মাটির থালায় ধান
মাটির থালায় যারা ধান এঁকেছিল
আনন্দে মাটি মেখেছিল সারা গায়ে
ধানের বুকে দুধ আসার আনন্দে
তারাই উঠোন গোবরে নিকিয়েছিল
যতদূর গোল হয়েছিল হাতে হাতে
পুরোটাই একটা ভালোবাসার পৃথিবী
ধানের আনন্দে উঠোনে এসে বসেছিল
একটা দু’টো তিনটে চারটে চড়ুই
চড়ুইয়ের ঠোঁটে ঠোঁটে যে ধান গল্প লিখেছিল
তার মালিক ছিল বেশ কয়েকটি গাছ
পুবের সূর্যঘর থেকে আলো এসে
খুব একচোট নেচেছিল ধানের উঠোনে
ভাতের গন্ধে বর্ণপরিচয়ের সামনে
কত কত মাথা দুলেছিল একদিন
সাদা ভাতের থালার সামনে
নদীর মতো এসেছিল অবাধ সকাল
তারপর দুপুরেই নেমে এলো এক করাল ছায়া
উঠে এলো এমন কিছু হাত
যাদের বাপ ঠাকুরদাকে পৃথিবীতে
কেউ কোনোদিন কোথাও হাঁটতে দেখে নি
রাতারাতি জমির ক্যানভাসে জমা হলো
অসংখ্য কালো রেখা
আর রক্তের গভীর আঁচড় মাটির গায়ে গায়ে
হাতে হাতে সব ভাত চুরি হয়ে গেল
ভাঙা ফুটো তোবড়ানো থালাগুলো
এমনভাবে ছড়িয়ে ছিল সারা মাঠ জুড়ে
মনে হবে ভারতের ম্যাপটা দিন দুপুরে
সকলের চোখের সামনে কে যেন ছিঁড়ে দিয়েছে।
চারদেয়ালের স্বরবৃত্তে
চারদেয়ালের স্বরবৃত্তে দোল খেতে খেতে
জীবনের সবকিছু আবিষ্কার করে ফেলার মত্ততায়
জানলা খুলে বাকি পৃথিবীর শরীর দ্যাখে
দেয়ালের বর্গাকার ছিদ্রের গভীর নিদাঘ
কল্পনারও বাইরে গ্রাম্য ঝোঁপের মধ্যে আটকে ছিলো
ধুলোপথের দিকে তাকিয়ে কে আর সারাদিন
সব কাজ ফেলে রেখে চোখ রগড়ায়
যুক্তি বুদ্ধি উড়িয়ে দিয়ে শুধু ক্ষমতার রেখায়
আবছা করে দিয়েছিল বর্গাকার অন্য পৃথিবী
ধুলোর মানচিত্রেই তো কথা বলে
পৃথিবীর যাবতীয় পরিশ্রমী মুখ
আবছা পৃথিবীই প্রগাঢ় হয় চারদেয়াল জুড়ে
কথা বলে আন্দোলিত দু’বাহুর ঝড়
রাতারাতি জমির ক্যানভাসে জমা হলো
উত্তরমুছুনঅসংখ্য কালো রেখা
'পৃথিবীর যাবতীয় পরিশ্রমী মুখ / আবছা পৃথিবীই প্রগাঢ় হয় চারদেয়াল জুড়ে / কথা বলে আন্দোলিত দু’বাহুর ঝড় '-- মানুষের কলতান কানে আসে।
উত্তরমুছুন