চাইলে একটা আইডিয়ার উপরে নির্ভর করে হয়তো কিছু লিখে ফেলা যেতো। কিন্তু কেনো সেই কষ্ট করা?
কষ্টই বলবো একে আমি। যেনো প্রজেক্ট লিখতে বসা। পূর্বনির্ধারিত ফলাফল বের করতে চাইবার কনসালটেন্সী। যেনো পরিপার্শ্বকে কিছু প্রমাণ করতে হবে- আত্মপ্রকাশকে যেখানে হীনমন্যতা টেকওভার করে যায়।
ভাবনার অন্তহীন প্রবাহ- ভারবহ হয়ে ওঠে। অন্তর্গত উপলব্ধিকে পাশ কাটিয়ে স্থূল বাহ্যিকতায় লীন হওয়া; মৌহর্তিক উত্থানের দীর্ঘস্থায়ী ক্রাইসিসে পরিণত হওয়া- ওঠানামাটা ঠাহর করা যায়, বস?
মানুষ ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগোয়- কথাটা সত্য। তার চাইতে বড় সত্য- মানুষ জীবনের কারনেই মৃত্যুর দিকে এগোতে বাধ্য হয়। যতোবার এই সত্য বিস্মৃত হয়েছি; জীবন আমাকে কৌতুকের চোখে নিজের দিকে তাকাতে বাধ্য করেছে- দুঃসহ সেই ভার।
আমি কেনো লিখবো? কোন ঝড়ের পূর্বাভাসে? স্রেফ আত্মপ্রকাশের লোভে? উত্তরটা খুঁজে পেতে অনেক সময় লেগে গিয়েছিলো আমার। জায়গান্টিক কোন চেতনা বা উপলব্ধি নয়; উত্তেজনাবশত তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিছু লিখতে গেলে যা বেরিয়ে আসে তার অনিবার্য গন্তব্য- ময়লার বাস্কেট।
সময় যতো গড়াচ্ছে; পরিপার্শ্বের সাথে মানুষের দ্বন্দ্বমুখর দিনযাপনের চিত্রটা ধীরে ধীরে মূর্ত হয়ে উঠছে। যারা অল্পবয়সেই এই উপলব্ধি হয়ে গেছে বলে আত্মশ্লাঘায় ভোগে; তাদেরকে বিবেচনা করিনা। যার যার স্টপেজ তার তার; কারাগারে আলাদা আলাদা সেল নাম্বার থাকে এ তো জানা কথাই। অহং থেকে বলছিনা- নিজস্ব ক্রাইসিসগুলাকে অনুধাবন করতে বাধ্য হই বলে যাত্রার অনিবার্য পৃথক পথকে ভুলতে পারা সম্ভবপর হয়না। ভদ্র-অভদ্র, শিষ্ট-অশিষ্ট এসকল বিভাজন আমার কাছে অর্থহীন। ক্ষিধা লাগলে খেতে হবে- এর মাঝে ভালোমন্দের কিছু নেই। আত্মপ্রকাশের তাড়না গনগনে সূর্যের আলোর মতো অনিবার্য। নৈতিকতার প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যবোধ দিয়ে ধুয়ে পানি খাবো? রিডিক্যুলাস।
আমি যথার্থ আত্মপ্রকাশ বলতে বুঝি, স্বগতোক্তি। অন্যের সাথে কথা বলতে গেলেও; যা বলতে যাচ্ছি সে সম্পর্কে নিজের সাথে পরিষ্কার বোঝাপড়া না থাকলে কী মানে আছে? সৌকর্যের প্রশ্নটা পরে আসে; অনেক সময়ে প্রয়োজনই পড়েনা। অন্তর্গত বোঝাপড়া সবল হলে সৌকর্য ঠিকরে বের হয়। গোটা পাঁচেক ব্যর্থ প্রেমের পরে প্রতিটার ব্যবচ্ছেদ করতে বসেছিলাম একদিন- সেদিন উপলব্ধি হয়েছিলো; সৌকর্য, আভিজাত্য ও এরকম যা কিছু আছে; এসবের রিফ্লেকশন অবচেতন প্রক্রিয়ায় ঘটে। দেখনদারীর বিষয় তো নয়।
স্পষ্টত বুঝতে পারছি- এক ধরনের আত্মবিশ্বাসহীনতা আমার ভেতরে গেড়ে বসেছে। ভারসাম্যের অভাব তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে; কিন্তু এ মুহূর্তে আমি নাচার। কেঁপে উঠছি, কিছু একটা ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে আমার কম্পমানতা থেকে- সকল সাধ, আকাঙ্ক্ষা, জিঘাংসা, রিরংসা ইত্যাদিকে অতিক্রম করে একটা তীব্র আকুতি আত্মপ্রকাশের অনুগামী হতে চেয়ে তার সমান্তরালে চলতে চাইছে।
আমি আত্মবিশ্বাসহীনতায় লীন হতে শুরু করেছি- নিজেকে পুনরাবিষ্কারের খেলা আমাকে পেয়ে বসেছে।
সীমিত
প্রমিথ রায়হান
প্রমিথ রায়হান
এই গদ্য লেখাটিকে ছোটগল্প কেন বলছি?
উত্তরমুছুনকারণ, শাস্ত্রবিরোধী গল্পনীতি অনুযায়ী এটি গল্প৷
মুছুনশাস্ত্রবিরোধী গল্পনীতি বিষয়টা কি জিনিস? এটা কি অনেকটাই প্রতিষ্ঠান বিরোধী প্রাতিষ্ঠানিকতার মতো ?
মুছুন