গহীন জলের প্রান্তরে
একদিন মায়ের রাগের মতো
উন্নত রোদ মাথায় চাপিয়ে
চলে যাবো ফড়িঙের চোখে
দেখা কেনো এক জানালায়
ধূসর পাঠাগারের পরতে পরতে
ঝুম রাতে হুতুম প্যাঁচা ঘুমিয়ে গেলে
অক্ষর-শব্দরা-কাগজের সম্মেলনে
যেখানে হাওয়ারা হেঁটে বেরায়
অনিচ্ছায়
রক্তমাখা প্রতিবেশির চারিদিকে
মানুষের মৃত্যুর পর অকৎস্মাৎ
জ্যোৎস্না জেগে ওঠে সেখানে
থেমে যায়
কী গভীর এ জীবন
বালুঘড়ির ঢেউয়ে পেখম মেলে মেলে
কী করে এলাম মৃত মানুষের চরে
তোমার কোনো দোষ নেই, যতটা
নিয়ে গেছে নদীর কিনারে
সাঁতরাতে না জানা আমারে
মৃতদের অজানা বছরের উৎসবে
এগিয়ে চলেছে
জলের অভাব হলে
নদীমাতৃক গল্পটায় মৃত্যুর সাথে অদ্ভুৎ ঘনিষ্ঠ
লড়াই শেষে থুরথুরে গাছের শাখার
কোথাও যাবার নেই; অথচ
এইসব দখিন হাওয়ায় আশ্চর্য ধানখেতের
উথালপাথাল আমাকে চেটেপুটে খেয়ে ফ্যালে
গ্রাম থেকে শহর অবধি শুধুই পিপাসিত সাইরেন।
মহামারী ফিরে যাবার পর
তুমি ফিরে যাবার পর আমরা দেখলাম
এখানে সেখানে মৃত মানুষের উৎসব
বাঁকা চাঁদের মতো তাদের শরীরগুলো থেকে
ঝড়ে পড়ছে ফুটন্ত রজনীগন্ধা
কুকুরেরা ভালোবেসে গ্রহণ করে কখনো কখনো
সোনালি প্রান্তরের দুরন্ত তামাটে শরীর
হিংস্রতার নাবিকরা তখনও মধু সরোবরে মাতাল
সূর্যমুখীর জীবনরহস্যে লুটে চলে ক্ষুধার্তের আলোছায়া
হাপরের বাতাসে রক্তিম চোখে শুধু এতটুকু দ্যোতনা
প্রকাশ্য আঁধারে চাল চুরি যাবার পর
এ-ঘর ও-ঘর হাতড়ায় নিরুদ্দেশ মায়াবতী কন্যার
ছোঁয়া গরম ভাতের সুবাস ভুলিয়ে দিয়েছিলো
তুমি ফিরে যাবার পর আমরা দেখলাম
যারা শক্তিশালী ছিলো তারা পাহাড় হয়ে উঠেছে
দু-পায়ে হাঁটতে জানতো, কথা বলতে জানতো
তবে এখন শুয়োরের ঘোঁত ঘোঁত মূর্ছনায় ঝনঝনায়
আমাদের শস্য-পুষ্প এমনকি ফটিক হাওয়া পর্যন্ত
উত্তরাধিকারের সেই তর্জনী উচিয়ে নিয়েছিলো ভরে
তবুও কালো বিড়াল জাগে নীহারিকা পতনের আশায়
ওরা বুঝে নাই পাটের ছালায় তেল নেওয়া যায় না
মন্তব্য