আত্মজ
‘অ্যালকোহল যুক্ত জীবানুনাশকে
হাত মুছে মুছে
এখন কেবলি শক্ত করে ধরে রাখা একটা হাত
থেকে আরেকটা ছেড়ে যাওয়া হাতের
দূরত্ব বাড়ছে; তারপর একটা হৃদয়
আরেকটা হৃদয়কে
খুব দেখতে চাইছে!
অথচ হৃদয়ের খুব কাছাকাছি থেকেও
হৃদয়ে হৃদয় বাঁধা যাচ্ছে না আর...
তবুও, কোন এক শতাব্দীর বিপ্লবে দাঁড়িয়ে
একজন কবি সুউচ্চ স্বরে চেচিয়ে উঠবে নিশ্চয়ই-
‘হে মানুষ, পৃথিবীতে একবার মহামারি লেগেছিল,
যেখানে নিষ্ঠুর হৃদয়,
ভুলে গিয়েছিলো বহু হৃদয়কে!’
২২ এপ্রিল ২০২০
পা
এক মধ্যদুপুরে
প্রেমিকার কথা ছিলো
দু-পাটি পা,
আমরা এক সাথে করেই হাটবো
এক জীবন...
এমন অনেকের এক পাটি পা
আরেক পাটি পায়ের কথা রেখেছিলো সেদিন...
অথচ
আমাদের কথা রাখেনি পরিচিত পথ;
এতদিনে দূরত্ব বেড়েছে কেবল
পা থেকে পায়ের,
পায়ে-পায়েই!
১৪২৬ ফাগুন, নিকুঞ্জ।
দূরবীন
এ শহরতলী আবার বৃষ্টিতে ভিজবে, মাথার মগজে ঝিম তুলবে একটা দুরন্ত লাটিম;
শহীদ তিতুমীর ফুটওভারটায় কয়েকটা বাধা শালিক একটা সদ্য বিবাহিত সুন্দরী বুলবুলিকে চোখ মেরে উরে গিয়ে বসবে কলম্বিয়ার ছাদে।
শহরটা আবার তুমুল বৃষ্টিতে ভিজবে,
বুকের বোতাম খুলে একজন যাযাবর কবি হেটে যাবে পাঁচিলে হেলে পড়া
চাঁলতা কাঠের কফিনটার পাশ কেটে।
বহু নতুন কবরের বুকে
সমুজ্জ্বল শহরটা আবার নতুন নতুন মানুষের বাগান হবে...
একেক মানুষ একেক ফুল হয়ে ফুটে রবে।
আমি থাকবো না,
অনেকের না থাকার মত করে!!
বৈশাখ ১৪২৭
মোয়াজ্জেমের প্রেমিকা
ফুলচরণ চৌকিদারের বাসায় যাওয়ার পুরনো রাস্তাটা এখন পুরোপুরি বন্ধ।
এইজন্য আমরা মাদ্রাসার পেছন থেকেই ফিরে এলাম পুরনো ব্যাংকের সামনে, সফর সঙ্গী হলেন এক জন মাওলানা, তখন একজন সুন্দরী তরুণী সহকারী শিক্ষিকা আচমকাই বিজলিয়ে দিলো মধ্যবয়সী কবি জামিল আজিজকে দেখে। কবি ইশত ঠোঁট বেঁকিয়ে বললেন বুঝলে, কবিদের এমনটা হয়।
এবার
চৌরাস্তায় নেমে গেলো মাওলানা; একজন ক্বারী তার জন্য অপেক্ষা করছে সকাল থেকে।
পাটিরা বাজারের একটু আগেই জামিল আজিজ কষে ব্রেক করলেন মোটরসাইকেল -
১ মিনিট নিরবতার পর বললেন, ওই যে জবা ❀ ফুল গাছটার তলে বন্ধু মোয়াজ্জেমের প্রেমিকা ঘুমিয়ে আছে,
আহারে - পৃথিবীর কোন এক জ্বরে তার মরণ হয়েছিল...
তারপর থেকে মোয়াজ্জেমের স্মরণে একটু থামি...
প্রেমিকাকে সম্মান দিতে হয়;
সফরের-
বাকীপথটুকু আমার দু’চোখে ভাসছিলো সমতলের নুয়ে পড়া কয়েকটা জবা ফুল
আর একটা প্রেমিকার জ্বর মাখা কবর...
৭ মে ২০২০
মন্তব্য