.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

সিরিজ কবিতা: পারমিতা│রাকিবুল হায়দার

১.

পারমিতা, পৃথিবী আবার যেদিন লাশঘর থেকে বেরিয়ে পড়বে,
আমরাও সেদিন একছুটে গিয়ে দাঁড়াবো সমুদ্রের খুব কাছে,
ভীষণরকম সুখের অনুভূতিতে আমরা স্তব্দ হয়ে যাবো,
তোমার শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আবার গুনবো ঢেউ,
ঘুমিয়ে থাকা শামুক খোলসে উঁকি দিয়ে দেখবো সুখ!
পারমিতা, আবার যেদিন মানুষ নিঃশ্বাস দূরত্বে দাঁড়াবার অধিকার ফিরে পাবে,
আমরা রিকশায় চড়ে ঘুরে বেড়াবো এই বোহেমিয়ান শহর,
হুড তুলে চুমু খাবো, কাঁচের চুড়ির রিনিঝিনি শব্দে বেজে উঠবে-
তোমার প্রিয় লাজুক সেই কিশোরীবেলা।
সেদিন গ্রীষ্ম থাকুক অথবা ঘোর বৃষ্টির বর্ষা, আমরা মানবো না,
আমি তোমার জরায়ুতে আবার ফোটাবো বসন্তের ফুল!
পারমিতা, যেদিন পৃথিবীর ঠোঁট থেকে সরে যাবে লকডাউনের ছায়া,
আমরা পাগলের মতো আচরণ করবো, একবার সিনেমা হল, আরেকবার কফিশপ,
তোমার বাড়ির সামনের রাস্তায় পুষিয়ে নেবো আমার অস্থির পায়চারি,
তুমি তোমার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমার এইসব পাগলামির প্রশ্রয়ে-
একসাথে এক লক্ষবার হেসে উঠবে।
আমরা আমাদের জড়িয়ে ধরে থাকবো, ভালোবাসবো, চিৎকার করে বলবো,
এখনো এই পৃথিবীর অনেক ভালোবাসাবাসি বাকি রয়ে গেছে!

২.

পারমিতা, কান পেতে শোনো,
দূরের ঐ প্রবালদ্বীপে জেগে উঠছে ভোর,
লাল কাকড়া আর ঝিনুক-শামুকের শ্লোগানে তোমার নাম!
পারমিতা জেগে ওঠো!
গত রাত থেকে তোমার চৌকাঠে দাঁড়িয়ে আছে-
এক নির্বাসিত প্রেমিক,
এই জনপদ নিরাপদ হলে ফিরিয়ে আনবে বলে যাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলে,
বলেছিলে, নিরাপদ এই নগরীর প্রথম সকালে-
তুমি শংখে রাখবে সুতীব্র ঠোঁট,
বেজে উঠবে ভালোবাসার অপূর্ব সুর,
পারমিতা, গতরাতে সে ফিরে এসেছে,
ভোরের আলোয় তার শরীর গেরুয়া রঙ ছুঁয়ে ফেলার আগেই-
পারমিতা জেগে ওঠো!
আমি জানি, এখনো এখানে রক্ত শিরোনাম হয়,
প্রেমের কক্ষপথ থেকে মুহূর্তেই বিচ্যুত হয়ে পড়ে প্রেমিক!
তবু ফিরে এলাম, সমুদ্রের কাছ থেকে জেনে এসেছি-
শ্বাপদের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়, চোখে চোখ রেখে ছুড়ে ফেলে দিতে হয় সব ভয়,
পারমিতা জেগে ওঠো!
আবার মিছিল নামাই এই শহরে,
পায়ে পায়ে মাড়িয়ে দিয়ে যাই-
অনিরাপত্তার সব যৌথখামার,
পারমিতা, জেগে ওঠো!
বাজাও তোমার শঙ্খ,
আমি আসন্ন চুম্বনের পর রাজপথে রাখবো আমার উদ্যত পা!

৩.

পারমিতা, তোমাকে ছুঁতে গিয়ে যেনো আমি এক আবিষ্কারক হয়ে উঠি,
তোমার শরীরের প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে আমি খুঁজে পাই অজানা সব উপকথা।
তোমার নরম আঙুলের ডগা-
সাক্ষী রেখে যায় অজন্তার দেয়ালে এঁকে দেয়া সুপ্রাচীন শিল্পকলার,
যেনো তুমিই আঙুলের ফাঁকে কাঠ-কয়লা রেখে,
লিখে দিয়েছিলে পৃথিবীর প্রথম গানের স্বরলিপি।
তোমার ঐ একজোড়া ঠোঁটে-
কি এক অপূর্ব কৌশলে সাজিয়ে রেখেছো রুপকথার সোনাকাঠি-রুপাকাঠি,
আমি এক চুম্বনেই ঘুমিয়ে পড়ি, আবার চুম্বনেই জেগে উঠি অনন্তকাল পর।
তোমার এলোকেশী চুল-
বটের ঝুরির মতো খুব সাবধানে নেমে আসে আমার হৃদয়ে,
তারপর অদ্ভুত এক অনুভূতির রক্তসঞ্চালন ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত অনুভূতিতে।
তোমার ভাবালু চোখজোড়ার-
ডানপাশেরটায় বৃহস্পতি আর বামপাশে চাঁদের সমান উজ্জ্বলতা,
কাজল এঁকে নিয়ে নিমিষেই যেনো শনির বলয়ে লুকিয়ে ফেলো মনখারাপের রাত।
পারমিতা, তোমাকে ছুঁতে গিয়ে ভুল করে আয়নায় দেখে ফেলি আমাকে,
এই যে এতগুলো বিষন্ন রাত পেরিয়ে গেলো তোমাকে ছাড়া,
এই যে ছেলেভুলানো গল্পে নিজেকে ভুলিয়ে রাখি প্রতিনিয়ত,
তোমাকে ছুঁতে গেলেই, শুন্যতায় আঙুল মেখে আমি জেনে যাই-
এক লক্ষ আলোকবর্ষ ধরে তোমাকে ছোঁয়া হয়নি।

৪.

পারমিতা, সারারাত্রি ধরে নিস্তব্দতার দেয়ালে ঠুকেছি পেরেক,
তারপর প্রাগৈতিহাসিক এক স্মৃতির ফাঁকা ফ্রেম ঝুলিয়েছি তাতে,
যদি একশো আশি বছরের অভিমান ভুলে গিয়ে-
একটি রাতের জন্য আমার কিছুটা ঘুমের কারণ হতে তুমি,
তবে হয়তো পুরানো এক ক্যালেন্ডারের পাতায় জেগে উঠতো সময়।
তবু তোমাকে আমি জাগাই, তোমাকে নিয়ে জাগি,
স্মৃতির কফিনের ঢালা তুলে দেখি, সেখানে কি অদ্ভুত আয়োজনে তুমি আছো!
একটা ড্রয়িং রুম আর বিবর্ণ কাঁচের টি-টেবিলে রাখা দৈনিক পত্রিকা,
দুপুরের আলসেমী ভরা চোখ নিয়ে তোমার সোফায় হেলানো পিঠ,
কান পেতে রাখা কলবেল বেজে ওঠেনি বলে প্রতীক্ষা,
সব মিলিয়ে এখনো তুমি ঠিক আগের ভঙ্গিতেই আছো।
পারমিতা, সময়ের সাথে সময়ের যোজন ব্যবধানে,
ভালোবাসার জন্য সংরক্ষিত আত্মা নিলামে তুলে ফেলা যায়?
অথচ রাস্তার মোড়ে মোড়ে হ্যান্ডমাইকে প্রচারিত নিখোঁজ সংবাদে-
ভালোবাসাকে এই শহরে থেকে মুছে ফেলতে দেখেছি আমি!
পারমিতা, বিচ্ছেদের আয়ুষ্কাল কত?
কতগুলো বিক্ষিপ্ত জ্যোৎস্নার আয়োজন ব্যার্থ হলে-
ভালোবাসার মানুষ অমাবস্যার রাতে ভালোবাসার প্রদীপ জ্বালিয়ে আসে।
পারমিতা, প্রশ্নের উত্তরে তোমার এমন চুপ করে থাকা-
আততায়ীর মতো ছুরিকাঘাতে আমার হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করেছে অজস্রবার,
যদি এবারো নিরুত্তর রক্তক্ষরণে আমার মৃত্যু হয়,
জেনে রেখো পারমিতা, আমি আর আসবোনা,
একটি রাতের ঘুমের দাবী সংযুক্ত প্ল্যাকার্ড ছিঁড়ে ফেলে-
আমি মৃত্যুর সাথে বিনিময় করবো এই বীভৎস জেগে থাকা।

৫.

পারমিতা, গ্রীষ্মের এই তপ্ত রোদ ছুঁয়ে বলি, ভালোবাসি।
পার্থিব সব শর্তের কাঁটাতার পেরিয়ে বলি, ভালোবাসি।
পারমিতা, তোমাকে খুঁজতে গিয়ে-
এখন আমি এই পৃথিবীর বুকে একমাত্র পর্যটক।
আমাকে রোদ-বৃষ্টি-ধুলোবালি কি অনায়াসে ছুঁয়ে দেয়,
আমিও ছুঁয়ে দেই কালের গহীন থেকে উঠে আসা সব দীর্ঘশ্বাস,
শুধু তুমি আমাকে আর ছুঁয়ে দাওনা কোথাও, আমিও তোমাকে।
পারমিতা, তোমাকে একটা অনিন্দ্যসুন্দর গোলাপ দেই,
আমার এক একটি মৃত্যুর পর যার একটি করে পাঁপড়ি খসে পড়বে,
যেদিন গোলাপের শেষ পাঁপড়িটাও ঘুমিয়ে পড়বে বাতাসের কোলে,
সেদিন বুঝে নিও, আমি অমরত্ব পেয়ে গেছি।
এই পৃথিবীতে আমাদের দেখা হবেনা আর,
অন্য এক পৃথিবীর অনন্ত যাত্রার পথটুকুতে-
তুমি এলে, তারপর আমাদের দেখা হবে।
পারমিতা, আমি চাই এখানেই তোমার পরমায়ু হোক,
আমার এপিটাফে ফুল দেবার মতো অন্তত একজন-
দীর্ঘদিন বাঁচুক, কেউ একজন মনে রাখুক আমি বেঁচে ছিলাম,
কেউ একজন মনে রাখুক, আমি ভালোবেসেছিলাম।

৬.

পারমিতা, তাকাও! আমাকে আবার দ্যাখো!
পৃথিবীর সমান বয়সী ধুলো শরীরে মেখে আমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি!
বাতাস যখন প্রথমবারের মতো পাখিদের ডানা ছুঁয়ে দিয়েছিলো,
আমি তারও দুই শতাব্দী আগে ধুলোঝড় হয়ে, উড়ে বেড়িয়েছি তোমার বুকজুড়ে!
বিশ্বাস করো, আমাদের প্রেম পৃথিবীর প্রাচীন এক সমুদ্র থেকে উঠে এসেছিলো,
শতাব্দী থেকে শতাব্দীতে আমরা বারবার জন্ম নিয়েছি, অজস্র প্রেমিক-প্রেমিকার ঠোঁটে,
হংসমিথুনের প্রথম অনুভূতিতে!
তুমি যতবার এখানে এসেছো একা নিঃসঙ্গ হয়ে, আমি ঠিক ততবার হেঁটে গেছি তোমার দিকে,
পৃথিবীর সব ভাষায় চিৎকার করে আমিই প্রথম উচ্চারণ করেছি, ভালোবাসার যত প্রতিশব্দ।
পারমিতা, তোমার কেঁপে ওঠা ঠোঁট জানে, বহুকাল আগের সেই প্রথম চুম্বন!
তারপর নামহীন কত অযুত-নিযুত নক্ষত্র বাড়ি ফিরে গেলো!
পোষা পাহাড়ের কঠিন বুকে দ্যাখা হলো প্রথম ফসলের সুখ,
মানুষের উঠোনে হামাগুড়ি দেয়া শিশু-
বয়স বাড়িয়ে বাড়িয়ে একদিন আকাশের তারা হয়ে গেলো,
অথচ দ্যাখো, ধুলো সরিয়ে নিলে এখনো এই ঠোঁটের আদ্রতায় তুমি-
কেবল তুমিই মিশে আছো উষ্ণতায়!
পারমিতা, একবিংশ শতাব্দীর উঠোনে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় পুরুষ যখন তোমাকে স্পর্শ করে,
আমি অদ্ভুত এক আক্রোশে তার হৃদপিন্ড খুলে নিয়ে-
আমাকে সেখানে রাখি,
তারপর প্রাচীন প্রেমের মতো করে তোমার সমস্ত অনুভূতিতে প্রবেশ করি!
প্রবল এক বাতাসের মতো তোমাকে লন্ডভন্ড করে দেই,
তুমি এলোমেলো হয়ে যাও, শীৎকার করে ওঠো প্রেমে!
পারমিতা, তাকাও! আমাকে আবার দ্যাখো!
পৃথিবীর সমান বয়সী ধুলো শরীরে মেখে আমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি!
তুমি যত শতাব্দী পারো, জন্মাও,
তবে ভালোবাসতে চাইলে, আমাকে এড়িয়ে যেতে পারবেনা কোনোদিন!

৭.

পারমিতা, তোমাকে ছুঁতে গিয়ে যেনো আমি এক আবিষ্কারক হয়ে উঠি,
তোমার শরীরের প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে আমি খুঁজে পাই অজানা সব উপকথা।
তোমার নরম আঙুলের ডগা-
সাক্ষী রেখে যায় অজন্তার দেয়ালে এঁকে দেয়া সুপ্রাচীন শিল্পকলার,
যেনো তুমিই আঙুলের ফাঁকে কাঠ-কয়লা রেখে,
লিখে দিয়েছিলে পৃথিবীর প্রথম গানের স্বরলিপি।
তোমার ঐ একজোড়া ঠোঁটে-
কি এক অপূর্ব কৌশলে সাজিয়ে রেখেছো রুপকথার সোনাকাঠি-রুপাকাঠি,
আমি এক চুম্বনেই ঘুমিয়ে পড়ি, আবার চুম্বনেই জেগে উঠি অনন্তকাল পর।
তোমার এলোকেশী চুল-
বটের ঝুরির মতো খুব সাবধানে নেমে আসে আমার হৃদয়ে,
তারপর অদ্ভুত এক অনুভূতির রক্তসঞ্চালন ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত অনুভূতিতে।
তোমার ভাবালু চোখজোড়ার-
ডানপাশেরটায় বৃহস্পতি আর বামপাশে চাঁদের সমান উজ্জ্বলতা,
কাজল এঁকে নিয়ে নিমিষেই যেনো শনির বলয়ে লুকিয়ে ফেলো মনখারাপের রাত।
পারমিতা, তোমাকে ছুঁতে গিয়ে ভুল করে আয়নায় দেখে ফেলি আমাকে,
এই যে এতগুলো বিষন্ন রাত পেরিয়ে গেলো তোমাকে ছাড়া,
এই যে ছেলেভুলানো গল্পে নিজেকে ভুলিয়ে রাখি প্রতিনিয়ত,
তোমাকে ছুঁতে গেলেই, শুন্যতায় আঙুল মেখে আমি জেনে যাই-
এক লক্ষ আলোকবর্ষ ধরে তোমাকে ছোঁয়া হয়নি।

৮.

পারমিতা, আমার চোখে চোখ রেখে বলো, হৃদয়পুর আর কতদূর?
প্রাচীন এক সমুদ্রকে কথা দিয়েছি, হৃদয়পুরে আমাদের ঘরবসতি হবে
পথে পথে সবুজ গ্রামের মাইলফলক, তবু গন্তব্য যে আর আসেনা,
তোমার কোলে মাথা রাখবো? বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, আমার চোখজুড়ে ঘুম,
সমুদ্রে শয্যা পেতে আমি, মাছেদের আমাদের ভালোবাসার গল্প শোনাবো।
দেখো, দেখো! তোমার নীল শাড়ির আঁচলে, নীলাকাশ লুকোচুরি খেলে,
তুমি মেঘেদের রাজকন্যা? এই ধুলোর ফুটপাত বুঝি তোমার সিংহাসন?
আমি হাঁটু গেড়ে বসি? হাত পাতো, তোমার জন্য এনেছি, কবিতার অর্ঘ্য,
উহু! মুঠো বন্ধ করে ফেলো, নইলে সব শব্দ প্রজাপতি হয়ে উড়ে যাবে।
এত এত কালো মেঘ কোথা হতে এলো? ওহ! তোমার চুল উড়ছে,
তোমার হাসি অনন্তকাল বয়ে নেবে বলে, হাওয়ারা সব এইদিকেই ছুটছে!
আমার চুল এলোমেলো চুল আরো এলোমেলো করে দিলে, আঙ্গুল বুলিয়ে,
এই মুহূর্তের লোভেই আমি বকে যাই, আমার এলোমেলো সংলাপে।
পারমিতা, তুমি আমার স্বপ্নের দিনলিপিতে, অমরত্বের কবিতা হয়ে আছো।

৯.

পারমিতা, তোমার আসন্ন পা-এর শব্দ শুনবো বলে,
যেখানে-সেখানে আমি এখনো উঠোন পেতে রাখি।
আমার নিকোনো উঠোনের মাঝ দিয়ে কতশত রাত্রি পেরিয়ে যায়,
অথচ দেখো, তুমি আসোনি বলে এই হৃদয় ক্রমশ বধিরতায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।
পারমিতা, পৃথিবীর ব্যস্ততম যাপিত জীবনের চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে-
ক্ষ্যাপাটে এক প্রেমিকের মতো আমি হাত তুলে থামিয়ে দিতে পারি সময়,
তারপর নিঃশব্দে তোমার আঙুল ধরে তোমাকে পার করে দিতে পারি হৃদয়।
পারমিতা, আজকাল আমি খুব গোছালো হয়ে গেছি,
নিয়মিত চুলে আঙুলের বদলে চিরুনির গল্প জমে,
অথচ বসন্ত বিকেলের বাতাস আমায় ঝাপটে ধরলেই,
আমার আধপাকা চুল তোমার আঙুল খুঁজে ফেরে।
পারমিতা, তোমাকে খুঁজতে গিয়ে আমিই হারিয়ে যাই,
আমার বাড়ি ফেরা হয়না, আমার কোথাও ফেরা হয়না,
শুধু ঘুম ভাঙ্গলেই দেখি- নেশাতুর চোখজোড়া বাড়ি ফিরে গেছে।
পারমিতা, জানিনা কোথায় আছো, দেখা হয়না অনেকদিন,
তবু প্রাগৈতিহাসিক এক অভ্যাসে, পাশ ফিরলেই তোমাকে খুঁজি!

১০.

পারমিতা, আমাদের বোধহয় ঐ একবারই দেখা হয়েছিলো,
তোমাকে ঐ একটিবারই ছুঁয়ে দিয়েছিলাম,
তারপর সেই স্পর্শ তোমার শিরায় শিরায় প্রবাহিত হলো নদীর মতো,
আর আমার এখানে এনে দিলো এক সামুদ্রিক ঝড়,
আমি এলোমেলো হয়ে গেলাম সেদিনের পর থেকে।
আমার হৃদয় উপকূলে যখন - তখন তুমি হানা দাও,
উড়িয়ে নিয়ে যাও, সব একাকীত্বের সংলাপ,
রেখে যাও ভালোবাসা।
পারমিতা, আমি সেই দিনের তারিখ ভুলে গেছি,
তাই কোনো বাৎসরিক আয়োজনে তোমাকে মনে পড়েনা,
বরং প্রতিদিনের দিনলিপিতে অন্তত একবার তোমাকে মনে পড়ে,
উঁহু, মিথ্যে একটা বাক্য বলে ফেললাম,
পারমিতা, তোমাকে মনে পড়ে প্রতি মুহুর্তে,
বাতাসের সাথে নিত্য কার্বন ডাই অক্সাইড আর অক্সিজেন বিনিময়ের মুহুর্তে তোমাকে মনে পড়ে।
তোমার কি মনে পড়ে সেই দিন?
তোমার লুকানো ডায়েরীর কোন পৃষ্ঠায় আমাকে লিখে রেখেছো?
সেইদিনের অনুভূতি তোমাকে আরেকবার ছুঁয়ে গেলে-
তুমিও কি কেঁপে ওঠো চল্লিশে পা রাখা এক কিশোরীর মতো?
পারমিতা, আমার হৃদয়ে তোমার বয়স আর বাড়েনি,
সেই ষোলো বছরের চুম্বনেই আটকে আছে সময়!

মন্তব্য

নাম

অনুবাদ,32,আত্মজীবনী,26,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,319,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,15,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,56,ছড়া,1,ছোটগল্প,12,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,15,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,153,প্রিন্ট সংখ্যা,4,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভাষা-সিরিজ,5,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,37,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: সিরিজ কবিতা: পারমিতা│রাকিবুল হায়দার
সিরিজ কবিতা: পারমিতা│রাকিবুল হায়দার
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjrqcN4GmX8V6Vt-KeQ72F8d-kaIeyWmFyq8y9lYLWOq6hcK-yKGG4P6aarL6r-1d3fz9FQRqvB6wLwnfc5uQ1d3Cugxq6yN8yQcNJc-EyJDdz4XMp-zaKrsWpfpKXFWrlS2RpCjNZwZhI/s400/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2581_%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%259F%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2597_%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B7_%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%2582%25E0%25A6%2596%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE_%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%259A%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%259B%25E0%25A6%25A6.png
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjrqcN4GmX8V6Vt-KeQ72F8d-kaIeyWmFyq8y9lYLWOq6hcK-yKGG4P6aarL6r-1d3fz9FQRqvB6wLwnfc5uQ1d3Cugxq6yN8yQcNJc-EyJDdz4XMp-zaKrsWpfpKXFWrlS2RpCjNZwZhI/s72-c/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2581_%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%259F%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2597_%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B7_%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%2582%25E0%25A6%2596%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE_%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%259A%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%259B%25E0%25A6%25A6.png
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2020/04/blog-post_27.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2020/04/blog-post_27.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy