বালি ও বিষ
ঘুণপোকা! ঘুণপোকা!
আধ-খাওয়া হৃদপিন্ডের স্পন্দনে
অন্ধকার নামে চিরকাল!
আমাদের কিছু থাকতে নেই
তবু কিছু কিছু থেকে যায় বালি ও বিষ!
আধপোড়া আমি ও সিগারেট
যে পথে যাইনি আমি সে পথের ডাক
ভুল জন্মের তাবত কিছু ভুল ভুল পথের নিশানা।
শহুরে শালিক
আলোবাতি জ্বেলে দাও ঘরে কি যাবে দেখা?
দেখা যাবে পরে জানালাটা খুলে দাও পর্দাটা থাকুক
বড্ড ধূলো বড্ড
বেয়াড়া পুরোনো অভিমানগুলো!
বাড়ি নেই ঘর নেই তবুও ঘরের মালিক
ধান নেই, ক্ষেত নেই শহুরে শালিখ।
অনন্ত ছুঁতে গিয়ে
তোমাকে ছুঁতে গিয়ে ভুল করে
ছুঁয়ে ফেলেছি অনন্ত
সেই থেকে হৃদয়ের অনন্ত
গভীর উদ্ধারহীন খাদে
অন্তহীন হাহাকারেরা
কুয়াশাচ্ছন্ন চোখের ভিতর
লিখে রাখে কিছু অবোধ্য অক্ষর,
প্রায় কবিতার কাছাকাছি
আকাশের কালো শাড়ি থেকে
খুলে ফেলি সাতশো কোটি তারকা
আলো নিভে যায়, গাঢ় অন্ধকারে
অনন্ত ছুঁতে গিয়ে ভুল করে ছুঁয়ে ফেলি তোমাকে
আমার কেবলি ভুল হয়ে যায়,
ভুল করেই ঢুকে পরি স্বপ্নের সীমানায়
আমার কেন কেবলি ভুল হয়ে যায়?
বহুবার ভূলপথে
ভুল পথে ডেকেছে বারবার
চলন্ত ট্রাক, সিলিং এর ফ্যান
রেললাইন আর ঝিকঝিক ট্রেন!
বেঁচে আছি, বেঁচে আছি
বহুবার ভুলপথে ডেকেছে প্রেম ও প্রেমিকার ঠোঁট
ঠোঁটের চুমুতে লিখা সুইসাইড নোট!
উপাখ্যান
যে প্রেমিক নুয়ে পড়েছে আজ
তার পিছনে তাকাও,
তেরো বছরের ছিন্ন ধুলা-মলিন
চির উদাস চোখের ভেতর
যে জন্মেছিল আকাশকে
চুমু খাওয়ার তৃষ্ণা নিয়ে,
যখোন আর কেউ জন্মায়নি কোথাও
পৃথিবীর সমস্ত দূর্বাঘাস
জ্বালিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে নিয়ে
ঠোঁটে যার জ্বলে উঠত
ব্রিস্টল কিংবা স্টার লাইট
ক্লাসরুমে ব্যার্থ বইগুলোর
উপহাস উপেক্ষা করে বেঁচে থাকার যন্ত্রণায়
তিক্ত পৃথিবীকে
যে একগুচ্ছ এলোমেলো পঙক্তি লিখে
জানিয়ে দিয়েছিল 'এ সমস্ত কিছুই অর্থহীন'
স্বরবর্ণ আর ব্যাঞ্জনবর্ণের মৌলিক পাঠে
কিচ্ছু এসে যায়না,
মাত্র তেরো বছর বয়সে জেনে গিয়েছিল
আমাদের যা কিছু আত্মজৈবনিক
ভুল শব্দে, বাক্যে, অর্থে সংজ্ঞায়িত হয়েছে বারবার ।
জেনে গিয়েছিল মৈথুনে হাহাকার ছাড়া
কিছু নেই আত্মহত্যায়
চুমু খেয়ে ফিরে আসার যন্ত্রণা
যে কি না জানে সেই জন্ম থেকেই
জীবন মানে যার কাছে যতি চিহ্নবিহীন
এক উপাখ্যান, নতুন মৃত্যুর অবিসম্ভাবী সম্ভাবনা
ভেতরে ভেতর জেগে ওঠা
এক নতুন সত্তার জীবন লিপি
লিখা হয়েছিল সস্তা যৌন সাহিত্যের মতো
প্রেমিকের পায়ে বার বার প্রেমিকার সমর্পণ,
অতএব এ প্রেম অর্থহীন যা কিছু ইতিহাসব্যাপ
লিখা হয়েছে তার সবকিছু মিথ্যে,
সাজানো নাটক খুনিদের নায়ক বানিয়ে চলা,
এসব সত্যের ভার, শব্দের পরদে পরদে প্রতীক
স্তবকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আততায়ী,
প্রেমিকার চুমুতে প্রতারণা, চুল জুড়ে মেডুসার অভিশাপ
এসব জেনে সে আর বাঁচতে চায়নি
খুব গোপনে চলে গিয়েছে আত্মহত্যায়
ডানাখুলে ঢুকে গেছে এক কুঠুরির ভেতর,
মাত্র তেরো বছর বয়সে
এ এক ধীর মৃত্যু,
ধীরে ধীরে মরে যাবে সে,
জানবেনা কেউ বেঁচে থাকবে তখনো বহিরাবরণ।
মন্তব্য