প্রতিক্রিয়াশীলদের থেকে উদারপন্থীদের পার্থক্য এই যে, স্থানীয় ভাষায় শিক্ষণের অধিকার তারা মানে- অন্তত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু, আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষা যে প্রয়োজন, এবিষয়ে তারা প্রতিক্রিয়াশীলদের সঙ্গে সম্পূর্ণত একমত।
আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার অর্থ কী? কার্যক্ষেত্রে এর অর্থ হল, রাশিয়ার জনসমষ্টির যারা সংখ্যালঘু অংশ সেই বড়-রুশীদের ভাষা চাপানো হবে রাশিয়ার জনসমষ্টির বাদবাকি সমস্ত মানুষের উপর। প্রত্যেকটা বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রভাষা শিক্ষণ হবেই বাধ্যতামূলক। সমস্ত সরকারী চিঠিপত্রাদি অবশ্যই চালাতে হবে রাষ্ট্রভাষায়- স্থানীয় জনসাধারনের ভাষায় নয়।
যেসব পার্টি আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার ওকালতি করে তারা এর আবশ্যকতার ন্যায্যতা প্রতিপন্ন করে কোন্ যুক্তিতে?
কৃষ্ণ-শতকীদের ‘যুক্তিগুলো’ অবশ্য সংক্ষিপ্ত। তারা বলে: সমস্ত অরুশীকে শাসনে রাখতে হবে লোহার ডান্ডা দিয়ে- যাতে তারা ‘হাতছাড়া হয়ে’ না-যায়। রাশিয়া অবশ্যই হবে অবিভাজ্য, সমস্ত জাতীকে বড়-রুশী শাসনের বশ্যতাস্বীকার করতে হবে, কেননা রাশিয়া ভূমিকে গড়ে তুলেছে এবং এক করেছে বড়-রুশীরাই। কাজেই, শাসক শ্রেণীর ভাষাই হওয়া চাই আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষা। পুরিশ্কেভিচ প্রমুখ ভদ্রমহোদয়দের তো ‘ঘেউ ঘেউ জবানগুলোকে’ একেবারে নিষিদ্ধ করে দিলেও আপত্তি নেই- যদিও রাশিয়ার মোট জনসমষ্টির শতকরা ৬০ জন কথা বলে ঐসব ভাষায়।
উদারপন্থীদের মনোভাব ঢের বেশি ‘সংস্কৃত’ এবং ‘মার্জিত’। তারা স্থানীয় ভাষাগুলিকে একটাকিছু গণ্ডির ভিতরে ব্যবহৃত হতে দেবার পক্ষে (যেমন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে)। আর তার সঙ্গে সঙ্গে, তারা একটা আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার পক্ষে ওকালতি করে। তারা বলে, ‘সংস্কৃতির’ স্বার্থে, ‘সম্মিলিত’ এবং ‘অবিভাজ্য’ রাশিয়ার স্বার্থে সেটা আবশ্যক, ইত্যাদি।
‘রাষ্ট্রসত্তা হল সাংস্কৃতিক একত্বের দৃঢ়প্রতিষ্ঠা... রাষ্ট্রভাষা রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির একটা অত্যাবশ্যক অঙ্গ-উপাদান... রাষ্ট্রসত্তার ভিত্তি হল কর্তৃত্বের একত্ব, আর রাষ্ট্রভাষা সেই একত্বের হাতিয়ার। রাষ্ট্রসত্তার অন্যান্য সমস্ত রূপের মতো রাষ্ট্রভাষার আছে একই বাধ্যতামূলক এবং সর্বব্যাপী নিগ্রহকর।
‘রাশিয়াকে সম্মিলিত এবং অবিভাজ্য থাকতে হলে রুশ সাহিত্যিক ভাষার রাষ্ট্রীয় উপযোগিতার বিষয়ে আমাদের দৃঢ়ভাবে নাছোরবান্দা হওয়া চাই।’
এটা হল রাষ্ট্রভাষার আবশ্যকতা সম্বন্ধে উদারপন্থীর টিপিকাল দর্শন।
উদারপন্থী সংবাদপত্র ‘দেন’এ (৪৭) (নং ৭) শ্রী স. পাত্রাশ্কিনের একটা প্রবন্ধ থেকে উপরের রচনাংশটা উদ্ধৃত করা হয়েছে। খুবই বোধগম্য কারনে কৃষ্ণ-শতক ‘নোভয়ে ভ্রেমিয়া’ এইসব ভাব-ধারণার স্রষ্টাকে একটা সশব্দ চুম্বন পারিতোষিক দিয়েছে। মেনশিকভের পত্রিকায় (১৩৫৮৮) বলা হয়েছে, শ্রী পাত্রাশ্কিন ‘খুবই সুযুক্তিপূর্ণ ভাব-ধারণা’ প্রকাশ করেছেন। এইরকমের খুবই ‘সুযুক্তিপূর্ণ’ ভাব-ধারণার জন্যে কৃষ্ণ-শতকীরা আর একটা পত্রিকাকে সর্বক্ষণ প্রশংসা করছে- সেটা হল জাতীয়-উদারপন্থী ‘রুস্কায়া মিস্ল’। উদারপন্থীরা যখন বিভিন্ন ‘মার্জিত’ যুক্তির সাহায্যে এমনসব জিনিসের ওকালতি করছে যা ‘নোভয়ে ভ্রেমিয়ার’ লোকজনের এত প্রীতিকর সেক্ষেত্রে এরা কি তাদের প্রশংসা না করে পারে?
উদারপন্থীরা আমাদের বলে, রুশ ভাষা একটা মহান এবং শক্তিমান ভাষা। রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যারা থাকে তারা প্রত্যেকে এই মহান এবং শক্তিমান ভাষাটা জানুক, তা তোমরা চাও-না কি? তোমরা কি টের পাও না যে, রুশ ভাষা অ-রুশীদের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে, তাদের নাগালের মধ্যে এনে দেবে সংস্কৃতির মহা সম্পদ ভাণ্ডার, ইত্যাদি?
উদারপন্থীদের কথার জবাবে আমরা বলি, ভদ্রমহোদয়গণ, এই সবই ঠিক। তুর্গেনেভ, তলস্তয়, দব্রলিউবভ এবং চের্নিশেভ্স্কির ভাষা মহান এবং শক্তিমান, সেটা আমরা তোমাদের চেয়ে ভালোভাবেই জানি। তোমাদের চেয়ে বেশি করেই আমরা চাই রাশিয়ায় অধিবাসী সমস্ত জাতির নিপীড়িত শ্রেণীগুলির মধ্যে যতখানি সম্ভব আদান-প্রদান এবং ভ্রাত্রোচিত ঐক্য স্থাপিত হোক- কোন রকমের বৈষম্য ছাড়াই। আর, রাশিয়ার প্রত্যেকটি অধিবাসী মহান রুশ ভাষা শেখার সুযোগ পাক, আমরা নিশ্চয়ই তার পক্ষে।
যে-জিনিসটা আমরা চাইনে সেটা হল নিগ্রহ। মানুষকে মুগুরপেটা করে তাড়িয়ে নিয়ে স্বর্গে তোলা হয়, সেটা আমরা চাই নে। কেননা ‘সংস্কৃতি’ সম্বন্ধে যতই সুন্দর-সুন্দর বুলি তোমরা আওড়াও না কেন, আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার সঙ্গে নিগ্রহ সংশ্লিষ্ট, মুগুরের ব্যবহার সংশ্লিষ্ট আছে। মহান এবং শক্তিমান রুশ ভাষা কাউকে পড়াবার জন্যে ডাহা বাধ্যতার দরকার আছে বলে আমরা মনে করিনে। রাশিয়ায় পুঁজিতন্ত্রের বিকাশ এবং সাধারনভাবে সমাজ-জীবনের সমগ্র ধারা সমস্ত জাতিকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে একত্রিত করার দিকে চলেছে, তাতে আমরা নিশ্চিত। লক্ষ-লক্ষ মানুষ চলেছে রাশিয়ার এক-প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে; বিভিন্ন জাতীয় জনসমষ্টির মেশামেশি ঘটছে; বদ্ধ স্বাতন্ত্র্য আর জাতিগত রক্ষণশীলতা দূর হয়ে যাবেই। যাদের জীবন আর কাজের পরিবেশের ফলে রুশ ভাষা জানা আবশ্যক হয়ে পড়বে তারা এ ভাষা শিখবে জোর করে বাধ্য না-করলেও। কিন্তু, নিগ্রহের (মুগুরের) ফল হবে শুধু একটাই: মহান এবং শক্তিমান রুশ ভাষা অন্যান্য জাতিগত গ্রুপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়াটা এতে ব্যাহত হবে, এবং, যা সবচেয়ে গুরুত্বসম্পন্ন, এতে বৈরিতা তীব্রতর হবে, হাজার নতুন রূপের বিরোধ সৃষ্টি হবে, ক্ষোভ বাড়বে, বাড়বে পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি, ইত্যাদি।
কে চায় এই রকমের জিনিস? রাশিয়ার মানুষ নয়, রুশ গণতন্ত্রীরা নয়। তারা কোন প্রকারের জাতিগত উৎপীড়ন মানে না- রুশ সংস্কৃতি আর রাষ্ট্রসত্তার স্বার্থে-ও না।
এই কারণেই রুশ মার্কসবাদীরা বলছে, কোন আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষা চলবে না, জনসাধারনের জন্যে এমন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করতে হবে যেখানে শিক্ষণ চলবে সমস্ত স্থানীয় ভাষায়, যে কোন এক-জাতির সমস্ত বিশেষ অধিকার এবং সংখ্যালঘু জাতিগুলির সমস্ত রকমের অধিকার-লঙ্ঘনকে বাতিল ঘোষণা করে সংবিধানে একটা বুনিয়াদী আইন ঢুকাতে হবে।
১৪ (৩২) নং
‘প্রলের্তাস্কায়া প্রাভ্দা’, ২৪ খণ্ড, ২৯৩-২৯৫ পৃ.
১৮ জানুয়ারি ১৯১৪
আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার অর্থ কী? কার্যক্ষেত্রে এর অর্থ হল, রাশিয়ার জনসমষ্টির যারা সংখ্যালঘু অংশ সেই বড়-রুশীদের ভাষা চাপানো হবে রাশিয়ার জনসমষ্টির বাদবাকি সমস্ত মানুষের উপর। প্রত্যেকটা বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রভাষা শিক্ষণ হবেই বাধ্যতামূলক। সমস্ত সরকারী চিঠিপত্রাদি অবশ্যই চালাতে হবে রাষ্ট্রভাষায়- স্থানীয় জনসাধারনের ভাষায় নয়।
যেসব পার্টি আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার ওকালতি করে তারা এর আবশ্যকতার ন্যায্যতা প্রতিপন্ন করে কোন্ যুক্তিতে?
কৃষ্ণ-শতকীদের ‘যুক্তিগুলো’ অবশ্য সংক্ষিপ্ত। তারা বলে: সমস্ত অরুশীকে শাসনে রাখতে হবে লোহার ডান্ডা দিয়ে- যাতে তারা ‘হাতছাড়া হয়ে’ না-যায়। রাশিয়া অবশ্যই হবে অবিভাজ্য, সমস্ত জাতীকে বড়-রুশী শাসনের বশ্যতাস্বীকার করতে হবে, কেননা রাশিয়া ভূমিকে গড়ে তুলেছে এবং এক করেছে বড়-রুশীরাই। কাজেই, শাসক শ্রেণীর ভাষাই হওয়া চাই আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষা। পুরিশ্কেভিচ প্রমুখ ভদ্রমহোদয়দের তো ‘ঘেউ ঘেউ জবানগুলোকে’ একেবারে নিষিদ্ধ করে দিলেও আপত্তি নেই- যদিও রাশিয়ার মোট জনসমষ্টির শতকরা ৬০ জন কথা বলে ঐসব ভাষায়।
উদারপন্থীদের মনোভাব ঢের বেশি ‘সংস্কৃত’ এবং ‘মার্জিত’। তারা স্থানীয় ভাষাগুলিকে একটাকিছু গণ্ডির ভিতরে ব্যবহৃত হতে দেবার পক্ষে (যেমন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে)। আর তার সঙ্গে সঙ্গে, তারা একটা আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার পক্ষে ওকালতি করে। তারা বলে, ‘সংস্কৃতির’ স্বার্থে, ‘সম্মিলিত’ এবং ‘অবিভাজ্য’ রাশিয়ার স্বার্থে সেটা আবশ্যক, ইত্যাদি।
‘রাষ্ট্রসত্তা হল সাংস্কৃতিক একত্বের দৃঢ়প্রতিষ্ঠা... রাষ্ট্রভাষা রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির একটা অত্যাবশ্যক অঙ্গ-উপাদান... রাষ্ট্রসত্তার ভিত্তি হল কর্তৃত্বের একত্ব, আর রাষ্ট্রভাষা সেই একত্বের হাতিয়ার। রাষ্ট্রসত্তার অন্যান্য সমস্ত রূপের মতো রাষ্ট্রভাষার আছে একই বাধ্যতামূলক এবং সর্বব্যাপী নিগ্রহকর।
‘রাশিয়াকে সম্মিলিত এবং অবিভাজ্য থাকতে হলে রুশ সাহিত্যিক ভাষার রাষ্ট্রীয় উপযোগিতার বিষয়ে আমাদের দৃঢ়ভাবে নাছোরবান্দা হওয়া চাই।’
এটা হল রাষ্ট্রভাষার আবশ্যকতা সম্বন্ধে উদারপন্থীর টিপিকাল দর্শন।
উদারপন্থী সংবাদপত্র ‘দেন’এ (৪৭) (নং ৭) শ্রী স. পাত্রাশ্কিনের একটা প্রবন্ধ থেকে উপরের রচনাংশটা উদ্ধৃত করা হয়েছে। খুবই বোধগম্য কারনে কৃষ্ণ-শতক ‘নোভয়ে ভ্রেমিয়া’ এইসব ভাব-ধারণার স্রষ্টাকে একটা সশব্দ চুম্বন পারিতোষিক দিয়েছে। মেনশিকভের পত্রিকায় (১৩৫৮৮) বলা হয়েছে, শ্রী পাত্রাশ্কিন ‘খুবই সুযুক্তিপূর্ণ ভাব-ধারণা’ প্রকাশ করেছেন। এইরকমের খুবই ‘সুযুক্তিপূর্ণ’ ভাব-ধারণার জন্যে কৃষ্ণ-শতকীরা আর একটা পত্রিকাকে সর্বক্ষণ প্রশংসা করছে- সেটা হল জাতীয়-উদারপন্থী ‘রুস্কায়া মিস্ল’। উদারপন্থীরা যখন বিভিন্ন ‘মার্জিত’ যুক্তির সাহায্যে এমনসব জিনিসের ওকালতি করছে যা ‘নোভয়ে ভ্রেমিয়ার’ লোকজনের এত প্রীতিকর সেক্ষেত্রে এরা কি তাদের প্রশংসা না করে পারে?
উদারপন্থীরা আমাদের বলে, রুশ ভাষা একটা মহান এবং শক্তিমান ভাষা। রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যারা থাকে তারা প্রত্যেকে এই মহান এবং শক্তিমান ভাষাটা জানুক, তা তোমরা চাও-না কি? তোমরা কি টের পাও না যে, রুশ ভাষা অ-রুশীদের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে, তাদের নাগালের মধ্যে এনে দেবে সংস্কৃতির মহা সম্পদ ভাণ্ডার, ইত্যাদি?
উদারপন্থীদের কথার জবাবে আমরা বলি, ভদ্রমহোদয়গণ, এই সবই ঠিক। তুর্গেনেভ, তলস্তয়, দব্রলিউবভ এবং চের্নিশেভ্স্কির ভাষা মহান এবং শক্তিমান, সেটা আমরা তোমাদের চেয়ে ভালোভাবেই জানি। তোমাদের চেয়ে বেশি করেই আমরা চাই রাশিয়ায় অধিবাসী সমস্ত জাতির নিপীড়িত শ্রেণীগুলির মধ্যে যতখানি সম্ভব আদান-প্রদান এবং ভ্রাত্রোচিত ঐক্য স্থাপিত হোক- কোন রকমের বৈষম্য ছাড়াই। আর, রাশিয়ার প্রত্যেকটি অধিবাসী মহান রুশ ভাষা শেখার সুযোগ পাক, আমরা নিশ্চয়ই তার পক্ষে।
যে-জিনিসটা আমরা চাইনে সেটা হল নিগ্রহ। মানুষকে মুগুরপেটা করে তাড়িয়ে নিয়ে স্বর্গে তোলা হয়, সেটা আমরা চাই নে। কেননা ‘সংস্কৃতি’ সম্বন্ধে যতই সুন্দর-সুন্দর বুলি তোমরা আওড়াও না কেন, আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার সঙ্গে নিগ্রহ সংশ্লিষ্ট, মুগুরের ব্যবহার সংশ্লিষ্ট আছে। মহান এবং শক্তিমান রুশ ভাষা কাউকে পড়াবার জন্যে ডাহা বাধ্যতার দরকার আছে বলে আমরা মনে করিনে। রাশিয়ায় পুঁজিতন্ত্রের বিকাশ এবং সাধারনভাবে সমাজ-জীবনের সমগ্র ধারা সমস্ত জাতিকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে একত্রিত করার দিকে চলেছে, তাতে আমরা নিশ্চিত। লক্ষ-লক্ষ মানুষ চলেছে রাশিয়ার এক-প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে; বিভিন্ন জাতীয় জনসমষ্টির মেশামেশি ঘটছে; বদ্ধ স্বাতন্ত্র্য আর জাতিগত রক্ষণশীলতা দূর হয়ে যাবেই। যাদের জীবন আর কাজের পরিবেশের ফলে রুশ ভাষা জানা আবশ্যক হয়ে পড়বে তারা এ ভাষা শিখবে জোর করে বাধ্য না-করলেও। কিন্তু, নিগ্রহের (মুগুরের) ফল হবে শুধু একটাই: মহান এবং শক্তিমান রুশ ভাষা অন্যান্য জাতিগত গ্রুপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়াটা এতে ব্যাহত হবে, এবং, যা সবচেয়ে গুরুত্বসম্পন্ন, এতে বৈরিতা তীব্রতর হবে, হাজার নতুন রূপের বিরোধ সৃষ্টি হবে, ক্ষোভ বাড়বে, বাড়বে পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি, ইত্যাদি।
কে চায় এই রকমের জিনিস? রাশিয়ার মানুষ নয়, রুশ গণতন্ত্রীরা নয়। তারা কোন প্রকারের জাতিগত উৎপীড়ন মানে না- রুশ সংস্কৃতি আর রাষ্ট্রসত্তার স্বার্থে-ও না।
এই কারণেই রুশ মার্কসবাদীরা বলছে, কোন আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষা চলবে না, জনসাধারনের জন্যে এমন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করতে হবে যেখানে শিক্ষণ চলবে সমস্ত স্থানীয় ভাষায়, যে কোন এক-জাতির সমস্ত বিশেষ অধিকার এবং সংখ্যালঘু জাতিগুলির সমস্ত রকমের অধিকার-লঙ্ঘনকে বাতিল ঘোষণা করে সংবিধানে একটা বুনিয়াদী আইন ঢুকাতে হবে।
১৪ (৩২) নং
‘প্রলের্তাস্কায়া প্রাভ্দা’, ২৪ খণ্ড, ২৯৩-২৯৫ পৃ.
১৮ জানুয়ারি ১৯১৪
ভা ষা সি রি জ
আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার প্রয়োজন আছে কি?
ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন
আবশ্যিক রাষ্ট্রভাষার প্রয়োজন আছে কি?
ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন
আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম পাঠ করে৷ এভাবে কোনোদিন চিন্তা করিনি!
উত্তরমুছুনঅভিভূত
উত্তরমুছুনলেনিন ইজ গ্রেট৷
উত্তরমুছুন