মাটির কাছে হাজার বছর পড়ে আছে
বহুদিন পর মাঠের ভেতর আমাকে একলা পেয়ে
খামচে ধরেছে চোরকাঁটা
ভগ্ন পাঁচিল বসতে দিয়েছে কাঁধে
কিছু মৌনকাহিনি জমে আছে পিঠে তার।
এখানে অনেক আকাশ, ভুল প্রণয়ের আশঙ্কায় মাটির উপরে ঝুঁকে নেই
পাখিরা গিয়েছে নীলে, ফিরেও এসেছে ফের ঘাসের কুটিরে ভয়হীন
সূর্য বাবলার ডাল থেকে নেমে গোধূলির আয়োজনে যাবে বলে প্রস্তুত হয়েছে,
আমি আগন্তুক এই পথে যেতে যেতে
ডেওয়ার পাকা ফলে চোখ রেখে দেখেছি সবটুকু।
এখনো দুলেছে ফিঙে ডালে,
গঙ্গাফড়িং লাফিয়ে লাফিয়ে তার ইচ্ছের কথা জানাতে ভোলেনি।
অনেক চন্দ্রকেতুগড় চাপা পড়ে গিয়ে এই প্রান্তর ধূধূ ইতিহাস
তবুও এই আশ্চর্য পৃথিবী ঠিক পৃথিবীতে রয়ে গেছে আজও
এখনও আমাকে তারা ভুসুকুপাদের কাছে নিয়ে যায়
দেখি প্রাচীন বাঙলার মাঠে সন্ধ্যা নড়ে মায়াবী লন্ঠনে
দেখি মাটির কাছে আমার হাজার বছর পড়ে আছে।
বাতাসার দিন
আজ শনিবারের বারবেলা,
আকাশে বাতাসার মতো মেঘ ভাসছে।
পাঁচিলের কোণে ফুটেছে নীলকণ্ঠ ফুল।
মরে যাওয়া তুলসীগাছটা হাওয়ায় দুলে উঠল মনে হল,
নাকে এসে লাগল ঝাঁঝালো পাতার গন্ধ।
ঠাকুমার গলা শুনলাম-
হরিলুটের ফুলবাতাসা কে রে খাবি দৌড়ে আয়!
আমি আবার বাতাসা কুড়োতে যাব
পিতামহীর গাছের গুঁড়ির মতো মুখ থেকে শুনব
বাংলা দেশ, পরণকথামালা!
[মৃন্ময় চক্রবর্তীর জন্ম- ১৯৭৬ এ দক্ষিণ কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চারুচন্দ্র কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : বেঁচে থাকার স্বপ্নগুলি ( ২০০৪), এই মৃগয়া এই মানচিত্র ( ২০০৮)। পাঁচালি কাব্য: ভুখা মানুষের পাঁচালি ( ২০০৯), ছিন্নপদগ্রাম (২০১৮), পুতুলগুলো পোড়ামাটির ( ২০২০)।
সম্পাদিত পত্রিকা: মাটির প্রদীপ। পুরস্কার : এপার ওপার সাহিত্য সম্মান (২০১৮)।]
দুইটি কবিতা
মৃন্ময় চক্রবর্তী
মৃন্ময় চক্রবর্তী
মন্তব্য