চলে যাবো-
এতটা নিঃশব্দে দরোজা আটকে চলে যাবো, যতটা নিঃশব্দে ধূমপানও হয়ত করা যায় না।° শরীর একটা চাপকল - অতিব্যবহার আয়ু কমায় - স্বল্পতে বন্ধ হয়ে যায় জমাট পাহাড়।
আপনি একে ভালোবাসতে পারেন না আবার দূরেও ঠেলে রাখতে পারেন না।
° টিপ-
নারী শরীরের নিগুঢ় রহস্য টানেনি আমায় কখনও, যতটা টেনেছে চোখ অথবা কপালে লাল/কালো বিচ্ছিন্নতাবাদী দ্বীপ। যদি আমি পারতাম তবে আকাশে রেখে মেঘ, বৃষ্টি ঝরাতাম বারোমাস। বৃষ্টি থেকে টিপ রক্ষার নিমিত্তে রেখে দিতাম আমার ঠোঁট কপালে তোমার।
° সাবধান, অতিপ্রাচীন বৈবাহিক শাড়ির নীচে তাকাতে নেই।
° নিজেকে ন্যাংটো করাটাকে কি বলে? প্রেম?
আবার প্রথম থেকেই পড়ো,
বৃষ্টি থেমে গেলেই মানুষগুলো নিরীহ অবসাদগ্রস্ত মানুষগুলো চুপ হয়ে যায়।
° প্রেমপত্র ১
জানুয়ারী ২৬,পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি
" আপনার প্রেমিকাকে অনেক সাহসী হতে হবে, কবিতায় বুঁদ হয়ে থাকা নেশাগ্রস্ ত প্রেমিকের প্রেমিকা হবার জ্বা লা অনেক ; জানেন তো? যিনি আপনার প্রেমিকা হবেন তার সেই প্রস্তুতিটুকুন লাগবই।'
° জানুয়ারী ২৯, শাহবাগ
অতঃপর
আমি দূর্ঘটনার কাছে ফেরত আসি।
আচ্ছা
- রক্তকরবীর মাঠে উকুন অন্ধকারে ছেয়ে আছে বৃহস্পতিবার রাত, আচ্ছা ক'দিন হলো?
° ক্লান্ত স্থির বুধবার সকাল এগারোটা চব্বিশ
- ক্ষুধার্ত।
° সোমবারটা ভালো লাগে না আমার -
একদিন পথভুলে কোথাও চলে এসেছিলাম নাকি কেউ নিয়ে এসেছিলো তা চিন্তা করাটা অবান্তর।
° সন্ধ্যা সাতটা ছাব্বিশ-
" এই রিকশা, এই যাবেন , যাবেন আমার বাড়ি, আমার ধুলো জমা মহল্লায়।"
° রাত দুইটা ছয়-
শাড়ি খুললেই তোমার বয়স বেড়ে যায় -
° ভোর চারটা-
আর কতকাল রোদের জরায়ু ভিজবে,
ভুল বুঝে আশটে আলসার কুয়াশায়?
° সকাল সাতটা ছাব্বিশ
এইযে স্কুল, এইযে স্কুল ইউনিফর্মে হেঁটে যাওয়া কৈশোর।
আমি আটকে আছি ষোলোতে'ই।
° বিকাল তিনটা
আচ্ছা শুভা, ভালোবাসা থেকে কি বের হওয়া যায়?
এর সদর দরোজা কোথায়?
° রাত দশটা সাত মিনিট
আকাশ প্রহরী মাথার উপর, বারান্দার নীচে মালিবাগের শিউলি গাছ সংলগ্ন বাড়িটার নাম " অলকানন্দা।"
° হৃদয় শরীরের বাইরে কিছু নয় -
মা
রাতের বুক থেকে আঁচল খসে গেলেই নগ্নতা নয়; নগ্নতা নয়।
চোখের পর্দায় জেগে ওঠে কেবল বিমুগ্ধ জননী!
সুইসাইডাল এটেম্পট
একদিন আয়নায় ব্যবচ্ছেদে হৃদয়
আমি রিক্সা থেকে লাফিয়ে পড়ে এরোপ্লেনের নীচে, আত্মহত্যা করেছিলাম।
ডায়েরির পাতা থেকে ক্রমশ সাতাশটা ঘুমের ঔষধ গিলে ফেলে মাতাল হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা অথবা হাত কেটে বোঝাবার কি খুব প্রয়োজন ভালোবাসা আছে ওখানে?
যোণী
যেখানে তোমারামার নিকাহ্ হয়না বিচ্ছেদ হয়না।
যেখানে তুমি ছেনাল জীবনের মতন লাফিয়ে উঠে পড়ো ঘোড়ায়;
যেখানে আমি লম্পট মৃত্যুর ন্যায় সমস্ত পেয়াজ ছাড়ানো কোষে সমগ্র আয়ুতে ঘড়ি ভাঙছে সিঁড়ি।।
ত্রুটি
কিছুটা জ্বরে বাকিটা দহনে
সমুদ্র নিয়ে চোখে সমুদ্রে দাঁড়িয়ে বিষাদগণিকারা।
বৃষ্টি-
প্রেমিকার বুকে থাকা পদ্ম ফুলে নাক ঘষতে ঘষতে আমি কেবল শতবৎসরের বিগত কিংবা আগত আবহাওয়া বার্তাটাই পাই, আর কিছু নয়।
নির্জনতা জেঁকে বসেছে ৬৭
একটা মিথ্যেতে মুছে যাবে সত্য, নিহত হবে শাদা শিফনের নারীর জন্য ভালোবাসা। চিরদিনের মেথমানুষের ভীড়ে চীরকালের না বলা ভালোবাসা হয়ে যাবে – স্মৃতি। কোনও দিন কেউ জানবেনা , কেবোল অট্টহাসির ভেজা আয়নায় ফুঁটে উঠবে “ কখনওই টিকেট পাওয়া যায়নি।
নয়'টা পঁচিশ
সকাল নয়টা পঁচিশ, জানুয়ারির শীতে খুলে বসেছো পত্রিকা।
কাপছো খাপছাড়া চায়ের কাপে.... তা একটু নড়েচড়ে বসো'তো,
তোমার বাষ্পরুদ্ধ নিরেট শরীরে প্রবেশ করতে দাও রোদ্দুর।
দাঁড়াও.... একটু দাঁড়াও।
সেপ্টেম্বর
কার্ফ্যু ভেঙ্গে ভালোবাসায় খুন হওয়া মৃতের সমাধিতলে পুষ্পস্তবক রাখার
নিয়ম নেই আইনে সেদিন কেউ বাধা পড়েনি। তাই
উরব রিঃয যিরংঢ়বৎ রং নবঃঃবৎ ঃযধহ ফরব রিঃযড়ঁঃ নধহম!!
ডায়েরির পাতা থেকে ২৩১
শুনেছি তূমি নিজেই যেখানে অসুখ কারো!
সেই তোমার ও অসুখ হয়! আর প্রেসক্রিপশন এ জড়াজড়ি তোমার নিউরন।!
ভুলে যাওয়া শোক
তুমি ভুলে গেছো গতজন্মের শোকসভায় আমি , জুতার ভিড়
খুলে রাখা জুতার ভিড়ে আমিও ছিলাম!!
হৃদয় -
হৃদয় পরে থাকে সহৃদয় মোড়ে -
তোমার মেয়ে
একদিন তোমার বেগুনী ফ্রকের মেয়েটা , শাড়ি পড়বে!
একদিন তোমার ছোট্ট ছোট্ট পায়ের মেয়েটা দাঁড়াবে ইতিহাস বিভাগ,
মনোবিজ্ঞান বিভাগ মাড়িয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সামনে।
অথবা লেকচার থিয়েটার ২ কিংবা কক্ষ্য ১০২৪ !
একদিন আধোবোলের শিশুটি তোমাকে জিজ্ঞেস করবেই-
" মা, সোয়েব মাহমুদ কে?"
আমি সেইদিনের অপেক্ষায়
আজ এখন মৃতবৎ জীবনে মৃত্যুকালীন সনদ পড়ছি।
তুমি, তুমি সেদিন জানবে
আজ কেনো উড়াল সেতুকে সপাটে চাবকে
ঈশ্বর ভয়ঙ্কর চাপা নিনাদে রোদ তুলে নিয়েছেন ; মাঝদুপুরেই।
তিনবিঘা করিডর
আমার ভিত্রে বহুকাল হইলো কেউ থাকেনা,
আমার ভিত্রে বহুকাল ধইরা দুক্ষের বাস।
আমার ভিত্রে অমাবাইসা রাইতে
হুদাই ডাহুক ডাকে, আর আমি ধরফড়াইয়া উইঠা বসি।
আর পারতাসিনা,
আর সম্ভবনা,
হগলতে উইড়া বেড়ায় দুই কুড়ি পাচ ট্যাকার ছনের উপ্রে বইসা।
আমি পারিনা।
এইযে তুমারে কইতাছি হোনো-
জন্মের দুক্ষে হেই যে ঝুইলা পড়ছিলাম সজনা গাছে,
তুমি- তুমি আমারে দ্যাশ দাও। তুমি আমারে নামাও-
তুমি আমারে মাটিতে নামাইয়া বান্ধো কাঁটাতারে।
আমার না হউক, লাশটার দ্যাশ হউক অন্তত--
খ)
এইসব বিকালে বাসার দিকে যে রাস্তাডা চইল্যা গেসে, তারে আমার একলা লাগে ভীষন। আমি আমার বুকে নিজের হাত রাইখা নিজেরে খুঁজি, পাইনা। আমার ভিত্রে আমি নাই, আমি থাকিনা। পলায় সব, পলায় সবাই। শালার জীবন আমার, পা বাইর কইরা কম্বল থিকা হুইয়া থাকন চোদায়, আমারে লগে ছেনালী করে,খালি আমি হাসি। আমি আমার জীবনের লগে কথা কইনা, বহুদিন আমি খালি হাসি। অনেকেই আমারে জানায় আমি বলে বাপের লাহান হইতেসি। এইটা মিছা কথা, আমি কহনও রাস্তায় দশটাকা হারাইয়া ফিরা পাইনাই। বাপের মতন কেমনে হমু।
আমার ভিত্রে আমি নাই কুসুম, আমার ভিত্রে আমি নাই, আমি থাকিনা বহুবছর, আমি খালি দেহি পলায় সবাই, জীবন থিকা জীবন পলায়, মরা গাঙের মতন আমি খালি ভাইসা থাকি আমি খালি দাগে বাইচ্যা রই।
আমার শরীল আমার জীবন আমার মন হুদাই মাগরেবে যায়, আমি যাইনা কুনোখানে। যেই রাস্তাডা বিকালবেলা বাসার দিকে যায়, আমি যাইনা সেই রাস্তায়। আমার বুকের লাহান এতিম আমি আর দেহি নাই। নিজের কাছে নিজেরে আমার দোয়ায় ইউনুস মনে হয়। সবাই পড়ে আমি পারিনা। আমার কাছে আমারে খুব একলা লাগে, সেই রাস্তায় যেই রাস্তা ছেনালি কইরা কবরস্থান চেনে না।
দেখা – অদেখা কাব্যঃ ১
আমি চাই তোমার সাথে কোথাও কখনোই আমার দেখা না হউক,
আমি চাই, প্রানপনে চাই।
তাই এড়িয়ে যাই, তোমার হাটা পথ
এড়িয়ে যাই পরীবাগ, মালিবাগ,বাসাবো এবং ছায়াবীথি।
এড়িয়ে যাই প্রানের শহরটাও।
এখন বুঝবেনা তুমি, যে তুমি ভালোবাসা মাড়িয়ে হেটে গ্যাছো
যে তুমি অস্বীকার করে পালিয়েছো ভালোবাসা থেকে
যে তোমায় ইতিহাস মনে রাখবে হত্যাকারী,ভালোবাসার!
সেই তোমার সাথে আমার কোনো কথা নাই।
তুমি আজীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ভালোবাসার,
বন্দীত্ব তোমার সোনার খাচায় আর কৌশলী ভিড়ে।
আমি চাই তোমার সাথে এ জন্মে আমার আর দেখা না হউক।
আমি চাই আমার সাথে একবার তোমার দেখা হউক।
আমি চাই একবার,এককাপ ধোয়া ওঠা চায়ের কাপে,
চোখে চোখ রাখা আমার তোমার দেখা হউক।
আমি চাই একবার,
তুমি আমার চোখে চোখ রেখে দ্যাখে নাও আমি তোমাকে,
আমার চোখে তোমাকে কিভাবে দ্যাখি?
একবার দেখা উচিত তোমার।
মিথ্যা ঠাস-বুনটের শহরে আমি চাই, একবার
আমার সাথে তোমার দেখা হয়ে যাক।
আমি শুনতে চাই আমার তুমি কি বলো আমায়?
আমি দ্যাখাতে চাই তোমায়, আমার অস্তিত্ব।
আমার জন্ম-মৃত্যুর পরিসংখ্যান,
আমার প্রতিমুহুর্তে হারিয়ে ফেলা নি:শ্বাস,
আমার বেগুনি পদ্ম, তোমার রংমেশানোসত্য।
আমার সান্ধ্যকালীন ফটোগ্রাফ কি বলে তোমায়?
আমি চাই, হ্যা হ্যা হ্যা আমি খুব করে চাই।
আমি চাই তোমার সাথে আমার দেখা না হউক।
আমি চাই আমার সাথে একবার তোমার দেখা হউক।
দেখা-অদেখা কাব্যের শেষ হউক,অন্তত।
দেখা - অদেখা কাব্যঃ ২
এক ক্ষয়িষ্ণু শহরের ইট-পাথরে ঘষেঘষে
বুকে বয়ে নিয়ে যাওয়া হৃদয় আর দেয়ালে ভর দেয়া কথাগুলো;
যা বলা হয়নি তোমায়।
তা পাশে নিয়ে বসে বসে দ্যাখছি,
আত্মবিধ্বংসী খেলায় মত্ত আমি
দু-চোখ ভরে দ্যাখছি বিলবোর্ড ভালোবাসার শহর তোমার।
কত উজ্জ্বলতা, কত আত্মপ্রবঞ্চক হাসি নিয়ে,
সূখ সূখ হাসি মুখ নামক বিজ্ঞাপনচিত্রে তুমি, ফেইড ইন অর আউট।
ঝুলে আছো ভালোবাসা কটাক্ষ করে!
তাই আমি চাই,
হ্যাঁ, আমি চাই তোমার সাথে কখনওই আমার দেখা না হউক!
আমি চাই অন্তত একবার মিথ্যে করে হলেও তোমার সাথে,
তোমার দেখা হউক!
আমি চাই আমাদের অদেখা অথচ খুব চেনা দেবদারু-রাধাচূড়ার
সারিসারি ছায়ায়, এক নিয়তি নির্ভর জেব্রাক্রসিং এ
কিংবা কোনও রাস্তায় কবিতাময় লিফলেটে,
অথবা কোনও এক ২৩শে পরীবাগের কোনায়; আমার যে তুমি,
কেবলই আমার যে তুমি,
আমার সাথে সেই তোমার দেখা হয়ে যাক.....
দেখা - অদেখা কাব্যঃ ৩
রিকশা কিংবা বিছানার বামপাশটায় অথবা হৃদয়ের বাম-অলিন্দে
একটা অসহ্য শূন্যস্থান; আশ্চর্য শুন্যস্থাণ নিয়ে পরিব্রাজক আমি।
বেঁচে থাকি নিঃশ্বাস নেই এই যোণীবাহিত পৃথিবীতে।
অদ্ভুত নষ্টালজিক কিছু শব্দের হাহাকারে আমার ঘুম আসেনা।
তুমিহীন তুমিময়তার সেই শুন্যস্থাণ হিলিয়ামে পূর্ন কানায় কানায়
- হাইড্রোজেনের দুই জোকার উড়ে যা ওয়া সাংকেতিক পানির
উপচে পড়া ঢেউ নিয়ে তাই রিকশাটাকে নদী ভেবে রাস্তায় হাটি আমি,
বিছানাটার সমুদ্র হোয়ে ওঠা দ্যাখতে দ্যাখতে একটা নিস্তব্ধতার
একাকীত্বে গোল হোয়ে বসে থাকি পাশের বারান্দায়।
অপেক্ষা আর অপেক্ষায় কাটে আমার সোয়া দুই বছর!
ছুটি থেকে ছুটি নেয়া হয়না আমার,
দেয়া হয়না এক দেয়াশলাই বক্সে- ভালোবাসা মসলিন।
আমি চাই
তাই আমি চাই তোমার যে তুমি; তারসাথে
আমার কখনওই যাতে দেখা না হয়।
তোমার; তোমার সাথে আমার দেখা
সে'তো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে এক নিগৃহিত বাংলার ইতিহাস!
তাই এই আমি চাই,
খুব কোরে চাই এই স্বাধীন বাংলায় আমার যে তুমি
সেই সন্ধ্যের ডুবে যাওয়া আকাশে লাল শাড়ি ছোট্ট লাল টিপে
ছাদে দাড়িয়ে
আমায় খোজায় ব্যস্ত যে অস্থির তুমি
সেই তোমার সাথে আমার দেখা হউক,আবার।
আবার,
রিকশার বা'য়ে বসো তুমি, বিছানার বা'য়ে শুয়ে পড়ো।
আমি পাশে বসে আংগুল ছুই আংগুলে,
ছুয়ে দেই তোমার ঠোটের তিল আমার নিঃশ্বাসে,
সরিয়ে এলোমেঘ চুমু আকি কপালে তোমার,
কিছু শব্দে আবার কিছু কথা হউক,
হউক লেখা একটা কবিতা আবার দ্যাখার পর হউক
ফুচকাতে ভর করা এক সন্ধ্যে।
একটা পায়ে হাটা পথে গোলাপ ফুটুক;আবার।
একটা ছবি হউক ভোরের,
একটা ঘর হউক আমাদের; ছোট্ট এক ঘর।
তোমার আমার মাঝে ছোট্ট একটা বালিশ
হউক,
ছোট্ট এক আংগুল আধোবোলে বাধুক
আমাদের।
তারপর ঠিক ৪৭ বছর পর আমি মরে যাই তোমার ঠোটে...
৪৭ বছর পরবর্তী মৃত্যুর আগে
ভালোবাসা-বাসি সংসারের জন্য হলেও আমার
- তোমার আমার সাথে দেখা হউক অথবা হোয়ে যাক...
ফেব্রুয়ারী ২৪
আমি জানি একদিন আমার সব অসুখ সেরে যাবে,
আমি জানি একদিন আমি আর প্রশ্ন করবো না -
মাছেরা কেনো নদীতে ঘুমায়?
পাখিরা কেনো আকাশে শুয়ে থাকে নির্বিকার?
ইঁদুরের শরীরে সঞ্চারিত ব্যথা নিয়ে
টিকটিকি কিভাবে ঘুমিয়ে থাকে,
পুরোটা ইশকুল জুড়ে পেজাতুলোর ডানায় কি করে ওড়ে
কবরস্থানের প্রজাপতি!
আমি জানি একদিন হৃদপিন্ডে
স্বল্পায়ুর বিকেলে ঝড়ের মতন শব্দ করা
" হ্যাঁ অথবা না " সরিয়ে,
সকল অনিশ্চিত গতিবিধির রাত জেগে থেকে
হাজরে আসওয়াদ চোখে চুমু খেয়ে নেবো একদিন।
২) জানি একদিন
আমি জানি একদিন আমার এইসব অসুখ সেরে যাবে,
সেরে উঠবে আরেকটি প্রাচীন মাতৃকা দেবতার জন্মযন্ত্রণা।
বন্ধ হয়ে যাবে ভালোবাসা-বাসির আশ্রম।
খুলে যাবে একটা নেই শব্দে
খুলে যাবে সকল জুন মাসের তপ্তদুপুরবেলা।
একদিন, একদিন আমি জানি, আমিও ফিরবো ঘরে।
ঘরে ফিরে একদিন আমিও কোমরের নীচে আবিস্কার করে ফেলবো
একটা গাঢ় নীল নদ,
এরপর তুমি যতই জলদস্যু বলো আমায়,
তোমাকে শক্ত করে জড়িয়ে
আমি জানি একদিন আমি সকল অসুস্থতা থেকে
হ ন হ ন
হেঁটে বেরিয়ে আসবো খুলে সকল অন্ধ দরোজা-
একদিন আমি জানি,
জানলায় উঁকি দিয়ে একটা সকাল, চা খেতে খেতে পরীবাগের রাস্তায়
আমি হয়ত ভাস্কর নভেরাকে,
তোমার কানে এসে জানিয়ে দেবো - সেদিনটা মাসের তৃতীয় শুক্রবার।
শেষ ফুলষ্টপ
গ্রীনরুমে আয়নাতে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি পর্বে, নাকের উপর বসানোর জন্য প্রেয়সীর প্রিয় লাল; আগুন মুখো লাল বল খুঁজছি ...... "থার্ডব্লো " শেষ ফুলষ্টপ ১৫ এর সন্ধ্যায়"- শো একটু পর.... দিকশুন্যপুরের জাহাজীকে কোনও এক ডিসেম্বরের ৫ তারিখে ভালোবাসি বলে জাহাজ নোঙ্গর করিয়ে; কিছুদিন পর ঠোঁটের উপর কালো টিপের মেয়ে হঠাত বলে ওঠে-
"তোমাকে পাখি ভেবেছিলাম, এখন দ্যাখি তুমি জরাজনিত আকাশ।
পাখি যতটা টানে, ততটা আকাশ আমাকে টানেনা, আকুল করেনা।
তাই আজ থেকে আমরা সরে যাবো সেভাবে যেভাবে মানুষ ভাববে
দেখা হয়নি আমাদের আমরা দু-জন দুরের দ্বীপ।"
বীজগণিত, হিসাববিজ্ঞানে কাচা ছেলেটা ফ্রয়েডিয় ব্যার্থ মনোবিজ্ঞানের গিনিপিগ হয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিড়িতে হাটতে হাটতে দ্যাখে পাবলিক হেলথের দোরগোড়ায় আড়াইবছর আগেকার ৫০% শিক্ষাবৃত্তি। এক মানবীর পানি উবে গিয়ে লবন জমা চোখে এক বোকা দ্যাখেছিলো, জেনেছিলো, পড়েছিলো
"আমি, তুমি ছাড়া বড্ড একা।"
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশেরও কবি - বাক্যটার মতই যাএক ডাহা মিথ্যে...... তুমি দাঁড়াও একটু আমি আসছি- এ কথাটা একমাত্র ভালোবাসা আর শৈশব বলে ছিলো।
"-- শৈশব!! সে আবার কে? বোদলেয়ারের চরিত্র নাকি? তারপর কি হলো? গল্প থামালে কেনো ?"
-- তারপর এক দৈত্য ভেজা পা'য়ে টুটি চেপে মেরে ফেলে শৈশবকে, ভালোবাসা হয়ে যায় সামাজিক আলমা রির চাবীর গোছাটার মতন ভারী। কেবল হাঁসফাস করে। প্রেয়সীর ভেজা চোখে, তার নিজের স্বপ্নবৃত্তান্ত এর কোথাও ছেলেটা ছিলোনা, তবুও পিপড়ের শহরে ছেলেটা ভালোবেসে নিজের চোখে দৃশ্যমান করে প্রেয়সীর স্বপ্ন, ছুটে চলে। ছুটতে ছুটতে হঠাত জেনে যায় --
"তুমি অতি ভালোবাসার মানসিক অসু খে ভুগছো"- নামক বিদায় বৃত্তান্ত।
-- "তারপর..তারপর কি হলো, উফফ..আবার থামলে ক্যানো! কোথায় যাচ্ছ .. আরেহ্ "
-- "আজ কয় তারিখ?এখন কয়টা বাজে? বলবে কি?
--"আজ ১৬ই ডিসেম্বর, রাত এখন ১১টা ৪৩মিঃ।"
- সাক্ষাত ঈশ্বর হয়ে মানিক মিয়া এভ্যুনিউ'তে রাত ১১টা৪৩মিঃ কো নও এক ১৬ ডিসেম্বর, ছেলেটা ছুঁয়ে ছিলো ভালোবাসার ঠোঁ ট আহ বৃষ্টি নামবে।। যাই এবার।"
দরোজা বন্ধ হয়ে যায় সপাটে,একটা ছায়া মিলিয়ে যায় ছায়ায়।
--"গল্পটা শেষ হয়নি তো, এই..এইযে...কি আজব বৃষ্টিও পড়ছে দেখি।"
হঠাত সম্বিত ফেরে -
-- "এক্সকিউজ মি,ম্যাম!আপনি কি কা রও সাথে কথা বলছিলেন এতক্ষন ! আপনি সুস্থ্য আছেন তো।"
-- "কেনো দেখেন নি, কমলা টি-শার্টের একজন ছিলো তো। নাকি চোখের মাথা খেয়েছেন।"
-- "কেউ ছিলোনা ম্যাম, বৃষ্টি থেমেছে এবার বাড়ি যান। ১২টা বাজতে চললো।"
মেয়েটি রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে রাস্তায় নামতেই শুনতে থাকে.. কে যে নো কবিতা পড়ছে বাতাসে শুয়ে।
আকাশের রানওয়েতে ভোরের আযান...
অসময়ের পত্রিকা বলে দিচ্ছে সুন্দরের চোখ সুন্দর খুঁজে বেড়ায়।
তাই আমার চোখের ভেতরকার জলোচ্ছ¡াস তোমায় ভেজাবে না....
বুকের ভেতরকার জ্বরের আঁচ ছুঁবেনা তোমায়...
দর্শক অভিবাদন গ্রহন করুন এক বোকা প্রেমিক,
এক অ-প্রেমিকের।
স্টেজের আলোতে ঝলসে যাওয়া মুখ দেখুন আর..
দর্শক আঙুলে কড়া নাড়ুন মুহুর্মুহু
শো- জমজমাট.....
আর ক্লাউন আমি, জোকার আমি মুখটা উপরে তুললে...
ঈশ্বর অপেক্ষায় ফুলষ্টপ মেরে দ্যাখেন আমায়...
দেখেন একাকীত্বের অপেক্ষাকথনে ক্লাউন আমি ,
হাহ্, অপেক্ষার জলজ্যান্ত কবিতা, আমি।।
এক মস্ত সস্তা পাণ্ডুলিপি ১৬ই ডিসেম্বর রাত ১১টা৪৩মিঃ এর অলিখিত চুমু'তে।।
সমাপ্ত লেখা হয়না এক অভিমানী রেললাইনের জেদি ভালোবাসায়।
যেখানে নিজেকে শেষকরা ইতিহাসের পৃষ্ঠা কোথাও কোনও
এক ভবিষ্যতে সিগারেট বানাতে হয়ত কাজে লাগবে।
বয়েস ১৩ যখনঃ
আমি জানি,আমার তখন ১৩...
আমি জানি, এটা নিশ্চিত জেনেই জানি
অনেকেই ঘটনা থেকে; ঘটনার রটনায় মনোযোগী ছাত্র!
আমি জানি,
যখন আমি আমার শৈশবের রং হারাচ্ছিলাম তখনকার গল্প।
আমি জানি,
যখন শিক্ষয়িত্রী কর্তৃক আমি ধর্ষিত হচ্ছিলাম,
তখন কোথাও সাইরেন বেজে উঠেনি-
বাজেনি করুন বিউগল অথবা
নতর্কীর উদ্দাম নৃত্য আমার শরীর উপকুল ছুয়ে
শব্দহীন কর্পুরে উড়ে যাচ্ছিলো শ'বে!
তখন নারী মাত্রই ধর্ষিতা! ধর্ষক!! হয়ত কখনওই নয়!
তাই
আমি জানি,কিভাবে আকাশ বারান্দায় নামে?
আমি জানি,সন্ধ্যেটা কখন চোখের পাতায়?
আমি জানি,নরকের মেঘ মাথায় নিয়ে কিভাবে তুমি যুদ্ধাগ্রস্ত?
আমি জানি,এ শহরের কোন কোন ঘরে ঈশ্বরের যাতায়াত?
আমি জানি,তিনি অবৈধ কোথায়?
রেডিওতে চলছে দিনবদলের গান,
মুষ্টিমেয় উন্নয়ন, অরাজকতার শ্রেণীবিন্যাস।
এর মাঝে ধর্ষিত আমার
অবাক তাকিয়ে থাকার সবাক সময়ে চলছে নির্বাক চলচ্চিত্র!
আমি জানি, নারী তুমি বড্ড ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত তুমি রক্ত উপাসনায়!
আমি এও জানি, তুমি পেছনে ফিরে তাকাবেনা,
আমি জানি, তাকালেই তুমি বন্দী;আমার চোখে।
আমার নখে, ঠোটে, বুকে,
অথবা
আমাদের অতীতের সিড়িঘরের হাজার সন্ধ্যায়...
আমি জানি, আমি মরতে শিখে গ্যাছি রোজকার নিয়মে।
আমি জানি, তখন আমি ২৩..
আমি জানি, দুঃস্পর্শ রাত্রিতে হয়ত আমি ৩০...
হয়ত আমি জানি,
১৩ বা ২৩ অথবা ৩০ যা'ই হউক না ক্যানো?
পুরুষ কখনওই ধর্ষিত নয়, তোমার টি.আর.পি সময়ে।
কিংবা হয়ত পুরুষ - মানুষই নয়
অথবা ছিলোই না কোনো জন্মে।
তাই আমি জানি,
২০১৫ সালের টিভিতে ১৯৯৪
এক শোকাবহ স্যাটায়ার - যেখানে মৃত আত্মায়..গুলি চলছে।
[দ্রষ্টব্য: বানানরীতি কবির নিজস্ব]
ধন্যবাদ বিন্দু এবং সাম্যদাকে
উত্তরমুছুনআহা, ভাষা ও চিন্তাশৈলী, কার রূপ অনুপম ভেবে মরি৷
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুনঅনবদ্য, সাবলীল, অনাবিল, সুখপাঠ্য৷ চুমা কবি চুমা নাও
উত্তরমুছুন