.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

রোমেল রহমান এর ছোটগল্প

লুট

লুটের সময় লুটেরাদের সঙ্গে এক বুড়ির তর্ক-

-    সিন্দুকের চাবি কই বুড়ি?
-    জানি না!
-    চুপ বুড়ি! ইয়ার্কি মারাস? এক পা কবরে, এখনো মিথ্যে বলিস? চাবি দে নৈলে এই ছুরি তোর পেটের মধ্যে দেবো!
-    কসম খোদার আমি জানি না ওরা কোথায় রেখে গেছে!
-    ...এই ...এই বুড়ি, তোর কি মনে হয় আমরা তোর সাথে ইয়ার্কি করছি?
-    তোমরা আমার নাতীর বয়সী, তুই তুই করছ কেন? এতোই যখন লালসা সিন্দুকটা আস্ত তুলে নিয়ে যাও?
বেয়াদপের দল!
-    কি বললি বুড়ি? এই আর দেরি না দে...ভরে!

লুটেরারা মস্ত সিন্দুকটা তুলে নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে যায়।  সিন্দুকটা মাটিতে নামিয়ে রেখে হাঁপাতে হাঁপাতে...

-    কি ওজনরে বাপ!
-    মনে হয় এর মধ্যে পাথর!
-    বনেদি বাড়ির সিন্দুক বলে কথা! ওদের সব সম্পদ এর মধ্যে!
-    হীরে -জহরত আছে নাকি শুধুই টাকা?
-    ওসব এই জামানায় থাকে নাকি? টাকাই তো জহরতের আধুনিক নাম!
-    হা হা হা! তবে টাকার ওজন অনেক!
-    একটা ভুল হয়ে গেছে , মনটা খারাপ লাগছে!
-    কি?
-    বুড়িটাকে খুন না করলেও পারতাম! সেই তো সিন্দুকটা তুলেই আনছি!
-    তা অবশ্য! কিন্তু তুই তো হুট করে ছুরিটা চালিয়ে দিলি!
-    কি করবো! বুড়ি যখন বলল, ‘তুই তুই করে বলছি কেন?’ তখন নিজেকে সামলাতে পারলাম না! তুই-তোকারি করলে ঠিক আমার দাদী এভাবে বকাঝকা করতেন! লজ্জায় ছুরিটা চালিয়ে দিলাম!


ডানা

বিপন্ন শহরের এক বাসায় মা মেয়ের আলাপ-

-    কবুতর গুলো ফেরে নি তাই না?
-    না আম্মা! এখনো আসে নি!
-    আর ফিরবে না!
-    কেন আম্মা?
-    আমার মন বলছে! এই অশান্তি ওরা নিতে পারেনি!
-    ওদের কি মেরে ফেলেছে সৈনিকেরা?
-    না হয়তো! তবে ওরা গুলির শব্দ ঘৃণা করে!
-    সত্যিই?
-    হ্যাঁ!
-    আমরা কবুতর হতে পারলে বেঁচে যেতাম তাই না মা?


লুট ২

স্থানীয় লুটেরা যুবকদের এক আখড়া।  সবাই চা খাচ্ছে, বিড়ি ফুঁকছে, চোলাই ঢালছে।  একজন একটা মোরগ কোলে নিয়ে অশ্লীল ভাবে আদর করছে।  আখড়ায় তাদের একজন সঙ্গী আসে...

-    কি খবর? খুব ফুরফুরে লাগছে!
-    রাতের ঘুম ভালো হচ্ছে মনে হয়? বড় দান মেরেছিস কটা?
-    হা হা হা! আমরা রাত জাগি আর তুই দিন জাগিস! হা হা হ...
-    না রে ঘুমানোর সময় পাচ্ছি না! তবে গতরাত আমোদে কেটেছে!
-    কাউকে তুলে নিয়ে গেছিলি? নাকি ডোম পাড়ায় তোর যে রাঁড়িটা আছে তার সঙ্গে শুয়েছিলি?
-    উঁহু! একদম ফ্রেস মাল!
-    কে? কে? বল না!
-    কে রে? বল বল!
-    আহা! নে নে বিড়ি নে! বল, কাকে ফাটালি?
-    হে হে হে!
-    ঢঙ করিস না! বলে ফেল!
-    পশ্চিম পাড়ার রিনি! মনে আছে ঐ যে উকিল সাহবের বড় মেয়ে! ডবকা জিনিস এক্কেবারে!
-    বলিস কি, ওদের না একটা বন্দুক আছে? যে জন্য আমরা ছোপ দিলাম না!
-    ফাঁদ পাততে জানলে পাখি আপনাই আটকে যায়!
-    আহা! আসল কাহিনী বল আগে! করলি কি?
-    দাড়াও দাড়াও বস! কাহিনীর আগে একটু আঙুল মেরে মাখন এনে দিই! হা হা হা! এই রিনি তো ওর থেকেও বয়সে অনেক বড়! সর্বনাশ! করেছিস কি তুই বাপ? হা হা হা!
-    নাগালে পেয়েছিস! হা হা হা!
-    নাকি মই বেয়ে উঠেছিস?! হি হি!
-    খামোশ! ওকে বলতে দে!
-    যন্ত্রের সামনে আবার বড়ছোট আছে নাকি? জানে যে বাঁচতে দিয়েছি ওর বাপ-মা কে এই ভাগ্য ওর!
-    বিনিময় প্রথা! হা হা হা!
-    হিসস! শুনতে দে! তারপর?
-    রাজি হচ্ছিল না মাগিটা! বললাম, রাজি না হলে অন্য কেউ আসবে! তারা কোন সুযোগ দেবে না! জাস্ট মেরে ফেলবে পুরো গুষ্টি ধরে! আমি পাড়ার ছেলে! রাজি হয়ে যাও! একটাই তো রাত!
-    আহা! তারপর?
-    ফড়ফড় করে কাপড় ছিঁড়ে ফেললি?
-    ইসসস! ওকে বলতে দে না!
-    তারপর আবার কি? রাজি হল! আমিও আমার লোকদের হাত দিতে দিলাম না ওদের বাড়িতে! তবে হেভি মাল বস!
-    [ সবাই হো হো করে হেসে উঠলো ]
-    কবার?
-    আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞাস করি?
-    এর মধ্যে আবার তোর কি কথা?
-    রিনির একটা ছোট বোন ছিল না?
-    হ্যাঁ! মিনি!
-    হ্যাঁ হ্যাঁ মিনি! ওর কি অবস্থা?
-    আরে বাপ আমি তো গিয়েছিলাম ওটাকেই খাবো বলে! কিন্তু আমার পোড়া কপাল সাথে গিয়ে বড় বোনকে লটকে দিলো!
-    মানে?
-    আমার ওস্তাদ মিনিকে টেনে নিয়ে গেলো! আমি আর কি করবো! বড়টাকে নিয়েই ফুর্তি করলাম!

প্রশ্নকরা ছেলেটা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো...

-    তোর কি হল?
-    শরীর খারাপ লাগছে?
-    সর্বনাশ হয়ে গেলো আমার!
-    কেন?
-    মিনিকে আমি পছন্দ করতাম! ভেবেছিলাম এই দাঙ্গার মধ্যে লুফে নেবো!
-    হায়! আগে বলবি না!
-    আফসোস!
-    এই তোর ওস্তাদের কাছ থেকে মিনিকে এনে দিস! অন্তত একটু ফুর্তি করুক!
-    নাহ! দরকার নেই!
-    না কেন? কন্ট্রাকটরের বউটা কি এখনো তোর ঘরে?


কচ্ছপ

দুটো অতিকায় কচ্ছপ পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে পালাতে থাকে...

-    আমরা যাচ্ছি কোথায়?
-    সমুদ্রের দিকে!
-    এখানে কিন্তু ভালোই ছিলাম কি বল?
-    হ্যাঁ! খারাপ না! সমুদ্র না হোক অন্তত পুকুরটায় আয়েশ ছিল!
-    অযথাই পুকুরের জলে বিষ দিতে গেলো! আমার এখনো মাথা ঘুরাচ্ছে! ভাগ্যিস তুমি টের পেয়েছিলে যে, জলে বিষ দিয়েছে; নৈলে এতক্ষণ অন্যদের মতো মরে ভ্যাব্দা হয়ে থাকতাম! কিন্তু পুকুরের জলে বিষ দিতে গেলো কোন দুঃখে?
-    ঐ পুকুরের জল এলাকার লোকেরা খেয়ে থাকে! তাই হয়তো বিষ দিয়েছে!
-    ইসস! কি ভয়ঙ্কর! আচ্ছা, আমাদের ভাগ্যে এখন কি আছে?
-    জানি না!
-    উঁহু! তুমি অনেক কিছু জানো! আমার থেকে কমপক্ষে পঞ্চাশ বছরের বড় তুমি! অনেক কিছুই দেখেছো! বল না!
-    মধ্যখান দিয়ে নিজের কচি বয়সটা জাহির করবার দরকার নেই! হাঁটো!
-    আহা! বল না!
-    ঘ্যানঘ্যান করো না তো!
-    আমি যাবো না!
-    না গেলে মরবে! কাউকে পাবে না! আমি কিন্তু থেমে থাকতে রাজি নই!
-    বল না আমাদের কি হবে!
-    অনেক কিছুই হতে পারে! এই যেমন আমরা তো যাচ্ছি, যাবার পথে সৈনিকদের সামনে পড়লে ওরা আমাদের মতো বড় দুটো জ্যান্ত কচ্ছপ দেখে লুফে নিতে পারে! তারপর ধর আমাদের কেটেকুটে রান্না করে খেয়ে ফেলতে পারে! আবার উদ্বাস্তু যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে! তাদের ভীষণ খাদ্য সংকট যাচ্ছে! তাদের সামনে পড়লে তারাও আমাদের ধরে রান্না করে খেয়ে ফেলতে পারে!
-    উফফফ! বল কি! তাহলে আমাদের তো মহাবিপদ!
-    তারচেয়ে বাজে ব্যাপার হতে পারে! কেউ যদি রৌদ্রের মধ্যে আমাদের উল্টে ফেলে রাখে! জ্যান্ত মারা যাওয়াটা সব থেকে কষ্টের হবে!
-    আচ্ছা তুমি তো গত দেড় শ বছর এখানে থাকলে, আগে কখনো এমন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে?
-    এই যে একশ একান্ন বছরে এসে হল! চল দ্রুত! পা চালাও! কথা বাড়িয়ো না!
-    আমরা কি সত্যিই সমুদ্রের দিকে যাচ্ছি?
-    হ্যাঁ! সমুদ্রই আমাদের মোক্ষ!
-    সমুদ্র যেন কোনদিকে?
-    হবে কোন এক দিকে, আগে বাঁচো; কোথাও না কোথাও তো সমুদ্র থাকবে!


শোধ

-    একটা মজার জিনিস দেখবে?
-    কি?
-    দাড়াও আমার ব্যাগটা খুলি! তাজা জিনিস! একটু আগেই কাটা!
-    কি রে?
ব্যাগের চেইনটা খুলে খাবলে মুট করে একটা রক্তাক্ত মাথা বের করে।  একটু আগেই গলা কেটে নিয়ে এসেছে।  মাথাটার কালো চুলগুলো রক্তে মাখামাখি।  সেই চুল মুট করে টেনে বের করে শূন্যে ভাসিয়ে...

-    চিনতে পারছ?
-    প্রফেসর সাহেব না?
-    হ্যাঁ!
-    ওকে এভাবে মারলি কেন?
-    শুয়োরেরবাচ্চাটা কলেজে একবার আমাকে মেয়েদের সম্মান করা উচিৎ এইসব নিয়ে অনেক ছবক দিয়েছিলো! আরেকবার চাঁদা চাইতে গিয়েছিলাম, বলেছিল উনি চাঁদা দেন না! এভাবে চাঁদাবাজি নাকি অপরাধ! একবার এক মেয়ে আমার নামে নালিশ করেছিলো, সেই খবর আমার বাপের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলো! দিলাম আজকে সব হিসাব মিটিয়ে!
-    ভালো করেছিস! কিমা বানিয়ে ফেলতি! কিন্তু মাথাটা সঙ্গে নিয়ে ঘুরছিস কেন?
-    ইচ্ছে হল, সবাইকে দেখাই!
-    বুঝলাম, তুই অনেক সাহসী! খ্যাঁক খ্যাঁক খ্যাঁক!
-    উঁহু! হাসবা না!
-    প্রফেসর সাহবে কি হাসত?
-    না!
-    তাহলে আমার মাথা কাটা যাবে না! খ্যাঁক খ্যাঁক খ্যাঁক!
-    আবার হাসছ তুমি?
-    তোকে একটা ফিডার কিনে দেবো!
-    কেন?
-    তুই অনেক সাহসী তাই! কাটা মুণ্ডু নিয়ে ঘুরিস! খ্যাঁক খ্যাঁক খ্যাঁক!
[আচমকা পেছনে গুঁজে রাখা চাপাতি বের করে এক ঝটকায় ঘাড়ে বসিয়ে দেয়!]
-    মর তুই!


ম্যাকাও

একটা ম্যাকাও পাখি লুট করে এনেছে একজন লুটেরা।  লুটেরাদের আড্ডায় সেটা সে সঙ্গে নিয়ে এসেছে...

-    কি পাখিরে এটা?
-    তোতা?
-    উঁহু।  দেশি মাল না বস! ফরেন বার্ড!
-    নাম কি?
-    ইন্টারনেট কানেশন নেই তো যে গুগোলে খুঁজবো! তারপর অনেককে জিজ্ঞেস খোঁজ বের করলাম,এটার নাম ম্যাকাও!
-    ম্যাকাও?
-    হুম্ম!
-    কথা বলতে পারে?
-    এখনো বলে নি, দেখা যাক বলে কিনা!!
-    দেখতে কিন্তু সুন্দর!
-    হ্যাঁ!
-    তবে ঠোঁটটা দেখলে ভয় লাগে!
-    কেন?
-    মনে হয় যদি চোখ খুবলে খায়!
-    লেজটা দেখো কি লম্বা!
-    বিক্রি করবি?
-    নাহ! পুষবো!
-    এ পাখির কিন্তু অন্য মর্তবা আছে!
-    কি?
-    বাড়িতে যদি টিকে যায় তবে সে বাড়ির আয়পাতি বাড়ে!
-    তাই নাকি?
-    শোনা কথা!
-    আরেকটা ঔষধি গুনাগুন আছে সেটা জানিস?
-    কি?
-    এ পাখির মাংস খেলে ভোল্টেজ বাড়ে!!!
-    কি?
-    কি বাড়ে বল তো?
-    সেক্স পাওয়ার!
-    সত্যিই?
-    টানা সাতদিন খেতে হয়! ঘোড়া লম্বা, থ্যাবড়া হয়! দম বাড়ে!
-    বলসি কি?
-    এজন্যেই তো সাহেবেরা এগুলো পোষে! বড়লোকদের তো দাঁড়ায় না!
-    হি হি হি! ভালো বলেছ, বড়লোকদের দাঁড়ায় না!
-    বিক্রি করবি পাখিটা?
-    নাহ! পুষবো!
-    কিনে তুমি কি করবে যদি ও বিক্রি করে?
-    এম্নি! শখ হল!
-    শখ তো বাচ্চাদের হয়!
-    কি করবে বল না?
-    এম্নিই! করবি বিক্রি?
-    বললাম না বিক্রি করবো না!
-    হা হা হা!
-    তুই হাসিস ক্যান?
-    তোমারও দাঁড়ায় না তাই না?


লালফ্রক

গভীর রাতে এক বাস্কেট বাচ্চাদের পোশাক এনে স্বামী তার স্ত্রীর হাতে দিতে দিতে...

-    মুন্নিকে ঘুম থেকে ওঠাও! দেখো কতো গুলো জামা এনেছি!
-    এক বাস্কেট! কোথায় পেলে?
-    বাজারে বিক্রি হচ্ছিলো!
-    লুটের মাল না?
-    উঁহু! ওর মধ্যে একটা লাল ফ্রক আছে ওটা পরাও তো, মুন্নিকে মানাবে খুব!
-    আগে বল এগুলো কি লুটের?
-    আরে বাবা না দেশ ছেড়ে পালাবার সময় এক ফ্যামিলি বিক্রি করে দিয়ে গেলো।  এতো বোঝা তারা সঙ্গে নেবে কি করে?
-    ওহ! আমি ভাবলাম...!
-    কি? কি ভাবলে?
-    নাহ কিছু না!
-    না বল শুনি!
-    কিছু না! আমি মুন্নিকে জাগাই।
-    আগে বল, কি ভাবলে?
-    ভাবলাম তুমি তোমার বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে লুট কোরতে নেমে গেলে কিনা! এক বাস্কেট কাপড় কেনার পয়সা তো তোমার ছিল না!
-    মুন্নিকে লাল ফ্রকটা পরাও!

ঘুম থেকে তুলে মুন্নিকে এনে বসায়।  বাস্কেট থেকে লাল ফ্রকটা বের করে একটা ঝাড়া দিয়ে ফ্রকটার গন্ধ নিতে থাকে মা।  তার চোখ ভিজে ওঠে।  বন্ধ চোখের উপর ভ্রুদুটো কাঁপতে থাকে।  মুন্নি বিহ্বল চোখে তাকিয়ে থাকে মায়ের দিকে বাবার দিকে!

-    কি হল? শুঁকছ কি?
-    শুঁকে দেখো?
-    কি?
-    দেখো শুঁকে! ওদের মুন্নির গায়ের গন্ধ!


ময়না প্রলাপ

-    পুরো বাড়িতে কিছুই তো নেই।
-    আছে!
-    কি?
-    ঐ যে খাঁচায় একটা ময়না!
-    চল! অন্য বাড়িতে হামলা দিই!
-    পাখিটা নেবো?
আচমকা পাখিটা ডেকে ওঠে, ‘ ...রূপ রূপ...! রূ...প!’
-    এজন্যেই পাখিটাকে সঙ্গে নেয় নি!


বিড়াল

-    লাশের পাশে একটা বিড়াল! দেখলে?
-    হ্যাঁ! মহিলা বিড়ালটাকে খুব আদর করতেন!


বখরা

-    দিলাম বস আইজকা এট্টারে!
-    কারে?
-    বড় বাজারের ঐ হাতির মতন আড়ৎদাররে!
-    ভালো করছস!
-    এক পোঁচে ভুঁড়ি ফাঁক কইরা দিসি!
-    সাবাস!
-    ভক্‌ কইরা নাড়িভুঁড়ি রাস্তায় পড়লো!
-    হা হা হা! টাকাপয়সা পাইছস কয় বান্ডিল?
-    জিরো।  কুড়ুমচোদা একটা পয়সা রাখে নাই ক্যাশে!
-    দূর হ মাদারচোদ! খালি হাতে এই বালের গল্প দিতে আসছস এইখানে?


পোঙ্গাবাজি

দাঙ্গার ভেতর উদ্ভ্রান্তের মতো দৌড়ে আসা এক কিশোর দেয়ালের আড়ালে দাঁড়িয়ে হাঁপাতে থাকে।  দুজন দাঙ্গাবাজ নিরিখ করে তাকে দেখে...

-    ছেলেটা সুন্দর না?
-    হ্যাঁ! খুব সোন্দর! অনেকদিন পর এমন কাউরে দেখলাম?
-    হুমম! ছেলেটার ঠোঁট দ্যাখ! ফিনফিনে গোঁফ উঠতেছে! কচি মাল।  গলা, বুক, ঘাড়... ইসসস!
-    তয় পোঙ্গামরা টাইপ!
-    হুম্ম! হিপে মাংস নাই!
-    কি করবি?
-    গায়ের রঙ দেখছিস? মনে হয় চেটে খাই!
-    উম্ম! পুরাই মাক্ষন!
-    চল ধরি!


বিকৃতগণ

লুটেরারা একটা বাড়ি তছনছ করতে করতে...

-    এটা মনে হয় নতুন বিবাহিত স্বামী স্ত্রীর ঘর ছিল?
-    হুম্ম! এই দেখো, ড্রয়ার ভর্তি কনডম! হি হি!
-    ওটা কি? শিশিতে?
-    এহ!! আঠালো!
-    লুব্রিকেন্ট অয়েল!
-    বাবা আপনি তো ভালোই চেনেন বস! ভেবেছিলাম আপনি সাধুসন্ত মানুষ!
-    কেন সাধুদের নুনু থাকে না?
-    হি হি হি!
-    খুঁজে দেখো টাকাপয়সা পাওয়া যায় কিনা!
-    শালারা সব নিয়ে ভেগেছে!
-    এই দেখো! খাটের পিছনে মাল ভরা কনডম! শালার মাথা ঠিক ছিল না বউ পেয়ে! যেখানে সেখানে ফেলেছে!
-    নতুন নতুন অনেকেরই ওরকম হয়!
-    হে হে!
-    এই তোমরা এসব বাদ দেবে? জলদি করো! পুরো পাড়া চষে ফেলতে হবে!
-    ইয়াক! থুঃ! মাগিটা গীদের ছিল!
-    কি?
-    শুঁকে দেখো! পেনটিটা! ভকভকে গন্ধ!
-    রাখো তো!
-    আরে দেখোই না! এমন গন্ধ হতে পারে ভাবা যায় না?
-    যাবার আগে ব্যাবহার করে গেছে মনে হয়!
-    তোমাদের আগ্রহ কি এইসব নিয়েই?
-    সরি বস!
-    তোমরা কি বউর পোঙ্গামারো?
-    কেন?
-    ছি ছি স্যর!
-    আমার সন্দেহ আছে!
-    কেন বস?
-    বুঝলেন কি করে বস?
-    তোমরা তো ছেলেদের জাঙ্গিয়া আর মেয়েদের পেন্টির তফাৎই জানো না! তাই আমার সন্দেহ হল!
-    এটা ছেলেদের?
-    তাহলে আমার সন্দেহ সত্যি!


একুরিয়াম

একুরিয়ামে মাছেদের সংলাপ...

-    সপ্তাহ খানেকের বেশি বাঁচা সম্ভব হবে না!
-    নাহ!
-    মালিকেরা পালাবার আগে আমাদের একটু দয়া করে ড্রেনে ফেলে গেলেও বেঁচে যেতাম!
-    নিজেদেরকেই বাঁচাতে পারছিল না আর আমাদের!
-    কখন যে কার দিন খারাপ আসে বলা যায় না!
-    হুম্ম! আর কার জন্য যে কার দিন খারাপ আসবে সেটাও বলা যায় না!
-    এঞ্জেল ফিস গুলো মরে ভেসে উঠছে!
-    হুম্ম! শার্ক গুলো আবার ক্ষুধার যন্ত্রণায় গোল্ডফিস গুলোকে খুবলে খাচ্ছে!
-    উপায় নেই!
-    আমাদের সহ্য ক্ষমতা বেশি! কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমরা কি করবো?
-    হয়তো এই তুমি আমিই আমাদের দুজনকে কামড়ে খাবো!
-    ঠিক মানুষদের মতো?

মন্তব্য

BLOGGER: 1
  1. আমি অভিভূত৷ একজন শক্তিমান কথাসাহিত্যিকের গল্প পড়লাম৷টট

    উত্তরমুছুন
মন্তব্য করার পূর্বে মন্তব্যর নীতিমালা পাঠ করুন।

নাম

অনুবাদ,32,আত্মজীবনী,26,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,304,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,14,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,54,ছড়া,1,ছোটগল্প,12,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,14,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,152,প্রিন্ট সংখ্যা,4,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভাষা-সিরিজ,5,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,36,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: রোমেল রহমান এর ছোটগল্প
রোমেল রহমান এর ছোটগল্প
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi8ftjgmcUdH2093dsRBUZrb96ghkl3DC-onE5hvsRi3HafPjElUaIwGSMcqHi-f5dm-wVgCLkCXunqrYPjw5YgRCe58V5O7jTVPOpl-pvNbKZMpkPc-Swu_bB-o1lybU3Vb_mmK2fE4vo/s400/%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8-%25E0%25A6%2589%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2581-%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2593%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0-%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi8ftjgmcUdH2093dsRBUZrb96ghkl3DC-onE5hvsRi3HafPjElUaIwGSMcqHi-f5dm-wVgCLkCXunqrYPjw5YgRCe58V5O7jTVPOpl-pvNbKZMpkPc-Swu_bB-o1lybU3Vb_mmK2fE4vo/s72-c/%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8-%25E0%25A6%2589%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2581-%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2593%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0-%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.jpg
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2019/12/blog-post.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2019/12/blog-post.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy