জুজু
আমাদের আজ জুজুতে পেয়েছে খুব
রাহুতে খেয়েছে বহু বহু মহাকাল
গ্রহণ লেগেছে অমাবস্যার বেঘোর অন্ধকারে
বিন্দু bindumag.com
পশ্চিম থেকে প্রতিদিবসের সূর্যকান্ত ওঠে
অস্তরাগীনী বিভা ডুবে যায়
পূবের ডোবায় মজে
বিন্দু bindumag.com
ঘোর কলি কালে
রাতের কপালে ঢিপ করে টিপ দেয়
বিষম শনির দশা
বিন্দু bindumag.com
তবু বলবোই
কিছুই ঘটেনি দেখো
কেবল আকাশ শিশুর রক্তে রাঙা
বিন্দু bindumag.com
(রচনা: ১৭/৫/২০১৯; পূর্বাহ্ন ৫:০৪)
বিন্দু bindumag.com
কেন?
ব্লেড কেন এত ক্ষুরধার আজ
সফেদার মতো পাঁচ বছরের
জননাঙ্গের পুজা লালে লাল
বিন্দু bindumag.com
বড় হুজুরের শশ্রুতে কেন শয়তান ঘোরে কূটকৌশলে
ইবাদত তার ইন্দ্রিয় সুখে নুসরাত রূপে তৃপ্তি মেটে না
আগুনে জ্বালায় বোরখায় ঢাকা প্রতিবাদী দেহ
বিন্দু bindumag.com
কেন সাত সাত বছর বয়সী কন্যার দিকে
বয়স্ক গুরু লোভাতুর খুব
কেন পৈশাচ শেষে মৃত্যুর উৎসবে মাতে জুজুর হুজুর
বিন্দু bindumag.com
বালকেরও কেন নিস্তার নেই
মাদ্রাসা কিবা পাঠশালা ঘরে
লালে লাল পায়ু বেদনা দগ্ধ প্রায় প্রায় দিন
বিন্দু bindumag.com
তালিকার কেন শেষ মিলছে না, মেলে যত লাশ
অথবা বেফাঁস ভয়াবহতার উৎসবে রাঙা
মাখলুকাতের আশরাফগণ নগ্নতা নিয়ে মগ্ন ভীষণ
বিন্দু bindumag.com
রক্তের ঘ্রাণ নাকি মাংশের
কোনদিকে আজ মানুষের চোখ
কিছু না বুঝেই কেবল চেঁচাই জবাবের দেখা নেই
(রচনা: ১৭/৫/২০১৯; পূর্বাহ্ন ২:২৮)
রাত হলে ভোর
বিন্দু bindumag.com
রাত হলে ভোর
ফর্সা আকাশ হালকা লালের
ছোপ লেগে রয়
কোথাও রঙের গাঢ় আঁচড়
কোথাও মেঘের আলপনাটা
বিন্দু bindumag.com
ভোর হলে রাত
ঠোঁটের ফাঁকের হালকা লালা
লেপ্টে থাকে পাশ বালিশে
কোথাও খেজুর গাছ থেকে কেউ
হাঁড়ি নামায় ধীরে সুস্থে
কেউবা লাঙল ফের কোথাও
নারী শ্রমিক লিপিস্টিকে
লাল করে ঠোঁট ব্যস্ত বেরোয়
ভাত বেড়ে ভাত
বিন্দু bindumag.com
রাত হলে ভোর
শহর পাড়ায় কাক ডাকে জোর
মোরগ গুলাও হুদাই চেঁচায়
দূর পাড়ার ওই মৌলভিটা
হেঁড়ে গলায় বেসুর কন্ঠে
আজান বাজায়
বিন্দু bindumag.com
ভোর হলে রাত
ছোট্ট শিশু খলখলিয়ে উঠছে বটে
ফের কোথাও কান্না খিদের
মায়ের কন্ঠে ভর্ৎসনা আর
আদুরে সুর ঘুম পাড়ানির
বিন্দু bindumag.com
রাত হলে ভোর
বস্তিবাসীর কলতলাতে হল্লা ভীষণ
জল তোলা আর স্নান সমাপন
ইত্যাকারের রোজনামচায়
বিন্দু bindumag.com
ভোর হলে রাত
সত্যি কি ভোর হচ্ছে কোথাও
আলসেমিটা ভেঙেচুরে
হাভাতেরা হাল ধরেছে
এমন রকম দুর্ঘটনার
ঘোর আলামত পাচ্ছি কি আর
কন্ঠগুলার শোর করবার
বিন্দু bindumag.com
রাত হলে ভোর
ভোর হলে রাত ...
(রচনা: ২০ মে ২০১৯; ভোর ৫টা)
বৃষ্টি নেমে আসে
নদী হাঁটে নিরন্তর
পথিকের পাশ ঘেঁষে ঘেঁষে
জীবনের মোহনায়
একদিন দুজনেই
পৌঁছে যায় শেষে
বিন্দু bindumag.com
যতবার এই
নদীকূলে এসে বসি —
ভিজে যাই আশরীর
হৃদয় মস্তিষ্কসহ
এমনকি লিভার কিডনি সব
যদি থাকে অন্তরাত্মা তা-ও সহ
ভিজে যাই
বিন্দু bindumag.com
ভিজে যাই মহাকালে
বরফ যুগেরও আগে
এমনকি কৃষ্ণ বিবরে ঢুকবার কালে
ভূত ভবিষ্যতে
পৃথিবীর মহাজগতের
প্রতিটি প্রান্তরে
বৃক্ষের পত্রের গায়ে
বড় দালানের কার্নিশের ফাঁকে
অথবা সে নদীর নরম চরে
যখন মাটির সব
ফাটলের খাঁজে খাঁজে
বৃষ্টি নেমে আসে
ভিজে যাই
আশরীর ভিজে ভিজে যাই
(রচনা: ৮ মে ২০১৯; ৩:৪২ পূর্বাহ্ন)
বনভান্তে শুয়ে আছে শতবর্ষে
বনভান্তে শুয়ে আছে বনে নয় — কবরেও নয়
স্থির নিষ্কম্প নিথর মমি আজ বনভান্তে
একদিন বনভান্তে সকলকে দেখা দেয় নাই
এমনকি হোমরা চোমরা কতো বিষণ্ন ফিরেছে অদর্শনে
বিন্দু bindumag.com
একদিন অষ্টাশি’র দুপুরবেলার গ্রীষ্মে তাঁর দেখা পাই
পাঁচ বন্ধু ঘোরগ্রস্থ ক্ষণে নিবিষ্ট শুনেছি
গেরুয়া চীবর পরা সহজ সরল সেই বাণী
সেদিন ঈমানদার অনেকে বিস্মিত — সে অনেক কথা
বিন্দু bindumag.com
আমরা বনভান্তে পর্ব সেরে লেকে ঘুরি
চাকমা জাতির অভিশপ্ত লেকে -
নৌকা বেয়ে বেয়ে কেরু কোম্পানির ছিপি খুলি
আমাদের ভাসিয়ে হাসিয়ে রেখে নৌকা ডুবে যায়
বিন্দু bindumag.com
উদ্ধারের পরে নিউটন আমাদের নিয়ে চলে
চাকমা দিদির ঘরে, ম্যাচ জ্বেলে দোচোয়ানি কেনে
তারপর আর মনে নাই — ভুলে যাই বনভান্তে
উপদেশে কি কি বলেছিল সে দুপুরে অস্থির গরমে
বিন্দু bindumag.com
বহুদিন বহুরাত ভাবি শত বলিরেখা মুখে
গেরুয়া বসন পরে বনভান্তে কি বলেছে
মনে নেই — মনে আর পড়ে নাই, শুধু
উজ্জ্বল চোখের জ্যোতি মস্তিষ্কে রয়েছে গেঁথে
বিন্দু bindumag.com
এখন সকলে তার দেখা পায় ভোরে কি দুপুরে
কাচের বাক্সের মধ্যে শুয়ে স্থির চলৎশক্তিহীন
সেই বলিরেখা শতবর্ষী সে চীবর গায়ে
প্রবল জ্যোতির চোখ নিরাসক্ত নিস্তব্ধ নিষ্প্রভ
(রচনা: ২৩ এপ্রিল ২০১৯)
আমাদের আজ জুজুতে পেয়েছে খুব
উত্তরমুছুনরাহুতে খেয়েছে বহু বহু মহাকাল
গ্রহণ লেগেছে অমাবস্যার বেঘোর অন্ধকারে…
প্রথম এক লাইনেইতো সব বলা হয়ে গেলো, এ্ক লাইন ব্যাখ্যা করতে গেলেই অনেক কিছু বের হয়ে আসবে; তাহলে পরের লাইনগুলো কেন-পরের লাইনগুলো প্রথমটির চেয়ে আরো ভালো, বলা যায় চমৎকার! ফিনিশিং আরো দারুন!
নদী হাঁটে নিরন্তর
পথিকের পাশ ঘেঁষে ঘেঁষে
জীবনের মোহনায়
একদিন দুজনেই
পৌঁছে যায় শেষে;
প্রথম স্ট্যানজাটির আবেশ রয়ে যায় পড়ার পরেও, আমার নিকট প্রত্যেকটি কবিতা ভাল লেগেছে-সবগুলোর মধ্যে বৃষ্টি নেমে আসে’কে এগিয়ে রাখবো। অনুরণন হচ্ছে, চমৎকার লিখেছেন সুপ্রিয় কবি জিললুর রহমান ভাই। কবিতার প্রতি যত্ন অনেক সেটা না বলে দিলেও বুঝে নেয়া যায়।
শুভেচ্ছা আপনাকে সুপ্রিয় জিললুর ভাই দারুন কিছু লেখা প্রেজেন্ট করার জন্য আর বিন্দুকে ধন্যবাদ সিন্ধুর খোঁজ দেয়ার জন্য, শুভেচ্ছা সকলকে; কবিতায় পরিশুদ্ধ হোক সকলের অন্তর।
পাঠ বিস্তৃত মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ
উত্তরমুছুন