বিন্দু bindumag.com
সিনারি -১
বিন্দু bindumag.com
ময়না মিয়া ময়না পাখিগিলারে 'ম্যা ম্যা ম্যা' কওয়ার সাত দিনের উড়াধুরা ট্রেনিং দেয়ার পরও ময়না পাখিগিলা 'ম্যা ম্যা ম্যা' বলিবার বদলায় 'জুলেকা জুলেকা' বলিলো। রাগে-ক্ষোভে-দুঃখে ময়না মিয়া 'বানদির পুতেরা, মাদার চোদেরা, খানকির পুলারা...' বলে অনরবরত দশ ছবক গালি ময়না পাখিরে দিলো। জুলেকা বেগম মাটির চুলায় আলুর চপ রানতে ছিলো। তখন আলু সিদ্ধ হয়ে হলুদ -পেঁয়াজ -টমেটো-ধনে পাতার মিশ্রিত ঘ্রাণ নাকে এসে এক ধরনের বয় আসতাছে। তখনি জুলেকা বেগম স্বয়ামির কাণ্ড-কারখানা দেখে হাসি কোনো রকমে চেপে বললো- ‘পাখির লগে চেতেন কা, পাখি কি মানুশ?’
বিন্দু bindumag.com
ময়না মিয়া খুব আস্তে করে 'মাগির ঝি' গালি দিয়া বাকি কথাহান জোরে কইরা বললো জুলেকার দিকে চাইয়া - চেরম্যানের গোয়া মারা খাইলে তো আমি খামু। পেত্নীর লাহিন কুলকুলানি খেমা দিবি? উল্লেখ করা দরকারি যে, ময়না মিয়া লাস্ট কথাহান বলিবার মুহূর্তে তার চোখ দিয়া যে আগুনের গোলা বের হয়ে জুলেকার চোখ -মুখ -শরীরে লাগিতে ছিলো যেন ময়না মিয়ার রাগে আগুন ধরে গেলো জুলেকার পরনের শাড়িতে। এতটুকুর পর একেবারে নীরব -নীরব -নীরব সময় বয়ে গেল তাদের দুজনকার মধ্যিখানে। এ নীরবতা ভাঙলো জন্মগলাভাঙা মতি হেডটার যুহরের আজানে - আল্লা হু আকবার... আল্লা হু আকবার... (যেন উনার গলার রগ ছিঁড়া যাইতাছে)
বিন্দু bindumag.com
অতঃপর ময়না মিয়া গোসলের উদ্দেশ্য কালাসোনা নদীর দিকে গমন করিলো। এ মনে করে যে এহনো গোছল দেই না যুহরের আযান পড়ে গেল। তাই গোছল দিয়া আইসা আলুর চপ খেয়ে সেরে আবার ময়না পাখিগিলারে 'ম্যা ম্যা ম্যা' বলা শিখাই, আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি কালই রাণীর জনসভা! রাণীর পার্টির নাম ছাগল পার্টি, প্রতীক ছাগল, উনার বংশের পদধি বকরি। যখন রাণী লাল গালিচা পার হয়ে রাজছাগল লয়ে পার হয়ে যেতে থাকবো তকন ময়না মিয়ার পাখিগিলা সমস্বরে স্লোগানের সহিত চিল্লাইয়া কহিবে- 'ম্যা ম্যা ম্যা'। এটাই ইউপি চেরম্যান খোদাবক্স মৃধার প্ল্যান। 'ম্যা ম্যা ম্যা' হচ্ছে ছাগল পার্টির স্লোগান। এতে কাউজাকান্দি উপজেলার নমিমেশন খোদাবক্স মৃধা পাইতে পারেন এ অভিনব চমকের লাগি। যদি খোদা কৃপা করে আর যদি রাণী রহিমা বকরির কৃপা হয় আর দিল খুশবু হয় এমপি সাবের। আর এদিকে ময়না মিয়ার কপালে জুটিবে 'ছাগলের বিরিয়ানি' আর হাজিরা ৫০০ টাকা আর যদি একটু খুশি হয়ে চেরম্যান সাব ময়না মিয়ারে ৫০ টা টাকা বকশিশ দেয়। এতেই ময়না মিয়ার বড় ঈদের দিন বহিতে থাকবে দিলে, বাজিতে থাকবে দিলে 'আজকে মোদের ঈদের দিন'।
বিন্দু bindumag.com
দিলবার জেলা শহরে অমুক-তমুক-চমুক নেতাদের পোস্টারে সয়লাব, 'বাদ যাবে না একটি শিশু' টাইপ বাদ যাবে একটি দেয়াল পোস্টার ব্যতীত। পোস্টারে লেখা - জননেতা,গনতন্ত্রের রক্ষাকর্তা, উন্নতির আবক্ষ মূর্তি, বীর কন্যা, রাণী রহিমা বকরির শুভ আগমন উপলক্ষে অমুক-তমুক-চমুকের পক্ষ হইতে লাল-নীল-অইলদা-বাদামি -খয়েরি ফুলের শুভেচ্ছা। আর পোস্টারে উপরে ছাগলের ছবি বড় করে দেয়া। তার উপরে ছোট্ট করে লেখা -ছাগল পার্টির জয় সুনিশ্চিত -উগাণ্ডা চিরস্থায়ী হোক। আর শহরের যত বিলবোর্ড, গাছ-গাছড়া, যত খুঁটি আছে যেখানে জায়গা পাইছে হেনে ছাগল পার্টি ব্যানার আর রাণীর আগমন উপলক্ষে কোটি কোটি লাল -বাদামি-আকাশি-খয়েরি-গু কালারের গোলাপ ফুলের শুভেচ্ছা। উগাণ্ডায় ছাগল পার্টির টানা ৬ বছর শাসনের পর সামনেই ন্যাশনাল ইলেকশন, সে তাড়নায় দিলবার জেলায় পার্টির সুবিশাল জনসভা।
বিন্দু bindumag.com
সিনারি -২
বিন্দু bindumag.com
বাহর আলির ছয় পোলাপান। সামনে আরো বাড়তে পারে, আপাতত ছয়। প্রতি সনেই একটা একটা করে বাচ্চা জন্ম দেয়া বাহর আলির কাছে ডাল-ভাত না পান্তা ভাত হয়ে গেছে এ আধুনিক কনডম দুনিয়ায়।তবে শেষ সপ্তাহে 'কাশফুল, ফ্রাক, আমরা করিবো জয়' সহ আরো অনেক এনজির স্বাস্থ্যকর্মী মহিলারা বাহরের বউ কুলসুমারে বলে গেছে বাচ্চা পয়দা বেশি করার অসুবিধা, কেমনে পয়দা করা বন্ধ করা যায় হেনতেন পিএইচডি থিসিসের আলাপ-সালাপ আর লুকাইয়া দিয়া গেছে ১০ টির অধিক কনডম ফ্রি। সে-ও বাহরে খাতির জমা বুঝাইছে এসব। তারপর রাত বিহানে বাহরের শরীর জাগনা হইলে যখন ইস্টিশ পিস্টিশ খেলতে যায় তখন একদিন কনডম লাগিয়ে ১০ সেকেণ্ড করার পর বাহর তার বউরে আস্তে করে কয় -করে মজা পাই না লো। -তয় খুইল্লা লান। পরদিন বাহরের ছোট্ট পোলা ইয়ানূস খেলনার অভাবে কান্দা জোয়ায় দিলে বাহরের বউ কুলসুম মিরছিবের উপরে টিনের কোটা থেকে কনডম ফুলিয়ে বেলুন বানিয়ে খেলতে দিছে। ইয়াকুব -ইয়ানূস-ইয়াসিন কনডমরে বেলুন বানাইয়া খেলতাছে দেখে স্বাস্থ্যকর্মী মহিলারা আজকের সরেজমিন ডিডটিতে এসে মুচকি মুচকি হাসবে না কানবে এ দৃশ্য দেখিয়া বুঝিতে পারিলো না।
বিন্দু bindumag.com
পুরা কাউজাকান্দি উপজেলায় 'সবচে বেশি ছাওয়ালের বাপ' হিসেবে তার বিশেষ কদর হয় কোনো জনসভা হইলে। বিশেষত জনসভা হইলে প্রত্যেক মেম্বর, চেরম্যান, নেতা-খেতা কত জন লোক লইয়া জনসভায় যাইতে পারলো এটা তার ক্রেডিট-ডেবিট-পাওয়ার-ইজ্জত-পেশিশক্তির একটা সাইন। তকন বাহরেরে লয়ে দুগ্রামের মেম্বরের টানাটানি শুরু হয়। মানে বাহরের পোলাপানসহ বাহর জনসভায় যাইবো কার পক্ষের লোক হইয়া। যে বেশি হাজিরা দিবো কয় সে তার পক্ষের লোক হয়ে যায়। ৩০০ টাকা হাজিরার সে এবার খোদাবক্স মৃধার লোক হয়ে যাচ্ছে জনসভায়। তরশু মানে পরশুর পরের দিন জনসভা। তাই আজ রাইত উপোশ থাকবে বাহরের পরিবার। বিকজ কালকে সকালে জনসভা, জনসভার পরই 'ছাগলের বিরিয়ানি'। পেট খালি না থাকলে কেমনে পেটচুক্তি বিরিয়ানি খাইবো। তাই বাহরের বাল-বাচ্চা বুঝে গেছে যেদিন রাইতে নো খানাপিনা পরদিন সকালে বিরিয়ানি মিনস জনসভা। বাহরের পুরা ঘরে ছালা বিছায়া সিরিয়ালে যখন ঘুমায় বাহর-ইয়ানূস(১ বছরের শিশু)-কুলসুমা-ইয়াকুব-ইয়াসিন-ফুলমতি-ফাতিহা-ফরিদা তখন তারা খোয়াবে বিরিয়ানি স্বপ্ন দেখে। নাকে বিরিয়ানির খুশবু আসে তারা নাক টেনে ঘ্রাণ নেয়।আর পাশের বাড়ির বুড়ি মিসির আলির বউ পেয়ারা বিবি বাড়ির পিছে বাহরের ঘরের চিপা দিয়া মুতার বাগানে মুততে যায় তকন সে ও বাহরের ঘর পাছ হইবার সমোয় বিরিয়ানির ঘ্রাণ পায়। বিষয়ডা আজিব আজিব ঠেহে বুড়ির কাছে। ভাবে, এতো বুড়া বয়েসে বুঝি তার নাক ডিস্টাব দিছে।
বিন্দু bindumag.com
বাহর মূর্খ মানুষ, রিকশা চালায়, চাষবাস করে, ক্ষেতে বদলি যায় আর কালাসোনা নদীতে মাছটাছ ধরে রুজি-রোজিগার করে। এতকিছুর পর কোনহান দিয়াই তার অভাব ঢাকনা পড়ে না। কোনদা যে টেহা ফুরায়। কাভি নেহি জ্যা তা হো। আর এ রুজি-রোজগারের দুনিয়ার জনসভা আসলে সে সেদিকে যায়। 'বোনাস বোনাস' লাগে তার কাছে জনসভা। তবে জনসভার পরে আর তা 'বোনাস বোনাস' লাগে না যহন ৩০০ টেহা কওনের পর হাজিরা দেয় ১০০, তারপর সে তওবা কাটে আর যাইবো না। কিন্তু কিন্তু বাহর জানে মেম্বর-চেরম্যান টাইপ জাউরা লোকেগো লগে ঘাড়তেড়ামি করে জুলমুতপুর গেরামে টিকন যাইতো না। সো যায়।
বিন্দু bindumag.com
সিনারি -৩
বিন্দু bindumag.com
মাথায় এক বুলডোজার ওজনের চিন্তা লইয়া কুসুমপুর বাজারে এমন ঠাডা মারা রইদে পানের দোকানে বইসা পান চিবাতে চিবাতে পিক ফেলতাছে ইউপি চেয়্যারম্যান খোদাবক্স মৃধা। তাহার পরনে সাদা লুঙ্গি গায়ে সাদা ফতুয়া আর মুখে পান চিবানির পর জিহ্বা আর ঠোঁট যেমুন লাল রঙা হয় তেমন হইয়া আছে। খোদাবক্স মৃধা টেনশনের ভার নিতে পারে না, সে ভার সে পানের উপর দিয়া চিবোতে চিবোতে চালান করে। ৬ টি পান চিবানোর পরে করার দোকানদার মতি জোয়ারদার যারে লোকে 'মইত্তা' কয় তারে কইলো আরেকটা পান দিতে বেশি কইরা কাঁচা সুপুরি দিয়া। ৭ নাম্বার পান চিবোনির সময় খোদাবক্স মৃধার মাথায় প্ল্যান আসলো। সে বাঙলা ছবির ভিলেন হুমায়ূন ফরিদির মতোন হাসি হেসে তার চেল্লা রনিরে কইলো - পাইছি একখান বুদধি। রনি কইলো - কি বুদধি, মিয়া ভাই? -ধলা ছাগল কিন্না নীল রঙ কইরা দিমু। তয়লেইতো রাজছাগলের ঢক হইয়া গেলো। রনি কইলো - আপনার মাথার মইধ্যে তো বেবাক খেইল মিয়া ভাই। এবার জনোসোভায় একটা বাতিক লাগাইয়া দিমু আমরা দেইখেন।
বিন্দু bindumag.com
এতটুক সংলাপের পর খোদাবক্স মৃধা কুসুমপুর বাজারের চা-পানের টঙ দোকান হতে উঠে চেল্লা রনিরে নিয়া পাশেই গরু-ছাগলের হাট সেথায় গেলো। আর এ যাওয়ার সময় রনি চেল্লার এক প্যাকেট আকিজ বিড়ি আর খোদাবক্স মৃধার ৬ টা পানের বিল পরিশোধ না করে হাঁইটা চলে যাওয়ার সময় (জানিয়ে রাখি, গত ৬ বছর ধরে খোদাবক্স মৃধা মইত্তার দোকানের চা-পানের বিল পরিশোধ করে না) মইত্তা দোকানদার আস্তে কইরা গত ৬ বছরের মতোন এইবারও পুরানা সে গাইলটা দিলো, গাইলটা দিলে মনডা তার ঠাণ্ডা হয়, না হয় নীরবে নীরবে জ্বলিতে থাকে আগুন। গরীবের আর আছে কি গাইল ছাড়া। গাইলটা হইলো - খানকির পুত, চেরম্যান। তোর মায়রে চুদি। তোর আব্বাগো দোহান এইডা যে বিল দেছ না। দোকানে বসা আরো কাস্টমাররা তার গাইল শুনে এরি মধ্যে একজনা কয় -কি আর কমু, তারপর একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে।
বিন্দু bindumag.com
অতঃপর খোদাবক্স মৃধা এক জোড়া ধলা রঙের ছাগল খরিদ করে লগে নীল রঙের কৌটা আর রঙ করার ব্রাশসমেত ট্রলারে উঠে। কুসুমপুর বাজার আর আজিবপুরের মধ্যিখানে কালাসোনা নদী। এ নদী ট্রলারে কইরা পার হইয়া আজিবপুর-কুসুমপুর যাইতে হয়। পরতেক মঙ্গলবার দিন কুসুমপুর-আজিবপুরের যোগাযোগের গভীর সমস্যায় হাজার হাজার লোকের যোগাযোগ সেতু হয় ট্রলার। ট্রলারে কইরা যাওয়ার সময় যাত্রীগো হগলের একটা ফিলিংস হয়। মৃদু হাওয়া আইসা গায়ে লাগে। শরীরডা ঠাডা হয়, কলিজাটা জুরায়। নদীরে মনে হয় কষ্টিপাথর। পরান জুরানির। ট্রলারের যাত্রীগো লুঙ্গি, শার্ট, সেন্টু গেঞ্জি, ফতুয়ার ভিত্তে ফুরুস ফুরুস কইরা খাবলা খাবলা হাওয়া হান্দাইয়া পরে।সারা দিনের খাটুনি, রদে পুইড়া হাটে ঘুরাফেরা বিচাকিনিসহ শইল্যের সমস্ত ক্লান্তি যেন ফুঁ দিয়া উড়াল মারে। আজিবপুর গেরামের তরমুজ বেপারী কদর আলি ট্রলারে উঠে। ট্রলার ভরলেই ছেড়ে দিবে ট্রলারের পাইলট ফরিদ্দা। ফরিদ্দা ডাক ফারতে থাকে -আজিফুর আজিফুর এদিকে এদিকে। কদর আলি পাতি লয়ে ট্রলারে উঠে চেরম্যান সাবরে দেখে কয় -ব্রীজটা কবে অইবো চেরম্যান সাব? -অইবো অইবো, ভোট দেও ছাগল মার্কায়, অইয়া যাইবো। -অই বাপের কালের তে এ কথায় হুনতাছি অইবো। বাপজান শুইন্না গেছে অইবো, আমিও শুইন্না যাবো অইবো। কবে যে অয় আল্লা মাবুদ জানে। চেরম্যান এরূপ কথা হুনার প্রস্তুত আছিলো না। রাগ কোনোরকম দমাইতে কি যে করবো বুঝতাছে না। এক ঠাস করে থাপড় লাগাইয়া দেবে কি না ভাবতে ভাবতে ভাবে সামনে জনসভা রাণীর, তার পরে রাজনীতির হাশরের মাঠ ইলেকশন। এটা করন যাইবো না।
বিন্দু bindumag.com
অবশেষে চেরম্যানের থমকিতে মাগরেবের আযানের পর ট্রলার ছাড়ে ফরিদ। ট্রলারে মাঝনদীতে গিয়া চরে ঠেকে। উপর দিয়া চাইলে ঠাহর করা যায় না এনে চর পড়ছে। দেহা যায় পানি। অথচো এক ডাল নিচেই মাটির আস্তরণ।
বিন্দু bindumag.com
-যা এইবার বাড়িত যা, ঠেকছে, বলে বুড়া খয়ের মিয়া ওরফে এক বয়ায় ২৭ ভাপা পিঠার খাদক।
বিন্দু bindumag.com
-আমার কি দোষ, কে জানে এনে এমন নস লাগবো, কয় ফরিদ্দা।
বিন্দু bindumag.com
এক একজন এক এক কথা কইতে থাহে। গেরামের শিক্ষিত পোলা জহির কয় - চর পড়তো না, মাদাগাস্কার তো পানি দেয় না। মাদাগাস্কারের লগে গর্ভমেন্টের ইটিস পিটিশ।
বিন্দু bindumag.com
লগে অনেকে কয় হ হ ঠিকই কইছেন। চেরম্যানের মুখ আরো বেজার হইয়া বানরের পুটকির মতোন লাল হইয়া যায়।
বিন্দু bindumag.com
সিনারি -৪
বিন্দু bindumag.com
রাণী প্লেন দিয়া আসিতে চাইলেন না। জনগণ যে রাস্তা দিয়া চলে তার লগে তিনি সাক্ষাৎ করতে চান।এ বুদ্ধি দিছে উনার উপদেষ্টা ফুকরান খান, পাছা মারা ডি।যদিও ডিগ্রিটা পিএইচডি তারপরে ও রাজসভার লোকেরা মশকরা কইরা পাছা মারা ডি কয়।কারণ ফুকরান জানে জনগনের পুটকি মারার চিকনা বুদ্ধি।এ ব্যাপারে তার পারদর্শীতা 'good at ' পর্যায় ছাইরা গেছে গা। সামনে ইলেকশন জনগণ যেন ভাবে রাণী কত আপন আমাগো, কত সাধারণ তিনি আমাগো মতো। এ মনে কইরা ও যেন দুচারটি ভোট জুটে কপালে। জনগণের রাস্তার লগে সাক্ষাৎ করতে গিয়া জনসভার উদ্দেশ্যে উগান্ডার রাণী রাজধানী হইতে রওনা করেন রাত্রি দশ ঘটিকায়। যেন সকালে দশটায় জনসভা উপস্থিত থাকবার পারেন। রাত্রিবেলা অনেক পাতি নেতাকর্মী ও ইউনিয়নের চেরম্যান, মেম্বার চেল্লাফেল্লাসহ রাস্তার পাশে দাঁড়ায়া রইলেন। রাণী যাইবার কালে উনারা রাস্তার পাশে দাঁড়াইয়া থাইকা উনারে লাল-নীল-অইলদা-রূপালি-খয়েরি গোলাপের শুভেচ্ছা জানাইবেন। ইজমতখালি গেরামের পাশ দিয়া যে হাইওয়ে সেখান দিয়া রাণীর গাড়ি যাইতেছিলো। উনারা হেজেক বাতি ধইরা রাখছিলো নিজেদের চেহারা সুরতে। যেন রাণী তাদের চেহারা দেখতে পায় আর ভাবে রাত্রি দুইটা বাজে এ রাস্তা দিয়া যাইবারকালেও তারা উনারে লাল-নীল-অইদা-খয়েরি গোলাপের শুভেচ্ছা জানাইতে ভুলে নাই।এ উছিলায় ইজমতখালির নেতাকর্মীর দিকে একটু রহমত যদি নাযিল করেন -এইই সারবে। রহমত মিনস রাজসভায় যদি ইজমতখালির লাগি বিলটিল পাশ করায় তবেই টাকা মেরে নেতারা আঙুল ফুলে মান্দারগাছ হইতে পারবে। গাড়ির উপরে ছাদ খোলা গাড়ি রাণীর। ছাদ খুলে ও রাহা যায় আবার বন্ধও। ইজমতখালি গেরামের হাইওয়ে পার হওয়ার সময় ওখানকার নেতা -কর্মীরা দেখলো রাণী দেদারসে ঘুমাইতাছে। মনে মনে তারা নিজেগো এতো গাইল দিলো - শালার কফাল। রাণী আর ঘুমাইবার জায়গা পাইলো না।
বিন্দু bindumag.com
রাণী জনসভার উদ্দেশ্যে রাত্রিবেলা রওনাকালে ফজরের আযান দিবো দিবো তখন হঠাৎ কইরা কইলেন গাড়ি থামাও। রাণীর ব্যক্তিগত খাদেম সফিয়া কয় -ক্যান আম্মাজান কি হইছে। কয় -কোমরব্যথায় আর পারছি না। বডি মাসাজ করে দিতে হবে। রাস্তা এতো ভাঙ্গা জানলে জীবনেও আসতাম না,ফুকরানের বুদ্ধিতে। শাউয়ার রাস্তা। সোফিয়া কয় - এগুলা কি কন আম্মা। এনে হসপিটাল তো নাই যে আপনেরে মাসাজ করবো। পুরা গেরাইম্মা এলাকা। -তাহলে আর কি করার, গাড়িতেই মাসাজ কর। সোফিয়া ড্রাইভাররে কইলো গাড়ি থামাতে। রাণীর সামনে বিশটা, পিছনে ত্রিশটা গাড়ি সব গাড়ি থামাইতে নির্দেশ দিলো সোফিয়া। সব গাড়ি থামানো হইলো। সোফিয়া রাণীর শাড়ির কুচি, পেটিকোট হালকা খুলে নিচে নামাইলো। তারপর মাসাজ করতে থাকলো উনার কোমর। রাণী -উহ্ আহ্, ব্যথা মরে গেলাম। মরার রাস্তা। সোফিয়া কয় - আপনের দলের এমপিই তো ঠিক করে নাই। তিনবার না টেকা দিলেন ঠিক করাইতে রাস্তা। এমপিরা টেকা খাইয়া পেট টাম্বুস। -চুপ কর,বদমাইশ মেয়ে। মাসাজ কর। জনগণের চোখের দিকে চাইয়া চোখ চোখ রেখে হাত নাড়ানির লাগি গাড়ির ছাদ খোলা ছিলো। ধূলাবালিতে রাণীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলো। ৩ টা ইনহেলার এ পর্যন্ত শেষ হইছে। ইনহেলার রাণী নেয় আর ফুকরানরে গাইল পারে।
বিন্দু bindumag.com
সিনারি -৫
বিন্দু bindumag.com
রাণী কোমরব্যথা, শ্বাসকষ্টসমেত কাউজাকান্দি উপজেলার জনসভার কাছাকাছি পৌঁছিয়ে গেলেন। তখন বেলা দশটা তিরিশ বাজে। লাল কার্পেট বিছানো আছে স্টেজে যাইবার কালে। রাণী লাল কার্পেটে পা মোড়াবার আগে সোফিয়ারে কইলো - আমার তো প্রসাব পাইছে। সোফিয়া কইলো -এনে তো ভালা ওয়াশরুম নাই, পাবলিক টয়লেট নাই ভালা। কেমনে যাইবেন। রাণী কয় - যাইতে তো হবে এখন। অবশেষে একটা পাবলিক টয়লেট যা পাঁচশো বছর আগের মনে হয় যদিও ৫০ বছর সেখানে রাণীর প্রসাব করার ব্যবস্থা করা হইলো। যদিও ফুকরান কইছিলো - ৫ মাইল দূরে এমপি সাবের বাড়িত হাইফাই ওয়াশরুম আছে। কিন্তু ততক্ষণ তো রাণীর প্রসাবের বেগ সহিবে না। তাই নিকটস্থল পাবলিক টয়লেটে যাইতে হইলো। টয়লেটের চারোপাশে ৩০০ আর্মি বেষ্টিত। রাণীর প্রসাবের বেগ আরো বেড়ে যাইতাছে। কতক্ষণে যাইবো। বের হইলেই শান্তি। এদিকে সোফিয়া পাবলিক টয়লেট পরিষ্কার ও টয়লেটে পারফিউম দিতে লোক পাঠাইলো যে টয়লেটে মুতবো রাণী। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হইলো তদ্দূর সহ্য করবার টাইম রাণীর নাই। পরিষ্কার, পারফিউম দিতে যে টাইম লাগবো ততখনে কি না কি কান্ড ঘটে যায় -যে প্রসাবের বেগ পাইছে । অবশেষে নিকটস্থত নোংরা, হাজারো বছরের পুরুষদের প্রসাবের গন্ধওয়ালা টয়লেটে রাণীরে যাইতে হইলো। বের হওয়া মাত্র রাণী বমি কইরা দিলেন। পুরুষ-মহিলাদের প্রসাবের গন্ধে রাণীর মাথাবেথা হইয়া গেছে। মনে হইলো দোজখে মুততে গেছিলো রাণী।
বিন্দু bindumag.com
সিনারি -৬
বিন্দু bindumag.com
রাণী গাড়ি থেইকা নাইমা লাল গালিচায় পা রাখতে যাচ্ছে। ময়না মিয়া তার দুই কাঁন্ধে তিন জোড়া ময়না পাখি নিয়া দাঁড়ায়া রইছে -লাল গালিচার সাইডে।রাণীর প্রতিরক্ষা গার্ড বাহিনীর পরধান মেজর জেনারেল মিসবাহুল ফাড়ি, (ফিএমসি, জিসি) কাছ থেইকা অনুমতি নিছে খোদাবক্স মৃধা -বহুত তদবির কইরা। যেন ময়না মিয়ারে লাল গালিচারে সাইডে দাঁড়ায়া থাকতে দেয়া হয় রাণী স্টেজে যাওনের কালে। পরে গার্ড বাহিনীর পরধান পাখি দিয়া পার্টির স্লোগান দিবে শুইনা আরো খুশি হইলো আর মনে মনে ভাবিতেছিলো এ কারণে হয়তো তার প্রমোশন ও হইতে পারে। রাণী ময়না মিয়ার পাশ দিয়া যাইবে আর পাখিগিলা 'ম্যা ম্যা ম্যা' কইবে। কিন্তু না,কামডা হইলো কি! পাখি ময়না মিয়ার কাঁন্ধে থেইকা উইড়া যাওনের সময় রাণীর ৩ কোটি টাকা দামের শাড়ির আঁচলে হাগু করে দিয়ে কিঞ্চিত দূরে একটা একতলা বিল্ডিঙের ছাদে উইড়া গেলো। ময়না মিয়া হতবাক হইয়া চাইয়া দেখলো কারা যেন চারপাঁচজন ময়না পাখিগিলারে গম ছিটাইয়া দিতাছে। ময়না পাখিগিলা গাপুসগুপুস কইরা খাইতাছে। তকন ময়না মিয়া কিঞ্চিত ঠাহর কইরা বুঝলো গম ছিটাইতাছে আর হাসতাছে যে চারপাঁচজন তাদের একজনেরে ময়না মিয়া চিনে। নাম তার ভ্রুকাটা সুমন। সে খোদাবক্স মৃধার চিরশত্রু,পার্টির চেরম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাগল পার্টির নেতা জুলফিকারের বিশ্বস্ত চামচা। ওরাই ক্ষুধার্ত পাখিগিলারে খাওনের লোভ দেখাইয়া এ কাজ করছে। গতরাইতে গেরাম থেইকা ময়না মিয়া জনসভার কাছে পৌরসভার ফ্লোরে শুইয়া আছিলো। কেননা, বেনবেলা আইয়া জনসভা ধরা যাইবো না। যুদি না মিস হইয়া যায়। সেই ডরে ডরে। পাখিগিলা আর ময়না মিয়া দুজনেই রাইতে কিছু খায় নাই। বেহুদা টাকা খরচের কাম কি। সকালে জনসভা শেষ হইলে পেট ভইরা বিরিয়ানি খাওন যাইবে। আর টাকা পয়সা দিলে পাখির জন্য খাওনদাওন কিনে পাখিরে খাওইবো। চমপাকলা ময়না পাখিগিলা ভালা পায়। দিলবার জেলায় কলার হাটে গাছপাকনা চমপাকলা পাওন যায়। না হয় খরিদ কইরা খাইতে দিলো।
বিন্দু bindumag.com
ময়না মিয়ারে আর্মিরা হাত বাইন্ধা, চোখে কালো কাপড় বাইন্ধা তাদের জিপে উঠাইলো। জিপটা জনসভার স্টেজের কাছেই।আর ময়না মিয়া আর্মির জিপে বইসা ভাবতাছে - ক্যান তারে ধইরা আনা হইছে? ময়না পাখিগিলা রাণীর শাড়ির আঁচলে হাইগা দিয়া দিলে তার কিইবা দোশ? পাখি কহন হাগবো তা কি সে জানে নি?
বিন্দু bindumag.com
জনসভা শুরু হওয়ার আগে সারা দেশ থেইকা যারা চায়ের দোকান, ফেসবুক, পত্র-পত্রিকা, ওয়াজ-মাহফিলে যে যে জায়গায় রাণী শাসনামলের বিরুদ্ধে কথা কইছে তাদেরকে বেছে বেছে এ জনসভায় আনা হইছে।এরা মোট ১৫ জন। এটা এমপি সাবের বুদ্ধি। সামনের টার্মে যেন তারেই উগান্ডার দিলবার জেলা, আসন -৯৯ এ এমপি হিসেবে মনোনয়ন করা হয় -এ চমকের জন্য। এরা প্রত্যেকে একে একে তাদের পূর্বাপর অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইলো, রাণীর পায়ে চুমু খাইলো এবং সর্বশেষ ছাগল পার্টির স্লোগান 'ম্যা ম্যা ম্যা' বলে 'ছাগল পার্টির বিকল্প নাই, এ পার্টি দেশ ও দশের মঙ্গলের ঝাণ্ডাবাহক' কিছিম বক্তৃতা দিলো পনেরো জন।
বিন্দু bindumag.com
১৫ জনের অপরাধ খুব বেশি না একজনের নাম আজমল, দৈনিক রাজা পত্রিকার রিপোর্টার। সে রির্পোটে রাণীর ঈদশাড়ির দাম লিখছে ২.৯৯ কোটি টাকা। অথচ তা নাকি ছিলো ৩.৭৮ কোটি টাকা। এতে রাণীর শাড়িস্তুতি নিয়ে কটুক্তি করা হয়েছে। এ হলো তার অপরাধ।আরেকজন কৃষক রনু মিয়া গ্রামের চায়ের দোকানে কইছে দেশে এতো ধান হইছে তারপরও রাণী ক্যান চাউল আমদানি করবো মাদাগাস্কার থেইকা! এইডা গিরস্তেরে মারনের ফন্দি। মেম্বর সাব কুটু মিয়া এ খবর উপজেলা চেরম্যানরে দিছে। চেরম্যান দিছে এমপিরে। এমপি দিছে আর্মিরে। আর্মি দিনে দিনেই ধরে নিছে রনু মিয়ারে । এ দেশে পুলিশ নাই। যাদের নাম পুলিশ ছিলো তারা এহন আর্মি। পুলিশেরে আর্মির সমান ক্ষমতা দেওনের পরে পুলিশ শব্দ বিলুপ্ত করা হইছে রাষ্ট্রীয় ভাবে। এরকম বড় বড় অপরাধের কারণে আর্মিরা তাদেরকে ধরে এনে যা যা বলার জন্য বলেছে তারা তা তা সুন্দর করে বললো মাইকে। নচেত ডাইরেক একশান মানে গুলির ভয় তো তাদেরকে দিয়েই রেখেছে।
বিন্দু bindumag.com
রাণী স্টেজে উঠে ৩০ মিনিট বক্তৃতা দিলো। দেশ ও দশের উন্নয়নে দেশকে আগামী ৬ বছরে বিশ্বের ১ নাম্বার পরাশক্তিতে পরিণত করবে। যদি জনগন ভালোবেসে তারে ভোট দেয়। এ হলো সারমর্ম।অনেকে এ বক্তৃতা শুনে মিটিমিটি হাসি আসলেও হাসি দিলো না, মনে মনে গাইল দিলো। কারণ চারোদিকে আর্মি দাঁড়াইয়া রইছে কারে কি অপরাধে কি করে ফেলে।
বিন্দু bindumag.com
বাহার আলি তার ছয় সন্তান নিয়া জনসভায় আইছে। ৩০০ টাকা হাজিরা আর বিরিয়ানি তা মিস করে কেমনে। এতোক্ষণ বাহর আলির পোলাপান তারে জ্বালাইয়া খাইয়া ফেলতাছিলো যে "কহন তাগো বিরিয়ানি খাইতে দিবে "। যাক এইমাত্র শেষ হইলে বাহর আলি নিজেও মনে মনে কইলো "যাক! শেষ হইছে।" জনসভায় চারদিকে লোক আর লোক আর লোক । তার থেকে একটু দূরে সে চাইয়া দেখলো খোদাবক্স মৃধা আর তার চেল্লা রনি ছাগল পার্টির প্রতীক জ্যান্ত দুই জোড়া নীল ছাগল রশি দিয়া ধরে রাখছে মুখ বেজার কইরা। নাহ, রাণীর বক্তৃতা শেষে রাজ্যের সেনাপ্রধান আইসা মাইক ধরে কইলেন আপনাদের জন্য একখান চমক আছে। তারপর পনেরোজন সেই অপরাধী আর ময়না মিয়ারে ধরে আনা হইছে স্টেজে। ময়না মিয়ার চোখ কালো কাপড় দিয়া তো আগেই বান্ধা। বাকি পনেরোজনের চোখ ও হাত বান্ধা হইলো। আর্মির ছয়জন সৈনিক স্টেজের বামদিকে তাদেরকে গুলি করে মারলো। রাণী ডানদিক থেকে চমৎকার দৃশ্যখানি দেখে উনার গাড়িতে উঠে পড়লো।
বিন্দু bindumag.com
এ দৃশ্য দেখার পর কারো কোনো অনুভূতি হইলো না। তাদের কাছে তা নিত্যদিনকার কাহিনী মনে হইলো।অনেকে তো মনে মনে তাগো গাইলও দিলো - সাহস মারায়, সাহস। বুজ এবার।এরম দেখতে দেখতে তাদের চক্ষু অভ্ভাস হইয়া গেছে। পরতেকে বিরিয়ানির জন্য প্লেট লইয়া সিরিয়াল দাঁড়াইছে। বাহর আলি তার ছোট্ট পোলারে খুঁজে পাইতাছে না। অবশেষে যখন পাইলো বহুত খুঁজে ছোট্ট পোলারে ততখনে বিরিয়ানি নিয়া ছাগল পার্টির এমপির চামচা জুলুর পোলাপান আর আরেক চামচা বিলুর পোলাপান বাঁশ দিয়া মারামারি বাঁধাইয়া দিছে। বাহর আলি তার ছয় পোলাপান নিয়া দৌড় মারছে। ছোট্টডা দৌড়াইয়া আইতে পারে নাই। কার জানি বাঁশের বারি লাইগা বাহরের ছোট্ট পোলার মাথা ফাইট্টা গলাকাটা গরুর মতোন রক্ত পড়তাছে চাকা চাকা। বাহর পিছন দিকে চাইয়া দেখে তার ছোট্টপোলার এ হাল। বাহর আবার গণ্ডগোলের মধ্যে গিয়া তার পোলারে উদ্ধার করতে গিয়া নিজে বারি খাইয়া হেনে পইড়া রইছে। রক্ত পড়তাছে আর পড়তাছে। পোলাপানগিলা হাউমাউ কইরা কানতাছে। চিৎকারে আসমান ফাইটা পড়ে কিন্তু মাইসের হুঁশ নাই।
বিন্দু bindumag.com
ময়না পাখিগিলা তাগো মনিব ময়না মিয়ারে অনেকক্ষণ ধরে খুঁজতাছে। আছরের আজানের টাইম হইতে হইতে জনসভার পুরা মাঠ খালি হইয়া গেলে ময়না পাখিগিলার খুঁজতে সুবিধা হয়। ময়না পাখিগিলা ময়না মিয়ার লাশ খুঁইজা পায়। তিন জোড়া ময়না পাখি গোল হইয়া ময়না মিয়ার লাশের পাশে 'মে মে মে ' কইরা ডাক দেয়।কিন্তু তাগো মনিব আর কিছু কয় না। পাখিগিলা কিছু বুঝতে পারে কি না জানবার পারি না। কিন্তু কিছুখন পর পাখিগিলা মরা বাড়ির মতোন মন বেজার কইরা তাকায়া থাকে ময়না মিয়ার দিকের ।
বিন্দু bindumag.com
জুলেকা বেগম আজকে ও আলুর চপ রাইন্ধা বইসা রইছে। ময়না মিয়া আইলেই জামাই-বউ মিইল্লা খাবে।দিন গিয়া এশারের আজান পড়ে। ময়না মিয়া আর আসে না আর গলা ছাইড়া ডাক পাড়ে না -দরজা খুল্ল ল, জুলেকা।জুলেকা কান পাইতা থাকে কহন আইবো, ডাক দিবো। কান পাইতাই থাকে, ডাক আর দেয় না।
মিলু হাসান এর গল্প।
মন্তব্য