এক.
অগ্নি নির্বাপক রেশম মথ। লৌহ আকরিকের মতো ফেটে পড়তো আর তুমি ডুব দিতে চিরদূরগামী রক্তের তৃতীয় শিবিরে
যত ফারাক তত ইজেলের কাছে,
তীব্র ঘূর্ণিপাক যত তত সদ্যজাত শেষ হাসিদানায় অস্পষ্ট হরিৎ উদ্ভিদ!
বাতাসের পেশি ছিঁড়ে আচমকা লাফ দেয়
অনেক নীচে শেষ পরিধেয় পাকঘরে,
সহজিয়া রক্ত যেভাবে ফিনকি দিয়ে যায় পঞ্চমুখী রক্তজবা গাছের মাতৃ জঠরে
মাথার বিসঙ বাজা কিছু দংশনে নীলা ছিলো,
বিষের খয়ের বাড়ি
পরিখার জলে চন্দ্রদোষ লাগা
পাক ও পানার অঙ্গুরি জলে
আজো আলো নতুন শ্রমের খোঁজে নিজেকে জ্বালায়,
দীর্ঘতম গাছের ভেতর নতুন গ্রিলের গায়ে
রং দিয়ে ওঠে একবিন্দু সৌর আলো
ঢেউগাঁথা ঋতুঘোরে স্বৈরিনী তুমি এসেছো
আজ?
ছেঁড়া তমসুকের পাতায়, তমরসে
ত্রিদিবকামিনী ধর্ষিতারা আজ সমবেত,
তোমার জন্য তমালের দল...
দুই.
আমি যখন পাখিদের নীরব ফিরিহা ঝুঁকে একমনে পাঠ করছিলাম অথচ এমন অদ্ভুত চেকনাই, যা তুমি কোনোদিন কোনোপ্রকার চেঁচিয়ে ন্যুব্জ মানুষটার বেঁকে যাওয়া দুরধিগম্য যন্ত্রণার ছবি দেখেও লিখতে পারবে না অথচ ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিজেকে সে অনায়াসে ফেলে দেয় --- এমন ইচ্ছের ভঙ্গি তার...
আমি যখন সমস্যাটি মধুর ভেবে আলস্যশৃঙ্গারে নামিয়ে রেখেছি পুঁজ রক্ত বগবগিয়ে ওঠা ঘায়ের প্রত্যাবর্তনের মুহূর্ত, ঠিক তখনই, ছবিসকল তার শূন্যস্থানে গা ঘেঁষাঘেঁষি ক'রে বসে, আর একজন ল্যাং পটকা কবি, দুজনের অসবর্ণ, আলোকসামান্য শূন্যতা নিয়ে আহ্লাদে
আটখান। ফেটে পড়ে নিছক শব্দের লোভে
ভঙ্গিটি বিশাখ দত্তের। বরাহ শিবির ছেড়ে অদ্যাবধি আমিই আক্রান্ত বেশি। বিক্ষত ছবি সকল চুমুতে তাজা করার আগে শ্বদন্ত দেখাই নি ভাই। উড়ে গেছি ঘরের দিকে...
তিন.
বনের ভেতর সরিয়ে কুয়াশা তুলে নিয়ে যায়
পাখিদের ভরা দোয়াত। মেঘ ধরে সে যায় গুল্মে ভিজে ওঠা ঝোরার কুক্ষিগত ডগায় মেঘ ও কুয়াশা জুড়ে সাজানো ছায়া
ছায়ারা শুয়ে আছে বালিস্তরে। নুড়ি পাথরের অপহৃত দীর্ঘশ্বাসে একটা নেড়ি কুকুর পড়ে আছে। চামড়া উঠে মিশে গেছে, রেশমি কেশর ছড়িয়ে পড়ছে জনপদে। হয়তো পথ আর নেড়ির মধ্যে তাই এতো বিচ্ছেদের আকর্ষণ।
নীল নয়, সাদা নয়, কালো রঙই এইসব নেড়িদের ভবিতব্য। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে রাখতে আজ নিঃসঙ্গ নেড়িকে টেনে নিয়ে গেছে ছায়ার ভেতর নিকোটিন ও কাশির শব্দ...
অন্য নেড়িদের ডাকার আগে গাছেরা ফুলের ভারে বিশ্বাসী ফেরিঘাট পেরিয়ে অর্ঘ্য হচ্ছে, পাছে নদী এসে থামে গন্ধের শূন্যতায়
গাছের তলায় কত রামনিধি গুপ্তের টপ্পার ছেঁড়া পাতা। ঝরা পাতারা পুরোনো দরজা খুলে গানের তরঙ্গ রেখাটি আজ রুখু হলুদ ডুবকোডিহি নেড়িদের মৃত হাওয়ার মধ্যে বারে বারে ঘুরে ফিরে দিকচক্রহীন দিনশেষে নিয়ে যায় ভিনগাঁর ফলের বাগানে...
তৃতীয় শিবির ও ছেঁড়া মানুষের জোড়াতালি
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রদীপ চক্রবর্তী
মন্তব্য