সে বহু দিন আগের কথা। পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ বছর তো হবেই। রাতে-দিনে পড়ে নিচ্ছি কতো বই। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের তরতাজা লাইব্রেরিটা হাতের মধ্যে পেয়ে সদ্য প্রকাশিত বাংলা বইয়েরও অভাববোধ করিনি কখনও, তা হোক বাংলাদেশের, কী পশ্চিমবঙ্গের, কী অন্য কোনো দেশের। পড়তে গিয়ে ওই বয়সে যা হয় গল্প উপন্যাসের বিশেষ কিছু জায়গায় বিশেষ ভাবে চোখ আটকে যায়। নারী-পুরুষের সংসর্গ এবং একে কেন্দ্র করে যৌনতার প্রসঙ্গ এলে লেখক যে ভাষায় যে বর্ণনায় যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই তা উপস্থাপন করুন না কেন সেই পাতাগুলো প্যারাগুলো বারবার পড়ে নিই। এতে করে অবদমিত মনে এক ধরনের রসাস্বাদন যে হয় না তা নয়। তখনও পর্যন্ত এ নিয়ে গভীরভাবে ভাবার বোধ তৈরি হয়নি। এক শীতরাতে হঠাৎ পাওয়া একখানা বই আমার ততদিনকার পাঠ অভিজ্ঞতাকে একেবারে তছনছ করে দিলো। মনে পড়ে সারারাত ধরেই পড়ে শেষ করেছিলাম বুদ্ধদেব বসুর ‘রাত ভরে বৃষ্টি’।
প্রায় তিন যুগ পর কিছুদিন আগে কথাকার মাসুমুল আলমের আরব্যরজনীর ঘোড়া উপন্যাসটি পড়তে পড়তে সেই রাতের ‘রাত ভরে বৃষ্টি’র সেই অভিঘাত ওই বয়সের তরুণ মনকে যেভাবে তাড়া করেছিল এখনকার আমাকেও তেমন করে যেন নাড়িয়ে দিলো। একটা অজানা আবেগে বইখানার কয়েকটি কপি সংগ্রহ করে আমরা যারা তখনকার দিনে ‘রাত ভরে বৃষ্টি’নিয়ে নানামুখি বচসায় মেতেছিলাম তেমন কয়েকজন বন্ধুকে পড়তে দিয়ে বলি, একালের লেখকের বই পড়ে দেখো। বইটি পড়ে তাদের দু’একজন বলেছিল, মাসুমুল আলমের কব্জির জোর আছে, সাহসও আছে বটে।
‘রাত ভরে বৃষ্টি’র উপাখ্যান আসলে তিনটি চরিত্র মালতী, নয়নাংশু এবং জয়ন্তর মুখের বয়ান। উপন্যাসের শুরুতে মালতীর বয়ান ছিল এরকম- ‘হ’য়ে গেছে- ওটা হ’য় গেছে- এখন আর কিছু বলার নেই। আমি, মালতী মুখোপাধ্যায়, একজনের স্ত্রী আর একজনের মা, আমি ওটা করেছি। করেছি জয়ন্তর সঙ্গে, জয়ন্ত আমাকে চেয়েছে, আমিও তাকে। নয়নাংশু হয়ত ভাবছে আগেই করেছিলুম, কিন্তু না- আজই প্রথম। আজ রাতে- চার ঘন্টা আগে। এই বিছানায়। যেখানে মালতী এখন শুয়ে আছে।
...ভালো লাগছে, এখন বেশ ভালো লাগছে আমার। বুঝতে পারছি এতদিন এটা ঠেকিয়ে রেখে ভালো করিনি।’
পড়তে গিয়ে তখনকার দিনে একেবারে ভিমরি খাওয়ার দশা আমাদের। পাতার পর পাতায় কতোই না এর কাটা-ছেঁড়া, এসবের ব্যাখ্যা এবং বিশ্লেষণ। বিষয়টা এমন যে, লিখতে লিখতে গোটা সমাজের সঙ্গেই বুঝি লড়ে যাচ্ছেন লেখক!
পুরো কল্লোল যুগটাই তো তখন পশ্চিমা আধুনিকতার পড়ন্ত জোয়ারে ভাসছে। বুদ্ধদেব বসু স্বয়ং ওই প্রবাহের পুরোহিত। ‘রাত ভরে বৃষ্টি’বইটি অশ্লীলতার দায়ে নিষিদ্ধ হলে কোর্টে লড়েছিলেন বুদ্ধদেব। নিজেই নিজের উকিল হয়েছিলেন। সাহিত্যের শ্লীলতা-অশ্লীলতা নিয়ে বিচারকের সামনে এজলাসে বাদী পক্ষের সঙ্গে বিবাদীর তুমুল লড়াইয়ের বর্ণনা ছাপা হয়েছিল বইয়ের শেষে। তন্নতন্ন করে পড়েছিলাম সেই অসাধারণ বিতর্কের আদ্যপান্ত। এর কিছুদিন পরে সমরেশ বসুর ‘প্রজাপতি’পড়তে গিয়ে দেখি সেটিও ওই একই দোষে নিষিদ্ধ হলে আবারও লড়েছিলেন বুদ্ধদেব। এবং সেবারও সেই লড়াইয়ে জিতেছিলেন তিনি। সমাজে এখন আর ওসব নিয়ে তেমন তাপ-উত্তাপ নেই। ইন্টারনেটের যুগে এসে সব একাকার হয়ে গেছে। সে না হয় গেছে কিন্তু জীবন থেকে নারী-পুরুষের নানামুখি সম্পর্কের বিস্তার, বিচ্ছেদ, রিরংসা নিয়ে ভেতরবাস্তব ও বহির্বাস্তবের হরেকরকম টানাপোড়েন, টিকে থাকার প্রাণপণ লড়াই তো আর ঘুচে যায়নি। কালের নতুন উপলব্ধিতে, নতুন করে দেখার নয়া বিশ্লেষণে, কোনোরকম আদেখলাপনা ছাড়াই শিল্পের সব অঙ্গনে হাজির হচ্ছে জীবনের ওইসব অমোঘ সত্য। কে কীভাবে দেখাতে পারছে সেটাই হচ্ছে আলোচনার আসল বিষয়।
মাসুমুল আলমের আরব্যরজনীর ঘোড়া-র তিনটি পর্বে বর্ণিত অসমবয়সী তিন নারী, কিশোয়ার-বীণা-সোনিয়ার আত্ম-কথা আসলে নারীর চোখ দিয়ে নারীকেই অবলোকন। তাদের বয়ানে মধ্যবিত্ত মানসিকতার কোনো রাখঢাক নেই। পুতুপুতু ভাব নেই। কোনো অবদমন নেই। আধুনিকতার তেগরমবাজী নেই। তারা সাধারণ কিন্তু আধুনিকোত্তর। তাদের কথনে তারা অবলীলায় মনোজগতের তাবৎ বিষ উগরে দিচ্ছে বলে মনে হয়। চরিত্রগুলোর চলমান সম্পর্ক, প্রেম, বন্ধুতা, দায়িত্ব তথাকথিত কোনো শ্রেয়বোধেও ভুগছে না। তাই এই বয়ান কোনো বিলাপের কেচ্ছা হয়ে ওঠেনি। কোনো কাহিনির সুতোয় এদের বাঁধেননি মাসুমুল। কোনো চরিত্র নির্মাণের চেষ্টায়ও নামেননি। কিশোয়ার-বীণা-সোনিয়ার বয়ান কোনো কনফেশনও নয় ফলে এদেরকে পাঠ কিংবা এদের বয়ান পাঠ আদতে হয়ে ওঠে যাবতীয় মূল্যবোধের খোলস নিয়ে অস্বস্তিকর এক জীবনবোধের সামনে দাঁড়িয়ে পড়া আমাদের।
এই তিন নারীর মধ্যে যে বয়সে বড়, কিশোয়ার, সে বিবাহিতা, সন্তানের জননী, অর্থনীতিতে পড়া চাকরিজীবী কিন্তু সেক্স ম্যানিয়াক। সে বলছে, ‘যদি নিজের গুণপনা বলতে মেধা-প্রতিভা বাদ দিয়ে গৃহ-কর্ম-নিপুণতা আর কারুশিল্প ইত্যাদির পাশাপাশি কেবল তার শান্ত সৌন্দর্যের যৌনতা-লুক্কায়িত খুঁটিনাটিই কেউ বলে যায়, তবে তা ভালো- নির্বিষ। কিন্তু আমি ওই পথে হাঁটবো না, যা সত্যি তা-ই বলার কেউ দিব্যি না-দিলেও আমি কোনো ছদ্মবেশ নেবো না- এই প্রতিজ্ঞা।’
তার বয়ানে এই প্রতিজ্ঞা কিশোয়ার রক্ষা করেছে। নিজেকে সুস্পষ্ট করতেই সে তার রুচি তার ভালোলাগা-মন্দলাগা-আপোষ, কান্না, বিবাহপূর্ব-বিবাহপরবর্তী এবং দাম্পত্যের যৌন-জীবন কোনোকিছুই আড়াল করেনি। একটা উদাহরণ দিলেই বুঝবেন। কিশোয়ার এক জায়গায় বলছে, ‘বহুদিন হয় আমার ইচ্ছার জোর নেই, আমার মনে হয় জন্মের পর থেকেই আমি বিবাহিত, বিবাহ-নির্ভরতা অ্যামোন পেয়ে বসেছে যে, নিরাপত্তাজনিত স্বস্তি আমার পেটে তিন-থাক ভাঁজ এনে দিয়েছে। আলতাফ সেখানে মুখ ঘষে। যখন আমার পিরিয়ড চলে, আলতাফ তখন যদি উত্তেজিত হয়ে পড়ে, ঘটনাচক্রে, তবে ঐ তিন-থাক ভাঁজের মধ্যেই সে মাস্টারবেট করে। গা রি-রি সেই বোধ আমার কোথায় গ্যালো, আমি ক্যানো অ্যালাও করি ঐ বিকৃতকাম? তারপর চাকরি হলে, আমার জীবনাচারে পরিবর্তন ঘটে, স্বাবলম্বিতা আমাকে আমার ইচ্ছাধীন করে তুলতে সহায়ক হয়।’
হ্যাঁ, রোজগার করতে পারার জীবনে এসে কিশোয়ার নিজের ইচ্ছায় চলতে শিখেছে বটে। দুনিয়াদারির রং ঢং জেনে নিয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে নিজের পছন্দের মানুষের সঙ্গে সেক্স করতেও আর বাঁধছে না তার।
দ্বিতীয় নারীটি সিনেমা শিল্পের একজন এক্সট্রা, নর্তকী। নাম বীণা। তার মতোই আর এক নর্তকী লোপা’র সঙ্গে প্রচ- ভিড়ের মধ্যে ঈদের ছুটিতে বাসে চেপে বাড়ি ফিরছে। এ তো ফেরা নয়, পুরো পথ জুড়ে কেবল পেছন ফেরা। নিজেকে উল্টে-পাল্টে দেখা। নিজের সাথে নিজের কথাযুদ্ধ খেলা। সে ওড়িশি জানে, কত্থক জানে, ভরতনাট্যম জানে, কথাকলিও জানে তো কী হয়েছে? স্ট্রাগল করতে করতে ওসব বাল্-ছাল জানাজানিতে কী-ই বা আর এসে যায় তার? খ্যাপ মারতে মারতে অভিনয়ের ঝোঁক-টোক সব শিকেয় তুলে শেষ পর্যন্ত তো হতে হলো বাংলা সিনেমার ব্যাকআপ ড্যান্সার!
এসব কথার এক পর্যায়ে বীণা বলে, ‘...আমি ভ্রু-ভঙ্গি করি, ভ্রু-ভঙ্গি তো অন্যরকম হবেই, নাচের মেয়ে বলে কথা। কিন্তু সে আর কতক্ষণ, দুই ভ্রু-র মাঝে টিপ পরার জায়গায় প্রশ্নচিহ্ন ফুটে ওঠে। আমার কোনো অভিব্যক্তি মঞ্জুর ভাইকে কোনো ইশারা দ্যায় নি। অথবা সে জাত-অন্ধ, একটা প্রবল পুরুষ-চেতনা, এক বনের এক বাঘ তার দাঁত-নখসমেত সংহারের জন্য পুরোপুরি তৈরি।’
বীণার মঞ্জুর ভাই বলে ‘তুমি তো বারোভাতারি-একটা বেশ্যা।’মঞ্জুর বলা এই ‘বেশ্যা’শব্দটি বীণার শ্রবণ থেকে আর কখনোই মোছে না- সেই থেকে তার কানের কাছে পরিত্যক্ত মানুষের বিদায় ঘন্টার মতো বেজে চলে বলেই পুরুষ-চেতনার সঙ্গে একটা লড়াই জারি রেখে জীবনের পথে হাঁটে বীণা।
সিকিউরিটি সার্ভিসের ডেস্কে চাকরি করে সোনিয়া। এই গ্রন্থের তৃতীয় নারী। বাল্যকাল থেকেই স্বাধীনচেতা, উড়াধুরা, ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া মধ্যবিত্ত বাপ-মায়ের ঘর পালানো আধুনিক মেয়ে। বন্ধুর সঙ্গে বাইকে চড়ে চক্কর খায় বলেই যে তাকে একমাত্র প্রিন্স চামিং মনে করবে তেমন মেয়ে সে নয়। ক্রাশ হওয়ার মতো ফিলিংস তার নেই। ওদের কারোরই বুঝি নেই। সোনিয়ার ভাষায়- ‘বিভিন্ন ফ্ল্যাটে আমরা যখন যাই, দেখছি রঞ্জু সাইলেন্টলি সেক্স করে চলেছে; সামিয়া আর নৌফেল হঠাৎ পজিশন চেঞ্জ করতে গিয়ে হয়তো আমার মোনিং শুনতে পেয়ে উঠে এসে নৌফেল তখন ললিপপ ঢুকিয়ে দ্যায় এবং তক্ষুণি এক্সপ্রেশনলেস রঞ্জু উঠে গিয়ে সামিয়াকে কলসের মতো নিঃশব্দে উল্টে দ্যায়। সিসা-ব্রিদিং, ইয়াবা ইত্যাদি আমাদের ফাইনাল পিক-এ নিয়ে যায়, একেকটা কিক্ আর আমাদের শাউটিং-এর নিচে সকল প্রতিশ্রুতি, সোশ্যাল ভ্যালুজ-ট্যালুজ সব চাপা পড়ে যায়, যেতে থাকে।’
মন-রাখা পুতুপুতু বাক্য এদের অসহ্য। টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনে ফিক্স হওয়া মাথা এদের নয়। তাই চাকরি করতে এসে বাধ্য ভালো মেয়ের মতো নির্বাপিত অগ্নি ও তেজের অবশেষ হয়ে মাথা গুজে কাজ করবে সোনিয়াদের তেমন মেয়ে ভাবার অবকাশ কই? ফলে বুড়ো-ধাড়ি শরীর-খোর বস্দের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়তে সময় লাগে না সোনিয়ার। আর সে কথা অকপটে স্বীকার করতেও কোনো লজ্জা নেই তার। কেননা সোনিয়া জানে যে, ভড়ং করাটাই বরং লজ্জার।
ছোট কাগজের নিষ্ঠাবান লেখক মাসুমুল আলমের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ১৯৯৫ সালে যশোরে। কলকাতা থেকে ফিরছিলাম। মনে পড়ে সেদিনের সেই আড্ডার কথা। আমি ছোট কাগজের কর্মী বলে আলাপচারিতায় চেতনার দিক থেকে মাসুমুলের সঙ্গে একটা আত্মিক টান অনুভব করেছিলাম। আমি এখন আর ছোট কাগজের কর্মী নই কিন্তু মাসুমুল ঘোরতর ছোট কাগজের লোক। তাতে কী? আজও সই টান অব্যাহত আছে। সাগর নীল খানের ছোট কাগজ কেন্দ্রিক ‘উলুখড়’ প্রকাশনীর কার্যালয়ে, আজিজ মার্কেটের লিটল ম্যাগাজিন প্রাঙ্গনে, কোনো বইয়ের দোকানে কিংবা কোনো পানশালায় সেলিম মোরশেদ, শহিদুল আলম, হাবিব ওয়াহিদ, সুহৃদ শহীদুল্লাহ, মাসুমুল আলমসহ মাঝেমধ্যে সাহিত্যের আড্ডা দেই। এই আড্ডা আরো সারবান হয়ে ওঠে মাসুমুলের বিস্তৃত পাঠ-অভিজ্ঞতায়, সমসাময়িক দেশ বিদেশের লেখক-সাহিত্যিকের সুলুকসন্ধান আর বইপত্র নিয়ে কথকতায়। পাঠক হিসেবে তার ব্যাপ্তি বিস্ময়কর। এবং সাহিত্যের খোঁজ-খবর, বিশ্লেষণ, চিন্তাবীজ নিয়ে মাসুমুলের কথাপরিধি: ২২ পয়েন্ট বোল্ড ও অন্যান্য নামে একটি দুর্দান্ত বই আছে তার। অনুসন্ধিৎসায়, বিচিত্র সাহিত্য-পাঠ আর আড্ডায় মাসুমুল এখনও তেমনই আছেন। বরাবর স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তিনি নিভৃতেই লেখেন। লেখালেখি নিয়ে কখনোই কোনো নিয়ন্ত্রণে যেতে চান না। বাণিজ্যের বা পাঠক তুষ্টির বা বিনোদনের কিংবা মন জোগানোর কোনো ধান্দায়ও তৎপর নন তিনি। অবিনয়ী, আপোষহীন সৃজন-ক্রিয়ার দীপ্রতা নিয়ে ইতোমধ্যেই হয়ে উঠেছেন প্রাতিস্বিক। তার প্রতিটি লেখায় রয়েছে প্রচলের বিরুদ্ধে যাওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুস্পষ্ট ছাপ। আরব্যরজনীর ঘোড়া এই উপন্যাসটি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
আরব্যরজনীর ঘোড়া লিখতে গিয়ে স্থান-কাল-পাত্র নিয়ে কাহিনি ফাঁদার সনাতন ধর্মের দিকে একেবারেই এগোননি মাসুমুল আলম। উপন্যাসটিতে তিন নারীর জীবন-উপলব্ধি এবং প্রতিটি পর্বের শেষে একজন প্রতিবেদককে এ বিষয়ে তার প্রতিবেদন নিয়ে হাজির করে তাদের মনোজগতের প্রবহমান ভাষ্য রূপায়নের চেষ্টা করেছেন মাসুমুল এবং তা এমন এক ভাষায়, এমন এক নিরীক্ষায় যা একই সঙ্গে কালের আলোয় বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলায় দুলতে থাকা চিন্তা ও চেতনার বিবর্তনকেও প্রতিফলিত করেছে-যুগ যুগ ধরে বয়ে চলা মধ্যবিত্তের মহাসংবেদনাকে খারিজ করে উচ্চাকাঙ্খা নিয়ে মাথা তুলতে চেয়েছে।
মন্তব্য