২৭.
মানুষের মুত্যু হলে নক্ষত্র বাড়ে। বাড়ে শূন্যতা। মহাশূন্যতার মহারথে চড়ে এইসব দেখেছি শৈশবে। জেনেছি নক্ষত্র বাড়ে অযুত-নিযুত। বেড়ে যাওয়া নক্ষত্রের কেন্দ্র হতে আলো ছড়ায় মৃতদের আলোঘর। সেই আলোয় বেঁচে আছি দিবস ও রাতের চলাচলে। মৃতরাই বাঁচিয়ে রেখেছে তাহলে! জীবিতরা মৃতপ্রায়, অথচ আলোহীন, নক্ষত্রের ক্ষত; দুর্বিপাকের পাকে পাকে খাপ খাওয়া মহাজঞ্জাল। হায় মৃত্যু, জীবনের যৌথ যাপন, চুপিচুপি চুষে নাও হৃদয়ের রং আর দেহের দখল নাও তোমার খাপে আর বেঁচে থাকো নক্ষত্র হয়ে।
২৮.
রাতের হৃদয় ফেঁড়ে হেঁটে যাই আকাশের এভিনিউ হয়ে। পথে পথে তারাবাতি, দূরে দুর্ঘটনার উদ্ধত উল্কা, গ্রহ-নক্ষত্রের ঘোর ও ঘূর্ণন। তবুও হাঁটতে হয়, তবুও এই হেঁটে যাওয়া পৃথিবীর প্রতিনিধি হয়ে। নক্ষত্রের ক্ষত হতে বিচ্ছুরিত পুঁজ আমাকে দেখায় পথ, বলে, হেঁটে যাও দীর্ঘজীবী গ্রহাণুর মতো, জীবাণুর জীবন ছেড়ে। আমি তাই হেঁটে যাই কেটে যাই রাতের হৃদয়। হৃদয়ের ক্ষত হতে আলো ঝরে রক্তের মতো। সেই আলো গায়ে মেখে পায়ে মেখে অনিশেষ হেঁটে যাই রাতের গভীর হতে আরো গভীরে, আর এক রাতে, আর এক হৃদয়ে।
২৯.
সমবেত দুঃস্বপ্নের রাতে জেগে আছি ভোরের আলোর দিকে চেয়ে। কিন্তু দূরে যে আলোর রেখা সে নয় ভোরের আলো, সে আলো অন্ধকারের সূচনা সংকেত। সূচি ও সীমা ছাড়াই সেই আলো ক্রমাগত জ্বলে। ফলে আরো দুঃস্বপ্ন, ফলে আরো দূরাগত ভোর। এই ভয় ও ভাবনায় ঝুলে আছি দুঃস্বপ্নের তারে। ঝুলে ঝুলে ভুলে থাকবো ভোরের আলোর কথা, অন্ধকারের সকল সঙ্গীত। আলোর শ্লোগান তুলে নিজেই হয়তো হবো ভোর। দোর খুলে খুকুমণি আমাকে জড়িয়ে তার দুঃস্বপ্নের গান ভুলে তুলে দিবে স্বপ্নের মশাল। নিজেই মশাল হয়ে, মলিন হয়ে, লীন হবো খোকায় খোকায়, সমবেত দুঃস্বপ্নের শেষে।
ভাল্লাগছে। কবি ও সম্পাদকের জন্য ভালবাসা নিরন্তর...
উত্তরমুছুনআমার মনে পড়তেছে যখন আমি প্রথম দুঃস্বপ্নের চিরস্থায়ী বাগানে পাঠ করি। বিন্দু'র কোনো এক সংখ্যায় কবিতাগুলা পাঠ করি। আর বিশেষ স্বাদ লাগে। কবিতাগুলার মাঝে যে গভীর এক গম্ভীরমতন কথা বলা তা ধীরে ধীরে নিয়ে যেতে শুরু করে সেই বাগানের ভিতর। যেখানে দুঃস্বপ্ন, যেখানে নির্জলা বোধ , যেখানে আলোর কথা। নতুন ভাষা তৈরির দিকে অনেক কবি'ই সচেতন। তবে দুঃস্বপ্নের নার্সারীর কবিকে দেখলাম ,তার সেরকম ভাষা তৈরির কোনো দরকার নাই। সে নিজেই নিজের বোধের সাথে হয়ে উঠতেছেন সাবলীল ভাষা।
উত্তরমুছুন