এটি এমন একটি মুখ যা
এক মুহূর্তেই হত্যা করতে পারে আঁধারকে
হাসি বা আলোর ঝলকানি দিয়ে
সহজে আঘাত করা একটি মুখ
রাতের চিন্তাগুলোর সুতো ছিঁড়ে গেলে
অলস ভাবে শুয়ে থেকে
সে একবার কোটেশন দিয়ে বলেছিল,
মনে হয় আমার ভেতর বাস করে দেবদূত
যাকে আমি প্রতিনিয়ত অবাক করছি
তারপর
সে হাসবে
এবং দূরে তাকাবে
একটি সিগারেট জ্বালাও
মিষ্টি শরীরের ব্যবচ্ছেদ
দীর্ঘশ্বাসে প্রসারিত
একটি আবরণ পরা যাক...
[লরেন্স ফার্লিংগেটির পরিচয় অনেক। একই সঙ্গে তিনি কবি, চিত্রকর ও প্রকাশক। বাংলাভাষার কাব্যামোদীদের কাছে লরেন্স ফার্লিংগেটি পরিচিত আরেক মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের সূত্রে। বিট কবি গিন্সবার্গের কবিতার বই ‘হাউল’-এর প্রকাশক তিনি। এর জন্য তাঁকে মামলায় পড়তে হয়েছে, যেতে হয়েছে জেলে। প্রকাশনা বিশ্বের সেন্সরশিপ হ্রাস করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ স্থাপন করেছিল ‘হাউল’ বইটি নিয়ে মামলা। আরেক বিট কবি জ্যাক কেরুয়াকের বইয়েরও প্রকাশক ছিলেন তিনি। তাঁর লেখা কবিতার বই ‘এ কোনি আইল্যান্ড অব দ্য মাইন্ড’ আমেরিকার সর্বাধিক বিক্রিত কবিতার বইগুলোর একটি। তাঁর জন্ম নিউইয়র্কে হলেও পঞ্চাশের দশকে তিনি নিউইয়র্ক ছেড়ে প্রথমে ক্যালিফোর্নিয়া, পরে সানফ্রান্সেসকোতে যান। থিতু হন সেখানেই। গিন্সবার্গের বিখ্যাত ও বিতর্কিত ’হাউল’-এর শখের প্রকাশক ছিলেন না তিনি। তাঁকে বলা হয় পুস্তক প্রকাশনার নতুন রীতির প্রবর্তক। তিনি নিজেই বলেছেন, পেপারব্যাকগুলোকে প্রকৃত বই হিসেবে বিবেচনা করা হতো না। পেপারব্যাক বই বলতে ছিল কিছু হত্যাকাণ্ডের রহস্যমূলক বই, আর কিছু বিজ্ঞান কথাসাহিত্য। সিটি লাইটস বুক থেকে পেপারব্যাক কবিতার বই বের করে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হন তিনি। এর পর থেকে অভিজাত বইয়ের দোকানগুলোতে হার্ডব্যাক ও পেপারব্যাক দুই ধরনের বইই রাখা শুরু হয়। সান ফ্রান্সেসকোর ব্রডওয়ের কলম্বাস অ্যাভিনিউতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সিটি লাইটস বুকসেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স এখনো বিদ্বৎজনের মিলনস্থল। তিনি সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনায় (১৯৩৭-৪১)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পুরো সময় তিনি নৌবাহিনীতে কাজ করেন। পরে ইংরেজি সাহিত্য স্নাতকোত্তর করেন নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। প্যারিসে গিয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন তুলনামূলক সাহিত্যে। আধুনিক কবিতার প্রতীক প্যারিস নগরী বিষয়ে সন্দর্ভও লেখেন তিনি। প্যারিসেই অ্যাডমন্ড কারবি-স্মিথের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং ১৯৪৬ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তাঁরা দাম্পত্য যাপন করেন। এক পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে এই দম্পতির। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এখন তিনি। চোখে একেবারেই দেখতে পান না! মার্কিন সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য এ সাহিত্য ব্যক্তিত্ব জন্মগ্রহণ করেছেন নিউইয়র্কে।]
সংখ্যা আট
লরেন্স ফেলিংগেটি
বাঙলায়ন: অভিজিৎ বসু
লরেন্স ফেলিংগেটি
বাঙলায়ন: অভিজিৎ বসু
মন্তব্য