বৃষ্টি নেমে আসে
নদী হাঁটে নিরন্তর
পথিকের পাশ ঘেঁষে ঘেঁষে
জীবনের মোহনায়
একদিন দুজনেই
পৌঁছে যায় শেষে
যতবার এই
নদীকূলে এসে বসি —
ভিজে যাই আশরীর
হৃদয় মস্তিষ্কসহ
এমনকি লিভার কিডনি সব
যদি থাকে অন্তরাত্মা তা’ও সহ
ভিজে যাই
ভিজে যাই মহাকালে
বরফ যুগেরও আগে
এমনকি কৃষ্ণ বিবরে ঢুকার কালে
ভূত ভবিষ্যতে
পৃথিবীর মহাজগতের
প্রতিটি প্রান্তরে
বৃক্ষের পত্রের গায়ে
বড় দালানের কার্নিশের ফাঁকে
অথবা নদীর নরম চরে
যখন মাটির সব
ফাটলের খাঁজে খাঁজে
বৃষ্টি নেমে আসে
ভিজে যাই
আশরীর ভিজে ভিজে যাই
বাইশে শ্রাবণ ১৪২৫
বাইশে শ্রাবণ ভারী বর্ষণ
ভেজা সংসার ছলছল মন
নিদ্রাপুরে কী রান্নার ঘরে
স্বর্গ নরকে। মেঘ দাপাদাপি
শিবলোক থেকে ইন্দ্রপুরীতে
বর্ষা নেমেছে ঘোর প্রেতলোকে
বাইশে শ্রাবণ ভারী বর্ষণ
লাল বৃ্ষ্টির, আগুনের ঝড়ে
ভেজে পথঘাট বিদ্যালয়ের
মন-মন্দিরে কত পাঠশালে
বাবা মার বুকে দ্রোহ উল্লাসে
রক্তের স্রোত তাতা থৈ থৈ
বাইশে শ্রাবণ ভারী বর্ষণ
কাল-অসুখের রক্তের ধারা
জোড়াসাঁকো আর রবিঠাকুরের
শত তরুণের আন্দোলনের
চির শান্তির লোহিত প্রবাহ
চিরনিদ্রার গুমোট বাতাস
বাইশে শ্রাবণ ভারী বর্ষণ
শ্রাবণের ধারা হে কবিঠাকুর
শত ছাত্রের শত পদ্মের
অরবিন্দের স্রোত রক্তের
মিশে বিদ্যায় যত শান্তির
যত স্বপ্নের সব নিকেতনে
বাইশে শ্রাবণ ভারী বর্ষণ
ভেজা সংসার ছলছল মন
যতোটা বায়ু বহে
আকাশে মেঘে মেঘে বিজুলি চমকায়
আলোর মিছিলেরা পালাতে পথ চায়
পাহাড়ে আলো নাচে পাহাড়ে আন্ধার
মানুষও আলোকিত কেউতো কদাকার
জোনাকে আলো জ্বলে জোনাক ঝিঁঝিঁ ডাকে
অনেকে অবসাদে কেউতো পথে হাঁটে
এখানে আশকারা এখানে মশকরা
কুপিত আচরণে কেউবা দিশেহারা
যখন মনসার ভীষণ ফণা ওঠে
চাঁদ স’দাগরের ব্যবসা ওঠে লাটে
যখন বন্যায় ভেসেছে চরাচর
আপাম-জনতার ভেসেছে গরু-ঘর
সময় যত কাটে কাটছে আয়ুরেখা
ভাগ্যে কী লিখন সময়ে যাবে দেখা
তবু তো বুক-বাঁধা তবুও ভালবাসা
যতোটা বায়ু বহে ততোই বাড়ে আশা
মন্তব্য