যেটা প্রয়োজনীয়, সেটা হচ্ছে জাদু
লেখালেখি নিয়ে হারুকি মুরাকামির পরামর্শ
অনুবাদ: রাশা নোয়েল
হারুকি মুরাকামি; জন্ম ১২ই জানুয়ারি, ১৯৪৯ সালে। জাপানিজ এই লেখকের লেখা অনূদিত হয়েছে ৫০টি ভাষায়। তাঁর কিছু বিখ্যাত কাজঃ ‘আ ওয়াইল্ড শিপ চেইজ’, ‘নরওয়েজিয়ান উড’, ‘কাফকা অন দ্যা শোর’। বিভিন্ন জায়গায় হারুকি মুরাকামি’র দেয়া ইন্টারভিউ বা বক্তব্যের অনুবাদ করেছেন রাশা নোয়েল। মূল লেখার লিংক।
পড়া
আমি মনে করি- উচ্চাকাঙ্ক্ষী ঔপন্যাসিকদের সবার আগে গাদা গাদা বই পড়তে হবে। এইরকম সাধারণ পর্যবেক্ষণের জন্য দুঃখিত, কিন্তু কোনো প্রশিক্ষণই চূড়ান্ত নয়। একটি উপন্যাস লেখার জন্য, সবার আগে বুঝতে হবে- কীভাবে ‘কোনোকিছু’ বা ‘যে-কেউ’ একত্রিত হয়। বিশেষভাবে, যৌবন থাকতে থাকতেই যত বেশি সম্ভব উপন্যাস পড়তে হবে।
বিন্দু bindumag.com
সবকিছুই হাতের কাছে পাওয়া যায়- ভালো উপন্যাস, অত-ভালো-নয় উপন্যাস, বিরক্তিকর উপন্যাস, যতক্ষণ তুমি পড়া চালিয়ে যাচ্ছো- ওসব একদমই বিষয় না। শারীরিকভাবে যত বেশি সম্ভব গল্পসমূহ শুষে নাও। ভালো ভালো লেখার সাথে নিজেকে পরিচিত করাও, এমনকি সাধারণ লেখাগুলোর সাথেও! এটাই সবচে গুরুত্বপূর্ন কাজ।
পুরোনো শব্দগুলো নাও এবং তাদের নতুন করো
বিন্দু bindumag.com
আমার সব-সময়ের অন্যতম পছন্দের জ্যাজ পিয়ানোবাদক হলেন থিওলনিয়াস মংক। একদিন, তাঁকে যখন কেউ জিজ্ঞেস করলেন যে, কীভাবে তিনি পিয়ানো থেকে এত সুন্দর বিশেষ আওয়াজ পান? মংক তখন পিয়ানোর দিকে তাক করে বললেনঃ ‘এটা কোনোভাবেই নতুন নোট হতে পারে না। যখন তুমি পিয়ানোর রিডের দিকে তাকাও, সবগুলো নোট ইতোমধ্যেই আছে ওখানে। কিন্তু তুমি যদি কোনো নোটকে সত্যিই বোঝাতে চাও, ওটা আলাদা আওয়াজ করবেই। যেসব নোটস তুমি বোঝাতে চাও, সেসব তোমাকেই তুলতে হবে!’
বিন্দু bindumag.com
মাঝেমাঝে এইসমস্ত কথা আমি স্মরণ করি লেখার সময়, এবং ভাবি- ‘এটা সত্য যে আসলে কোনো নতুন শব্দ নেই। আমাদের কাজ হচ্ছে নতুন অর্থ দেয়া এবং একদমই সাধারণ শব্দগুলোকে বিশেষ করে তোলা।’ এই ভাবনা আমার কাছে ভরসাজনক মনে হয়। এর অর্থ বহুদূর প্রসারিত, উর্বর জমিজমা শুধু অপেক্ষা করে আছে তাদেরকে চষবার জন্য।
নিজেকে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করো
বিন্দু bindumag.com
আমি যখন লিখি, আমি কিছু ছবি পাই এবং একটির সাথে আরেকটিকে যুক্ত করি। এটাই ‘স্টোরি-লাইন’ বা বস্তু/কথাবস্তু/উপজীব্য। এরপর আমি সেই কথাবস্তু/উপজীব্যকে পাঠকের কাছে ব্যাখ্যা করি। কোনোকিছু ব্যাখ্যা করবার সময়ে তোমাকে বিনয়ী হতে হবে। তুমি যদি ভাবো- ‘ঠিক আছে, আমি তো এটা জানি’, এটা খুবই উদ্ধত শোনায়। সহজ শব্দ এবং ভালো উপমা; ভালো রূপককাহিনী। তো এটাই আমি করি। খুব সাবধানে এবং পরিষ্কারভাবে আমি ব্যাখ্যা করি।
স্বপ্ন ভাগাভাগি করো
বিন্দু bindumag.com
স্বপ্ন দেখা ঔপন্যাসিকদের জন্য জরুরি, কিন্তু তার চেয়েও জরুরি অন্যদের সাথে তা ভাগাভাগি করে নেয়া। ভাগাভাগি করার এমন মানসিকতা না থাকলে আমরা ঔপন্যাসিক হতে পারবো না।
খুঁজবার জন্য লেখো
বিন্দু bindumag.com
আমি নিজে যখন লিখি, তখন জানি না আসলে কাজটা কে করছে। পাঠক এবং আমি একই সমতলে থাকি। যখন কোনো গল্প লেখা শুরু করি, এর উপসংহার আমি আদৌ জানি না এবং এটাও জানি না যে এরপরে কি হতে যাচ্ছে। যদি একেবারেই শুরুতে কোনো হত্যা-দৃশ্য থাকে, আমি জানি না হত্যাকারী কে। বইটি আমি লিখি কারণ আমি খুঁজতে চাই। যদি আমি জেনেই যাই যে হত্যাকারী কে, তাহলে গল্পটি লেখার আসলে কোনো উদ্দেশ্য নাই!
উপন্যাসে যোগ করবার মত জিনিস মজুদ করো
বিন্দু bindumag.com
স্পিলবার্গের সিনেমা ‘ই,টি’র ঐ দৃশ্যের কথা মনে আছে? যেখানে ই,টি গ্যারাজ থেকে বের করা ময়লার স্তূপ হতে ট্রান্সমিটিং যন্ত্র বানায়? সেখানে আছে একটা ছাতা, মেঝের বাতি, বাসনকোসন, রেকর্ড প্লেয়ার- অনেক আগের দেখা সিনেমা, আমি সবকিছু মনে করতে পারছি না, কিন্তু সে (ই,টি) সব ব্যবহারের জিনিশপাতিকে এমনভাবে জোড়া দেয় যে অদ্ভুতুড়ে সে যন্ত্রটি ঠিকই হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরের তাঁর গ্রহের সাথে ভালোভাবেই যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়! ঐ দৃশ্য থেকে বিশাল ধাক্কা খেয়েছিলাম আমি, কিন্তু এটা এখন আমাকে জানান দেয় যে- উপন্যাসে এভাবে সব জোড়া দেয়া বিশাল ব্যাপার। মূল বিষয় আসলে উপাদানের মান নয়- যা দরকার, তা হলো জাদু। যদি জাদু থাকে, তাহলে একেবারেই ঘরোয়, মৌলিক নিত্যদিনকার জিনিশপাতি এবং সাধারণ ভাষাও রূপান্তরিত হতে পারে বিস্ময়কর আধুনিক যন্ত্রে!
বিন্দু bindumag.com
পুনরাবৃত্তি সাহায্য করে
যখন আমি উপন্যাস লেখার ঘোরে থাকি, ভোর চারটায় উঠে যাই এবং ৫-৬ ঘণ্টা কাজ করি। বিকালে, ১০ কিলোমিটার হাঁটি, অথবা দেড় কিলোমিটার সাঁতার কাটি (অথবা দু'টোই), এরপর আমি খানিক পড়ি এবং কিছু গান শুনি। বিছানায় যাই ৯ টায়। কোনোপ্রকার বৈচিত্র্য ছাড়াই আমি প্রতিদিন এই নিয়ম মেনে চলি। পুনরাবৃত্তি বিষয়টা নিজেই একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয়; এটা সম্মোহনের একটা গঠন। মনের একটা গভীর অংশে পৌঁছতে আমি নিজেকে সম্মোহিত করি। কিন্তু, ছয় মাস অথবা পুরো একটি বছর এই পুনরাবৃত্তি ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট মানসিক এবং শারীরিক শক্তি প্রয়োজন। এইক্ষেত্রে, একটা লম্বা উপন্যাস লেখা মানে হচ্ছে অস্তিত্ব রক্ষার প্রশিক্ষণ। শারীরিক শক্তি, শৈল্পিক সংবেদনশীলতার মতই জরুরি।
বিন্দু bindumag.com
একই সময়ে একদিকে মনোযোগ
যদি আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, মেধার পরে ঔপন্যাসিকদের জন্য সবচে জরুরি গুণ কোনটি, আমি বলবোঃ মনোযোগ- একটা সময়ে ক্রিটিকাল কোনোকিছুর প্রতি সকল প্রকার সীমাবদ্ধ মেধা নিয়ে মনোযোগী হওয়ার ক্ষমতা। এটা ছাড়া আদতে তুমি মূল্যবান কোনোকিছু সাফল্যের সাথে শেষ করতে পারবে না, যেখানে, তুমি যদি কার্যকরী মনোযোগ দিতে পারো, তবে সীমাবদ্ধ মেধার কমতিতে তা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিগণিত হবে। এমনকি, একজন ঔপন্যাসিক যিনি কি না অনেক মেধাসম্পন্ন এবং যার মন নানাবিধ নতুন তত্ত্বে ভরপুর- তিনিও হয়ত লিখতে পারবেন না একটা বাক্যও, যদি দাঁতের ব্যথায় তিনি ভুগতে থাকেন (যা অমনোযোগীতা সৃষ্টি করবে)
বিন্দু bindumag.com
যদিও ‘ফিকশন’এর পাশাপাশি প্রবন্ধধর্মী লেখাও লিখি, সময় ও পরিস্থিতি অন্যকিছু নির্দেশ না করলে- একটা উপন্যাস লেখার সময় আমি অন্যকিছুতে মনোযোগ দেয়া এড়িয়ে চলি। এবং অবশ্যই, এমন কোনো নিয়ম নেই যে- প্রবন্ধ এবং গল্পে একই উপাদান ব্যবহার করা যাবে না, কিন্তু আমি দেখেছি- এটা যেকোনোভাবেই হোক- ‘ফিকশন’কে দুর্বল করে।
ধৈর্য্য/সহিষ্ণুতার চাষ
মনোযোগের পর, ঔপন্যাসিক দের জন্য পরবর্তী জরুরি বিষয় হলো- ধৈর্য্য। যদি তুমি একদিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লেখায় মনোযোগী হও এবং এক সপ্তাহ পরে ক্লান্ত বোধ করো, তাহলে একটা বড় কাজ শেষ করতে পারবে না তুমি। ‘ফিকশন’ লেখকদের জন্য যা প্রয়োজনীয়, তা হলো- ছয় মাস, এক বছর বা দুই বছরের জন্য প্রতিদিন মনোযোগের শক্তিটা ধরে রাখা। এটাকে তুমি নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সাথেও তুলনা করতে পারো।
ভাষার সাথে পরীক্ষণ
বিন্দু bindumag.com
সব লেখকের জন্মগত অধিকার ভাষার সম্ভাবনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, যতভাবে ভাবা যায়। এই বিষয়টি ছাড়া নতুন কোনোকিছু জন্মাতে পারে না।
আত্মবিশ্বাস রাখো
সবচে জরুরি বিষয় হলো- আত্মবিশ্বাস। তোমাকে বিশ্বাস রাখতে হবে যে গল্প বলার ক্ষমতা, পানির শিরায় আঘাত করবার ক্ষমতা, ধাঁধায় ইঙ্গিতগুলো একত্র করে মেলানোর ক্ষমতা তোমার আছে। এসব আত্মবিশ্বাস ছাড়া, তুমি কোথাও যেতে পারবে না। এটা অনেকটা বক্সিঙের মত, একবার ‘রিং’এ ঢুকে গেলে আর বেরোবার উপায় নেই, ফাইট শেষ করে আসা পর্যন্ত!
‘ডিম’এর পক্ষে লেখো (মেটাফোরিক)
এই একটা বিষয় আমি মনে রাখি ‘ফিকশন’ লেখার সময়। একটা পাতায় কোনোকিছু লিখে সেটা দেয়ালে জুড়ে দেয়া পর্যন্ত আমি যাইনি, বরং আমার মনের দেয়ালে এটা অঙ্কিত, এরকমঃ
বিন্দু bindumag.com
‘উঁচু, শক্ত দেয়াল এবং একটা ডিমের মধ্যে (যে ডিম দেয়ালে ভাঙে)- আমি সবসময়ই ডিমের পক্ষে দাঁড়াবো।’
বিন্দু bindumag.com
হ্যাঁ, এটা কোনো বিষয়ই না, যত শুদ্ধই হোক না কেন দেয়াল অথবা যত ভুলই হোক না কেন ডিম, আমি ডিমের সাথেই থাকবো। অন্য কাউকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে- কোনটা শুদ্ধ আর কোনটা ভুল; সময় কিংবা ইতিহাস হয়ত তা নির্ধারণ করবে।
বিশ্বকে পর্যবেক্ষণ করো
তোমার দেখায় প্রতিফলিত হোক, মনে রাখবে, যদিও, প্রতিফলিত করার অর্থ এই না যে- তুমি যা পর্যবেক্ষণ করছো তার শুদ্ধ-ভুল নির্ণয়, যোগ্যতা-অযোগ্যতা পরিমাপের তাড়া। মূল্য যাচাই করা থেকে সচেতনভাবে বিরত থাকো- উপসংহারে ছুটে যেও না। পরিষ্কার উপসংহারে পৌঁছানো না, বরং একটা নির্দিষ্ট অবস্থার বিশেষ বিষয়গুলো ধরে রাখাই গুরুত্বপূর্ণ।
বিন্দু bindumag.com
আমি চেষ্টা করি একটা দৃশ্যের যতখানি সম্ভব ‘চিত্র’ ধরে রাখতে। সেই দৃশ্য হতে পারে- আমার পর্যবেক্ষণ, মানুষের সাথে আলাপ, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি। সেইসব দৃশ্যে ফিরেও যেতে পারি, এবং দেখতে পারি বারবার, যখন আমার অনুভূতি বসে যায় এবং তাড়াহুড়ো কমে যায়- আমি সেইসব দৃশ্য বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মাপি। অবশেষে, যদি এবং দেখা যায় যে এটা দরকার- তখন আমি আমার নিজের মত উপসংহার টানি।
চেষ্টা করো কেউ যেন আঘাত না পায়
বিন্দু bindumag.com
আমি মনে রাখি, যখন লিখি- আমার কলম যেন বেশি শক্তিশালী না হয় (আঘাত না করা অর্থে)। আমি আমার শব্দগুলো এমনভাবে বাছাই করি যেন কম সংখ্যক মানুষ আঘাত পায়, কিন্তু এটা অর্জন করা বেশ কঠিন। যে কিছুই লেখা হোক না কেন, সবসময়েই কেউ না কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এইসবকিছু মনে রেখে আমি চেষ্টা করি এমনভাবে লিখতে যাতে করে কেউ আঘাত না পায়। এটা সব লেখকেরই অনুসরণ করা উচিত।
তোমার পাঠকদের ভ্রমণে নাও
বিন্দু bindumag.com
যখন আমি ‘আ ওয়াইল্ড শিপ চেইজ’ লিখি, তখন শক্তভাবে অনুধাবন করতে পারি যে, গল্প- ‘মনোগাতারি’ (সিরিজ), আসলে তোমার সৃষ্টি কিছু না। এটা এমনকিছু যা তুমি তোমার নিজের ভেতর থেকে বের করো। গল্পটা ইতোমধ্যে ওখানেই আছে, তোমার ভেতর। তুমি ওটা তৈরি করতে পারো না, শুধুমাত্র বের করে আনতে পারো। এটা আমার জন্য সত্য, আর- এটাই গল্পের স্বতঃস্ফূর্ততা। আমার জন্য, গল্প আসলে একধরনের গাড়ি, যা পাঠককে কোথাও নিয়ে যায়। যেকোনো তথ্যই তুমি বহন করবার চেষ্টা করো না কেন, যেকোনোকিছুর সামনে তুমি পাঠকের অনুভূতির দুয়ার খুলে দিতে চাও না কেন- যে জিনিসটি প্রথম তোমাকে করতে হবে, তা হলো- পাঠককে সেই গাড়িতে ওঠানো। গাড়ি- গল্প- ‘মনোগাতারি’ (সিরিজ) এসবের ভেতর থাকতে হবে পাঠককে বিশ্বাস করানোর মত শক্তি।
মানুষের ওপর আলো ফেলার জন্য লিখো
বিন্দু bindumag.com
উপন্যাস লেখার একটামাত্র কারণ আছে আমার, তা হলো- ব্যক্তিসত্তার মর্যাদা দান এবং তাদের আলোকিত করা। গল্পের উদ্দেশ্য হলো জাগ্রত রাখা, পদ্ধতি বা ব্যবস্থার ওপর আলো ফেলা যাতে করে সেই পদ্ধতি বা শৃঙ্খলা আমাদের আত্মাকে ওটার জালে আটকাতে এবং হীন করতে না পারে। আমি সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করি, ঔপন্যাসিকের কাজ হলো গল্প লেখার মাধ্যমে প্রত্যেক সত্তার মৌলিকতা ব্যাখ্যার চেষ্টা করে যাওয়া- সেই সমস্ত গল্প, যেসব গল্প জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে, যেসব গল্প মানুষকে কাঁদায়, ভয় পাওয়ায়, হাসিতে মুখরিত করে। এইজন্য আমরা লিখি, দিনের পর দিন, আন্তরিকতার সাথে গল্প বানিয়ে...
মন্তব্য