নরকগুলজার
নরকগুলজার, নরকগুলজার, কলিজা খুল তার;
যাদের একদিন আগুনে পুড়িয়েছো তারাই ফিরে এলো, প্রাচীন ভস্মের নিকষ গহবরে ওরাই চাপা ছিলো; তোমার লকলকে জিহবা বের ক'রে আগুন খেয়ে ফেলো, যতোই পুড়ছিলো, লোকটা হাসছিলো, আগুন কাঁদছিলো– মাথায় গজিয়েছে বহ্নি তেজ নিয়ে নূতন চুলগুলো; যতোই মরছিলো ততোই বাঁচছিলো, লোকটা হাসছিলো, এমন পোড়া এক মানুষ দেখে আজ নরক কাঁপছিলো?
রক্তে ছলছল
প্রাকৃতিক একটা টাকার পাহাড়ে উঠছি
তার চূড়ায় উঠে নিশান ওড়াবো –
যেমন সৈন্যরা গুলি খেয়ে গাদাগদা
লাশের পাহাড় হয় তেমন টাকার পাহাড়
তেমন ক্যাপিটাল :
নিচে রক্তে ছলছল ক'রে নদী বয়
লাশের মাঝখানে বিজয় পতাকা গাড়ে যেমন
তেমন গাড়বো টাকার চূড়ায় ফ্ল্যাগ
জাতীয় ক্যাপিটালের স্বপ্ন কি এরকম?
এরকম শৃঙ্গ জয় হবে আমাদের, তেমন অটল!
সেরকম মায়াবী টাকার পাহাড়ের
একদম নিচে তোমার আমার নানার
এক-পয়সা আছে, তার উপরে বড়-মামার
এক-টাকা, তার একটু উপরে
মালেক নানার ১০০ টাকা, ২০০ টাকা
একদম রক্ত পানি করা টাকা
নবীন টাকার পাহাড় কেঁপে কেঁপে ওঠে
আব্বার টাকা আছে মাঝখানে,
নামি চঙ থেকে মিডেলে, এই টাকাটা
পেয়েছিলাম মার্ক্সের বই উল্টাতে উল্টাতে
আম্মা সেই স্বপ্নের পাহাড় থেকে একটু
ভাংতি পয়সা তার দেবরের হাতে দিতে
গিয়ে সেই যে সন্ধ্যাকে সকালবেলা ভাবলেন
আর পারলেন না যাকাতের টাকা গুনতে
ভুলে গেলেন আগের আর পরের সব
হায়, টাকার পাহাড়ের গোলাপি কোমরের
ভাজে একটা রুমালের ইঁদুর ঢুকে পড়লো,
জায়গায় জায়গায় দাঁত বসালো
আমরা সেই উঁচু মাথা দেখতে দেখতে
হতবাক হলাম যখন
অবিনাশী উঁইপোকা এসে আকাঙ্খার
টাকার পাহাড়কে চুপচাপ
মাটির ঢিপি বানিয়ে ফেললো
আর ঝুরঝুর ক'রে নানা, আব্বা, মামা সবাই
পড়ে গেলেন, মামার সিমেন্টের দোকান
নাই হয়ে গেলো, আমাদের আটার কলের
কথা এখন বললে বস্তা-পঁচা গল্পের মতো শোনাবে
জাতীয় পুঁজি ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ছে
মন্তব্য