এক .
দু ' লাইনে ওলটপালট , দু ' লাইনে বোহেমিয়ান খানিক একলা হাঁটুক | বসার জায়গাটা অবিকল খরস্রোতা হয়ে গেছে | পাথরের খাঁজটিতে অদৃশ্যে থাকা ফুল মাথা দুলিয়ে রঙের দোহাই দিচ্ছে ফল্গুলতার মতো | মতো নয় , তামাদি আর্যাবর্তে নিরন্ন মানুষের স্রোত থেমে আছে ফুলের শরীরিণী পাথরের পয়োধরে ...
এই সঞ্চয় অন্তর্জলী যাত্রার আগে একাকিত্ব | এই রঙ ক্ষয় হয়ে যাওয়ার আগে ভারমুক্ত , দুরধিগম্য | শূন্যতা ছায়াআগুন হয়ে জ্বালিয়ে নেয় জীবিত বিদ্যুৎ | হয়তো বিন্দুর মতো , জলের ভাঙা মুখ -- তোমার নিজস্বী বিষ , স্বপ্নের সংক্রামিত দেউলপ্রাচীর রয়ে গেছে কি বেজোড় চূড়োয় , ন্যুব্জ রঙের ওঠানামায় ...
দুই.
আজ হরিণীকরণ | ভোজ্যের অতীত ওই মেয়েটি গাইছে লালন | আস্ত পাথরের দেহভান্ড | আমিষের পরিমাণ আছে কতটুকু ! অবশিষ্ট অবসাদের শেষ দৃশ্যে রংটাই চটে গেছে রোশনাই
বিজ্ঞাপণে দিব্য অভিলাষা নাম | নতুন বারান্দায় ধান - মাড়াইয়ের ছবি | গ্রিলের এই জানলা ধরে দুপুর গড়ানো লালের বেস , তার উপরে দু ' আঙুল দিয়ে হলুদ পোচ
প্রবণতা তুঙ্গ শিখর | ছড়াও টোলে |
হাসির ওঠা নামায় ভেঙে যায় সামান্য রুজির মানুষ
শরীরজোড়া যত্রতত্র আততায়ী বলবৎ করছে |
প্রমিত মাধবীকঙ্কন |
বাড়ির সন্নিহিত টিউবকলের হাতল খুলে নিয়ে গিয়েছে মানুষের মনস্তাত্বিক দাবী
আয়ুদীর্ঘ স্বাস্থ্যশিকারীরা ভোরে খুলে ফেলে গাছের চলন | সবুজের বুকজোড়া পাখি তোলা এবং নামানো
কয়েকটি এক পা তোলা মোরগের সন্ধানে সে এসেছে খুলিজলে | নেমে এসেছে বজ্রযোগীনি গ্রামে কিংবা ললিতকোমল অঝোরের মুখে |
মৃৎ ও বিফলা ছড়ানো বিভাজিকায় |
আস্ত ও অটুট নাভি সায়রে | সন্ধ্যারাতে হাওয়া শিরশিরিয়ে ওঠে | পুরনো মাছের ঘাঁই | অজ্ঞাত চিবুকের বিপজ্জনক বাঁকে | বৃষ্টিদানায় |
চোখ থেকে অজানা লাফের হিরণ বেরিয়ে
এলো ,
এই স্বপ্নগর্ভ নম্রতা এই মুণ্ডহীন তমস্বিনীর শীৎকারে জ্বলছে জরির গয়না | রাঙা নখ , অনামিকা | বসুধারায় ছাপা গুপ্ত হাসি , তিল |
কুলুঙ্গি ঠোক্কর খেলো | পোড়াশরীর পুড়িয়ে নিলো , ম্যাজিক ফ্লুটের তাপে |
টানা ও পোড়েনে হাঁটছে পটের হেমলক |
আর ওই একটা লোক যার , অস্তে সারা দেহ মিহিন বাতাসী বাঁশরিয়া ...
তিন .
ঝরে পড়া জলে অজ্ঞাতবাসের জন্ম হয়েছে ...
দূর গন্ধের শাড়ি , চিবুকের প্রবাহিত শিশির আর আনমনা বেনেবৌ পাখির উঁচু উঁচু পলাশের বেপরোয়া দাউ দাউ মাঠফাট গোলাঘর পেরিয়ে ঝরে যায় | হাওয়া সাঁইয়া কেবল সুনিবিড় বীরের বাঁশির মতো নীল ইস্পাত দেখে ভয় পেয়ো না | ডিমের মতো গড়ানো মসৃণ নেই | নেই কাঠের কাষ্ঠ , থুরথুরে গাছের | এক পাগলামি ছোঁয়াচে দিন এলো | সোঁঁ সোঁঁ জল বাতাস বিপাশা কালিমাবলয় | ঝরে পড়া ফুল থেকে উন্মেষ আগুন এইসব আগাগোড়া ভুল দেখে গেছি উদীয় দেহচ্ছবি নোনা রক্তস্বাদে ...
চার.
কে ঠকায় ? তবলায় লহরা তোলে কে ?
ছড়টানা মাধবী -- মাধবী বলে কেঁপে কেঁপে ওঠে
হাঁটুর প্রশ্বাসে কারা কারা নড়ে ওঠে ঈশ্বরীর মতো ?
গাঢ় বৃষ্টিও ঘুরপাক খায় তাতার ম্যাজিকে
জলের চমকে যত লুটসকালের পাশে তুমি আর কিছু নও লাশ লোধ্র সেজে
আপন পেরোনো বনস্থলী বাড়ির দেশে নিলাম চলছে | হাতজোড় করা ভালোবাসায় সবুজহারা সদ্য বাঘছাল | হাতে অস্ত্র নেই , আগুনের লালে স্কুলের পোষাকগুলো শুকায়
তুলোফুল অপরাহ্নে শান্ত বর্ষা চেয়ে ব্রাশে তোমার সবুজ বিষাদ
কুড়িয়ে নিলে সরে যাওয়া ছায়ার ডেটলগন্ধ
ওই তরল বিলিতি লণ্ঠন , ঘুলঘুলি জানলা , ভাঁটি সড়কের বাঁকে মাদক ও স্বপ্ন দূর ,
ধুলোবীজ হয়ে ঘুরপাক খাবে
ছবির সঙ্গে মেলার মুখটা মুছে মেলাও ...
মিউটিনির পুরনো শহরে...
প্রদীপ চক্রবর্তীর কবিতা
প্রদীপ চক্রবর্তীর কবিতা
'তুলোফুল অপরাহ্নে শান্ত বর্ষা চেয়ে ব্রাশে তোমার সবুজ বিষাদ/কুড়িয়ে নিলে সরে যাওয়া ছায়ার ডেটলগন্ধ'-- চিত্র এবং সুবাসের যুগলমিলন।
উত্তরমুছুন