দুইটি কবিতা
নাভিল মানদার
পোড়া ভাত
বৃষ্টির ভীষণ ভারী ভারী মেঘ নিয়ে নীলাকাশ পাড়ি দিলো
উঠোনে ছড়ানো নানাবিধ ফুলগাছ মাথা পেতে নিয়েছে বৃষ্টির ত্রাস
ঘরের ঐ খাটের তলায় কিছু মুমুর্ষ আঁধার
নিঃশব্দে বেরিয়ে এলো খোলা বারান্দায়— উঠোনে শ্রাবণ
সূর্যাস্ত লেগেছে গাছের পাতায়— ঘরে ঘরে সন্ধ্যা বিনিময়
এতো বৃষ্টি,— মাঝে মাঝে একটি ভিজিয়ে দেয় টেবিলের চৌকো পায়া
ভাঙা আয়নার ভেতর প্রবেশ করলো বজ্রপাতের আলো
মুহূর্তেই ভেসে ওঠে তোমার ব্লাউজ বোতামের আটোসাটো ঘর
কলপাড়ের নির্জন শানে পড়ে রয়েছে গতরাতের পুড়ে যাওয়া ভাতের হাড়ি
দৌঁড়ে এসে বৃষ্টিভেজা একটি কুকুর শুঁকে নিচ্ছে পোড়া ভাতের বিদগ্ধ কালোদেহ
চারণ মশারী
মশারীর আয়তকার মৌনতা— সুদীর্ঘ রাত্রির নির্ভরতা দিয়েছিলো
সেথা দু’দণ্ড বাতাশ ঢুকে গিয়ে বালিশের সাথে মিশে রয়
নিশ্চয়ই তুমি মশারী দেখেছো— ডাগর ফ্রেমের অতন্দ্র প্রহরী
বোবা দেয়ালের বুকে পোঁতা আছে পেরেকের অধিকার
টানটান দড়িতে ঝুলন্ত মশারী ব্যাপক স্বাস্থ্যবান
কী দারুণ লোক তুমি,— করো ঘুমের সাধনা
বিছানার পাটপাট চাদরে ঘুমিয়েছিলো যারা, তারা খুব ভালো
মশারীর সব ফুটো দিয়ে বের হলো বিদিক ঘুমের শব্দ
অথবা মশারী হলো শুধুই মশারী— একটি খাটের পর নিরীহ ঢাকনা
তোমার ভেতর চিরকাল ঘুম আছে, তুমি এক ঘুমের বাহন
ক্লান্ত চোখে নেমে এলো সুদীর্ঘ রাত্রির যতো পাকা অন্ধকার
দিবসের চুপসানো মশারী— খুঁজেছে কেবলই— বায়ুলাগা চক্কর মহিমা গতরাত
চমৎকার নাভিল মানদার— যত পড়ি তৃষ্ণা বাড়ে
উত্তরমুছুনকি দগদগে? দৌঁড়ে এসে বৃষ্টিভেজা একটি কুকুর শুঁকে নিচ্ছে পোড়া ভাতের বিদগ্ধ কালোদেহ
উত্তরমুছুনদৃশ্য চিত্রায়নের দারুণ এই ভঙ্গিমাটাই নাড়া দিচ্ছে চেতনায়। কথা বলছে কবিতা।
উত্তরমুছুনআহা আহারে
উত্তরমুছুনপ্রিয় মানদার। এ-ই যে মানদার, তাঁর ফুল কেবল ফাল্গুনে— বসন্তে ফোটে তা নয়, সমস্ত ঋতুতে এই লাল লাল ফুল ফোটে, অসম্ভব সুন্দর স্বর্গীয় গুচ্ছ গুচ্ছ ফুল, ফুলের ভেতর যেন আমার রক্তধারা, আমার হিমোগ্লোবিন সমগ্র... আমি তাঁরে কত ভালোবাসি, কত ডুবে থাকি এ-ই মানদারে, কবিতার ভেতর— কবির ভেতর এক নাভিল মানদারে...
উত্তরমুছুন