.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

উপল বড়ুয়া’র সাক্ষাৎকার

উপল বড়ুয়া’র সাক্ষাৎকার
কবি, কথাসাহিত্যিক, লিটলম্যাগ সম্পাদকের মুখোমুখি হবার বিশেষ বিভাগ ‘দশকথা’। দশটি প্রশ্ন বনাম দশটি উত্তর। আপাতভাবে সংক্ষিপ্ত এই সাক্ষাৎকার সিরিজ আশা করি পাঠকের ভালো লাগবে। আজ এই বিভাগে বিন্দুর মুখোমুখি হলেন কবি উপল বড়ুয়া।
১। আপনার প্রথম লেখা কবে এবং কীভাবে?

উপল বড়ুয়া: এটা আসলেই মনে নাই। তবে একটা ঘটনা মনে আছে। ক্লাস থ্রি কি ফোরে; পাঠ্যবই থেকে রবী ঠাকুরের কবিতার কয়েক পঙক্তি হুবহু খাতায় লিখে সেজ ভাইকে দেখাইছিলাম। কবিতার নাম সম্ভবত ‘মাঝি’। সে অবশ্য আমার চুরিবিদ্যা ধরে ফেলে মুহূর্তেই। সিক্স-সেভেনে পড়াকালীন প্রায়ই স্কুল পালানোর পাশাপাশি ডায়রিতে নিয়মিত কবিতা লেখার চেষ্টা করতাম। অবশ্য তা গোপন থাকতো। 

২। কবিতা আপনার কাছে কী?

উপল বড়ুয়া: কবিতা কী, ভাব না বস্তু—তা নিয়ে তো কখনও ভাবি নাই। লিখতে ভাল লাগে, তাই লিখি। লিখতে পারলে এক ধরনের মানসিক রিডেম্পশন কাজ করে। আইডিয়া বা বিশেষ চিন্তাকে টার্গেট করে তো কবিতা লিখি নাই কখনও। হুটহাট এক ধরনের ঘোর তৈরি হয়। কিংবা ধরেন, বসে আছি, তখন একটা শব্দ বা লাইন হুট করে চলে এলো মাথায়, তা নিয়ে ভাবতে গিয়ে অন্য পঙক্তিগুলা চেতন-অবচেতনের সংঘর্ষে তৈরি হয়ে যাচ্ছে। 

৩। কবিতা মানুষকে কী দিতে পারে?

উপল বড়ুয়া: এই প্রশ্নটা দেখে আমি আসলেই ভাবতেছি, কবিতা কী দেয় মানুষকে! মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ সম্ভবত তার অনুভূতি। কবিতা তাতে কখনও-সখনও দাগ কাটে। সুখানুভূতির পাশে গিয়ে সে সুখের সঙ্গে মিশে যায়। আবার বেদনার পাশে গিয়ে সে গাঢ় নীল রঙ ধারণ করে। ধরেন, বিভিন্ন জনরার গান শুনে বা বিভিন্ন রঙ দেখে আমাদের যে অনুভূতি তৈরি হয়, কবিতাও হয়তো সে রকম কিছু একটা করে। প্রতিটা শিল্পকলার কাজই হয়তো তাই। এই দেওয়াটা তো বিশাল কিছু। 

৪। আপনার কবিতা লেখার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি। ভাবনা থেকে সৃজন পর্যায়ে নিয়ে যেতে কী করেন?

উপল বড়ুয়া: আমার কবিতা লেখার কোনো পদ্ধতি নেই। আমি সিস্টেমেটিক বিষয়-আশয়ে বিশ্বাসী নই। বলতে গেলে, বেশিরভাগ লেখালেখিই করি অফিসে বসে, হুটহাট, কাজের ফাঁকে। বাসায় আমি কেবল ঘুমাই আর মুভ্যি দেখি কিংবা গান শুনি। রেস্টুরেন্টে ও লোকাল বাসে বসেও কয়েকটা কবিতা লিখছিলাম। এমনিতে আমার খুব কম লেখা হয়। ধরেন, কেউ একগুচ্ছ কবিতা চাইল কিংবা গদ্য, তখন একটা ডেডলাইন নিয়ে নিই। তারপর যা হয়, লিখে পাঠিয়ে দিই। লিখতে পারলে আনন্দ লাগে। একটা ঘোর বা নিজস্ব গুহার ভেতর ধ্যানস্থ আছি মনে হয়। পছন্দসই একটা লাইন দিয়ে শুরু করতে পারলে হয়। আপনা গতিতে তা এগিয়ে চলে।

৫। আপনার লেখার অনুপ্রেরণা কে বা কারা?

উপল বড়ুয়া: একেক সময় একেকজন। যখন যার যা পড়ি, তাই আমার লেখার অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। যে কোনো ভাল লেখা পড়তে পারলে অনুপ্রাণিত হই। হঠাৎ সবুজ ঝোপঝাড় দেখলে কিংবা রাস্তার পাশে কাউকে বাঁশি-গিটার বাজাতে দেখলেও ভেতরে এক ধরণের আনন্দ-স্পৃহা অনুভব করি। কারও জীবনের গল্প শুনলেও অনুপ্রাণিত হই। এখন মঈনুস সুলতানের কয়েকটি ভ্রমণ বিষয়ক গদ্য পড়তেছি। এসব পড়ে মনে হইতেছে, ব্যাগপত্তর গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ি। 

৬। আপনার উত্থান সময়ের গল্প বলুন। সে সময়ের বন্ধু, শত্রু, নিন্দুক, সমালোচক— এসব কীভাবে সামলেছিলেন?

উপল বড়ুয়া: উত্থান-পতনের গল্প করার মতো আমি এখনও তেমন কিছুই করি নাই। না সাহিত্যে, না জীবনে। সাধারণভাবে আমার জীবন চলেছে ও চলছে। আসলে এখন আমার কোনো বন্ধু-শত্রু-নিন্দুক-সমালোচক নাই। থাকলেও আমি হয়তো জানি না। একটা সময় ছিল একজন-দু’জন। এখন তাও নাই। আমি আসলে কারও সঙ্গে যাইতে চাই নাই। কাউকে নিজের সঙ্গে রাখতেও চাই নাই। বন্ধুত্ব-শত্রুতা এখন এসব ঠিক একটা টানে না আমাকে। 

৭। সাহিত্য দিয়ে কেউ দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে চায়, কেউ স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে চায়, কেউ সন্ত্রাস–মৌলবাদ ঠেকাতে চায়, আরো নানাকিছু করতে চায়। আপনি কী করতে চান?

উপল বড়ুয়া: আমি কিছুই করতে চাই না। যারা সাহিত্য দিয়ে অনেক কিছু করতে চায়, আমি দূর থেকে উনাদের দেখি। অনেককিছু করে ফেলার মতো অত ক্ষমতা আমার নাই। আমি কেবল নিজের ভ্রমণটা উপলব্ধি করতে চাই। তবে যারা সমাজের নির্যাতিত-সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন, শিল্প-সাহিত্য করে যাচ্ছেন, তাদের এই ডেডিকেশনটা ভাল লাগে। সবাই তো একই রকম শিল্প করবে না। বৈচিত্র্যতা সুন্দর। 

৮। যে জীবন আপনি এত বছর যাপন করলেন, তা আপনাকে আলটিমেটলি কী শিক্ষা দিলো?

উপল বড়ুয়া: আপনার প্রশ্নগুলা সব কঠিন কঠিন। মনে হইতেছে, পরীক্ষার হলে বসছি। আর ২০ নম্বরের জন্য আস্ত এক রচনা মুখস্ত করে দ্রুত কলম চালাইতেছি শেষ ঘণ্টা বাজার আগে। জীবন আসলে সহজও নয়, কঠিনও নয়। জীবন জীবনের মতো বয়ে চলে। এই চলার পথে সে একেকজনকে একেক শিক্ষা দেয়। এই মুহূর্তে মনে হইতেছে, জীবনে কাউকে কষ্ট না দেওয়া ও ছোট করে না দেখা উচিৎ। শেষ পর্যন্ত এটাই আমাদের সবচেয়ে বেশি ভোগায়। 

৯। করোনা তথা মহামারী আপনার লেখালিখিতে কোনো প্রভাব রেখেছে কি? 

উপল বড়ুয়া: করোনায় সময় ঢাকার এক ভূতুড়ে পরিবেশ দেখেছি। ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে অফিস করতে যেতাম প্রতিদিন। নিজেও করোনায় আক্রান্ত হইছি। হালকা-পাতলা মানসিক ও শারীরিক চাপ তো সইতে হয়েছে। তার প্রভাব লেখালেখিতে পড়েছে কিনা জানি না। এমনিতে তাগিদ বোধ না করলে আমি লিখি না। অবশ্য গত কয়েকমাসে ইচ্ছে সত্ত্বেও তেমন কিছুই লিখতে-পড়তে পারিনি। হয়তো এটা করোনার পরোক্ষ প্রভাবে। 

১০। পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?

উপল বড়ুয়া: পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছুই বলার নাই। তাদের ইচ্ছে হলে পড়বে। না হলে পড়বে না। 
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: উপল বড়ুয়ার জন্ম ১৯ ডিসেম্বর, বাঙলাদেশের রামু, কক্সবাজারে। প্রকাশিত বই: কানা রাজার সুড়ঙ্গ (কবিতা), উইডের তালে তালে কয়েকজন সন্ধ্যা (কবিতা), ডিনারের জন্য কয়েকটি কাটা আঙুল (ছোটগল্প), তুমুল সাইকেডেলিক দুপুরে (কবিতা)।

মন্তব্য

BLOGGER: 3
  1. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  2. ভাল লেগেছে। কবি ও বিন্দু’র জন্য শুভ কামনা রইল ��

    উত্তরমুছুন
  3. নতুন প্রজন্মের কবিদের এজন্যই ভাল লাগে৷ দশকথা ভাল হচ্ছে৷

    উত্তরমুছুন
মন্তব্য করার পূর্বে মন্তব্যর নীতিমালা পাঠ করুন।

নাম

অনুবাদ,32,আত্মজীবনী,26,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,319,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,15,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,56,ছড়া,1,ছোটগল্প,12,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,15,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,152,প্রিন্ট সংখ্যা,4,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভাষা-সিরিজ,5,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,37,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: উপল বড়ুয়া’র সাক্ষাৎকার
উপল বড়ুয়া’র সাক্ষাৎকার
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgoEQv-rKYW6e92Xmz9yQs-C16U6CfH8VkMHiG90wUcfRVsfd-EtG36g9f4xVMea7dEVM7ILkimc-1yGcrTo5PbZYGV33jzGTSrqA8PAROBdNsmSht0yOA_whxrIs7dNn6HFOPUbEaTgUo/w320-h160/%25E0%25A6%2589%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%259C%25E0%25A7%2581%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE-%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B7%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%258E%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.png
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgoEQv-rKYW6e92Xmz9yQs-C16U6CfH8VkMHiG90wUcfRVsfd-EtG36g9f4xVMea7dEVM7ILkimc-1yGcrTo5PbZYGV33jzGTSrqA8PAROBdNsmSht0yOA_whxrIs7dNn6HFOPUbEaTgUo/s72-w320-c-h160/%25E0%25A6%2589%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%259C%25E0%25A7%2581%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE-%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B7%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%258E%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.png
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2021/02/blog-post.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2021/02/blog-post.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy