.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

কিংবদন্তির জানা-অজানা গপ্পো

লিখেছেন: মু. গোলাম সরওয়ার 

এক সন্ধ্যায় ইউটিউবে বাংলাদেশের গান অনুসন্ধান করছিলাম। অনুসন্ধান মারফতে চ্যানেল আইয়ের একটি অনুষ্ঠানের সন্ধান পেলাম। অনুষ্ঠানটির নাম 'পালকি'। অতিথি ছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী খুরশিদ আলম এবং নতুন প্রজন্মের দুইজন সঙ্গীতশিল্পী। অনুষ্ঠানটির একটি বিশেষত্ব হল-সেটিতে গাজী মাজহারুল আনোয়ার এর গাওয়া গানগুলোই শিল্পীরা গেয়ে থাকেন। 'গাজী মাজহারুল আনোয়ার' এই নামটির সাথে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে সেই কৈশোরে বিটিভির মারফতে। শুধু জানতাম তিনি একজন গীতিকার- এর বেশি কিছু নয়। ঐ পর্বে শিল্পীগণ গান করছিলেন, ১.'মা গো মা,ওগো মা; আমারে বানাইলি তুই দিওয়ানা'... ২. 'হারজিত চিরদিন থাকবেই, তবুও এগিয়ে যেতেই হবে'... ৩. 'সবার জীবনে প্রেম আসে,তাই তো সবাই ভালবাসে'... ইত্যাদি গান। পর্বটি দেখে আমার মধ্যে ভীষণ ভালো লাগা কাজ করেছিল। আমি আরও কিছু পর্ব অনুসন্ধান করলাম। শিল্পীদের কণ্ঠে শুনলাম, ১. 'সেই রেললাইনের ধারে মেঠো পথটার পাড়ে দাঁড়িয়ে'... ২. 'বাপের চোখের মণি নয়, মায়ের সোনার খনি নয়, ভাইয়ের আদরের ছোট বোন'... ৩. 'একবার যেতে দে না আমার ছোট সোনার গাঁয়'... ৪. 'জয় বাংলা,বাংলার জয়'... ৫. 'আকাশের ঐ মিটিমিটি তারার সাথে কইবো কথা,নাইবা তুমি এলে'... ৬. 'এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই'... ইত্যাদি। অবাক হয়ে ভাবতে থাকি, এতোসব জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার। কৈশোরে রেডিও-টিভিতে কত শুনেছি এইসব গান! গানগুলো ছিল আমার পছন্দের গানের তালিকায়। বিষয়টি নিয়ে একদিন কবিবন্ধু দেবাশীষ ধরের সাথে আড্ডায় অনেক আলাপ হল। সে আমার আগ্রহ দেখে গাজী মাজহারুল আনোয়ার এর উপর একটি লেখা তৈরি করতে বলল। আমি প্রচণ্ড উৎসাহবোধ করলাম এবং তাঁকে নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলাম। তাঁর বহুমুখী প্রতিভা সম্বন্ধে যতই জানতে পারি, ততই বিস্মিত হতে লাগলাম -কত বড় মাপের একজন প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব আমাদের দেশের সন্তান। অথচ তাঁর সম্বন্ধে কতই না কম জানি!

২০০৬ সালের গোটা মার্চ মাসজুড়ে বিবিসি বাংলার শ্রোতারা তাঁদের বিচারে সেরা যে ৫টি গান মনোনয়ন করেছেন, তার ভিত্তিতে বিবিসি বাংলা তৈরি করেছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০ টি বাংলা গানের তালিকা। সেই তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান আছে ১ টি, কাজী নজরুল ইসলামের গান আছে ২ টি আর গাজী মাজহারুল আনোয়ারের গান আছে ৩ টিঃ
১. 'জয় বাংলা,বাংলার জয়'... সুরকারঃ আনোয়ার পারভেজ;সমবেত সঙ্গীত(১৩ তম)।
২. 'একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়'... সুরকারঃ মাসুম পারভেজ; শিল্পীঃ শাহনাজ রহমতউল্লাহ (১৫ তম)।
৩. 'একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল'... সুরকারঃ আনোয়ার পারভেজ; শিল্পীঃ শাহনাজ রহমতউল্লাহ (১৯ তম)।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্ম কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৩ সালে।তিনি একজন গীতিকার হিসেবে 'রেডিও পাকিস্তান' এ তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন।'বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি' প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৬ সালে।তিনি 'ঢালিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি'-তে গীতিকার হিসেবে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৬৫ সালে।তিনি সেই গাজী মাজহারুল আনোয়ার,যিনি গীতিকার হিসেবে রেকর্ড ৬ বার 'বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করেন ১.'টিট ফর টেট'(১৯৯২), ২.'অজান্তে'(১৯৯৬),৩. চুড়িওয়ালা (২০০১), ৪. 'লাল দরিয়া'(২০০২), ৫. 'কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি (২০০৩) এবং ৬.'মেয়েটি এখন কোথায় যাবে'(২০১৬) এই সিনেমাগুলোর জন্য। তিনি জহির রায়হানের ফিল্মের জন্য গান লিখতেন-কাঁচের দেওয়াল(১৯৬৫), বেহুলা(১৯৬৬), দুই ভাই(১৯৬৮)। তাঁর পরিচালিত সিনেমা ৪১টি বা তারও বেশি।গাজী মাজহারুল আনোয়ার ২০০২ সালে 'একুশে পদক' এ ভূষিত হন। 

সঙ্গীতাঙ্গনে তাঁর প্রভাবঃ 
১. তাঁর লেখা গান গেয়ে জনপ্রিয় হন শাম্মী আক্তার('আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল'......)।
২. 'এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই'...... গানটি গেয়ে 'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করেন মিতালি মুখার্জি।
৩. 'সবাই তো ভালবাসা চায়' এই গান গেয়ে 'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করেন এন্ড্রু কিশোর।
৪. 'গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে বল কী হবে?'...... গানটি গেয়ে শিল্পী রুনা লায়লা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং এটি তাঁর গাওয়া প্রথম বাংলা গান।
৫. ১৯৬৮ সালে জহির রায়হান তাঁর একটি ফিল্মের জন্য গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে সাতটি গান লিখতে বলেন দুই দিনের মধ্যে।তিনি মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে কাজটি শেষ করে জহির রায়হানকে চমকে দেন।

বাবার স্বপ্নঃ
গাজী মাজহারুল আনোয়ারদের কুমিল্লায় একটি ফার্মাসিউটিক্যাল ল্যাবরেটরি ছিল।তাঁর বাবা মোজাম্মেল হোসেন ছিলেন একজন উচ্চশিক্ষিত আইনজীবী।বাবার ইচ্ছে ছিল তিনি বড় ডাক্তার হবেন,ইনচার্জ হয়ে ঐ ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নিবেন।এস,এস,সি এবং এইচ,এস,সি পাশ করার পরে বাবা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন সন্তানকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানোর ব্যাপারে।সন্তান ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হলেন।কিন্তু যখন মৃত মানুষ কাটাকুটির ব্যাপারগুলো আসতে শুরু করল,তখন তাঁর মনে হল যে তিনি আসলে ওখানে থাকার লোক না এবং তাঁর বোধহয় ভিন্ন পরিচয় আছে।

ইউ আর মাই লস্ট গেইমঃ
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তিনি মেডিক্যালের পড়াশোনা আর চালিয়ে যান নি।গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তিনি যখন মাস্টার্স শেষ করবেন, তখন তাঁর বাবা তাঁকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে একটাই বাক্য ছিল, "You are my lost game". স্বাধীনতার পরে 'জয় বাংলা বাংলার জয়'......গানসহ আরও বিভিন্ন কাজের জন্য তিনি যখন পুরস্কার পেতে শুরু করলেন,তখন তাঁর বাবা অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি। গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে ডেকে বললেন,"আমি হয়ত তোকে ধরে রাখলে ভুল করতাম।নিয়তি তোকে এদিকে টেনে নিয়ে এসেছে। আমি তোকে ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলাম।ডাক্তার হয়ে তুই মানুষের সেবা করবি। কিন্তু এখন তো তুই আরও বেশি সমাজসেবা করছিস।আমার সব রাগ শেষ হয়ে গিয়েছে।তুই আমার বুকে মাথাটা রাখ।" আর ৫ মিনিটের মধ্যেই তাঁর বাবা মারা গেলেন।

দুঃখবোধকে শক্তিতে রূপান্তরঃ
মেডিক্যাল কলেজের কোন একটি নাটকের প্রয়োজনে একবার একটি গান লেখার কথা ছিল তৎকালীন বিখ্যাত লেখক এবং ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আবু হেনা মোস্তফা কামালের।কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তিনি যেতে পারেননি।নাটকের পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে গান ছাড়াই নাটকটি করার সিদ্ধান্তের বিষয়টি শেয়ার করলেন।তিনি পরিচালককে তাঁর নিজেকে একটা সুযোগ দেয়ার কথা বললেন।পরিচালক রাজি হওয়ায় তাঁর জীবনের প্রথম গানটি লিখলেন।নাজমুল হুদা বাচ্চু তখন ছিলেন বিখ্যাত গায়ক। গানটির লিরিক্স দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে গেলেন এবং গানটি সুর করে দিলেন।গানটির কথা ছিল এমনঃ
'বুঝেছি মনের বনে রং লেগেছে'...। গানটি গাইলেন ফরিদা ইয়াসমিন।রেডিওতে তখন নতুন কোন গীতিকারের গান নামে চলত না।শিল্পীর নাম বলা হয়েছিল, কিন্তু গীতিকারের নাম বলা হয় নি। এতে গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রচণ্ড দুঃখ পেলেন। সেই থেকে তাঁর ভিতরে কাজ করল, তাঁর গান শুনতে হবে, শোনাতে হবে। আর এভাবেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে গাজী মাজহারুল আনোয়ার গান লেখার কাজে আরও বেশি অনুপ্রেরণা পেলেন।

সুরকারদের জন্যে বরাদ্দকৃত সময়ঃ 
একজন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ২৪ ঘণ্টা সময় ভাগ করে দেয়া থাকত বিভিন্ন সুরকারদের কাছে।তখন উনাকে দৈনিক ৫/৭ টা গান লিখতে হত।তাই সব সুরকারকে একই সময়ে সময় দেয়া সম্ভব হত না।তাই সুরকার আলতাফ মাহমুদ উনাকে রাত ১.০০ টার সময় উনার বাসায় যেতে বলতেন।আলতাফ মাহমুদ বলতেন,'রাত ১.০০ টা তো কোন সময়ই হতে পারে না।তারপরেও তুই আসবি।" তিনি ঠাঁটারী বাজার থেকে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্যে হাঁস নিয়ে যেতেন,পোলাওয়ের চাল নিয়ে যেতেন আর স্ত্রীকে দিতেন।আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী এগুলো রান্না করতেন আর অনেক সময় কেঁদে কেঁদে বলতেন,"গাজী,তোর আর কোন কাজ নেই।রাত ১.০০ টায় সময় দিস আর আমাকে এত রাতে রান্না করতে হয়।" আলতাফ মাহমুদের একটা অভ্যেস ছিল সূর্য উঠলে তিনি আর কোন সুর করতেন না।স্ক্রু -ড্রাইভার দিয়ে হারমোনিয়ামের নকগুলো খুলে ফেলতেন।গাজী মাজহারুল আনোয়ার এ বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিতেন,"রাত্রিবেলা সুরদেবী পৃথিবীতে আসেন।তখন যে সুরগুলো হয়,সেগুলো মারাত্মক সুর আর এখন যেগুলো করব,সেগুলো অসুর।

আলতাফ মাহমুদের বাসা থেকে এরপর সকাল ৭.০০ টায় সুরকার সুবল দাশের বাসায়।চোখে প্রচুর ঘুম আসত।তখনও উনার গাড়ি হয় নি।রিকশায় করে যেতেন।অনেক সময় ঘুমঘুম চোখে রিকশা থেকে পড়েও যেতেন।সুবল দাশের বাসায় গিয়ে দেখতেন,তিনি হাতে ফুঁ দিচ্ছেন।কী ব্যাপার তা গাজী মাজহারুল আনোয়ার জানতে চাইলে তিনি বলতেন,"অনেকক্ষণ আগে সুরদেবী উনার কাছে সুরের খবর পাঠিয়েছেন।তুমি আসছ না বলেই আমার হাত গরম হয়ে আছে।বসে পড়,বসে পড়।"সুবল দাশের স্ত্রী লুচি ভেজে নিয়ে এসে ওখানে বসে থাকতেন।

সেখান থেকে যেতেন সুরকার খন্দকার নুরুল আলমের বাসায়।কবে, কার চোখের উপর তাঁর চোখ পড়েছিল,সেটা বলা মুশকিল,তবে সেই থেকে চোখের প্রতি তাঁর গভীর মমত্ববোধ জন্মেছিল এবং 'চোখ' শব্দটার প্রতি তিনি ভীষণ দুর্বল ছিলেন।সেটা গাজী মাজহারুল আনোয়ার গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।তাই যে সমস্ত গানে খন্দকার নুরুল আলমের সুর করার কথা,সেই গানগুলোতে তিনি 'চোখ' শব্দটি নিয়ে আসার চেষ্টা করতেন।যেমনঃ'চোখ যে মনের কথা বলে'...

অল্প বয়সে ম্যাচুরিটির উৎসঃ
গাজী মাজহারুল আনোয়ার সিনেমায় প্রথম যে গান লিখেন তা হল-"আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল,বাতাসের আছে কিছু গন্ধ;রাত্রির গাঁয়ে জ্বলে জোনাকি, তটিনীর বুকে মৃদু   ছন্দ" ...সে সময় তাঁর বয়স ছিল অল্প। ভালো করে তাঁর দাড়ি-গোঁফও জন্মায় নি।গানটি তিনি লিখেছিলেন মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে।ঐ বয়সে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের এই ম্যাচুরিটি কীভাবে এল?সেটা জানতে চাইলে তিনি বলেন,"সবকিছুই আসে।প্রয়োজনের কারণেই গান পৃথিবীতে আসে।কখনো প্রয়োজন তার মেশিনগান হওয়ার,কখনো প্রয়োজন তার প্রাণের গান হওয়ার আর কখনো হওয়া উচিত গানের গান।গানের গান বলতে অর্থহীন গান।অর্থাৎ,যে গানের আগা-মাথাতেই কোন অর্থ নেই।শুধুমাত্র মনোরঞ্জনের জন্যেই এই ধরনের গান গাওয়া।এরপর হল প্রাণের গান।যেমনঃ২৫ বছর বা তারও বেশি বছর আগে তিনি লিখেছিলেন,"আজো তোমাদের মনের মাঝে আছি আমি বেঁচে।আবার দেশের মুক্তিযুদ্ধে বা দুঃসময়ে বা ক্রান্তিলগ্নে যে গান আসে,সেটা হবে মেশিনগান।অর্থাৎ প্রয়োজনের কারণেই গান পৃথিবীতে আসে।আবার কিছু গান আসে আত্ম-আবেগের কারণে।"আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল"... এই গানটি এসেছিল আত্ম-আবেগের কারণে।আবার উনার আরেকটি গান আছে,"সবাই বলে বয়স বাড়ে,আমি বলি কমে;এই মাটির ঘরটা খাইল ঘুণে,প্রতি দমে দমে"।সবাই বলে মানুষের বয়স বেড়ে যায়।কিন্তু আমরা উল্টোদিক থেকে ভাবি না যে কারও যদি ৬০ বছরের জীবনের মূল্যায়ন করা হয়,তবে ১ দিন যাওয়া মানে তিনি আয়ুষ্কালের দিক দিয়ে হিসাব করলে ৫৯ বছর ৩৬৪ দিনের মধ্যে এসে পড়েন।অর্থাৎ,আমাদের বয়স কমতে কমতে ধীরে ধীরে আমরা শেষ পর্যায়ে চলে যাচ্ছি।আমরা প্রতি মুহূর্তে যে নিঃশ্বাস নেই,এক একটা নিঃশ্বাস আমাদের ক্ষয় করে দিচ্ছে এবং আমাদের জানান দিচ্ছে আমরা আমাদের শেষ জায়গায় আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছি।

জয় বাংলা,বাংলার জয়ঃ বয়সের স্বল্পতার কারণে গাজী মাজহারুল আনোয়ার ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে পারেন নি।ঐ যে অংশগ্রহণ করতে না পারার বেদনা প্রতিনিয়তই তাঁর বিবেককে দংশন করে যাচ্ছিল- আরও খোলাসা করে বললে,তাঁকে তিলে তিলে আঘাত করে যাচ্ছিল।তিনি তিনি মনে মনে ভাবতেন যে আরেকটু আগে যদি তিনি জন্মগ্রহণ করতেন,তবে সক্রিয়ভাবে কিছু করতে পারতেন।মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে তিনি ভেতর থেকে দেশের জন্যে কিছু করার তাগিদ অনুভব করলেন।মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই তিনি লিখে ফেললেন সেই কালজয়ী গান,"জয় বাংলা বাংলার জয়, হবে, হবে,হবে-হবে নিশ্চয়;কোটি প্রাণ একসাথে জেগেছে অন্ধরাতে,নতুন সূর্য উঠার এইতো সময়"... গানটি লেখার পরে তিনি তাঁর বন্ধু আনোয়ার পারভেজকে হারমোনিয়ামটা নিতে বললেন।"জয় বাংলা,বাংলার জয়"-শ্লোগানটি তখনও ছিল।শ্লোগানটিকে উপজীব্য রেখে গানটিতে সুর করা হচ্ছিল।আলতাফ মাহমুদ দৌড়ে এসে হারমোনিয়ামটা তাঁকে দিতে বললেন।আনোয়ার পারভেজ বললেন,"গানটিকে এখানেই শেষ করতে দেওয়া যাবে না।"শাহনাজ রহমতুল্লাহ,আব্দুল জব্বারসহ সেসময়কার প্রথিতযশা শিল্পীদের স্টুডিও-তে ডাকা হল।মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যেই একটি পরিপূর্ণ সমবেত সঙ্গীত হয়ে গেল।

মুক্তিযোদ্ধারা প্রায় বলেন এবং তাঁদের অনেকের লেখায় পাওয়া যায়-গানটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সবচেয়ে বেশি উদ্দীপনার গান।এই গানটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এর সর্বজনীনতা।এই গানটি হয়ে গেল সবার গান।এটা শুধু আন্দোলনের গান নয়,এটা একটা দাবিরও গান।

পোড়া বুকে দারুণ খরাঃ
স্বাধীনতা যুদ্ধের কিছু পরে ওপার বাংলার জনপ্রিয় গীতিকার  গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার এসেছিলেন আনোয়ার পারভেজের বাসায়।গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে দেখে তিনি বলেছিলেন,"তোমার উপর আমি অনেক গবেষণা করি এবং এই 'জয় বাংলা,বাংলার জয়'......গানটি তোমার পক্ষেই লেখা সম্ভব।তিনি প্রশ্ন করলেন,'পোড়া বুকে দারুণ খরা,চোখের পানি চোখে নাই'...... এই গানটি তুমি কীভাবে লিখলে?" গাজী মাজহারুল আনোয়ার উত্তরে বললেন, "আপনার এই গানটি বা ঐ গানটি আপনি কীভাবে লিখলেন,সেটা জানতে চাইলে আপনি কী বলবেন?" গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার উত্তরে বললেন,"তুমি আমার হাজারো গানকে ম্লান করে দিয়েছ শুধু দুটো লাইন লিখেঃ'পোড়া বুকে দারুণ খরা,চোখের পানি চোখে নাই'...
বিঃদ্রঃ বিবিসি বাংলার জরিপের তালিকায় ৪র্থ স্হানে আছে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা  'কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই'... এবং একাদশ তম স্হানে আছে 'মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে'...

ফ্লোরিডার সংবর্ধনাঃ
স্বাধীনতার পরপর গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে আমেরিকার ফ্লোরিডায় একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।তখনও যাঁরা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন এবং বাইরের যাঁরা ছিলেন,তাঁরা উপলব্ধিই করতে পারেন নি,"বাংলাদেশটা কী?" তিনি কথাপ্রসঙ্গে মজা করে বলেছিলেন,"Bangladesh is just South of South America." তাঁরা বললেন,"না না,এটাকে বর্ণনা করেন।" তাঁকে প্রশ্ন করা হল,"কোন আদর্শের জন্যে স্বাধীনতা যুদ্ধে আপনি কলম হাতে তুলে নিলেন?" তিনি উত্তরে বললেন,"বাংলার আদর্শ।" তাঁকে আবার বলা হল,"যদি বাংলার আদর্শ হয়,তবে  আপনার অস্তিত্বে বাংলাটা কীভাবে এল?" তিনি উত্তরে বললেন,
যদি আমাকে জানতে সাধ হয়,
 বাংলার মুখ তুমি দেখে নিও;
 যদি আমাকে বুঝতে মন চায়
 এ মাটির শ্যামলিমায় এসো প্রিয়
 এখানে বৃষ্টি ঝরে রিমঝিম
             শ্রাবণের সেতারে,
কুমারী নদীর বুক জেগে উঠে
              প্রণয়ের জোয়ারে।

ছোটবেলায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারদের বাবা-চাচার উপর দাদার কঠিন আদেশ ছিল যে ছুটিতে বাড়িতে আসতেই হবে।বাড়িতে যে যাবেন,গাজী মাজহারুল আনোয়াররা তো ছোট-তবে আকর্ষণটা কোথায়?তাই দাদা বাড়ির উঠোনে যাত্রাগান-পালাগানের আয়োজন করতেন।এইসব যাত্রাগান-পালাগান শুনতে শুনতে ছোট্ট গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মনে হতে লাগল যে এত সুন্দর জিনিস,এই সারা মাটির উপর ছড়িয়ে আছে-সেগুলো তাঁরা গ্রহণ করছেন না কেন?একদিন সকালবেলায় দাদা বললেন যে গতকাল রাতে যে কবি'র গান হয়েছিল সেখান থেকে দুটো লাইন বলতে পারলে তাঁকে ৫ টাকা দিবেন।তখন ছিল লাল ৫ টাকার নোট।ওই ৫ টাকার লোভেই তিনি দুটো লাইন বলেছিলেন।গাজী মাজহারুল আনোয়ার সুনিশ্চিত ছিলেন যে তিনি এলোমেলোভাবে লাইন দুটো বলেছিলেন।কিন্তু কাছাকাছি বলতে পেরেছিলেন বলে দাদা তাঁকে বাহবা দিলেন।দাদার পরনে ছিল ফিনফিনে পাঞ্জাবি।তিনি পাঞ্জাবির পকেট থেকে লাল ৫ টাকার নোট বের করে দিলেন।পরবর্তীতে গাজী মাজহারুল আনোয়ার মজা করে  কোন এক জায়গায় বলেছিলেন যে দাদা বোধহয় ৫ টাকা দিয়ে গানের টিকেট তাঁর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন,"গানকেই তোকে চিরসঙ্গী করে নিতে হবে।"

গানের জগতে স্হায়ীভাবে আসাঃ গাজী মাজহারুল আনোয়ারের গানের জগতে স্হায়ীভাবে আসার পিছনে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন তৎকালীন সঙ্গীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী সত্য সাহা।তিনি একদিন রেডিও স্টেশনে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে বলেছিলেন চলচ্চিত্রে গান করার জন্যে।তিনি তাঁকে চলচ্চিত্র পরিচালক সুভাষ দত্তের কাছে নিয়ে গেলেন।সুভাষ দত্ত ছিলেন বয়সের তুলনায় অনেক ভারী।তিনি কিছুটা অবহেলার ভঙ্গিতে বললেন,"এই ফুঁচকে ছোকড়াটাকে দিয়ে কি আমার চলচ্চিত্রের গান হবে,সত্য?" সত্য সাহা বললেন,"এসেই যখন পড়েছি,তখন একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাক।" যাই হোক,সুভাষ দত্ত গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে একটা সিচুয়েশন বললেন।সিচুয়েশনটা নিতান্তই সাদামাটা ছিল।ঐ সিচুয়েশন অনুযায়ী গান লিখা তাঁর জন্যে একটি চ্যালেন্জিং কাজ ছিল।সিচুয়েশন অনুযায়ী তিনি লিখে ফেললেন,"আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল,বাতাসের আছে কিছু গন্ধ।"......সত্য সাহা ভয়ে ভয়ে গানটি সুভাষ দত্তকে দেখালেন।গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ভাষ্যমতে,"সুভাষ দত্ত ছিলেন একটু নাটা ধরনের লোক।" তিনি ভীষণ উচ্ছ্বসিত হয়ে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে হাত ধরে উপরে তুলতে চাইলেন।আর বললেন,"তুমি যে এ কাজটি করতে পারবে,সেটা আমি কল্পনাই করতে পারি নি।তুমি বোধহয় আমার আচরণে কষ্ট পেয়েছ।কষ্ট পেয়ো না।তুমিই কাজ কর,তুমিই কাজ কর।"

তাঁর কিছু গানের বিশ্লেষণঃ
১) আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমরা এক তারেই বেজে উঠেছিলাম।সবার মুখে ছিল একটিই কথা-বাংলার স্বাধীনতা।স্বাধীনতার সময়ে আমরা মনে করেছিলাম,আমরা সবাই একই তারে গ্রথিত হয়ে আছি।গ্রথিত হয়ে যখন আসলাম তখন গাজী মাজহারুল আনোয়ার লিখলেন,
একতারা,তুই দেশের কথা বল রে এবার বল;আমাকে তুই বাউল করে সঙ্গে নিয়ে চল।

২) স্বাধীনতার পরে মানুষ যখন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্যে শহরমুখী হচ্ছিল,শহুরে জীবনকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছিল-তখন তিনি দেখলেন,সংঘাত দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে তিনি ভীষণ কষ্ট পেলেন।প্রচণ্ড কষ্টবোধ থেকে তিনি লিখলেন সেই জনপ্রিয় গানঃ (অবশ্য তিনি নিজেও বুঝতে পারেন নি যে গানটা এত জনপ্রিয় হবে)
একবার যেতে দে না,
আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়;
যেথায় কোকিল ডাকে কুহু,
দোয়েল ডাকে মুহু মুহু;
নদী যেথায় ছুটে চলে,
আপন ঠিকানায়।

৩) গ্রামবাংলার প্রকৃতি ভীষণভাবে আকর্ষণ করে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে।তাঁর শৈশব-কৈশোর কেটেছে গ্রামে।গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলো এড়িয়ে যেতে পারে নি তাঁর শকুন চক্ষুজোড়াকে। তিনি লিখেছিলেন,
আকাশের হাতে আছে একরাশ  নীল,বাতাসের আছে কিছু গন্ধ।

৪) গাজী মাজহারুল আনোয়ারের রয়েছে প্রখর জীবনবোধ।হাসি-কান্না,লড়াই-সংগ্রাম এগুলো তো জীবনেরই অংশ।আর এগুলোই দারুণভাবে ফুটে উঠেছে তাঁর গানেঃ
জীবনের গল্প এত ছোট নয়,
একদিনে তা ফুরিয়ে যাবে;
হাসতে হবে,কাঁদতে হবে
এরই মাঝে বাঁচতে হবে।

৫) মায়ের প্রতি ভালবাসা,বোনের প্রতি ভালবাসার প্রকাশভঙ্গি কত সুন্দর হতে পারে,তাঁর লেখা গান দুটো সেই সাক্ষরই বহন করেঃ
মা গো মা,ওগো মা
আমারে বানাইলি তুই দিওয়ানা;
আমি দুনিয়া ছাড়ি,যেতে পারি
তোকে আমি ছাড়ব না।

বাপের চোখের মণি নয়,
মায়ের সোনার খনি নয়
ভাইয়ের আদরের ছোট বোন।
একটি বীণার তার,
মোরা একটি সংসার
দুজনে বড় যে আপন।

৬) বাধা-বিপত্তি অতিক্রম না করে,লড়াই-সংগ্রাম না করে কেউই জীবনে বড় হতে পারে না।জীবনে প্রথম,দ্বিতীয় হওয়াটা বড় নয়,মানুষ হওয়াটাই বড়-এত সুন্দর উপলব্ধি আমরা পাই তাঁর গানের মধ্যেঃ
হারজিত চিরদিন থাকবেই,
তবুও এগিয়ে যেতেই হবে;
বাধা-বিঘ্ন না পেরিয়ে
বড় হয়েছে কে কবে?
কে প্রথম আর কে দ্বিতীয়
ভাবছ কেন মিছে?
আসল কথা সামনে যাব
রইব না কেউ পিছে।...

৭) প্রেমিক চলে যাচ্ছে বলে প্রেমিকার মনে কী যে অসহ্য দহন-যন্ত্রণা, সেটা গানে গানে বুঝিয়েছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারঃ
ওরে,ও পরদেশী, ও ও পরদেশী
যাবার আগে,দোহাই লাগে
একবার ফিরে চাও।
আবার তুমি আসবে ফিরে
আমায় কথা দাও।

বিবিসি বাংলার জরিপের অনুভূতিঃ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০ টি বাংলা গানের মধ্যে ৩ টি গানের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন যে অনুভূতি তো যেকোন প্রাপ্তির পরে খুব সুন্দর হয়।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গম্ভীরভাবে বলেছিলেন যে যাঁরাই তাঁকে বাংলাই ভালো করে জানে না বলেছিলেন তাঁরাই তাঁকে সোনার দোয়াত-কলম উপহার দিয়েছেন।গাজী মাজহারুল আনোয়ার কাজ করেছেন,কাজ করে যাচ্ছেন মানুষের জন্যে।মানুষের ভালো লাগার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তিনি অস্তিত্বটাকে টিকিয়ে রাখতে চান।জনগণ যদি সেটা উপলব্ধি করতে পারেন,তাহলে তিনি বেশ খুশি।বিবিসি বাংলার জরিপে একটা বিষয় প্রচ্ছন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন,"মানুষ আধুনিক হয় পোশাকে।মানুষ কিন্তু মনের দিক দিয়ে আধুনিক হয় না।মানুষ নস্টালজিয়ায় ভোগে।মানুষ যেখানেই থাক না কেন,তাঁর পরিবারের কথা মনে পড়বে,তাঁর দেশের মাটির কথা মনে পড়বে।মানুষ যতই পোলাও-কোরমা নিয়ে ব্যস্ত থাকুক না কেন টিনের চালে কুমড়োর ফুল,ছোট মাছের চচ্চড়ি,বেগুন-ভর্তা এগুলো তাঁর মনে আসবেই।

তাঁর রচিত গানের সংখ্যাঃ
এক সাক্ষাৎকারে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে তাঁর রচিত গানের সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে সংখ্যাটা হওয়া উচিত ছিল ২৪,০০০-২৫,০০০।স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে তাঁর দশ হাজার গান লেখা হয়ে গিয়েছিল।স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি ছিলেন ব্যাচেলর।একটা বাড়িতে থাকতেন।তিনি গানগুলো ফেলে চলে গিয়েছিলেন।যুদ্ধের পর তিনি যখন ফিরে আসেন,তখন দেখেন একটি গানও নেই।তখন গান সংরক্ষণের একমাত্র ব্যবস্হা ছিল রেডিও-তে,টেপে।কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে সেগুলোও এলোমেলো হয়ে যায়।শিল্পীদের খাতায় কিছু গান লেখা থাকত।যুদ্ধের পরে অনেক শিল্পী অনুপস্থিত হয়ে গিয়েছিলেন,কিছু শিল্পী মারাও গিয়েছিলেন।শিল্পীদের খাতা থেকে কিছু সংখ্যক গান পাওয়া গিয়েছিল।যদি সবগুলো গান সংরক্ষণ করা সম্ভব হতো,তাহলে বিশাল একটা ঘটনা ঘটে যেতো।

একজন গাজী মাজাহারুল আনোয়ার একদিকে যেমন এদেশের সঙ্গীতাঙ্গনকে পরিপূর্ণ করার প্রয়াস পেয়েছেন,অন্যদিকে বিশ্বের দরবারে আমাদের সঙ্গীতজগতকে করেছেন সুপরিচিত।ভাবতে বড্ড অবাক লাগে তিনি এক জীবনে এত এত গানের স্রষ্টা হয়েও এর পাশাপাশি অবদান রেখেছেন চলচ্চিত্র পরিচালনায়, প্রযোজনায়, চিত্রনাট্যে এবং সঙ্গীত পরিচালনায়। আমরা সৌভাগ্যবান যে এমন অনন্য সাধারণ প্রতিভাধর রত্ন এই বাংলাদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন, এই বাংলাদেশের আলো হাওয়ায় বেড়ে উঠেছেন। তাঁর জীবনের নানা জানা-অজানা বাঁক, তাঁর সৃষ্টিশীলতা মননশীলতা পাঠকসমাজের চিত্তে যদি বিন্দুমাত্র আলোড়ন তৈরি করে, তাহলেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস সফল ও স্বার্থক  হবে বলে প্রত্যাশা করি।    

মন্তব্য

নাম

অনুবাদ,32,আত্মজীবনী,26,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,319,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,15,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,56,ছড়া,1,ছোটগল্প,12,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,15,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,153,প্রিন্ট সংখ্যা,4,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভাষা-সিরিজ,5,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,37,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: কিংবদন্তির জানা-অজানা গপ্পো
কিংবদন্তির জানা-অজানা গপ্পো
বিবিসি বাংলা তৈরি করেছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০ টি বাংলা গানের তালিকা। সেই তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান আছে ১ টি, কাজী নজরুল ইসলামের গান আছে ২ টি আর গাজী মাজহারুল আনোয়ারের গান আছে ৩ টি। কিন্তু কেন? কে এইগাজী মাজহারুল আনোয়ার? তার সম্পর্কে জানলে অবাক হতে হয়।
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgazCgnp_p5F4f0QeVL_ch1VXicl1vZdBfUfoKJ39eFHnwnuKin4Eiumg-ZgdxX4OtbKDntakgc33iFdBUhuqiE8S9MHYwx-sVQe3DeMdi4EcDzBwPdgZv_A1HHRZvXPdKzNyTdmUMZDbI/s400/%25E0%25A6%2597%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%259C%25E0%25A7%2580-%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.PNG
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgazCgnp_p5F4f0QeVL_ch1VXicl1vZdBfUfoKJ39eFHnwnuKin4Eiumg-ZgdxX4OtbKDntakgc33iFdBUhuqiE8S9MHYwx-sVQe3DeMdi4EcDzBwPdgZv_A1HHRZvXPdKzNyTdmUMZDbI/s72-c/%25E0%25A6%2597%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%259C%25E0%25A7%2580-%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.PNG
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2020/07/blog-post_58.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2020/07/blog-post_58.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy