কবি, কথাসাহিত্যিক, লিটলম্যাগ সম্পাদকের মুখোমুখি হবার বিশেষ বিভাগ ‘দশকথা’। দশটি প্রশ্ন বনাম দশটি উত্তর। আপাতভাবে সংক্ষিপ্ত এই সাক্ষাৎকার সিরিজ আশা করি পাঠকের ভালো লাগবে। আজ এই বিভাগে বিন্দুর মুখোমুখি হলেন কবি শুভ্র সরখেল।
১। আপনার প্রথম লেখা কবে এবং কীভাবে?
শুভ্র সরখেল: প্রাইমারি ইস্কুলে থাকা অবস্থায় একটা খাতায় নিয়মিত কবিতা লিখতাম। মা একদিন চুলায় দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। তারপর আর জানি না। মনে নাই।
২। কবিতা আপনার কাছে কী?
শুভ্র সরখেল: কবিতা আমার কাছে ফালতু একটা ব্যাপার, যাকে আমি যেকোনো সময়, যেকোনভাবে, যেকোন পরিস্থিতিতে ভালবাসতে পারি।
৩। কবিতা মানুষকে কী দিতে পারে?
শুভ্র সরখেল: কবিতার দেয়ার কোন ক্ষমতা নেই। মানুষ কবিতা লেখে, মানুষ কবিতা পড়ে। সুতরাং যা করার মানুষই করবে, মানুষই দেবে।
৪। আপনার কবিতা লেখার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি। ভাবনা থেকে সৃজন পর্যায়ে নিয়ে যেতে কী করেন?
শুভ্র সরখেল: প্রথমত, কবিতা লেখার কোন পদ্ধতি নেই। পদ্ধতি শব্দটার অর্থ হচ্ছে কোন কিছু করার নিয়ম-কানুন। নিয়ম–কানুন মানেই হচ্ছে সীমাবদ্ধতা। কবিতায় অন্তত কোন পদ্ধতি থাকা উচিৎ নয়। তাই আমার কবিতা লেখার কোন বাউন্ডারি নেই। মন যা চায়, তাই লিখি। সৃজনশীল পর্যায়ে যাওয়ার মুরোদ নাই রে ভাই। আমার মতো করে আমি লিখি। যারা আমার কবিতা পড়ে, তাদের সৃজনবোধ, আমার লেখার সৃজনশীলতা নির্ধারণ করে। Everything depends on them.
৫। আপনার লেখার অনুপ্রেরণা কে বা কারা?
শুভ্র সরখেল: কেউ না!
৬। আপনার উত্থান সময়ের গল্প বলুন। সে সময়ের বন্ধু, শত্রু, নিন্দুক, সমালোচক— এসব কীভাবে সামলেছিলেন?
শুভ্র সরখেল: আমার ক্ষতি যে কেউ চাইলে করতে পারে, আর আমি কারো ক্ষতি করতে পারি না। অনেকবার মন থেকে অন্যের ক্ষতি চেয়েছি, কিন্তু কাজ হয় না। কাউকে সামলে নেয়ার দক্ষতা আমার এখনো তৈরি হয় নি। তাই মাঝে মাঝে চুপ করে যাই।
৭। সাহিত্য দিয়ে কেউ দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে চায়, কেউ স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে চায়, কেউ সন্ত্রাস–মৌলবাদ ঠেকাতে চায়, আরো নানাকিছু করতে চায়। আপনি কী করতে চান?
শুভ্র সরখেল: ওরে বাবা! এতোসব ভেবে আমি কখনো লিখতে বসি না। আমি শুধু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখতে চাই। কী হবে ? কী হতে পারতো ? আমার মাথায় ওতো কিছু খেলে না।
৮। যে জীবন আপনি এতবছর যাপন করলেন, তা আপনাকে আলটিমেটলি কী শিক্ষা দিলো?
শুভ্র সরখেল: আমার ভাই একাডেমিক কিংবা ননএকাডেমিক দু’টো শিক্ষাই স্বল্প। জীবন আমাকে যা দেখিয়েছে, শুধুমাত্র সেই শিক্ষার উপর ভর করে এখনো চলছি। এতোটুকু বুঝতে পারছি, মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শুধুমাত্র দুইটি ঘটনা ঘটায়। প্রথমটা হচ্ছে সে প্রতিনিয়ত অভিজ্ঞ হয়, আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে সে নতুন কিছু চেষ্টা করে। এই দু’টি জিনিস ছাড়া মানুষ জীবনে কিচ্ছু করে না।
৯। করোনা তথা মহামারী আপনার লেখালিখিতে কোনো প্রভাব রেখেছে কি?
শুভ্র সরখেল: না।
১০। পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
শুভ্র সরখেল: না।
পরিচিতি: শুভ্র সরখেল ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ৭ ফেব্রুয়ারি বাঙলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১২ এ বাঙ্ময় থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর কবিতার বই ‘ক্রমাগত অন্ধকারে ডেস্কটপের ছায়া’। এখন অব্দি দুই ফর্মার এই পুস্তিকাই তার কবিতার একমাত্র সংকলন। বর্তমানে টিভি নাটক ও সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখছেন। তাঁর কবিতা পড়তে ক্লিক করুন।
স্টেটকাট কথাবার্তা৷ জোশ
উত্তরমুছুনসেরা
উত্তরমুছুননিরাবরন কথা, নিরাভরন ভাবনা। ধন্যবাদ কবি এবং সম্পাদক উভয়কেই।
উত্তরমুছুনপরের সাক্ষাৎকারের জন্য আগ্রহী৷ সিরিজটি আগ্রহ তৈরি করছে৷
উত্তরমুছুন