একটি চতুর্থ মাত্রা
শুয়ে থাকি একটা শতবর্ষী চৌকিতে
কালো যার দেহের রঙ, ওজনে লোহার মতো
নরোম,
শালকাষ্ঠের তৈয়ারি।
আঘাত করলে বিষণ্ণ স্বরে একটা আধিভৌতিক
শব্দ হয়
শব্দটা দিকভ্রষ্ট প্রেমিকের মতো–
প্রস্থে মিশে যাওয়া দ্রুতক্ষয়ী, এক
শব্দের একটা শব্দই যা।
দু'তিনটি বিবাহ বাসর আর পূর্বপুরুষের
মৃত্যুর দাগ নিয়ে টিকে থাকা
স্বাতন্ত্র্যবাচিক এই চৌকির সহিত আমার
হয়তো সাদৃশ্য নেই
কিম্বা আমি কি শতবর্ষী নই? তবুও–
এবং– আপাতত সে-ই আমার বন্ধু।
কেননা ভাঙ্গা আয়নায় আত্মদর্শন ভুলে
গেছি যেমন জন্মের কথা মনে নেই।
শুয়ে থাকি একটা শতবর্ষী চৌকিতে
তোমার কথা ভাবি, তোমাদের কথা ভাবি...
নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে, আমাকে জাপটে
ধরে আমার প্রতিদেহ
মনে হয় এই বুঝি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো!
কিঞ্চিত টের পাই আমার আপেক্ষিক অস্তিত্বকে
সদা পরিবর্তনশীল – যেটি তরঙ্গের মতো স্বল্পজীবী। আর–
কখনো কখনো অবুঝের মতো বুঝে নিই
দৈর্ঘ্য প্রস্থ বেধের বাইরেও আমার
একটি মাত্রা আছে
বন্ধুতে-আমাতে, বস্তুতে-ব্যক্তিতে
এটিই পরম পার্থক্য
বৈসাদৃশ্যের অদৃশ্য কারণ একটি মাত্রা,
একটি চতুর্থ মাত্রা...
ব্যবহারিক শরীরবিদ্যা
ক্লাসে শারীরিক ঢেউবিদ্যা পড়ানো হতো— ইশারায়
ওতে আমার মনযোগ ছিল না,
তোমার মনের শরীর আঁকতাম কেবলই।
ঢেউবিদ্যা কিংবা তোমার মতো কেউ-বিদ্যা
শেখা হয় নাই। আজকাল
পার্থক্যের প্রেম আর বিষকাঁটা বুকে
নিয়ে ফিরে আসি;
বাড়ির দেয়ালে শ্যাওলায় আঁকা নরোম গ্রাফিতি–
মূলত অধিবিদ্যক আকাঙ্ক্ষার এক বিম্ব
চোখে পড়ে।
অনামিকায় ছুঁয়ে দিই বারবার
শরীরের ভাঁজ খুলে রাখে একটি আরেকটির
উপর;
শ্যাওলাগুলোও শরীর বুঝে নেয় মূহূর্তেই–
অবাক হয়ে দেখি...
মন্তব্য