আমরা নাটকের দল প্রাচ্যনাট− নানা রকম নাট্য প্রয়াসেই আমাদের শিল্পচর্চা অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট থাকি। নতুন একটি নাট্য নির্মাণের উদ্দেশ্যে যখন আমাদের নির্দেশক বিশ্বসাহিত্যের বিভিন্ন নাটক-গল্প-উপন্যাস হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন ঠিক তখনই তিনি খুঁজে পান একটি অসাধারণ সাহিত্য, যার ইংরেজি ভাবানুবাদ ‘মেন ইন দ্যা সান’। উপন্যাসটির রচয়িতা বিশ্বসাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ আরব সাহিত্যিক ঘাসান কানাফানি, যিনি বাংলাদেশে বহুল পঠিত নন। কিন্তু এই অসাধারণ উপন্যাসটির বাংলা তর্জমা করে বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য অসামান্য কাজটি সম্পন্ন করেছেন মাসুমুল আলম।
মাসুম ভাইয়ের অনুবাদকৃত বইটি নিয়েই শুরু হয় আমাদের নাট্য নির্মাণের প্রয়াস। প্রথমেই আমার ওপর দায়িত্ব বর্তায় উপন্যাসটির নাট্যরূপ তৈরির। সেই দায়িত্ব পালনে যখন উপন্যাসটি বারবার পড়তে থাকি তখন বিস্ময়ে লক্ষ করি যে মাসুমুল আলমের তর্জমায় আমাদের হৃদয়েও ছুঁয়ে যাচ্ছে অদেখা-অচেনা আরবের কয়েকজন চরিত্রের জীবনের সুখ-দুঃখ, স্বপ্ন আর মর্মান্তিক পরিণতি!
নাট্য রূপায়ণের নিমিত্তে উপন্যাসটির বয়ান কাঠামোর পরিবর্তন করতে হয়েছে বেশ ভালভাবেই। আর তার সাথে ভাষাকে অভিনয় উপযোগী করতেও কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়েছে সংলাপ ও বর্ণনায়। কিন্তু সেসবকেই সহজ ও আরো বেশি হৃদয়গ্রাহী করেছে মাসুমুল আলমের ভাষ্য ও বয়ানের শক্তি। এমনকি নাট্য রূপায়নের ক্ষেত্রে কিছুটা স্বাধীনতা গ্রহণের অনুপ্রেরণাও ছিল তাঁর ভাষা বুননের মুগ্ধকর কৌশল! যে কৌশলের কারণেই আমার অন্তরে জেগে উঠেছিল অদেখা আরবের ভাগ্য বিড়ম্বিত কয়েকজন মানুষের হাহাকার, আমার মানসচক্ষে ভেসে উঠেছিল তাদের স্বপ্নালু মন ও নতুন জীবন অর্জনের উদ্দেশ্যে যাত্রা পথে নির্মম পরিণতির আর্তনাদ!
‘মেন ইন দ্য সান’ এর মঞ্চপরিবেশনা (১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯) |
মাসুম ভাই এভাবেই আমাদেরকে আরো নতুন নতুন পথের সন্ধান দিবেন, আমাদের নাট্য নিরীক্ষাকে আরো বেগবান রাখতে সহযোগিতা করবেন এমন প্রত্যাশা ও দাবী রাখছি। ভালবাসা জানবেন মাসুম ভাই। প্রাচ্যনাট আপনাকে ভালবাসায় ও কৃতজ্ঞতায় জড়িয়ে রাখবে!
লেখক: মাসুমুল আলম অনূদিত ঘাসান কানাফানির ‘মেন ইন দ্যা সান’ উপন্যাস অবলম্বনে প্রাচ্যনাট প্রযোজনা পুলসিরাত এর নাট্য রূপায়নকারী।
মন্তব্য