গান
বাদ্য লিখি।বাজনা লিখি।ম্যাজিকের মধ্য থেকে
উঠে আসছে শিস।নির্জন প্রান্তরে একা একা জ্বলে
ওঠে উনুন।
ভরা হাটে গান বাজলে
ফিরে আসতে থাকে অদ্ভুত পোশাক পরা
পুতুল বিক্রেতারা
সূত্র
এই যে জীবন যা যুক্ত হয়ে যাচ্ছে হাতকুঠারের সঙ্গে
এই যে জীবন যা আসলে বহন করে লাইটার
চাপা হাসিকে সূত্র ধরে একটা ফুলবাগান খুঁজে নিতে
থাকি
দুপুর
নদী দেখে ভয় পাই।এদিকে অন্ধ কুকুর স্নান সারছে।
আলো কমে আসলে জঙ্গল ক্রমে ভয়ার্ত হয়ে
ওঠে
মার্বেল খেলার মাঠে বসে থাকা ভরা
দুপুর।
গানের মত এক জীবনে আছড়ে পড়ে গাঙের
ঢেউ।
তারপর রাস্তা হারিয়ে ফেলে বাঁশি শুনি
বাজনা
তুমি বাজনা বাজাবে বলে খুলে এনেছি মৃতের
হাড়
ঘোড়া আছে, অশ্বমেধ নেই।
ঘুঘুর ডানায় যখন রোদ
আমরা তখন কোন না কোন কর্মসূচি বেছে
নিই
বিশ্রাম সেরে একটা ঘরে ফিরবার দুপুর
ঘামে ভেজা গামছা।
ধানক্ষেতে জল জমলে উপচে ওঠে
অভিমান
ডুব সাঁতারে আছি।
অবসর ভেঙে অবসাদ।
পুতুল
মনকেমনের দুপাশে দোনলা বন্দুক।
পালকিতে যাত্রী নেই।
শোকেসে দুপুরের আলো
পুরোন নদীবন্দরের গায়ে হেলান দেয়
পুতুল
গ্রামার
গ্রাম ও গ্রামার ঘেরা নদী।
ভূগোলের ভেতর ইতিহাস হয়ে ঘুমিয়ে থাকে
জঙ্গল আর জনপদ
আমাদের জেগে থাকতে হয়
অদ্ভুত এক কাচের পৃথিবীতে
লালশাক
উনুনে কাঠ গুঁজে দিচ্ছ।
এদিকে লালশাকের বাগানে সন্ধ্যে নামে
হিম থেকে আমরা হেমন্তে সরে যাই
পেতে রাখা রাস্তা।
অন্ধকারে বিছিয়ে দেওয়া শোক।
বিকেলে হাডুডু খেলি
খুব চেনা মনে হয় সার্কাসের
তাঁবু
হাসপাতাল
ব্যাক্তিগত দোলনার পাশে ঘোড়াটি দাড়িয়ে
থাকে
মৃতরা উঠে আসে শহরের রাস্তায়।
হাসপাতাল আর বাণিজ্যকেন্দ্র ঘিরে তারা শিস
দেয়
এতসব ঘটে,ঘটেই চলে।
আমি লিখি,ভাঙা ডানার ইতিহাস।
বাদ্যকরের জার্নাল
আসলে তো বাদ্যকর।
লম্বা ও চওড়া মানুষ।
প্রেরিত বাক্য প্রত্যাখ্যান করে দুপুর
কেউ কেক নিয়ে আসে না
এদিকে টিনের বাক্সে লুকিয়ে রাখা
সানগ্লাস
বালু চরে আটকে থাকছে মাঝবয়সের
হাসি
শোকের পোশাক পরা দুপুর
খয়েরগাছে পাখির ডাক
ভাঙা হাটে পান খাও
সেমিনার শেষে ঢেঁকির ছবি তুলে রাখো
আমাদের যাপনে অন্তত কিছু গান জমুক
জল ও জঙ্গলে বাঘ খুঁজছেন ভিনদেশী
শিকারি
আগুনের আলোয় চিনে নিচ্ছি সরাইখানা
ঘোড়ার ছুটে চলার শব্দ
জোড়া মহিষের পিঠে আরাম কিংবা
বাঁশি
ঘাতক ট্রাকের সামনে
নৌকোর মাঝির সামনে
ঘনঘন দাড়িয়ে পড়তে হয়।
আজকাল ঘড়ি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তোমার
ফ্যাকাসে ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থাকে
টিকটিকি
কুয়াশার ভিতর অ্যাম্বুলেন্স।
মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিচ্ছে কারা ধারালো
ব্লেড!
পুকুর খোঁড়া হচ্ছে ওঝা কলোনিতে
ফুরিয়ে আসা বিকেলের মায়ায় কলসি
ডুবছে
টেবিলের ওপর মোম জ্বলছে।
শিশুরা চিনে নিচ্ছে প্লাস্টিকের পুতুল।
জঙ্গলে ক্যাম্পখাট বিছিয়ে যারা গান শোনেন
তাদের জীবনে বরাবরই বাস্তুসাপের
ছায়া
ক্ষেতে ক্ষেতে সাজানো হলুদ।
রাস্তায় রাস্তায় টায়ার পোড়ানো হচ্ছে।
রক্ত আর বমি মেখে শুয়ে আছে অতিকথনের
পৃথিবী
আত্মহননের আগে কারা বুঝি জার্নাল লেখে
জোকারের চোখে দু মিনিট চোখ রাখে
এরপর জমিয়ে বৃষ্টি।
সাঁকোর নিচে হিমপাইপ,লোকালয় ভুলে যাওয়া
হরিণ
নেমে আসে মেঘের প্রহার।
সংলাপ ভুলে যাওয়া বিকেল জুড়ে জেগে উঠতে
থাকে প্রলাপ
ছায়া
বড় বড় পাতাওয়ালা গাছ।
বাইসনের ছবি তুলে দেওয়ালে টাঙিয়ে দিচ্ছেন
মা।
বাবা ভালো বাঁশি বাজাতেন।
বড়ই গাছের পাশে সাদাকালো বেড়াল।
রোদের ম্যাজিক থেকে দূরে চলে যাচ্ছি
আর নদীর পাড়ে দোলনার ছায়া
পাণ্ডুলিপি: বাদ্যকরের জার্নাল
লেখক: সুবীর সরকার
প্রচ্ছদ: সুভান
মুল্য:২০০ টাকা
প্রকাশক: চণ্ডাল পাবলিকেশনস, শিলিগুড়ি
অসাধারণ কাব্যকথন
উত্তরমুছুন