এক.
বাগ পুরাণ-১
১.
মৃত্যুও ঘুমিয়ে পড়ে শ্মশানে। যখন ইশ্বরের আঁচল থেকে বেরিয়ে পড়ে সাপ।
২.
আমি কোকিলের লাল চোখে ডুব দিয়ে খুঁজি চেতনার সুর।
৩.
প্রতিনিয়ত চোখের দেয়াল কেটে রাখি চোখের করাতে।আয়নাকে পথ ভেবে বৃত্তের পথে দেখি শুধু আমাকে।
৪.
আমার জোৎস্নাঘরে তোমার ডাহুক ডেকে যায়, জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখি সব অন্ধকার। তার ভেতরে আমরাও পথ চিনে নেই, কারও অপেক্ষার পথে...।
৫.
ঘুনপোকার রাজত্বে আমিই পরিত্যক্ত কাঠ।
দুই.
বিন্দু bindumag.com
হে রাত্রি! তোমার কালো বোরখা খুলে দাও। আমি ভোরের পিতা হবো।
বিন্দু bindumag.com
এখন অন্ধকার কেটে যায়। মৌমাছির মত বেরিয়ে পড়ে স্বপ্ন। ভোরের পা দুলিয়ে নেচে উঠে রঙ্গিন শিশির। সূর্যটা। মেঘের ঝুপড়ি থেকে বেরিয়ে আসে সিদ্ধ কুসুম। চিত্র গুহা থেকে মুখরিত মুক্ত পাখির গান। মিশে থাকে শিহরণে কোমল সুর। আমাদের অর্বাচীন পালক খুঁজে উড়াবার একলব্য তান।
বিন্দু bindumag.com
ভোর হলো! চোখের কপাট খোলো।
দেখ! খোঁপা খুলে বসে আছে কাকতাড়ুয়া। কখনো তার কাঁধের ভূগোল পেরিয়ে। চোখদুটো অনিমেষ। বেঁধে রাখি চুলের শীতল ঘ্রাণ। আয়নায় ঝড়া নার্সিসাসের মুখ। এপাশে ওপাশে ভোরপুকুর।তবু আমার চোখে তোমার বিষন্ন চামেলী চুড়ি।
বিন্দু bindumag.com
ভোরপুকুরে নীলজলে ফোটে ঐশী শ্লোক। শ্লোকের বর্শায় আটকানো মাছেদের উৎসব। উৎসবের আরেক নাম সুত্র। আমরা জানি, জলের সুত্রের নাম প্রিজন। মেঘজলে প্রিজনের ঘুম জড়ানো কুয়াশার চলচিত্র।
বিন্দু bindumag.com
একই দৃশ্য। পাল্টানো শুধু নায়ক। প্রতিনায়ক। গাছ। আর পাখিদের অভিনয়।
আমি অভিনয় বলতে পতিতা বুঝি!
তিন.
বিন্দু bindumag.com
বৃষ্টি লিখে যাচ্ছে জলের গল্প। ভাই টিপ দিতে এগিয়ে আসা মেঘ। চাঁদের হাটে সেলাই করে জোৎস্না খাতা। পাতায় পাতায় শিলালিপি রচনার আগে ভাতঘুম পড়ে যায় গাছের নীরব বালিশে। পাখিগুলো দইফুলের মালায় গেঁথে রাখে কাদামাটির বুনন। হালচাষে কুমারী চোখমেলে দ্যাখে নতুন ফসলের ঘ্রাণ। চাষামন নাচে লাঙ্গলের ফলায়। এবার ধানসিড়ির বাঁকে বাঁকে ফসল ফলানোর পালা।
চার.
বিন্দু bindumag.com
সামনে পা ফেলে ক্রমশ পেছনে চলে যাই। অন্ধকারের ঢোক গিলে গিলে আমিও অপেক্ষা করি তারপরের ...তারপরের পৃষ্ঠায় একটা শব্দ কিংবা বিবিধ অক্ষরের জন্য। অন্ধকার যদি খাতা হয় তবে কি লিখব রাতপাতায়? পুঁজির প্রচ্ছদে চাঁদও ঢেকে আছে নিঃসঙ্গ আকাশে।
পাঁচ.
বিন্দু bindumag.com
বাগপুরাণ-২
বিন্দু bindumag.com
১.
বৃষ্টি ভেঙে ভেজা রাত যখন শীতল চাদর পড়ে,আমি তখন মেঘমোহ চাঁদের উষ্ণতা খুঁজি।
বিন্দু bindumag.com
২.
আঁধার বিলাসী, বুক ভরে জমে রেখেছো কালো দাগ। আমার জোনাকি আজন্ম অন্ধ, তোমার বাঁশবনে ফুল ফোঁটায় না।
বিন্দু bindumag.com
৩.
ছেড়ে দেই আটকে রাখার জন্যে, আটকে রাখি ছেড়ে দেয়ার জন্যে। আমরা, আমাদের নিজস্ব গতিপথে শুধুই উল্টো পথিক।
বিন্দু bindumag.com
৪.
তুমি দেখছো বলে কিছুই দেখছো না। আমি দেখছি না বলে আমার সব জানালা খোলা।
বিন্দু bindumag.com
৫.
ছোটবেলায় দাঁড়িয়ে যে পাখি হওয়ার স্বপ্ন ছিলো ডানা মেলে সেই পাখি প্রথম এনেছে অবিশ্বাসের অভিযোগ।
বিন্দু bindumag.com
৬.
হাওয়া, নৌকার পালে ঝুলছে আমার আদিমাতার আঁচল।তোমার, নদীর বয়ে যাওয়া বলে কিছু নেই, আছে জল ও নিঃসঙ্গ চাঁদের হেঁটে বেড়ানোর গান। আমার, নোঙর জানে দড়িতে কতটা গিঁট আগলে রেখে পথ চেনা যায়।
ছয়.
বিন্দু bindumag.com
হাওয়াই মিঠাই পকেটে রেখে জলচোখে খুঁজি বৈশাখের মাতাল হাওয়া। কলারের ভাঁজে পৃষ্ঠা উল্টো গেলে হৃদয় পোস্টে জমা হবে নববর্ষের খাম। রঙিন ঠোঁটে লীন হয়ে হালখাতার ঘ্রাণ জানিয়ে দিবে পুরনো প্রেমের হালচাল। ভাল থাকি হিসেবের জেরে, বকেয়া থাকে শুধু তোমার ফিরে আসার কমিকস।
সাত.
বিন্দু bindumag.com
আমার সেই পথচলার ঘাসফুল আমার দিকেই তাকিয়ে। অপেক্ষারা উপহাস করে বলে, এবার ঘড়ি উল্টো দিকে চলো। কাঠবুড়ো, প্রতিদিন একটা জামরুল নিয়ে দাঁড়িয়ে সোনালু ক্ষেতে দেয়াল আঁকে। দেয়ালের অপরপাশে চারণ ভুলে যায় রঙ, এপাশে দোয়েলের গান সুরছবির করে আয়োজন।
ছন্দপাখি, আর যেও না রঙমহল।
আট.
বিন্দু bindumag.com
পিয়াল বলেছিলো, ট্রাম কার্ডটা বুক পকেটে যত্ন কোরে রাখিস। অথচ আমি বোধমূলে হেরে গ্যাছি, যাচ্ছি বিস্তর ডালে। পাখিদের সাথে কার্ড খেলা নিয়ে তর্ক করতে নেই, হেরে যাওয়ার আগে খোঁজে অন্য বাসা।
পাখিওয়ালা, বড় ফন্দিবাজ!
নয়.
বিন্দু bindumag.com
সেদিন পাতা ঝরা ভোর ছিলো। ঘুমঘুম পায়ে হাঁটছে নিদ্রাজনিত রোগ। মৃত্যু আমাকে বলে, জানিস? তার অজানা কিংবা বিবিধ খতিয়ান। যেভাবে ফুলের পতন হয়। রাস্তাটার নাম ফুলের নামে রাখতে গিয়ে ভুল করে রাখলাম শিউলী। শিউলীর মাঝে হেঁটে যাচ্ছি, সেদিনের ভোরের মত।
থামুন! মাঝখানে ঝুলন্ত ব্রীজ।
দশ.
বিন্দু bindumag.com
ইদানিং আমি সার্কাসময় জীবনে হাঁটছি। শরীরের ভেতরে বন্য শুয়োর পুষে রাখি, নিকোটিন শুঁকে নিতে। অজানা অরণ্যে চলি, এপিটাফে সূচনা করি নতুন অধ্যায়। যেখানে আমার হেঁটে চলা, ঘাসের বুকে ইশ্বর খুঁজে। আমার প্রাচীন ইতিহাসের প্রচ্ছদ খুলে দেখি সব বিন্দুর তরঙ্গ। চর্চা করি শুয়োরবিদ্যা। মুখ ডুবিয়ে রাখি ঘেঁচুফলে। দেশপ্রেম, সমাজতন্ত্র, সংষ্কৃতি সবকিছু মানুষের ভীরে ঠেলে দিয়ে আমি শুয়োরের পালে যোগ দিয়েছি। আর লাল আলো দেখি না আঁকি অন্ধকার রক্তশূন্যতা। বোধ, আমার কাছে অর্কিডের মত ভূগোলহীন।
সবগুলোই বেশ দারুণ
উত্তরমুছুনSundor..
উত্তরমুছুন