●
কবিদের কাফনে কবিতার সংযুক্তি প্রয়োজন।
বিন্দু bindumag.com
●
আজ থেকে আমি ঐ বেশ্যার বন্ধু,
শরীর ছুঁতে যার ভালোবাসা নয় শুধু টাকার প্রয়োজন,
আজ থেকে আমি নিশাচর ভবঘুরে নই,
আমিও এক নিশিবালিকার দ্বৈত সংলাপ।
বিন্দু bindumag.com
●
পৃথিবীর সব মানুষ হৃদয়ে গোলাপের বীজ নিয়ে জন্মায়,
অথচ কি নিদারুন অভিমানে করে যায় ধুতুরার চাষ!
বিন্দু bindumag.com
●
দেখা হবে ঝুঁকিপূর্ন কোন উপতক্যায়,
যেখানে আমার মুখোমুখি-
তুমি অথবা মৃত্যু।
বিন্দু bindumag.com
●
তোমার চুম্বনের পর-
আমার ঠোঁটের বয়স আর বাড়েনি।
বিন্দু bindumag.comপুঁতে দিন
বিন্দু bindumag.com
মনে করুন, অজ্ঞাত কারও মৃতদেহে উড়ছে মাছি,
ধরে নিন, ওটা সোয়েব মাহমুদের মৃতদেহ,
আশেপাশে খোঁজ করুন, আরেকটি লাশ খুঁজে পাবেন,
ওটার নামও জেনে নিন, রাকিবুল হায়দার!
চারপাশে আততায়ী নিয়ে চায়ের চুমুকে আলাপ জমানো-
এই দুই কবির এমন মৃত্যুতে অবাক হবেন না দয়া করে,
অজ্ঞাতনামা লাশ হিসাবেই তাদের মাটিচাপা দিন,
নইলে আবার জেগে উঠে- নামিয়ে আনবে আততায়ীর মিছিল!
সজীব গাছ
বিন্দু bindumag.com
আমার একটা শৈশব ছিলো। যেখানে হাঁটু পর্যন্ত ধুলোয় ঢেকে যেতো পা। আমি আজন্ম ভবঘুরে। হেঁটে হেঁটে কত দূরের বাঁশের সাঁকো, কালভার্ট, সবুজের মাঝখান দিয়ে ধুম করে ছুটে চলা রেলপথ পেরিয়ে গেছি, সেইসব আমার শৈশবের চোখজোড়া জানে। রেললাইনের পাশে চন্দ্রমল্লিকা ফুল ফুটে থাকতো। আর রেললাইনের উপর ফুটে থাকতো অদ্ভুত সংকোচে হাত ছুঁয়ে হেঁটে যাওয়া প্রেম। আমার কাজটা ছিলো, এইসব দেখার। আমি তখন সবই দেখতাম। এই যে চাঁদ, এর কত রকমের চেহারা দেখা হয়ে গেছে ঐ শৈশবেই। কেমন নির্লজ্জের মতো আমার পিছু পিছু ছুটে বেড়াতো এইসব চাঁদ। আর আমি পিছু নিতাম জোনাকীর। সংরক্ষণের জন্য কোনো কাঁচের বয়াম ছিলোনা বলে দুই হাতের করতলই ভরসা! হাতের মুঠোয় জ্বলতো-নিভতো স্বর্গের অবাক করা হলদে আলো!
বিন্দু bindumag.com
ভাবছি শৈশবেই ফিরে যাবো। প্রাপ্তবয়স্ক চুম্বনের চেয়ে আমার ফুলের গোড়ায় লুকিয়ে থাকা মধুর চুমুকটাই ভালো! শৈশবের ফিরিয়ে নেবার কোনো ট্রাভেল এজেন্সি চেনা থাকলে জানাবেন দয়া করে। কম খরচে কোন কোম্পানি শৈশবে নিয়ে যাবে, আর ফিরিয়ে আনবেনা!
বিন্দু bindumag.comশুনেছিলাম
বিন্দু bindumag.com
লোকটার মৃত্যুর পর আমরা কয়েকজনই গিয়েছিলাম দেখতে,
আমি এবং অচেনা কিছু মুখ তাকিয়ে ছিলাম লোকটা অথবা লাশটার দিকে,
জীবনকে সে কি কি দিয়ে গিয়েছিলো, জানিনা,
তবে জীবন তাকে কুৎসিত একটা মৃত্যুর পোষাকে ঢেকে দিয়েছিলো,
সেই পোষাক খুলে নেবার জন্য আমাদের তৃতীয় কোনো হাত ছিলোনা,
আমাদের যে দুইহাতে আমরা অজস্রবার প্রেমিকার পোষাক খুলেছি,
ঐসব ব্যস্ত হাতে এই নিষিদ্ধ পোষাক খুলবার অধিকার নেই,
আমরা তাই লোকটা অথবা লাশটার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে-
তার বুকসেলফ ঘেঁটে দেখি,
বইগুলো খুলে দেখতে গিয়ে মেঝেতে খসে পড়ে পুরানো একটি পোষ্টকার্ড,
প্রাপক অথবা প্রেরকের জায়গাটুকু খালি রাখার অভ্যাসে ভোগা লোকটা-
কোনো শিরোনাম ছাড়াই অচেনা কাউকে লিখে গেছে- "আমি ফিরে আসবো, অপেক্ষা করো।"
আমি এবং আমরা একটা চৌকানা টেবিল খুঁজে নিয়ে, মানুষটার ফিরে আসবার অপেক্ষা করি।
নিবেদিতা - এক শহরের নাম
বিন্দু bindumag.com
নিবেদিতা, আঙুলে গোলাপ ছুঁয়ে তুমি হেসে ওঠো প্রাণখুলে,
আমি তোমাকে নিয়ে আবার লিখে ফেলি সম্মোহনী কোনো কবিতা,
জানি, তোমার-আমার মাঝখানে এখনো একজন পুরুষ বাড়ি ফিরে,
তোমার ঠোঁটে রাখে আলতো অগভীর চুম্বন।
ব্যাগভর্তি বাজারের হাঁসফাঁসে তুমি ভুলে যাও-
তোমার স্কুলব্যাগে জমানো পুরানো সেইসব চিঠির আলাপন।
তোমাকে এখনো মনে পড়ে আমার,
জানি, আমাকেও তুমি ভুলে যাওনি কোথাও,
শুধু বাস্তবতার দোহাই দিয়ে তোমার চলে যাওয়ার মানচিত্রে,
ফিরে আসার কোনো পথরেখা নেই।
তোমার ওখানে যখন বিকেলগুলো কফির মগে আয়েশী চুম্বন আঁকে,
আমার এখানে ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা এ জড়ানো থাকে বিষন্নতা।
যদি তুমি ওই পুরুষের সাথে প্রাণ খুলে হেসে উঠতে,
আমি হয়তো পরাজয় মেনে নিয়ে এই শহর ছেড়ে বিবাগী হতাম,
তোমার ঠোঁটের কোনে জমাট বাঁধা আয়োজিত হাসি, এখনো আমাকে আশাবাদী করে তোলে,
এখনো বিশ্বাস করতে শেখায়, ভালোবাসা কখনো হারায় না,
শুধু মানুষ হারিয়ে যায়, চলে যায় অন্য কোথাও।
নিবেদিতা, তোমার আর আসবার কোনো দরকার নেই আমার কাছে,
বরং আমিই একদিন হুট করে চলে আসবো তোমার জানালায়,
সেদিন আমাদের মাঝখান থেকে মুছে যাবে সব ব্যাবধান,
পুরুষের বদলে তোমার হৃদয় আবার দখলে নেবে পুরানো এক প্রেমিক।
ভাবনায় ত্রস্ততা
বিন্দু bindumag.com
তোমার যোনী নিয়ে ক্রমাগত ভাবনার ফলাফলে-
আমি ভুলে যাই তুমিও একটা জরায়ু বহন করো।
শরীরবিদ্যার ছাত্র না হয়েও আমি বলে দিতে পারি-
ঐ জরায়ুর অভ্যন্তরীণ গঠনপ্রণালী।
ওখানে একটা আস্ত খেলার মাঠ আছে,
আছে তাপানুকু্ল শোবার ঘর,
গোটা কয়েক শিশু পুরো একটা শীতনিদ্রা ওখানেই কাটিয়ে দিতে পারে,
যোনী তখন আর কোনো যৌন আচরণের ভঙ্গি তোলেনা,
বরং একটা দরজা ক্রমাগত খুলে যেতে থাকে,
শিশুকে এই পৃথিবীর পাঠশালায় পাঠানোর জন্য।
বিন্দু bindumag.com
পারমিতা এবং
বিন্দু bindumag.com
পারমিতা, এক চৈত্রসংক্রান্তির রাতে আমার হাঁটুতে মাথা রেখে-
তুমি জানতে চেয়েছিলে সুন্দরের সংজ্ঞা,
তারপর আমি তোমার গ্রীবা, স্তন আর অনুভূতির সমস্ত রোপকূপে,
সুন্দরকে ভাগ করে দিয়ে, এই ঠোঁটে ছুঁয়েছি সুন্দর।
তুমি জানতে চেয়েছিলে, তোমাকে কি নামে ডাকবো?
আমি মেঘ-সমুদ্র-পাহাড়ের নামে তোমাকে অজস্র উপমায় ডেকেছি।
তুমি যেদিন আরো বেশি মিশে গিয়েছিলে আমার মাঝে,
সেদিন রাত পৌনে তিনটায়, তোমার কপালের টিপ হারিয়ে যাওয়ার পর-
আমি চাঁদকে আহ্বান করেছিলাম, তোমার কপালে স্থায়ী আবাস গড়তে;
চালাক চাঁদ প্রত্যাখ্যান করেছিলো, কারণ বলেনি। তবু আমি জানি-
তোমার সাথে সৌন্দর্যের লড়াইয়ে হেরে যেতে চায়নি চাঁদ।
আমি আমার নাকে-মুখে মেখেছি তোমার চঞ্চল চুল।
এরপর ক্যালেন্ডারের পাতায় পাতায় অজস্র চৈত্রসংক্রান্তি এসে ফিরে গেলো,
তোমাকে ছোঁয়া হয়নি আর, তোমার সাথে দেখাই হয়নি!
পারমিতা, তোমাকে নিয়ে ভাবা উপমাগুলো আজকাল-
আমার ভাবনার কাঁটাতারে বিষণ্ণতার আবাস গড়ে।
পারমিতা
বিন্দু bindumag.com
গতকাল যে লোকটি রাস্তা পার হতে গিয়ে বাসচাপায় মারা গেলো,
তার সাথে হয়তো আমার কোনদিনই দেখা হয়নি।
যে মেয়েটির এবার পূজোয় কোন নতুন শাড়ি মেলেনি,
তার সাথে আমার দেখা হয়েছিলো।
আমার পুরানো কোন ডায়েরীর পাতায়-
তার ঠোঁটে এঁকে দেওয়া প্রথম চুম্বনের তারিখটা লেখা আছে।
একটা সময় ছিলো, যখন প্রতিদিন আমার দরজায়,
কে যেন রেখে যেতো অন্তত একটা গোলাপ।
সে ফুল কোন বাগান হতে কে তুলে নিয়ে আসতো, আমি জানিনা।
শুধু যেদিন সকালবেলায় দরজা খুলে কোন ফুল পাইনি,
স্পষ্ট মনে আছে, সেদিন প্রিয় কারো মৃত্যুতে আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি।
সহমরণ
বিন্দু bindumag.com
তোমার শহরে আমি মৃত ঘুম,
জেগে থাকি ধোঁয়া ওঠা অলৌকিক এক কবরের খাদ ছুঁয়ে,
যে পাখি গান ভুলে যায়,
তার ঠোঁটে আমি রাত নামিয়ে আনি।
ঠিক সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরে ট্রেন,
এরপর নীরবতার কফিনে গোলাপের ছড়াছড়ি।
প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা এক পুরানো পাগল,
বাতাসে আঁকে ভালোবাসার যত আক্ষেপ।
আমি ফিরে যাই না কোথাও,
তোমার কাছেই হয়তো আসি,
মনে মনে অজস্রবার বলি,
তোমাকেই, শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।
তবু জানি মেয়ে, আমাদের সহমরন হবেনা,
তুমি একা বেঁচে থাকবে।
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন
বিন্দু bindumag.com
চারপেয়ে কুকুরের মতো হামাগুড়ি দিয়ে দাঁড়াই,
গড়াগড়ি খাই ধূলোয়, গড়িয়ে পড়ি নর্দমায়,
সমস্ত শরীরে কাদামাটি মেখে রোদে শুকাই,
এতক্ষনে হয়তো ভনিতার অপবাদ ছড়িয়ে যাবে লোকালয়ে,
কেউ কেউ বলবে মাইকেল এঞ্জেলোর ডেভিড সাজবার ফন্দি এটা।
সস্তার নেশায় আমি বুঁদ হয়ে থাকবো,
দাবী করবোনা কোন ব্যাথা লুকাচ্ছি কোথাও,
এটা হয়তো নিছক ছেলেমানুষী অথবা পাগলামিও হতে পারে,
দূরত্ব বাড়িয়ে নিতে চাইলে, তবে তাই হোক,
আমাকে একা চলতে হবে, এটা ঈশ্বরের প্রজ্ঞাপনেই লেখা ছিলো,
সাড়ে ছয়শকোটি মানুষের ভিড়ে দাঁড়িয়ে,
আমি নাহয় একলাই অমানুষ হয়ে বেঁচে থাকি।
কেউ হয়তো জানবেনা কোনদিন,
কোথাও কোথাও ফুটনোটে লেখা ছিলো, মন্তব্য নিস্প্রয়োজন!
মন্তব্য