নৈঋত বাতাসে
বদলের গায়ে লেগে থাকা নিখুঁত যন্ত্রণা ধরে হেঁটে আসি কোনো কোনো সন্ধ্যায়।
খুঁজে খুঁজে ঠিক করে রাখি স্মৃতির গতিমুখ।
পুরাতন পরিচিত দৃশ্যপটের ছায়ার মতো তারাও বিদ্রোহ করে বসবে এমন ভয় হয়।
ভয়গুলো আঙুল বেয়ে এসে কুয়াশাকালীন চাদর হয়ে উঠলে তাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ি
ভোরবেলা, একটা শিমুল গাছের টকটকে লাল আয়ু পর্যন্ত।
বাতাস আসে। ঋতুতে ঋতুতে বদলে যায় তার শরীরের ঘ্রাণ।
বাতাস আসে। ছুঁয়ে ছুঁয়ে সাদা চরের বুক সবুজ হয়ে ওঠে একবার।
বাতাস আসে। সাথে সাথে আসে প্লাবনের কাল।
সবুজ চরের স্মৃতি নিয়ে উঠে বসি নূহের নৌকায়।
কোথাও নতুন মাটির খোঁজে।
অন্য কোনো খোপের পায়রা
মাঠের সবুজ ঘন হতে থাকলে বুঝি সন্ধ্যা নামছে, পাখিরা ঘরে ফিরছে, কোনো কোনো মানুষেরাও। ঠিকঠাক সন্ধ্যার মুহুর্তে সবকিছু কেমন গভীর নীল। ঠিকঠাক ফেরার কোনো রঙ আছে কি না জানা নেই। সম্ভবত জানি না বলেই আমরা বয়ে যেতে পারি এসব ঘরহীন উঁচুনিচু পাথুরে পথ।
ফেরার পথের খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না -
একটা নদীর শ্যাওলা,
একটা চুলের গন্ধ,
একটা মুখের মায়া,
পড়ে থাকা স্মৃতি,
একথাল শূন্যতা -
ঝাউগাছের তলে পৃথিবী নরম মনে হয়।
পড়ে যাওয়ার মুহুর্তে সবকিছুই শক্ত করে ধরতে ইচ্ছা করে -
ইট-কাঠ-পাথর, মানুষের নাম।
হাত কেটে যায়।
আবার কখনো ইচ্ছা করে কাঁচের মতো ঝনঝন করে ভেঙে ছড়িয়ে যাক একরত্তি জীবন, আগল খুলে দিয়ে নির্ভার ফেলে রাখি কর্কশ রোদ্দুরে। ইচ্ছা করে হাত থেকে কেড়ে নিয়ে উড়িয়ে দিই সোনাভানের পায়রা, উড়ে উড়ে তারা খুঁজে পাক প্রাচীনতম সত্য হৃদয়, শান্ত সুগভীর আকাশ। সূর্য ছুঁয়ে ফেলা পালক তারা ছুঁড়ে দিক আমাদের বুকের মাটিতে, এ বিস্তীর্ণ বিপন্নতার কোথাও সে খুঁজে পাক একটুকু ঠাঁই!
দুইটি কবিতা
নুসরাত জাহান
নুসরাত জাহান
মন্তব্য