোটদের বই
- কুফাভাইয়ের কুফাগিরি (২০০৬)
- বুলেটের আংটি (২০১৪)
সম্পাদনা
- স্বপ্নের সারসেরা (যৌথ, ২০১০)
অন্যান্য গ্রন্থ
- জননীর জন্য গল্প ও লেখকের হত্যাকাণ্ড (২০০৫)
- সোনার দোয়াত-কলম (২০১৩)
রচনাবলী
- সমগ্র রচনা ১ (২০২২)
প্রতি আখ্যানের প্রেক্ষিত খোঁজায়, বিছানো প্রত্যেক পটের বর্ণবিন্যাস রচনায় অনাপোষী এই লেখক তাঁর লক্ষ্যে অটল এবং অকৃত্রিম ও আদি ছোটকাগজী লেখকের অঙ্গিকারে নির্বাচন করেছেন নিজের জন্য ছোটকাগজের রক্ত ঝরানো পথ।
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ-এর যেকোন বই, কিংবা তাঁর যেকোন একটি গল্প/উপন্যাস এমনকি তাঁকে নিয়ে স্মৃতিগদ্য লিখতে পারেন আগ্রহী লেখকগণ। এই আমন্ত্রণ সকলের জন্য উন্মুক্ত।
লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ: ২০ আগস্ট ২০২৩
ইমেইল: bindumag2006@gmail.com
লেখা ইউনিকোডে কম্পোজ করে doc. বা docx. ফাইল মেইলে অ্যাটাচ করে অথবা মেইল বডিতে পাঠাতে হবে।
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ-এর বই নিয়ে লেখার প্রয়োজনে পিডিএফ দরকার হলে +8801310174639 নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন।
একমাত্র বিন্দুর পক্ষেই এরকম উদ্যোগ নেয়া সম্ভব৷ সাম্য রাইয়ান আপনি একের পর এক দুরন্ত লেখককে যেভাবে তুলে আনছেন, এটা সত্যিই ঈর্ষণীয়
উত্তরমুছুনআড়ালে পড়ে থাকা একজন সাহিত্যিককে সামনে নিয়ে আসার প্রয়াস সফল হোক
উত্তরমুছুন