১.
আজো জানি না কিছুই, ছুটে আসে বর্তুল পৃথিবী
লোহার খাঁচায় বিদ্ধ শিকারের মতো ম্লান চোখে—
কখনো দেখিনি আগে—যেন দূরতম ছবি এক
আলোকবর্ষ পেরিয়ে দূরের এক নক্ষত্রলোকে
সেসব মহাকালের ছবি, টেলিস্কোপিক মেমোরি
বারে বারে ফিরে আসে, নদী ও নারীর মুখে মুখে
অথবা কাঁচের বল সম্ভাব্য ধ্বংসের ভয় নিয়ে—
সন্ধ্যায় হারিয়ে যায় কোন এক আলোর অসুখে
অথচ স্মৃতিফলকে লেখা হয় ঐশ্বর্য্যের গল্প
বাস্তুসংস্থানকলা—পূর্বাপর জন্ম পরিচয়
আলোকের উৎসব, অবগাহনপর্বের গান
পূজা ও প্রার্থণায়, থাকে প্রজন্মের সংশয়
জানা হলো না কিছুই—আরো কিছু দূরগামী মেঘে
বেদনা লাঘব হয়, সমকালে-সাধনা সঙ্গীতে...
২.
প্রতি যাত্রায় মানুষ মূলত গভীরে চলে যায়
শরীর থেকে ক্রমশ হয় আলাদা, নিঃসঙ্গতা
সে কভু সাক্ষ্য মানে না, ছিঁড়ে শুধু অস্থির কাঁটায়
সকল ঐশ্বর্য্য ঝরে, থাকে কেবল তন্দ্রাহীনতা
সফল মৃত্যুর মতো, সে এক শোকাক্রান্ত সকাল
আসলে শোক-ও নয়—যেন তার-ই পূনর্বয়ান—
শোনা যায়—দূর থেকে, চারিদিকে সুগন্ধি রুমাল
চমকায়, শোকাকুল শহরে দেহ ভাঙার গান
৩.
প্রতি সকালেই আসে প্রতিবেশী রোদ, পাখিস্বর
এইসব বেঁচে থাকা—হিংসা দ্বেষ এবং গ্লানি
মধুচন্দ্রিমা নিয়তি, ভালোবাসার টুকরো ঘর—
প্রতিটি সরল হাত কেন হয়ে ওঠে রুঢ় খুনি?
ওই পাথরফলক—পূর্বপ্রজন্মের ইতিহাস
মাটির গভীর থেকে উঠে আসে সেইসব গান
সীমানায় ভাগ হলো মাটি ও মানুষের বিশ্বাস
মানুষ ভুলেছে হায়—আদিবাসী প্রণয়ের টান
৪.
ওগো মাটি, ফসলের আনকোড়া মাঠের ময়ূখ
দ্যাখেছি সেই সবুজ ও বাদামী রঙের বাগান
তার গভীরে মিলন ও পরাজয়ের কিংশুক—
রক্তাক্ত প্রান্তরে ফুটে থাকে পোড়া সময়ের ঘ্রাণ
এখন জানি শোকের বিপরীতে এক অন্ধকার—
প্রতিনিয়ত তাড়ায় যারা আরো দূরে যেতে চায়
তাদের স্মৃতিতে যেন বৈরাগ্যের অনর্থক ভার
তারা বয়ে নিয়ে যায় উত্তরকালের আকাঙ্ক্ষায়
৫.
মাঝে মাঝে তবু হয় নিরুপায়—বহু বাসনায়
তখন অস্ফুট শব্দে তারা চলে যায় শূন্যপথে
এই ভার বইবে না আর কেউ মৃতের ধারায়
সকলে বিলীন হয়, প্রহরীর দৈব অনুরোধে
কেন এই বিয়োজন? পদভারে কেন হয় লীন?
সবুজ ঘাসের দিন ফুরিয়ে যায় কোন কাঁপনে
আকাশে মরুর মেঘ ধূলিঝড়ে ঢাকলো যেদিন—
বাতাস তো ভুলেছিল ছায়াহীন ভিন্ন আলাপনে
আকাশ কী গাঁইতির? মাটি ভেঙে করে চুরমার
বিজলি চমক এক—ছুটে যায় মাঠ থেকে মাঠে
কেন হায় ভেঙে গেল সরল আকাশ, প্রহরার
ওজন স্তরে ভাঙন, পারমাণবিক ক্রুশকাঠে!
৬.
অথচ শহরে আলো ফেরি করে রাত্রির বেসাতি
প্রবল মুহূর্তগুলো বানে ভাসে ফসলের মাঠ
চাঁদ ওঠে না, দিন-ও হারিয়ে ফেলে সকল স্মৃতি
থাকে শুধু মহামারি, পথে শিশুদের খোলা হাত
মিথ্যে মহড়া সাজায় শুধু কথাদের ইশকুল
পৃথিবীর ত্বক থেকে মুছে যায় সকল সবুজ
থাকে শুধু মায়া তার, ছবি হয়ে থাকে চির ভুল
যেকোন সশস্ত্র দিন, হতে পারে সফল কার্তুজ
৭.
সমস্ত ফুলের পরে এ কেমন নিয়তি আমার
প্রবল বর্ষায় ডুবে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায়
কত দীর্ঘ নিষ্ফলতা, ভাগ্যরেখা মুছে গ্যাছে যার—
কীইবা হারাতে পারে, নতুন ব্যথা ভোলাতে হায়
সমগ্র বেদনা হতে কোন এক ফুল হয়ে ফোটে
যেখানে বসতি মোর শত ঝড়-ঝঞ্জা দূর্বিপাকে
ক্রমশ ক্ষয়ের পর যতটুকু দ্যাখা যায় মাঠে—
সোনালি ধানের মুখ—উর্দ্ধমুখী সবুজের অঙ্গে
৮.
সমস্ত ভুলের পর সে-ও এক আশাবাদী নদী
ফিরছে বন্দরমুখী—পৃথিবীর শেষ পোতাশ্রয়ে
নতুন বসন্ত দিন মুখে মুখে রটে যায় যদি—
মানুষ ফিরবে ঘরে—মানুষের অনঘ আশ্রয়ে...
২৭-৩০ জুন ২০২০
আজো জানি না কিছুই, ছুটে আসে বর্তুল পৃথিবী
লোহার খাঁচায় বিদ্ধ শিকারের মতো ম্লান চোখে—
কখনো দেখিনি আগে—যেন দূরতম ছবি এক
আলোকবর্ষ পেরিয়ে দূরের এক নক্ষত্রলোকে
সেসব মহাকালের ছবি, টেলিস্কোপিক মেমোরি
বারে বারে ফিরে আসে, নদী ও নারীর মুখে মুখে
অথবা কাঁচের বল সম্ভাব্য ধ্বংসের ভয় নিয়ে—
সন্ধ্যায় হারিয়ে যায় কোন এক আলোর অসুখে
অথচ স্মৃতিফলকে লেখা হয় ঐশ্বর্য্যের গল্প
বাস্তুসংস্থানকলা—পূর্বাপর জন্ম পরিচয়
আলোকের উৎসব, অবগাহনপর্বের গান
পূজা ও প্রার্থণায়, থাকে প্রজন্মের সংশয়
জানা হলো না কিছুই—আরো কিছু দূরগামী মেঘে
বেদনা লাঘব হয়, সমকালে-সাধনা সঙ্গীতে...
২.
প্রতি যাত্রায় মানুষ মূলত গভীরে চলে যায়
শরীর থেকে ক্রমশ হয় আলাদা, নিঃসঙ্গতা
সে কভু সাক্ষ্য মানে না, ছিঁড়ে শুধু অস্থির কাঁটায়
সকল ঐশ্বর্য্য ঝরে, থাকে কেবল তন্দ্রাহীনতা
সফল মৃত্যুর মতো, সে এক শোকাক্রান্ত সকাল
আসলে শোক-ও নয়—যেন তার-ই পূনর্বয়ান—
শোনা যায়—দূর থেকে, চারিদিকে সুগন্ধি রুমাল
চমকায়, শোকাকুল শহরে দেহ ভাঙার গান
৩.
প্রতি সকালেই আসে প্রতিবেশী রোদ, পাখিস্বর
এইসব বেঁচে থাকা—হিংসা দ্বেষ এবং গ্লানি
মধুচন্দ্রিমা নিয়তি, ভালোবাসার টুকরো ঘর—
প্রতিটি সরল হাত কেন হয়ে ওঠে রুঢ় খুনি?
ওই পাথরফলক—পূর্বপ্রজন্মের ইতিহাস
মাটির গভীর থেকে উঠে আসে সেইসব গান
সীমানায় ভাগ হলো মাটি ও মানুষের বিশ্বাস
মানুষ ভুলেছে হায়—আদিবাসী প্রণয়ের টান
৪.
ওগো মাটি, ফসলের আনকোড়া মাঠের ময়ূখ
দ্যাখেছি সেই সবুজ ও বাদামী রঙের বাগান
তার গভীরে মিলন ও পরাজয়ের কিংশুক—
রক্তাক্ত প্রান্তরে ফুটে থাকে পোড়া সময়ের ঘ্রাণ
এখন জানি শোকের বিপরীতে এক অন্ধকার—
প্রতিনিয়ত তাড়ায় যারা আরো দূরে যেতে চায়
তাদের স্মৃতিতে যেন বৈরাগ্যের অনর্থক ভার
তারা বয়ে নিয়ে যায় উত্তরকালের আকাঙ্ক্ষায়
৫.
মাঝে মাঝে তবু হয় নিরুপায়—বহু বাসনায়
তখন অস্ফুট শব্দে তারা চলে যায় শূন্যপথে
এই ভার বইবে না আর কেউ মৃতের ধারায়
সকলে বিলীন হয়, প্রহরীর দৈব অনুরোধে
কেন এই বিয়োজন? পদভারে কেন হয় লীন?
সবুজ ঘাসের দিন ফুরিয়ে যায় কোন কাঁপনে
আকাশে মরুর মেঘ ধূলিঝড়ে ঢাকলো যেদিন—
বাতাস তো ভুলেছিল ছায়াহীন ভিন্ন আলাপনে
আকাশ কী গাঁইতির? মাটি ভেঙে করে চুরমার
বিজলি চমক এক—ছুটে যায় মাঠ থেকে মাঠে
কেন হায় ভেঙে গেল সরল আকাশ, প্রহরার
ওজন স্তরে ভাঙন, পারমাণবিক ক্রুশকাঠে!
৬.
অথচ শহরে আলো ফেরি করে রাত্রির বেসাতি
প্রবল মুহূর্তগুলো বানে ভাসে ফসলের মাঠ
চাঁদ ওঠে না, দিন-ও হারিয়ে ফেলে সকল স্মৃতি
থাকে শুধু মহামারি, পথে শিশুদের খোলা হাত
মিথ্যে মহড়া সাজায় শুধু কথাদের ইশকুল
পৃথিবীর ত্বক থেকে মুছে যায় সকল সবুজ
থাকে শুধু মায়া তার, ছবি হয়ে থাকে চির ভুল
যেকোন সশস্ত্র দিন, হতে পারে সফল কার্তুজ
৭.
সমস্ত ফুলের পরে এ কেমন নিয়তি আমার
প্রবল বর্ষায় ডুবে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায়
কত দীর্ঘ নিষ্ফলতা, ভাগ্যরেখা মুছে গ্যাছে যার—
কীইবা হারাতে পারে, নতুন ব্যথা ভোলাতে হায়
সমগ্র বেদনা হতে কোন এক ফুল হয়ে ফোটে
যেখানে বসতি মোর শত ঝড়-ঝঞ্জা দূর্বিপাকে
ক্রমশ ক্ষয়ের পর যতটুকু দ্যাখা যায় মাঠে—
সোনালি ধানের মুখ—উর্দ্ধমুখী সবুজের অঙ্গে
৮.
সমস্ত ভুলের পর সে-ও এক আশাবাদী নদী
ফিরছে বন্দরমুখী—পৃথিবীর শেষ পোতাশ্রয়ে
নতুন বসন্ত দিন মুখে মুখে রটে যায় যদি—
মানুষ ফিরবে ঘরে—মানুষের অনঘ আশ্রয়ে...
২৭-৩০ জুন ২০২০
মন্তব্য