অনেক রিকোয়েস্ট। তারপর সে বললো, আজ কিন্তু ঝট করে শাটার নামিয়ে ফেলো না, সোনা।
আর ‘ও’ মধুরতর হাসলো। একটা আঙুল আলগোছে ঠোঁটের উপর রাখলো। এতেই উষ্ণতা সঞ্চারিত হলো।
দেখে কী হবে বাবু, কষ্টই তো হবে।
আমার ভালো লাগবে, খুব ভালো লাগবে।
হুম।
তারপর অনেকক্ষণ চুপচাপ। কী যেন ভাবছে ‘ও’। কী? তারপর আবার তাকালো। মাত্রই যেন সম্বিত ফিরে পেয়েছে। ছড়িয়ে পড়েছে হাসি। হাসিরাশি।
কিন্তু তোমার যে কষ্ট হবে, বাবু!
না, হবে না।
জেদ করতেছো কেন, হবে।
হোক।
বাচ্চা পড়ছে। এখন অন্য কথা বলো।
এবং পরে অনেক কথা। অন্য অনেক কথা বলতে বলতে যখন ‘ও’ শাটার তুললো ১০ সেকে-ের জন্য, একতাল কম্পমান মাংসের উপর দুটো কালো আঙুরদানা ততক্ষণে সে দেখে ফেলেছে। কাত হয়ে আছে একটা।
ন্ না না, সরায় ফেলো না, আরেকটু সোনা!
নাহ্!
কেন? একটুখানি, প্লিজ।
অস্বস্তি হয়। এখন না।
প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ ...
ফলে, আবারো ১০ সেকেন্ড। এবং সে দেখেছে, সময়টা ঐ ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিভাবে ‘ও’ প্রদর্শনীটা এমন সুচারু সময়নিয়ন্ত্রিত করে নিতে পারে। তৃষ্ণার্ত আকুলতাটা কেমন ১০ সেকেন্ড পর্যায়বৃত্তের মধ্যে রেখেই অনায়াসে শাটার আপ-ডাউন করে নিতে জানে।
এদিকে, মামা সটান দাঁড়িয়ে গেছে।
হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দের মধ্যেই সিক্রেশনের তরল লেগে যাচ্ছে। গুলির শব্দ আবার। এইখানে শুয়ে শুয়ে সে গুলির শব্দ শোনে। আর, ‘ও’ তখন বিমনা, ‘ও’ ভাবছে, ‘ও’ হয়তো প্রতীক্ষা করছে ফের। অথবা না। না। অথবা হ্যাঁ। না। এই হ্যাঁ-না এর মধ্য দিয়ে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ!
আর সে তখন ১০টি মাথা এবং ১০ টি হাতের কম্বিনেশন হয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতা! ক্ষমতার প্রবল প্রতাপে লোভীর দল এখন কিউ দিয়ে দোরগোড়ায় এসে দাঁড়াবে। শৈল্পিক ব্যঞ্জনায় চুষে দিয়ে যাবে। হ্যাঁ, কেউ একজন এসেছে, সে টের পায়, মলমূত্রভরা বেডপ্যান নিয়ে যাচ্ছে। তবু সে চোখ খোলে না। ১০ সেকেন্ডের প্রবল আকুলতা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টায় ফিরিয়ে আনতে তৎপর সে। ঐ শরীরটাকে!
জাহান্নামে যাক সব! সে তবু তীব্র বাসনা জানাতেই থাকে। জানাতেই থাকে। শায়িত মদালসা ‘ও’ তখন নির্বিকার ১০ সেকেন্ডের জন্য পর্দা তুলে দেয়। সারি সারি পশরা। অভিযানের পর গুপ্ত সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা গ্রেনেড ও রকেট লাঞ্চার, এ কে ৪৭, ম্যাগাজিনভর্তি গুলি, সুইসাইড বেল্ট, প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড ... তুমি কোনটা বেছে নেবে নাও!
এই সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর বহু বছর বাদে লাল লাল চুলের মিছিল গোটা শহর প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে একটা সমাবেশ করবে। পরে, পুরুষের পায়ের তলার মাটি কাঁপিয়ে দেয়া কঠিন কোনো স্ট্যাটাসের নিচে কেউ একজন (তখনো) লেজুড় লাগিয়ে আজুড়ে কমেন্ট করবে: মেনোপজ! বুঝছেন, বস্! পুরা মিছিলে একজনও ইয়াং মেয়ে দেখলাম না! ...
অবশেষে তার মাথাটা বিস্ফারিত হলো। গ্রে ম্যাটার ছড়িয়ে পড়লো ফ্লোরে। ফেটিশ একজন নার্স, (তখনো) তার টকটকে লাল জিহ্বায় বৈদ্যুতিক তরল লেহন করতে করতে এগিয়ে আসছে বেডের দিকে।
‘ও’ আবার শাটার নামিয়ে দেয়।
মন্তব্য