নুন আর মসলার ঘ্রাণ
এখানে কেমন নিরুত্তর বাঁচি, তা কি সূক্ষ্ম বোঝ?
ছিন্ন মুহূর্তের প্রায় জনশূন্য প্রতিটি নৈঃশব্দ্য
আমার মৌনতা থেকে কত কিছু কান্তিমান ফেরে
হয়তো তেমন ভাল নয়, ফুলফোটা সংক্রামে
আর দীর্ঘশ্বাসগুলো ক্ষত-বিক্ষত নির্জন থাকে
তবে বসন্তের সব আলোকবর্ষের উল্টোপিঠে
আমি নেই, প্রেতহাসি মধ্যে তোমার দূরত্ব মাপি
কিন্তু ধু ধু ধ্বংসস্তূপে পড়ে থাকে হৃদয় গহন
নৈশ-শহরে কিছুটা গভীর সতর্কে, তথ্যে খুঁজি
নুন আর মসলার ঘ্রাণ ট্যুরিস্টের ছায়াপথে
নিরুদ্দেশ ফিরে যায়, অবসাদে কী যে লজ্জা পাও!
কিম্বা মুখ গুঁজে-থাকা সব ফাঁক-ফোকরে হঠাৎ
ভয়াবহ এক সারি জাগে নিয়তির নতুনতা
তবু আলোর সন্ধানে থাকি, বিকালের বিশৃঙ্খলে।
বয়ঃসন্ধি দূরস্মৃতি
স্বপ্ন কিম্বা বাস্তবের মধ্যে বয়ঃসন্ধি অজস্র রহস্য থাকে
অচেনা নিদ্রার পথ দ্রুত ট্রাভেল যাত্রায় পদচিহ্ন রাখে
তবে তোমার ভেতর পিপাসার ছাইকণা নিরীহতা মাপে
আমার হারানো কতো বন্ধুতার হৃৎযন্ত্র এই চরাচরে
একা হাঁটে, যোগাযোগে আসে কিছু সম্পর্কের স্মৃতির বিন্যাস
দিনের উষ্ণতা ভুলে দৃশ্যহীন সংঘর্ষে উদ্ভিদের আলিঙ্গন
নিরাকার সীমানার কিছুটা আড়ালে আগুনের দূরস্মৃতি
হৃদয়ে হুবহু বার্তা দেয়, আদিঅন্ত ফুলের পরাগ পাশে
নিশ্চুপ ব্যথার কণা স্তূপ বাঁধে, শীত পরম্পরা ব্যস্ততায়
কয়েক মুহূর্তে স্বয়ংক্রিয় নীরবতা পরিপূর্ণ ফেলে আসে
ধীরে ধীরে সাবলীল ডোরাকাটা তোমার লাবণ্য লুট করি
নিসর্গের পরিচিত কান্না বুকের বাঁ থেকে হুইসেল দেয়
ছায়ার নিদ্রায় খুব অসহায় বসে থাকি, ব্যথার সুঘ্রাণে
অনুর্বরা অন্ধকার চিহ্নে যেন স্বচ্ছতম ভালোবাসা জাগে।
বয়স আর মানুষ
মানুষ বয়স লুকানোর আয়োজন করে
বয়সও মানুষের সীমাবদ্ধতাগুলোই আঁকে
বয়স ক্রমশ মানুষকে মৃত্যুর নিকট, যোগাযোগে টানে
মানুষও তাই ধীরে ধীরে বয়সের ভারে চলে
বয়সের অনুভূতিগুলো মানুষের সঙ্গে চক্র-চুক্তি করে
আর মৃত্যু-
মানুষ ও বয়সের মধ্যস্থতাকারী ব্যবস্থায়
সহসা প্রভাবশালী হয়ে ওঠে!
বয়স ও মানুষের মধ্যে সম্পর্কের এক সন্ধিস্থল থাকে।
স্তন থেকে মুগ্ধতা আসে
হৃদয়ের
হৃদয় থেকে
বের হয়
আমার মৌনতা
দূর
সে তো বিশাল একটা প্রবন্ধ
তোমার একটি সংখ্যা
আমাকে কৌশলে
কোনো এক যোগাযোগে রাখে
নাম অথবা কালীকৃষ্ণ গহ্বর
চিত্র তুলে ধরে
তোমার স্তনের নানান গহন
সারাদিন মুগ্ধ করে।
আমি কোন দশকের কবি?
আমি কোন দশকের কবি?
এরকম প্রশ্ন কখনোই আমার নিজের ভেতর জাগেনি
কেউ-কেউ যদি বয়োজ্যেষ্ঠ কবি বলে
তবে আমি সহসা তা মেনে নিতে দ্বিধাবোধ করি
কারণ কবিতা নিয়ে নিয়মিত পরস্পর
নিজের ভেতর যোগাযোগ করি
দশকের পর কয়েক দশক গড়ি
আর নিরিবিলি বারংবার ভাবি, আমি কোন দশকের কবি?
যারা আমাকেই নিয়ে ভালোমন্দ ভাবে
তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা বোধ করি
অকৃতজ্ঞতার নানা হাড়গোড় ভেঙে
বরং তাদের জন্য শত-শত ভালোবাসা-ফুল জমা করি
আমি কোন দশকের কবি?
এমন প্রশ্নের লেটারিংগুলো মৃদুমন্দ হাসে!
দশকের ঘেরাটোপ পার হয়ে
আমিও আমার মতামতে স্থির থাকি।
দশক না, আমি আমারই জন্য কিছু কবিতার সরল পথ নির্মাণ করি।
না আর না
দল আর দলীয়করণ এক না
জনপ্রশাসনে জনগণের প্রশাসন থাকে না
- সময়টা ঠিক এরকম যাচ্ছে
- চারিদিক শুধু না আর না
দল ছাড়া নেতা নেই
নেতা ছাড়াও দল কি হয়?
- সেই সাথে শূন্যস্থান থেকে কিছু প্রশ্ন অতিক্রম করে
- বড় নেতা কতো আলোকবর্ষের ব্যবধানে আসে?
- ছোট নেতা প্রতিরাতে জন্ম হয়!
চায়ের টেবিলে সাধারণ মানুষের প্রশাসন কাজ করে।
উৎস
১
ভোট, মানুষের স্বাভাবিক অবশিষ্ট ইচ্ছা
ডান দিকের বিষাদ কিম্বা বাঁ দিকের বেঁকে যাওয়া ধ্বনি
২
রাজনীতি অবিশ্বাসের প্রণয়
তবে নানান জাতির নাড়ি কাটা উৎস
৩
অজুহাত প্রিয়তম সরল স্তব্ধতা
বিবিধ গোপন অভ্যস্ততা সঙ্গ ছাড়ে
সরলতা সহজ না, নির্জনতা তৈরীর কৌশল
৪
অপেক্ষা, নিরীহ বসন্তের দাঁড়ানো রেলস্টেশন
বায়ুস্তরে মতামত প্রতিক্রিয়া
৫
পারমাণবিক সঙ্কট সমূহে
মানবিক পরিচয় নিরুপায় থাকে
তবে মনুষ্য-হৃদয়ে সমবেদনার ভয়ংকর
একঝাঁক ঘুমন্ত দানব যেন বসবাস করে
সামাজিক পরিবর্তন
জাতিসংঘ নথিপত্র থেকে বার্তা আসে
শান্তি রক্ষায় সজ্জিত সৈন্য পরিবর্তনের ইতিহাস
মূল্য
যুদ্ধ, সময়ের ভারসাম্য!
আপ্লুত আধিক্য সর্বনাশ
কিম্বা আয়তনের মূল্য
উপলব্ধি
সম্বোধন নিম্নগামী হলে ছম ছম করে
সম্পর্ক-দূরত্ব!
অথচ পাশেই প্রশ্ন শ্লোক
সীমাবদ্ধ সব বাক্য ভাঙে
পাণ্ডুলিপি: নুন আর মশলার ঘ্রাণ
লেখক: চঞ্চল নাঈম
প্রচ্ছদ: তৌহিন হাসান
প্রকাশক: অনুপ্রাণন প্রকাশন
মন্তব্য