চিরকাল ধর্মের তরে অধর্ম করতেছে মন
আদিগন্ত ঋতুপথ দিয়া বনজ খুশবু আসে, মাগার সেই ঘ্রাণ পারি না নিতে। মম রাধেয়তে কুন্তি-পুত্র জাগে। প্রিয় মাধব আমারে মুরতাদ ভাবে। এইখানে আমি চির মুশরিক।
ব্যথিত ধর্মের বেশে লুপ্ত আজার—!
বিরল শান্তি-গর্ভে যদিও জন্ম আমার। আবার যেহেতু অনাদি মিথ্যা থিকা আর্ট হইতেছে সৃজন। কোনো শিল্পপ্রতিম দিন— খুঁজিতেছে প্রাচীন— পশুর হৃদয়। সকলই ব্যর্থ তবু,
ক্রোধের দ্বারা শুধু ক্রোধই জন্ম লয়।
পুনরায় ধর্মযুদ্ধ লাগে। ধরণী দ্বিধা হয়। কর্ণ-নিয়তির মাঝে পড়ে থাকি আমি। বনজ খুশবুতে ভাসে বিভোর আঙন। যেনো বুঝি আবার বুঝি না— ক্যানো, হে পরম পাবন,
চিরকার ধর্মের তরে অধর্ম করতেছে মন!
আমলিয়াত
ওই যে সুদূর গাঁও;
তার কেকাবনের ধারে খুশি খুশি রোইদ
তৃপ্ত ঢেকুর তুলে ডুবিতেছে পৃ...
ঘাসে ঘাসে অবিশ্রাম রু-রু ধ্বনি।
বিকাল ফেটে যেনো প্রেরিত দূত—!
শিমের চারাগুলি শিখে নিতেছে গুল্মতা
পাখিদের ভূগোলভরা ঢেউ ও নদী। আহা,
কতোকাল বকুলতলায় আসো নাই তুমি
ডিসটেন্স ঘনাইয়া কেবল হইছো পাষাণী
রুহালীন মর্সিয়ালোকে।
আসো, তোমার অসুস্থতা চুমি।
গাছে গাছে হাওয়া গড়ে দিতেছে বিনুনি
পরাণে বাজিতেছে প্রেম-নিষ্ঠ মেলোডি,
কালের মিম্বরে বসে আছে ইমাম
অবাধ অশ্রুর জলে ভিজিতেছে— দোয়া ও দরদী।
মরমী শুশ্রূষার তরে
বকুলতলায় আসো একদিন— মোহমুক্তির খুতবা শুনি।
ইজম
তারে আমার হত্যা করতে ইচ্ছা হয়।
সে; যে নষ্ট করে বাবুই,
ফসলি হৃদয়— মাটির। লানত তারে
যে কাফের ধ্বংস করে— অনাদি প্রতিভা জীবের,
বাউল।
তারে আমার হত্যা করতে ইচ্ছা হয়,
সে একটা ফাউল। হারামি।
জিজীবিষা নিয়া খালি নখরামি করে—
একটা বিলাই যেমনে ইন্দুররে কয়, আসো খেলি,
সিরিয়াসলি,
কোনো গিনিপিগের মতন মনে হয় নিজেরে।
এই যে দুনিয়াটারে, যদি পাইও, তো কী এমন বাল হবে,
এমন মনে হয়। আমার ভিতরে
একটা নিঃসঙ্গতা— চড়ুই হইয়া বসে থাকে দূরে
রেলিঙে, একার মতন।
ননকর্পোরেট মন আমার, অনাধুনিক মন,
অনন্ত ডিলেমার ভিতর ফুল হইয়া ফোটে। হরিণাভ রঙ।
বুকে যে ব্যথার আড়ং খুলে বসছি আমি, সেইখানে—
প্যাঁচার চোখের মতন প্রশান্ত ধী খসে পড়তেছে
অস্ফুট বসন্ত থিকা মুছে যাইতেছে কোকিল
আলোভরতি কেরোসিন নিভতেছে ঠাট্টায় কারও
সিরাতুল মুস্তাকিম হাঁটিতেছে কোনো ভুল রাস্তায়।
'অথচ হত্যার আগেও তো ইতিহাস ছিল,
বাগান ছিল, ধর্ম ছিল মানুষের।'
এইরূপ মেমোরি ফের ইয়াদ হয়
পরাণে এক ক্লান্ত বাউল বোষ্টমী খোঁজে। পায় না।
তারে তখন হত্যা করতে ইচ্ছা হয়
মাইরা ফেলতে ইচ্ছা হয় তারে। পারি না।
বরং চুষে চুষে সে খায় আমারে। রিক্ত করে।
জিঘাংসারে সাইডে রেখে ঘুমাইয়া পড়ি আমি।
লোকাল পরাণ
—আস্তে!
কদমে চলো রে ঘোড়া,
খুরের কোমলে ক্ষত ডুকরে ওঠে পিচে।
সপাং সপাং আঘাতে
রপ্ত করতেছো মেশিন। ক্লান্ত কৌশলে। ঢাকাতে।
শরৎবিহীন শরতে কাশফুল ফোটে শরমে; লজ্জায়—!
আরামসে যাতনা এড়ায়
ঢাকা সিটি, বোকচোদ, কষ্ট ছুপাইয়া হাসে।
গায়ে ঘিনঘিন করে রোইদ
পাঁজরে তার হেরে যাওয়া নদী
মাটির মাংস ফুঁড়ে জেগে ওঠা কঙ্কাল, যেনো সে।
না-গাছের মতন গাছ, না-ভোরের মতন সকাল,
এইখানে সারি সারি,
মানুষের ভিতরে মাকাল মানুষেরা
পতাকা খামচে ধরে বাঁচার নেশায়। চেতনায় ফ্যালাসি ওড়ে।
খামোখা ইস্যুর মতন মুছে যায় হত্যার ক্ষতি।
একটা শিমুলতর গ্রহ— পুষে রাখে লোকাল পরাণ,
নীরবে জাগল করে—
চারণভূমি ও চিঁহি!
নীলক্ষেত যতখানি গোপন শিমুল
নীলক্ষেতের মোড়ে একটা শিমুল গাছ
আলগোছে দাঁড়াইয়া থাকে—
অ-দৃশ্যে। সতত। অবনত মুখে।
যেইভাবে একেকটা উপেক্ষার আড়ালে হাঁটে
একেকজন পথিক।
হেঁটে হেঁটে কই যে যায় মানুষ! আওয়ারা দঙ্গল।
বাতাসে স্বেদজ গন্ধ
গতরে গতর ঘষা খাইয়া— ক্লেদ!
নীলক্ষেতে অপার হইয়া কাঁদে নীলক্ষেত।
শিমুল গাছটাও যেমন, থাকিয়াও যেনো অনুপস্থিত—
সারাটা বছর,
ইহলোকচ্যুত এক অলীক শহর, শাহজাদা কোনো—
কঠোর ও দয়ালু।
নীলক্ষেত বোঝে না ব্যথা। নীলক্ষেত চালু।
ব্যবসা ফুরাইলে ফের— রাইতের আন্ধারে—
নিঃসঙ্গ গাছটার মতন কোমল কাতরতা কিছু
যখন প্রস্ফুরিত করে, মনে হয়—
যেনো সবটুকু বন একলাই ফুটাইছে সে ডালে
শিমুল গাছটা যেমন— ঘন লাল উপস্থিতি,
নীলক্ষেতের মোড়ে। বসন্তে।
মন্তব্য