ব্রহ্মপুত্র নদের পাদদেশে, ধরলা নদীর কোলে বিন্দুর একাদশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২৪ ঘন্টার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। সম্পূর্ণ আয়োজনে ছিল লেখক-পাঠকদের উপচে পড়া ভিড়।
২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখ সোমবার দুপুর ১২ টায় কুড়িগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনের বারান্দায় লিটলম্যাগাজিন মেলা শুরুর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর বিকেল ৩টায় ‘বিন্দু’ সম্পাদক সাম্য রাইয়ানের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। সূচনা বক্তব্যে সাম্য রাইয়ান বিন্দুর জন্মকালীন পরিস্থিতি এবং বর্তমান বাস্তবতা প্রসঙ্গে আলোচনা করেন এবং লেখক-পাঠক-শুভাকাঙ্ক্ষী সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন নিবিষ্ট পাঠক সহঃ অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম, ‘সৃজন’ সম্পাদক কবি ইউসুফ আলমগীর, কলামনিস্ট নাহিদ নলেজ, ‘শব্দপরিব্রাজক’ সম্পাদক গল্পকার জুলকারনাইন স্বপন, ‘ছোট নদী’ সম্পাদক আবু হেনা মুস্তফা, নিবিষ্ট পাঠক মাহমুদ আল হেলাল উজ্জামান, কবি আহমেদ মওদুদ, ‘ঐতিহ্য’ সম্পাদক সোলায়মান বাবুল, কবি জ্যোতি আহমদ, প্রাবন্ধিক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক আব্রাহাম লিংকন, উত্তর আধুনিক কাব্য দর্শনের অন্যতম প্রবক্তা কবি জিললুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশীদ লাল সহ প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ।
আলোচনা পর্ব শেষে ‘বাঙ্ময়’ থেকে প্রকাশিত বিন্দুর চার কবির পাঁচটি কবিতাবই যথাক্রমে মাহফুজুর রহমান লিংকনের ‘অমীমাংসিত ফুলের দেবতা’, আহমেদ মওদুদের ‘দুঃস্বপ্নের চিরস্থায়ী বাগানে’, মিটন আলমের ‘প্রতিবেশিনীর প্রতি’ এবং জিললুর রহমানের ‘আত্মজার প্রতি’ ও ‘শতখণ্ড’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মাহফুজুর রহমান লিংকন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় তার পক্ষে মোড়ক উন্মোচন করেন হৃদয় ইসলাম। এছাড়া প্রতিটি কবিতাবইয়ের মোড়ক কবিগণই উন্মোচন করেন। (মোড়ক উন্মোচনের ভিডিও)
মোড়ক উন্মোচন শেষে এই পাঁচটি বই নিয়ে পাঠপ্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বই আলোচনা বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘গ্রন্থগত’ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক সুশান্ত বর্মন। এই আলোচনার শেষ পর্যায়ে চলে আসে গরম সিঙারা এবং চা। চা বিরতির আড্ডা জমে ওঠে।
এরপর আমাদের ইউটিউব চ্যানেল BANGMOY এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন শেষে কোনও বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই নিজের লেখা ও সুর করা গান পরিবেশন করেন কবি আহমেদ মওদুদ।
ততক্ষণে রাত ৮টা পার হয়েছে। শুরু হয় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অক্টোবর বিপ্লবকে বিষয় করে নির্মিত ডকুমেন্টরী ‘গ্রাফিতি’ প্রদর্শনী।
উপস্থিত সকলের জন্য রাত সাড়ে ১০টায় রাতের খাবারের আয়োজন করা হয় কুড়িগ্রাম রিভার ভিউ স্কুলের কক্ষে। খাওয়া শেষে স্কুলেই ছিল রাত্রিযাপনের আয়োজন। রাত্রিযাপন করেন জিললুর রহমান, সাম্য রাইয়ান, আহমেদ মওদুদ, শাওন সরকার, হিমালয় অংকুর, হোসেন রওশন সহ প্রায় ৩০ জন। স্কুল মাঠে ছিল ক্যাম্পফায়ারের ব্যবস্থা। সারা রাত চলে আড্ডা, গান, কবিতা, আলোচনা, তর্ক। জমজমাট একটি রাত সকলে একসাথে কাটিয়ে পরদিন সকাল ও দুপুরের খাবার খেয়ে, যাঁরা কুড়িগ্রামের বাইরে থেকে এসেছিলেন, তারা বিদায় নেন। সমাপ্তি ঘটে ‘বিন্দু’র একাদশ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের।
মন্তব্য