পৃথিবীর সকল রস
আর যদি জীর্ণ পাতার মতন ঝরে যায়, তবে যাক;
দৃষ্টি আমার তীর্যক রশ্মি-পথে হেঁটে মানুষের কোলাহলে
পিছলে যায় বারবার; পিছলে গেলে, তবে যাক।
বেধড়ক বেহায়ার মতন যাহার সুর এ-গোলি ও-গোলি
বেয়ে বেয়ে ভেসে ভেসে এসে অলসের মতো শুয়ে থাকে, তবে থাক।
সকল তারুণ্যের পরে তো রক্তের ভিতরে এক অলসতা
ম্রিয়মান সবুজের মতো বৃদ্ধ-রূপে চলে আসে।
এখন কোথায় গিয়েছে চলে সেই ক্রান্তি তোমার?
অসহ্য সুন্দরের মাঝে প্লাস্টিক-ফুল যেন তুমি;
এই যুদ্ধের বাজারে তোমাকে নেবে না কেউ দলে।
এই নির্বিকার বাজারে দেখ ঈশ্বরের গদি কীভাবে টলে?
টলে গেলে, যাক তবে, আমাদের তাতে কী হয়েছে কবে!
আমরা কেবল অই নদীর জলের ধারে বসে বসে
পিনিকের পাখি উড়াইব আর মায়াবী চাঁদের রক্ত করিবো পান।
সকল গুরুচন্ডালী দোষে দুষ্ট হয়ে আমরা অই জঙ্গলে
বসে বসে বেসুরে গাহিবো রবিঠাকুরের উজ্জ্বল ঐ-সব গান।
আমরা জঙ্গলের ভিতর নদীর ধারে বসে বসে আগুনে
ঝলসে ঝলসে মধুমালতীর বুকের মাংস দিয়া বানাইবো সুস্বাদু কাবাব।
ফুলের মাংস আর চাঁদের রক্ত খেয়ে আমরা বেধড়ক
মানুষের মতো তৃপ্তির ঢেঁকুরে লিখে দিব ঈশ্বরের নাম।
এখন কোথায় গিয়েছে চলে সেই ক্রান্তি তোমার?
আমরা সেই শাল আর গজারির বন চুষে ছিবড়া করে
পৃথিবীর সকল রস শুষে নেব আমাদের উদরের ভিতর।
মাতাল নদীর সাথে অই খোলা আকাশের নিচে
উন্মত্ত হয়ে আমরা বেধড়ক করিব মিলন;
ভুলে যাবো যু্দ্ধ-কান্না-রোগ-ব্যাধি-ক্রান্তি আর সব
সব সব বিশ্বাসঘাতকদের নাম;
তারপর জন্ম হয়তো নেবে আরো কয়েকটা বিমুগ্ধ শয়তান।
ফুলের মাংস আর চাঁদের রক্ত খেয়ে আমরা বেধড়ক
মানুষের মতো তৃপ্তির ঢেঁকুরে লিখে দিব ঈশ্বরের নাম।
মেসার্স মিতব্যয়ী লিমিটেড
অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার সবাইকে মিতব্যয়ী হইতে বললেন। আমি ভাবলাম, মিতব্যয়ী শব্দটা কি আমার কাছে নতুন নাকি? সেই ইস্কুলে পড়ার সময়ের কথা মনে পড়ে, হাওয়াই-মিঠাই না কিনে দুই টেকা দিয়া পকেটভর্তি বাদাম কিনতাম; বাদাম তো একচুয়ালি বেশিক্ষণ খাওয়া যাইতো; হাওয়াই মিঠাইয়ের মতন ঠুস কইরা মিলায়া যাইতো না। তার মানে মিতব্যয়ী জিনিসটা তেমন নতুন কিছু না। এই অভ্যাস সেই ছোটবেলাতেই রপ্ত করা গেছে। তাইলে অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার যে মিতব্যয়ী হইতে বললেন? তা এতবড় একজন মানুষ বলছেন যেহেতু, তো আরো একটু প্র্যাকটিশ করা যাবে। সমস্যা নাই। তবে যারা সরকারি খরচে মশা মারার কৌশল শিখতে গুষ্টি লইয়া ব্যাংকক মালয়েশিয়া মানালি সুইজারল্যান্ডে উইড়া চইলা যায়; তারা কি মিতব্যয়ী শব্দটার অর্থ জানে? মানে ঐ যে পিসাব পাইলেই যারা সিঙ্গাপুর যায় আরকি; অফিসের বাজেটে বালিশের দাম যাদের লক্ষ টাকা হয়? মিতব্যয়ী; শব্দটা শুনলেই তো কেমন ফুরফুরা লাগে। শব্দটার সাথে কেমন যেন আদরের গন্ধ আছে। শব্দটার মধ্যে কেমন যেন বাপ-মায়ের রক্তজল করা ঘামের গল্প সুপ্ত হইয়া লুকায়া-টুকায়া আছে।
দুইটি কবিতা
অসীম নন্দন
অসীম নন্দন
অসীম নন্দন ভাল লিখছেন৷ গত কযেক বছরে বিন্দু পত্রিকায় তার অনেক লেখা পড়া হল৷
উত্তরমুছুন