হলিউডি কায়দায় রাত্রি নেমে এলো। যেন হঠাৎ মিইয়ে এলো অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ধর্মঘট। দিগন্ত যেখানে বিভেদ রেখা যার একপাশে গরল মেহেফিল। অন্যপাশে অমৃতের মিতব্যয়ী সিগনেচার। তাই তো ঠোঁটে জন্ম নিচ্ছে কিছু প্রাকৃতিক ফেনোমেনা। লাফ দিয়ে জ্বলে উঠছে সন্ধ্যাপ্রদীপ। চরাচরের মুখে দেখা যাচ্ছে তেল ফুরানোর গল্প। চোখের ভিতর চোখ ঢুকে যাচ্ছে। অসহায়তার সামগ্রিক রূপ ধরা পড়েছে জোনাকির ফসফরাসে। নিভু নিভু আলোর ঐতিহ্যে কচুপাতার শারদ স্বপ্ন প্রকট হয়ে ওঠে। ভেসে আসে বুনোফুলের মৃত্যুগন্ধ। ঝরে যাওয়া বৃতি নিয়তির মুখপত্র হয়ে বেঁচে থাকে পাঁচিলে বুক বাঁধিয়ে। কোনো বিষণ্ণ উঁকি সরীসৃপের মতোন সরে যায়। আড়ালে মাটির বুকে নেমে আসে কালো মেঘের তরল। শীতল পথ তৈরি হয় তুলসীমঞ্চ থেকে চৌকাঠ পর্যন্ত। পায়ের তলা থেকে আন্তরিকতার পর্দা সরে যায়। আগন্তুক যেন হারিয়ে ফেলেছে তার দিনান্তের সূচক। পাখিদের ঠোঁট ভালোবাসার ইনডেক্স। খুলে গেলে ছায়ার বিব্রত নিজের ভিতরে সমাহিত হতে চায়। মাইলস্টোনের আভিজাত্য গন্তব্যের আবাহনকে উসকে দেয়। এদিকে জোনাকির আলোর বৃত্তে সব নক্ষত্র পপকর্ন হয়ে যায়। একখণ্ড আকাশে মানুষের রাসায়নিক বিক্রিয়া প্রতিফলিত হয়। সেসব হয়তো কালো সংবাদ। পরিত্যক্ত মিছিলের অন্ধবোধ। সরাইখানার পাশে পথিকের হা-হুতাশ। যেকোনো দীর্ঘশ্বাস একটি সেল্ফ সেন্টারড শব্দ। এই উৎকেন্দ্রিকতার জন্য চাঁদের আলো অনেক সময় জোনাকির সভ্যতায় দাগ রাখতে পারে না। পরিমিত বোধের জন্ম দিয়ে গুটিগুটি পায়ে রাত ভোরের দিকে এগিয়ে যায়। কুয়াশা ভোরের সূচিপত্র। তার ভিতরে ডুমুর গাছ যেন আমাদের পরিচিত রাষ্ট্র যেখানে গণতন্ত্র গিমিক মাত্র। ফিরে আসা যাক সন্ধ্যামালতীর উঠোনে যেখানে "Night is the wonderful opportunity to take rest to forgive, to smile, to get ready for all the battles that you have to fight tomorrow." ভেঙে পড়া গাছের ডালের কাছ থেকে ভারসাম্যহীনতার সার্টিফিকেট আনতে হবে। একটি অলিখিত রাত্রির দোলাচল কীভাবে স্নায়ুর ভিতরে ফায়ারপ্লেস তৈরি করে। জোনাকির উড়ন্ত হু-হু মোমবাতির পাতা উলটে যাবে। কিছু দপ দপ শব্দ ঘুলঘুলির ভিতরে প্রতিধ্বনি তৈরি করবে। প্রিয় কেউ অ্যাক্রোলিক রঙের ওভারকোট পরে সামনে এসে দাঁড়াবে। এটা এমন এক আমুদে মুহূর্ত যে পাথর বাঁধানো শৌচালয় দেখে কেউ হয়তো মন্দির ভাবতে পারে। চোখ খুঁজে বেড়াবে তার চিকিৎসা পদ্ধতি। সপ্তর্ষিমণ্ডল থেকে নেমে আসবে দেবদূতের পরোয়ানা। টাটকা গন্ধরাজ ছড়িয়ে দেবে তার সুবাস। পদক্ষেপে রাখবে প্রিয়তম গানের গুনগুন স্বরলিপি। জানালা বন্ধ হলে ঘর পৃথিবী থেকে আলাদা হয়ে যায়। কলাপাতায় নুনের পাশ দিয়ে অকাতরে গড়িয়ে যায় ডালের জল। টনিকের প্রশ্রয়ে ঘুম নেমে আসে। আলোর গায়ে রাতের ডোরাকাটা দাগ ফুটে ওঠে ...
অলিখিত রাত্রি ও জোনাক সভ্যতা
সোমনাথ বেনিয়া
সোমনাথ বেনিয়া
মন্তব্য