তল্লাশি
সীমান্ত পার হবার আগে ভদ্রমহিলার ব্যাগটাতে তল্লাশি চলছিলো। ব্যাগের ভেতর থেকে জিনিসপত্র সব বের করে বাইরে রাখা হল। ব্যাগে রাখা ব্রেসিয়ারটাতে কিছুক্ষণ হাত বুলিয়ে কি যেন এক আনন্দ পেল অফিসারটি। তার ভাজটা উল্টে পাল্টে দেখা হল। ভদ্রমহিলা লজ্জায় তার মুখটা ঢাকতে বাধ্য হলেন। শেষমেশ ভদ্রমহিলাটির কাছে সন্দেহজনক কিছুই পাওয়া গেল না। তাকেই এলোমেলো কাপড়গুলো নিজের ব্যাগের মধ্যে ঢুকাতে হল। অফিসারটি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সুমাইয়া বেগম, কি করা হয়?’
‘স্কুল শিক্ষিকা।’ বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘স্বামী? স্বামী আছেন?’
‘হাঁ আছেন।’ বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘ছেলেমেয়ে?’ বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘দুই ছেলে। বিয়ের আগে একটা, বিয়ের পরে একটা।’
‘ও বাবা! কী বলেন! তা বিয়ের আগেরটা কি আপনার কাছে রাখবেন মানে বলছিলাম তাকে নিয়ে কি করবেন?’
‘আপনাদের মতো আর্মিম্যান বানাবো।’
গাধা
বিন্দু bindu.bangmoy.com
মালামাল বহন, হাঁটাচলা ইত্যাকার সব কাজ বন্ধ থাকায় গাধাদের না খাবার প্রহর শুরু হল। অর্ধাহার-অনাহার পীড়িত এই পশুবর্গের কথা ভেবে গুদাম থেকে খাদ্য বের করা হল। নেকড়েদের সীমাহীন উপদ্রব ওমনিই বেড়ে গেল। এমতাবস্থায় রাজা ওল্ফনেক গাধাগুলোকে শুনিয়ে শুনিয়ে তার পোষ্য নেকড়েগুলোকে বেশ উচ্চস্বরে বকা দিল।
বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘তোমাদেরকে আমি ঢের— গাদা গাদা রক্তমাখা তাজা মাংস খাইতে দিইনে, বল? কই অভুক্ত গাধাগুলোকে অল্পসল্প ঘাস দিলাম সেটাও তোমরা লুটে নিলে? তাছাড়া, তোমরা কি না আমার মতো মাংসাশী!’ রাজামশাই বললেন।
বিন্দু bindu.bangmoy.com
রাজার মুখে এই কথাগুলো শুনে একটা নেকড়ে তার ফোকলা দাঁত বের করে নিঃশব্দে হেসে ফেলল। সে ভাবল রাজামশাই ব্যাপারটা বুঝি জানেননা যে বরাদ্দের ঘাসগুলো বেঁচে নেকড়েগণ রক্তমাখা তাজা মাংস ও সুরার মিশাল ভূরিভোজ শেষে বরাবরের মতো দ্যূতক্রীড়ায় অংশ নিবে। গাধাগুলো ছিল সরল-সোজা ও বেকুব স্বভাবের। নেকড়েগুলোর প্রতি গাধারা অখুশি হয়ে তাদেরকে নির্মম ও নৃশংস বলে আখ্যায়িত করল। রাজামশাইয়ের সহানুভূতিশীল মুখের বাক্যালাপে গাধারা কেবল তার প্রতি সন্তুষ্ট হল না, কেউ কেউ করুণাভেজা চোখে বলতে লাগলো আহারে রাজামশাই আজ কতো নিঃস্ব— একা! রাজামশাইয়ের ভানধরা স্বভাবকে তারা আঁচ করতে পারলো না। গাধারা ভুলেই গিয়েছিল নেকড়েগুলো রাজার ভারসাম্য রক্ষিত পোষ্য পশু।
খাদ্য শৃঙ্খল
বিন্দু bindu.bangmoy.com
গলির বড় রাস্তাটার ধার ঘেঁষে ময়লার স্তূপের পাশে একটা লোক মরে পড়ে ছিল। কয়েকটি কাক চারদিক থেকে লাশটাকে ঘিরে ধরল। একটা কুকুর এসে কাকগুলোকে তাড়িয়ে দিল। চোখ নয়, কুকুরটা তার শরীরের নরম মাংস টেনে ছিঁড়তে লাগলো।
সুরক্ষা
বিন্দু bindu.bangmoy.com
দেশে দুর্ভিক্ষ আসন্ন। এই অসময়ে সবে মাটি ভেদ করে গজিয়ে ওঠা চারাগাছগুলো তার আপন অস্তিত্বের জানান দিয়ে বাড়ির কর্তার মনে কিছুটা স্বস্তির আশ্বাস জোগালো। চারাগাছগুলো চাটাইয়ের বেড়া দিয়ে সুরক্ষার কথা ভাবা হল। কাজ শুরু করতে না করতেই সীমান্তের ওপার থেকে বন্দুকের একটা বুলেট এসে তার শরীর ভেদ করল। ওমনিই অনতিদূরের উল্লাসরত পালের শূকরদের ভোঁদ ভোঁদ আওয়াজ শুনতে পাওয়া গেল।
বিন্দু bindu.bangmoy.com
জিন্দা লাশ
বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘ওদিকে তাকান। দেখছেন? মনে হয় মানুষটা মরে গেছে।’
‘হ দেখছি। ভাইরাসের কেস হবে। খবরদার, কাছে যাস না।’
‘টাকা পয়সা যদি কিছু থাকে?’ বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘মন্দ বলিস নি। চল দেখা যাক। হাতে ঐ পলিথিনটা পরে নে। একটা সাপোর্ট হল।’
‘কোন হ্যাণ্ডব্যাগ তো নাই। হাত—গাঁটি তাও দেখছি খালি।’
‘আরে গাধা, মাইয়্যা লোক টাকা কোথায় রাখে জানো না? শরম পাস না, ব্লাউজের ভিতরটা দেখ।’
‘বস, নড়েতো।’ বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘ওটা তো নড়বেই।’ বিন্দু bindu.bangmoy.com
‘আরে ওটা না। মাইয়্যা লোকটা নড়ে। এহনো মালটা জিন্দা আছে।’
মন্তব্য