প্রতিশোধ
এক ব্যক্তি এক ব্যবসায়ীকে খুন করে তার সমস্ত টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যবসায়ীর ছেলে ছিল নামকরা ডাক্তার।
একদিন খুনি দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়৷ চিকিৎসার টাকা না থাকায় মরতে থাকা চরম কষ্টে। এক ডাক্তার তার বিনাটাকায় চিকিৎসা করে। এবং মানুষটারে সুস্থ করে তুলে।
খুনি জানতো না, সে এই ডাক্তারের বাবার খুনি; কেবল ছেলেটাই জানতো, যার চিকিৎসা সে করছে ঐ লোকটাই তার পরম শ্রদ্ধেয় পিতার খুনি।
সে শুধু নিজেকে এইটুক বুঝায়, জীবন নাশের বিনিময়ে জীবন দানের চেয়ে বড় কোন প্রতিশোধ হয় না।
আশেকের জুতা
"যার সনে যার ভালোবাসা সেইতো মজা লুটিলো।"
শুনেছি, এই সমস্ত সৃষ্টি মুহাম্মাদের আত্মার নূর থেকে তৈরী করা হয়। খোদার সবচেয়ে কাছের আশেক। একবার মূসা (আঃ) খোদার সাক্ষাতে যায়। আরশে ডুকার সময় খোদা বলে, জুতা খুলে প্রবেশ করুন।
একবার রাসুল (দ.) আরশে ডুকতে জুতা খুলতে গেলে আদেশ আসে, জুতাসহ প্রবেশ করুন; আপনার জুতাও তো নূরই।
ধর্ম
এক দম্পতি তাদের চাকরি এবং সন্তান একসাথে সামলাতে পারছিলো না। তারা সন্তান সামলানো ও দেখাশোনার জন্যে একটা কাজের মানুষ রাখে। একদিন সময় ও সুযোগ বুঝে কাজের লোক সন্তানকে মেরে বস্তাভরে খাটের নীচে লুকাই রাখে। তারপর ঘরে যতো মূল্যবান জিনিস ছিলো তা নিয়ে পালিয়ে যায়।
ধ্যান
বন্ধু সেদিন ধ্যান নিয়ে বলছিলো। এক সাহাবী যুদ্ধে তীরবিদ্ধ হয়। শত চেষ্টা করার পরও তীর বের করা যায়না। বের করতে ধরলেই সাহাবী চিৎকার করে। শেষে মুহাম্মদ (দ.) বলেন, ও যখন নামাজে দাঁড়াবে তখন বের করো। এরপর পাহাড়ে যখন সাহাবী নামাজে দাঁড়ায়; একজন সাহাবী টান দিয়ে তীর বের করে নেয়। তীরবিদ্ধ সাহাবী বুঝতেই পারেনা ব্যপারটা। ঘটনা বর্ণনার পর বন্ধু বলে, বুঝছস? এভাবেই নামাজ পড়তে হয়।
আমি মাথা দুলিয়ে জানাই, হুম।
আরেকদিন আমরা নামাজে যাই। বন্ধু পকেট থেকে মোবাইল বের করে সাইলেন্ট করে সিজদার জায়গার একপাশে রাখে। সে দুই রাকাত পড়ে।
আমি দূরে বসে আছি। একটা ছেলেকে ডেকে বলি, ঐ মোবাইলটা নিয়ে আয়।
ছেলেটা মোবাইলে হাত দিতেই বন্ধু নামাজ ভেঙ্গে চিল্লায় উঠে, ঐ শূয়রটারে ধর, শালার মোবাইল চোর।
ভঙ
মা একবার ঘটনা বলছিলো। এক সাহাবী শয়তানের ধোঁকায় পড়ে ফজরের নামাজ জামাতে পড়তে পারেনাই। পরে সে ক্বাজা আদায় করে আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়। তখন খোদা, তার পূণ্যের খাতায় দুইগুন বেশী সওয়াব বরাদ্দ করে। তখন শয়তান বিমর্ষ হয়ে যায়। পরদিন থেকে নিয়ম করে শয়তানই সাহাবীকে ফজরের সময় ডেকে দেয়।
এই গল্প শুনার পর আমি আর ফজরে ঠিক সময়ে উঠি না। মাকে বলি, শয়তান উঠতে দেয় নাই। পরে ক্বাজা পড়ে নিই। কিন্তু কখনো শয়তান আমাকে আর ঠিক সময়ে ফজরে ডেকে দেয়নি।
ধর্মান্ধ
এক ধার্মিক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। অপারেশন করাতে হবে। না হলে বাঁচানো যাবে না। তার পরিবারের লোকজন তারে নিয়ে যায় হাসপাতালে। তাকে অপারেশন করানোর মতো অভিজ্ঞ এবং সাহসী ডাক্তার তার স্বধর্মের না এইটা জানার পর সে আর অপারেশন করাতে রাজি হয়নি। এই রাজি না হওয়ার দশ মিনিট পর ঐ হাসপাতালেই সে মারা যায়। তাকে যেই মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়; সেখানে তার পাশে শুয়ে ছিলো অনেক ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের অনুসারি মানুষের মৃত দেহ।
প্রেম
এক লোক প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয়ে সমুদ্রে গেলো। সে সামুদ্রকে এতোটাই নীলবর্ণ ও উন্মাদ অবস্থায় পেলো যা তার অবস্থা থেকে বহুগুন বেশি ও প্রবল। সে আত্মহত্যাকে মূলতবি ঘোষণা করে ফিরে আসছিলো। তখন তার সাথে এক হুদহুদের দেখা। হুদহুদ তাকে দেখেই রোগ সম্পর্কে বুঝতে পারে। এবং তাকে বলে, ওহে দুর্বল, প্রেম তো দুর্বলচিত্তধারীদের জন্যে নয়। প্রেম যখন তোমার পথ রুদ্ধ করবে তখন পথকে ধ্বংস করার মতো ক্ষমতা না থাকলে প্রেমে মশগুল হয়োনা।
কবিতায় অশ্লীলতা
এক প্রসিদ্ধ কাতেব ছিলো। যে আসমানী কিতাব পরিবর্তন করে লিখতো। এই খবর শুনে বাদশাহ তাকে ধরে আনলো। এবং তাকে শাস্তি দিলো। শাস্তি শেষ হলে তার উপর কোরআন লেখার দায়িত্ব দেয় এবং হুশিয়ার করে দেয়, যেন একটা হরফও যেন পরিবর্তন না করে। একদিন সে কোরআন লিখতে বসে দেখে, ফেরআউনের মতো খারাপ মানুষের নাম। এবং বিভিন্ন খারাপ শব্দের ব্যবহার। তখন সে চিন্তা করে, কোরআনের মতো পবিত্রগ্রন্থে এইসব খারাপ লোকের নাম রাখা যাবে না। সে সব খারাপ খারাপ মানুষের নাম উঠিয়ে ঐখানে নবী রাসূলদের নাম বসিয়ে দেয়। এবং অশ্লীল শব্দগুলোর বদলে সুন্দর ও পবিত্র শব্দ বসিয়ে কোরআন লিপিবদ্ধ করে।
প্রেমে প্রাপ্তি
প্রেমে যা প্রাপ্তি তা ধারণ করার মতো ক্ষমতা কার আছে? কারণ প্রেমের সর্বোত্তম সফলতা হচ্ছে ধ্বংস। তোমার সমস্ত অস্তিত্ব প্রেমের নামে বিলীন হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তুমি তার হতে পারবে না।
যেমনটি আত্তার জাররিন মোরগকে উপদেশ দিয়েছিলো তেমনি পুরোপুরি ফানা হয়ে যাওয়ার মধ্যেই প্রেমের অস্তিত্ব প্রতিভাত হয়।
মন্তব্য