সকাল আটটা থেকে রাত আট’টা- তারপর জাদু-মন্ত্রবলে যেন খুলে যায় ইপিজেড এর পুঁজিবাদি গেট- যেন এই জগত স্টিচ মেশিনের হরদম ঘরঘর, ক্যাঁচক্যাঁচ- শ্রমিকের হামেশাই মেশিনের সাথে বোঝা পড়া, এ এক আলাগ দুনিয়া- সিলেকটিভ মেমব্রেনে আলাদা জগতের অভিন্ন আলো হাওয়া আর আবেশের সাথে- তাই জাগতিক ক্লান্তির ছোপ এইখানে পাত্তা পায় না- প্রিয়ডিক ট্রেন্ডে মেশিনের মনোটোনাস চলতে থাকা; ব্যস! এইসব যেখানে সারাদিন ধরে চলে; সেখানেও বেলা নামার মতো অবসানের ঘন্টা বেজে ওঠে- মনের নিবিড় পাখিরা খাঁচার ভিতর উল্লাসে গেয়ে ওঠে- লুকানো রঙচশমায় উঁকি দেয় মানবিক কাকাতুয়ার কারাবাসী চোখ।
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
কারো যদি অভিজ্ঞতা থাকে তখন সামনের ওভারব্রিজে দাঁড়ানোর দেখবেন শ’য়ে শ’য়ে না, হাজারে হাজারে প্রাণ ক্যামন মুহূর্তের উছিলায় পৃথিবীর আগোচর পেট থেকে মাতাল-দিকভ্রষ্ট পঙ্গপালের মতো বের হয়ে আসে- বের হয়ে আসে আপাত মুক্ত এই পৃথিবীতে মুক্তির উৎসবে সামিল হতে, তুবড়ির মতোন ছড়িয়ে পড়ে আবার কক্ষণে যেন বিলীন হয়ে যায়, পৃথিবীর জনমানুষের স্রোতের ভিতর- দ্রাবকে দ্রবের মতোন লুকিয়ে পড়ে, আলাদা করে হদিস করা যায় না। এক আশ্চর্য ইন্দ্রজালে সব গতি-অস্থিরতার অবসান, এনট্রপির নিয়মের গলদ, ফেরেলের সূত্র লঙ্ঘন, তাপ-চাপ-গতি-জড়তা অথবা জীবনের ক্লান্তি উদযাপন, ক্যাটবলিক ঘাটতি- আপাত এইসব, সবকিছু পাছে ফেলে এগিয়ে যায় মানুষ; মানুষের ভেতরকার ফুঁড়ে বের হওয়া পা’গুলো যেন- কার কোনটা মালুম হয় না, বিভিন্ন রঙের কাপড়ের তলায় একতালে গতিতে চলে- রেল ইঞ্জিনের চাকার মতোন মানুষ কাপলিং রডের উল্লাসে মেতে ওঠে।
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
এইখানে গতির স্রোতের ভিতর পড়ে মানুষের গতিময় হয়ে ওঠা, অথবা মানুষের গতিতে গতিশীল এইসব গতিস্রোত- পাতায়-পাতায়, শাখায়-শাখায় বাতাসেরা যেমন; আবার বাতাসের উপস্থিতিতে গাছেরাও যেমন- মিথোস্ক্রিয়া, মিথোজীবিতা; সমাজের বুকে দরিদ্রের সাথে দরিদ্রের যেমন। যেইরুপ ধনীর সাথে গরিবের অবধারিত খাদ্য ও খাদকের সম্বন্ধের আভ্যন্তরিন মিল মতান্তরে গোলোযোগ সমাজের উদরে বদহজম হয়ে আছে- এক্ষণে যেন উগরাইয়া দিতে পারে। যাই হোক- স্থবিরতাই মৃত্যু, সমগ্র সৃষ্টির যেখানে তাপীয় মৃত্যু বিশৃঙ্খলায় লেখা আছে- এইখানে তবে উত্তাপ আছে, আছে শৃঙ্খলের ভিতর গা ঢাকা দিয়ে বিশৃঙ্খলা- এইখানে জীবন-মৃত্যু-সন্তাপ-উত্তাপ সব মজুদ আছে উপকরণ মতে সেলাই দিদিমণির চলন, ঢলন, জৌলুসহীন হাসির ভিতর, এমেচার ক্লিভেজ, শ্রমে ও ঘামে- স্টিচে স্টিচে তারা ফুঁড়ে যায়- শোভা পায় বিলাসীন মলের কাঁচঘরে- মানুষের উলঙ্গ শরীরের প্রলেপে- উলঙ্গ মনের কোনো প্রলেপ হয় নাকি?
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
একজন খোঁড়াপাওয়ালাও সমান গতিতে স্রোতের সাথে তাল রেখে আসে এক চটুল খোঁপাওয়ালীর সাথে- ত্যাড়াব্যাঁকা পায়ে লাট খাওয়া লাটিমের মতো উঠে নেমে অদ্ভুত-অবর্ণনীয় ভঙিমায়। যে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছির মতো ছুটে আসে মানুষ- মলা মাছের মতো ওভারব্রিজের নিচে, ওপরে, রাস্তায় দানা বাঁধে অগুনতি সেলাই দিদিমণি। চুপচুপে ঘাম গলা বেয়ে নামে- পিঠের বেরঙ জামা ভিজে উঁকি দেয় সাদা-কালো-লাল হরেকরঙ ব্রেসিয়ার, অনভ্যস্ত সালোয়ার, যুতহীন শেমিজ কামিজের সাথে লেপটে থাকে; দুঃখের সাথে দারিদ্র যেমন- এ এক ঘনিষ্ঠতা। আঠাঁলো ভীড়ে টেনে টেনে গা বাঁচিয়ে ফুটপাতে দাঁড়াতে চায় নার্গিস- এ স্রোতের মধ্যে দাঁড়িয়ে পড়া মুশকিল। এদিক ওদিকে থেকে বিক্ষিপ্ত ধাক্কা আসে- ব্রাউনীয় কণার মতো টেনে হিঁচড়ে আগেপিছে নিয়ে যায়। ক্রমাগত চুল ভিজিয়ে নামা বিন্দু বিন্দু ঘাম এক হয়ে গলা তারপর ঘাড় বেয়ে নিসপিস করে নিঃশব্দে- নিরিবিলি বুকের ওপর নামে চারপেয়ে সরীসৃপের মতোন পেট ঘষে ঘষে- ভেতরে হারিয়ে যাবার আগে কালো আঁচলে বারবার করে মুছে নিতে চায় নার্গিস। তবুও বুক-পেটি-কোমর-পাছা-শরীর ভিজিয়ে ঘাম জুতোর মধ্যেও চলে আসে। “বাসায় ছেলেটা একা, একমাত্র বাপমরা ছেলে”।
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
সামনের সোডিয়াম বাতিগুলো যেন আফিঙের মতো নেশা চড়ায়- আকাশে বস্তাভর্তি মেঘ জমে আছে কতগুলো সাদা, সাদা থেকে কালোর দিকে, ঈষৎ ময়লা ও হরেক- এমন মিশেল মেঘেরাই কি বৃষ্টি নিয়ে আসে? কখনো মন দিয়ে মেঘেদের রঙ দ্যাখে নি নার্গিস- ফুসরত হয় নি- কোন রঙের মেঘে বৃষ্টি আসে- কোনটা শুধু আকাশের শো অফ- হরেক রঙ- শিল্পীর ক্যানভাসের কোনো রঙ কি বাদ থাকে আকাশে? সবুজ? এইসব ভাবতে উপযুক্ত অবসর লাগে- অবসর তার জন্যে নয়- ভয় হয় জ্বর বাঁধালে ছুটি পাবার কোনো সম্ভাবনা কি আছে?
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
গার্মেন্টসের চাকরীটা তার লাটখোর, মদ্যপ স্বামীর জন্য পেয়েছে নার্গিস। বেঁচে থাকতে হররাত মদ গিলে লিভার পঁচানো আর বউ হ্যাঁদানো ছাড়া যার কোনো কাজ ছিলো না, মরে গিয়েই অন্তঃত একটা ভালো কাজ করে গ্যালো। বড় বস সহানুভূতির ঢোক গিলে মতান্তরে চোখে চোখে নার্গিসের রগরগে বুকখানা চেটে নিয়ে একটা চাকরী দিলেন, কর্মী পোস্টে- এ তার স্বামীর বদৌলতে। যৌবনের রমরমা পসরা বয়ে যায় নার্গিসের শরীরে- শরীরের মেদের আতিশয্য নেই, তবে নারীসুলভ মাংসল ভাঁজগুলো যেন হাঁটাচলায় জেগে ওঠে অনবরত, উঁকি দেয়- ঠিকরে বেরোয়, পুরুষের দৃষ্টি টেনে ধরে, আচ্ছন্ন করে- মোহাচ্ছন্ন- সচরাচর ছাপোষা নিচুবিত্তের রোল থেকে উঠে আসা গার্মেন্টসকর্মীদের মধ্যে এমন খুব একটা চোখে পড়ে না- তাদের শরীর অনাড়ম্বর- সারভাইভাল যেখানে মুখ্য শরীরের ঝলস, জৌলুস সেখানে খুব এক ধরা দেয় না, দিলে তা বিপদের কারন- গরীবের সুন্দরী মেয়ে শুধু বেমানান না একটা অনাবশ্যক উৎপাতেরও ব্যাপার।
“বাসায় ছেলেটা একা, একমাত্র বাপমরা ছেলে”– মনে পড়ে যায় নার্গিসের।
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
বাড়ির পাশে পুরনো গীর্জা- স্যাঁতস্যাঁতে অন্ধকারে টানটান হয়ে দাঁড়ানো উঁচু, বয়স্ক গাছগুলো বিকট চেহারায় হাত পা মেলে আকাশ ঢেকে ফ্যালে, দেখে মনে হয় অতিপ্রাকৃতের রাজ্য। গভীর রাতে গীর্জার গোরস্থানের দিকে ভুলেও চোখ পড়ে গ্যালে অদ্ভুত শুণ্যতায় হুঁ-হুঁ করে হুটহাট নাড়া দিয়ে ওঠে কলজে, রোমগুলো খাঁড়া হয়ে আসে। স্যাঁতস্যাঁতে দেয়ালে শ্যাওলা আর চ্যাটচেটে ব্যঙের ছাতা পড়া জীর্ণ কবরগুলো- আধভাঙা এফিটাফ বয়সের জেরে গা এলিয়ে শুয়ে পড়তে চায়- বৃষ্টিতে সামনের রাস্তায় জল জমে থই থই করে- মৃত্যুর মতো স্তব্ধস্থবির সুনসান- রক্ত জমে বরফ করার মতো ভয়াবহ- গীর্জার আঙিনায় মরা লাশগুলো কফিনে ভেসে ঘুরে বেড়ায় যেন মরার তীব্র টক গন্ধ, বাসি মাছের মতো; নাকে আসে- মনে হয় দরজায় এসে এখনই ধাক্কা দেবে- ছেলেটার জন্য দুঃশ্চিন্তা হয়- “একমাত্র বাপমরা ছেলে, একা”। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতো ঠান্ডা বরফিলা হয়ে আসে শরীর। ভীড় কমে, রাস্তায় বাসগুলো দূর থেকে পৌরাণিক চার’পেয়ে অদ্ভুত জন্তুর মতো ছুটে এসে একরাশ ধুলোবালি নেড়েচেড়ে দিয়ে যায়- তখন হলুদ আলোতে বাতাসে বালির কণাগুলো চিকচিক করে- যেন পৃথিবীর বাতাসে আকাঙ্ক্ষিত সোনালী কণারা ঝরে পড়ে ক্রমশ- আবার থিতিয়ে যায়, ছেলের জন্য ভাবনা চাড়া দিয়ে ওঠে মাথার ভিতর, বুকের ভিতর। অবশ্য এইসব কষ্ট, শ্রম, সেক্রিফাইস সব এতোদিন ছেলের জন্যই সয়েছে- নইলে স্বামী যখন মারা যায় তখন নেহাত ছেলেটা দুধের বাচ্চা, তখনই ছেড়ে চলে যেতে পারতো- সে সুযোগ ছিলো, রফিকের নজরও ছিলো তার দিকে- এখন রফিক বিয়ে করেছে, বাচ্চাও হয়েছে নাকি। তাছাড়া গার্মেন্টসকর্মীর ছেলেমেয়ে যেখানে সরকারি ইস্কুলের প্রাইমারি ডিঙাতে হোঁচট খায়- পর্যায়ক্রমে বাবা-ফেন্সির-বাংলার ঠেকে ভীড় করে, শ্রীপুর কলোনির স্যাঁতস্যাঁতে নিষিদ্ধ ঝুপড়িতে আসে যায়- সেখানে বাপমরা ছেলেকে কিন্ডারগার্টেনে পড়িয়েছে এতোদিন- সপ্তাহে দু’দিন ইংরেজি শেখার কোচিং- আর কতো! অনেকেই বলে আদিখ্যেতা; গাধায় চড়তে হাতির জোগাড়। সবই তার লাটখোর স্বামীর অকালে টসকে যাওয়ায় সম্ভব হয়েছিলো- গার্মেন্টসের চাকরিটা; বসের দ্যাখার চোখ ছিলো বলে, দরাজ দিলও সেইসাথে।
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
ভালো কাজ, ওভার টাইম-ফাইম সব বোগাস, কিছুতে কিছু হয় না। আসল ব্যাপার হলো মানিয়ে নেয়া- ছুটকি যারে কয় ‘এজাস্টমেন্ট’। প্রথমে এজাস্টমেন্ট বুঝতো না নার্গিস, ছুটকি আস্তে আস্তে সব শিখিয়ে পড়িয়ে নেয়- ছুটকি (নাম ছুটকি হলেও আট বছর ধরে কাজ করে); সুপারভাইজার থেকে শুরু করে বস, বড় বস সবার সবরোগ তার মাথায় ছকের মতো বসে গ্যাছে। সুপারভাইজারের ঘনঘন ভুল ধরা- আলগা চোখ টিপ মারা- পিঠ ঘেঁষে দাঁড়ানো- ছুতো পেলে হাতে হাত ঘষা- কাঁধে হাত বোলানো- ক্যান্টিনে বিল দিতে চাওয়া- সব বোঝায় ছুটকি। এখন আর বোঝাতে হয় না নার্গিসকে- ইঙ্গিত ঝট করে চটপট বুঝে ফ্যালে- উঠতে হলে কিছু না কিছু ধরেই উঠতে হয়, হোক মেশিনের ব্যালেন্স হুইল অথবা প্যান্টের লুপ- সবাই উঠছে, যে উঠতে পারবে না সে চাপা পড়ে যাবে, সাধারনের ভীড়ে তার কবরস্থ হওয়া নিশ্চিত তার, সাধারনের দলভুক্ত হবার চেয়ে বিড়ম্বনা নেই আর- এরাই সবখানে বঞ্চিত, অথচ লোকে ইহাকে অনাবশ্যক উৎপাতও মনে করে, উচ্চবিত্ত চোখে, পেটো বুদ্ধিজীবীর মননে এরাই সমাজের কাঁচড়া- তাই ওঠো নয়তো গোরখুঁড়ে দলে নাম লেখাও, কবর খুঁড়ে অপেক্ষা করো- এটাই এখন অবধারিত(এইখানে ডারউইন মার্ক্সের চেয়ে প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায়)।
লিটলম্যাগ বিন্দু bindu.bangmoy.com
হুঁস ফেরে নার্গিসের– একরাশ ধুলো উড়িয়ে দাপুটে হেডলাইট জ্বেলে, ঘনঘন হর্ন দিয়ে চলে যায় সিটিগামী বাসগুলো। চারিদিকে অজস্র প্যাঁপুঁ হরেক ফ্রিকোয়েন্সিতে বাজে- একমাত্র বাপমরা ছেলেটা বাসায়, দুনিয়ার নার্গিস ছাড়া কেউ আছে তার?- চিন্তা হয় নার্গিসের; দুঃশ্চিন্তা। ইপিজেডের চওড়া গেটের অসংখ্য নেশাধরা হলুদ বাতি অবিচ্ছিন্ন আলো দেয়- ফিকফিক হাসে- আকাশে চিঁড় খাওয়া মাটির মতো অসংখ্য শাখাপ্রশাখা ছড়িয়ে বিজলীরা আকসার চমকায়। কালো মেঘগুলো আরো কালো হয়ে আসে- ফ্যানাফ্যানা সাদা মেঘগুলোও মোনাফেকের মতো রঙ পালটায়, পুরনো গীর্জার আধাঁরের গাছেদের মতো কালো থেকে ঘন কালো হয়ে আকশের বুকে সারেসারে দাঁড়িয়ে যায়- সোনালী হলুদ আলোয় চিড়চিড় বালির মতো বৃষ্টির নেহাত সরু ফোঁটাগুলো হলুদ হয়ে আসে- চিকচিক করে। উসখুশ মেজাজে মাথা উচিয়ে একখানা পাজেরো গেট থেকে বেরোয়- ফুটপাতে নার্গিসের পাশে এসে দাঁড়ায়, দরজাটা খুলে যায়- দুধসাধা গলার ভাঁজপরা চামড়ায় জমা রোঁয়া রোঁয়া ঘাম কালো আচঁলে মুছে নিয়ে একখানা ফ্যাকাসে শুকনো হাসি হাসে নার্গিস; হেমন্তের নাড়ার মতোন শুকনো ও নির্জীব কিন্তু ধানের যৌবন গন্ধ, ইঙ্গিত লেগে থাকে যাতে। এতক্ষণে বৃষ্টির রোয়াগুলো সরুদানা বাসমতি চালের মতো ভারী হয়ে উঠেছে- গাড়ির ভিতরে থেকে উদ্বায়ী শরাবের একটা মিষ্ট ঝাঁঝ বাইরের জলজ হাওয়ায় মিশে যায়- করুন ও মলিন সাদা স্তনদুটি এতোক্ষণে ভিজে অসহায় শাড়ির উপর স্পষ্টতর হয়ে ওঠে- তড়িঘড়ি উঠে পড়ে গাড়িতে- ঝরঝর করে প্রচন্ড বৃষ্টি নামে, বাতাসও- নিজেকে স্বার্থপর মনে হয়- “বাড়িতে বাপমরা ছেলেটা একা; সে ছাড়া কেউ নেই ছেলেটার- এইভাবে ছেড়ে যাওয়া! থাকুক!-যথেষ্ট বড় হয়েছে, জীবনযুদ্ধে সবাইকে নিজেই বুঝতে হয়, এতোদিন দেখেছে সে, আঁচলে ঢাল হয়েছে জঙ্গের ময়দানে, এখন একা থেকে যুঝতে শিখুক, ভবিষ্যত জীবনযুদ্ধে সেও একা; সবার মতোই”- আরেকবার ভাবে নার্গিস; শাদা শিউলির মতো একটা দীর্ঘশ্বাস ঝরে পড়ে।
মন্তব্য